স্বল্পোন্নত, মধ্যম স্বল্পোন্নত, উন্নয়নশীল, উচ্চ উন্নয়নশীল, উন্নত দেশ। দেশ গুলোর এমন বিশেষণ আমরা প্রায়ই শুনি। বিশ্বব্যাংকের কিছু মাপকাঠির ভিত্তিতে সমগ্র বিশ্বের দেশ গুলোকে এমন বিশেষণে ভাগ করা হয়েছে। অচিরেই বা ২০৪১ সন নাগাদ আমাদের দেশ উন্নত দেশ হিসেবে পরিগণিত হবে এমন একটি কথা বা আশাবাদ প্রায়ই আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা নেতৃবৃন্দের মুখে শুনি। অবশ্যই এমন কথা শুনি কেবল সরকারী দলের নেতৃবৃন্দের মুখে। এটি আসলে কতটা বাস্তব সম্মত?
উন্নত দেশ বলতে ঐ সকল সার্বভৌম দেশকে বুঝায় যারা অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং উচ্চতর প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর সর্বোচচ স্তর বা নির্দিষ্ট সীমানা রেখায় অবস্থানসহ স্বল্পোন্নত দেশসমূহ থেকে অনেকাংশেই এগিয়ে রয়েছে। জনগণের মাথাপিছু আয়, মোট দেশজ উৎপাদন, শিল্পোন্নয়নের স্তর, বিস্তৃত অবকাঠামোর বিন্যাস, মানব উন্নয়ন সূচক এবং সাধারণ জীবনযাত্রার মান এর প্রধান মাপকাঠি। সাধারণতঃ উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুতের উৎপাদন ও এর মাথাপিছু ব্যবহার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক হাসপাতাল, সুন্দর ব্যবস্থাসম্পন্ন চমৎকার গণশৌচাগার উন্নত দেশসমূহে বিদ্যমান থাকে।
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান উন্নত দেশ বলতে বলেছেন ” উন্নত দেশ বলতে যে সকল দেশ তার নাগরিকদের মুক্ত ও নিরাপদে রক্ষণাবেক্ষণ বা নিরাপত্তাসহ উপযুক্ত পরিবেশে স্বাস্থ্যকর জীবন প্রদানে সক্ষম তাকে বুঝাবে। ”
আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে উপরে বর্ণিত উন্নত দেশের কোন কোন বিষয় আমরা বাস্তবায়ন করতে পারবো?
* মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি সম্ভব হবে কিছুটা, কিন্তু এটি কখনোই সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছাবে না দেশের অর্ধেক নারীদের আয় বৃদ্ধির সাথে সম্পৃক্ত করতে না পারলে।
* মোট দেশজ উৎপাদনে সীমাবদ্ধতা আছে। কৃষি খাতকে আমরা উন্নত দেশের সম পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবো না কখনো। প্রধান বাঁধা সরকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা, কৃষকদের প্রতি আমাদের অবহেলা। নিজেদের কৃষকের সম্মান হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করি।
*শিল্পায়নের স্তরের উন্নয়নও সমম্বিত নয়। এখানেও সরকারী কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা, পরিকল্পনা কমিশনের অনভিজ্ঞতা, লাল ফিতার দৌড়ত্ব এবং অবহেলার কারণে শিল্পের সঠিক বিস্তার ঘটবেনা।
* অবকাঠামোর বিন্যাস: এটি কিছুটা বাস্তবায়ন হলেও মধ্যম পর্যায়েও উন্নিত হওয়া সম্ভব না। বড় বড় সেতু, হাইওয়ে, মেট্রোরেল স্থাপিত হলেও এর ব্যবস্থাপনার বিন্যাস আমাদের কাছে স্বপ্নের মতোই।
* মানব উন্নয়ন সূচক ও সাধারণ জীবন যাত্রার মানঃ আমাদের জীবন যাত্রার মান কতটা উন্নয়ন সম্ভব? আমরা তো আসলে জানিই না, আমাদের জীবনের চাহিদা কি। শুধু ব্যংকে অগাধ টাকা থাকবে, যখন যা ইচ্ছে ক্রয় করতে পারবো, এটিতেই জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন বুঝায় যায়। জনগন নির্ভয়ে অত্যন্ত আনন্দে চিত্তে যেখানেই যাক, যেখানেই বাস করুক, সে অত্যন্ত ভালো মানের সেবা, পরিবেশ পাবে সামান্যতম অসুবিধার সম্মূখিন না হয়ে এমন পরিবেশ কি আমাদের দেশে আসবে কখনো?
* পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক হাসপাতাল, সুন্দর ব্যবস্থাসম্পন্ন চমৎকার গণশৌচাগার, নাগরিকদের মুক্ত ও নিরাপদে রক্ষণাবেক্ষণ বা নিরাপত্তাসহ উপযুক্ত পরিবেশে স্বাস্থ্যকর জীবন; এসব ক্ষেত্রে আমাদের ভবিষ্যত অবস্থান স্বপ্নেই সম্ভব আসলে বাস্তবে নয় কোন ক্রমেই।
স্বাধীনতার এত বছর পরেও যে দেশে একটি গণমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা যায়নি, হরেক রকম শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে একটি জগা খিচুরি ভবিষ্যত প্রজন্ম তৈরী করা হয়েছে, হচ্ছে সে দেশ একই চিন্তায় একই শক্তিতে বলিয়ান হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে স্বপ্নের উন্নত দেশে, এটি আশা করা বাতুলতা মাত্র। যে দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা, অত্যাচার স্বাভাবিক, তাঁদেরকে গৃহবন্ধী করার হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান, লক্ষ কোটি চোখ কার্যকর সে দেশ কিভাবে উন্নত দেশ হবে? অর্ধেক জনগোষ্ঠী তো নারীই। যে দেশে জনগনের মতামত, স্বাধীন চিন্তা, নিরাপত্তা সহ সার্বিক অধিকার উপেক্ষিত, দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে সমাজে স্বীকৃত সে দেশ উন্নত দেশ হতে পারবে না কখনো।
আমরা হয়ত ধনী হতে পারবো, কিন্তু উন্নত দেশ হতে পারবো না কখনোই যদি না বর্তমানের প্রচলিত ধ্যান ধারনার পরিবর্তন হয়। ধনী আর উন্নত দেশ এক নয়।
২২টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
বাঙলা নব বর্ষের প্রথম দিনে অত্যন্ত মান সম্পন্ন একটি লেখা দেয়ার জন্যে আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।
লেখা নিয়ে আলোচনায় পরে আসছি।
জিসান শা ইকরাম
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে আমার লেখা প্রথম মন্তব্য দিলেন আপনি।
নববর্ষের শুভেচ্ছা আপনাকে।
আসুন, অপেক্ষা করি।
সাবিনা ইয়াসমিন
আমাদের দেশ স্বল্প উন্নত, মধ্যম স্বল্পোন্নত থেকে শুরু করে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হবে বা হচ্ছে এটা কিন্তু পুরোপুরি মিথ্যা নয়। সরকারি মানুষরা টার্গেট দিয়েছে ২০৪১সাল নাগাত দেশ কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছবে। এটা খুব অতিরঞ্জিত করেছে তাও বলা যাচ্ছেনা। দেশকে উন্নত করার জন্যে যা যা করা দরকার সেসব প্রকল্প ক্রমাগত নেয়া হচ্ছে এবং এগুলো বাস্তবায়ন করার প্রক্রিয়া চলছে তা দেশের সাধারন মানুষজন চোখকান কিছুটা খোলা রাখলেই দেখতে পারেন/ পান।
স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে শুধুমাত্র দেশবাসির আন্তরিক চেষ্টার কারনে। দেশের মানুষরা নিজেদের শিক্ষা, মেধা, অর্থ,ভালোবাসা সর্বপরি আত্মত্যাগ দিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। যার সুফল আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে দেখতে পাই/ পাচ্ছি।
অন্যদেশের সাথে তুলনা করলে আমেরিকা সিঙ্গাপুর বাদ দিয়ে আমাদের উচিৎ এমন দেশগুলোর সাথে তুলনা করা যারা বাংলাদেশের সাথে একই সময়ে স্বাধীতনার মুখ দেখেছে। তাহলে তফাৎটা সূর্যের আলোর মতো পরিস্কার দেখা যেতো। ঐদেশগুলো বাংলাদেশকে তাদের রোল মডেল বিনা কারনে মেনে নেয়নি। যুক্তিগত কারনের জন্যেই মানতে বাধ্য হয়েছে।
আমাদের দেশ শিক্ষা-চিকিৎসা ক্ষেত্রে পুরোপুরি এগুতে পারছেনা নানা রকম জটিলতার কারনে। অর্থনৈতিক জটিলতা ছাড়াও বহুমুখি শিক্ষা ব্যব্স্থা একটি কারন। শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বাধীনতা অর্জন করা এখন সময়ের চ্যালেঞ্জ। এটাও ঠিক হয়ে যাবে। খেয়াল করলে দেখবেন আমাদের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় এখন থেকেই নানারুপ পরিবর্তন এসেছে, আরো আসবে। অথচ পার্শ্ববর্তি দেশগুলোতে শিক্ষা নিয়ে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। কিছুদেশে শিক্ষাকে জাতপাতের মধ্যেও আবদ্ধ হতে দেখা যায়।কিছু দেশে শিক্ষা লিঙ্গ বৈষম্যতে আটকে থাকে, কিন্তু আমাদের দেশ এগুলোর প্রভাব থেকে মুক্ত।
পঞ্চাশ পারসেন্ট নারী কর্মজগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন !! আপনার কি আসলেই তাই মনে হয় ? আমিতো দেখছি এই সংখ্যা আরো কম। দেশের প্রধান মন্ত্রি হতে শুরু করে দেশের ঝাড়ুদার পেশা পর্যন্ত নারীর অবস্থান কোথায় নেই! অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে নারীর অবদান কোনো অংশেই পুরুষের চেয়ে কম নয়। সরকারি আমলার পদে থেকে দেশ চালানোর পাশাপাশি ট্রেন চালাচ্ছে নারীরা। উবার-পাঠাও তাতেও নারীদের বিচরন হচ্ছে।
গনশৌচারগার অন্য জেলাতে কেমন তা না দেখলেও রাজধানী ঢাকায় তার পরিবর্তনিয় রুপ আমরা দেখছি। পৌরসভা ঢাকাকে সুন্দর পরিচ্ছন্ন রাখতে তার কার্যক্রম করে যাচ্ছে নিরলস ভাবে।
পরিশেষে এটাই বলবো, সব কিছুই সময়ে হয়। সময় দিতে হয়। দুইশো/আড়াইশো বছর আগে স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশের সাথে অর্ধশত বছরের স্বাধীন দেশের তুলনা করা মানে হলো বানরের তৈলাক্ত বাঁশে উঠানামার অংক কষা।
শুভকামনা 🙂🙂
জিসান শা ইকরাম
আমিও বলেছি আমরা ধনী দেশে পরিনত হতে পারবো হয়ত, কিন্তু উন্নত নয় কোন ক্রমেই। ২০৪১ সনকে সামনে রেখে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে এটি আমরা সবাই দেখছি। এসব অবকাঠামো গত উন্নয়ন, মানুষের মন মানসিকতা উন্নয়নের কোন লক্ষন আপাতত দেখা যাচ্ছে না। যতই দিন যাচ্ছে ততই আমরা সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছি মন মানসিকতায়।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে নিজকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে বাংলাদেশ এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয় আমাদের জন্য। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষিন এশিয়ায় ভারতের পরেই আমাদের রিজার্ভের পরিমান। কিন্তু অত্যন্ত হতাশ হয়ে দেখছি যে, যাদের কল্যানে এই রেকর্ড পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা জমা হয়েছে, সেই প্রবাসি ভাই বোনদের আমাদের দেশ কিভাবে দেখছে? বছরের পর বছর পরিবার পরিজন থেকে দূরে থেকে, যখন একজন প্রবাসি শ্রমিক দেশে পা রাখেন, বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের তীক্ষ্ণ নজরদারির মধ্যে পড়ে যান। তাদের ন্যূন্যতম সন্মান দেয়া হয় না। লাগেজ খুলে সমস্ত মালামাল তছনছ করা হয়, যেন তারা অবৈধ ভাবে এসব মালামাল এনেছেন। টাকা পয়সা নিয়ে তবে তাদের ছাড়া হয়। এই প্রবাসি শ্রমিক বিদেশে অবস্থিত আমাদের দূতাবাস সমূহে সামান্য সেবা নিতে গেলেও অনেক হয়রানীর শিকার হতে হয়। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন জটিলতার ভয় দেখি অর্থ আদায় করা হয়। সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের এই মন মানসিকতার পরিবর্তন কি ২০৪১ সনের পূর্বে হবে?
বাংলাদেশের অনেক আগে পাকিস্থান, ভারত স্বাধীনতা পেয়েছে। বাংলাদেশ হচ্ছে পাকিস্থানের রোল মডেল। কেন এই রোল মডেল? সম্পুর্নই অর্থনৈতিক কারনে। পাকিস্থান বাংলাদেশের প্রকল্প সমূহ, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ইত্যাদি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা সব কিছুতেই পাকিস্থানের চেয়ে এগিয়ে। যে দেশটির জনগন ১৯৭১ সনের ভুল এখনো স্বীকার করেনা, তাঁদের রোল মডেল হবার আগ্রহের তেমন কিছু নেই। প্রবৃদ্ধিতে আমরা ভারতের চেয়েও এগিয়ে। দেশ প্রেমে আমরা ভারতের চেয়ে কয়েক যুগ পিছিয়ে আছি।
তুলনা করতে হলে যারা আমাদের চেয়ে এগিয়ে তাঁদের সাথেই তুলনা করতে চাই।
শিক্ষা ব্যবস্থা বহুমুখী রাখতেই হবে আমাদের দেশে। মাদ্রাসা শিক্ষা কি বাতিল করা সম্ভব? ঘাড়ের উপর মাথা থাকবে কারো? কেজি স্কুল? একটা জগা খিচুরি শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে চলছে দেশ। চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আর কিছু না বলি। ব্যাপক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবার নামে যা হচ্ছে তা আমরা সবাই জানি। সরকারী হাসপাতাল সমূহে যা হচ্ছে তাকে চিকিৎসা বলে না। হাসপাতালের একটি মেশিনও ঠিক ভাবে চলে না, এটিই স্বাভাবিক যেন। অথচ হাসপাতালের সামনে ডায়গনস্টিক সেন্টার গুলো চলছে চাকচিক্যের সাথে।
কবে সাধারণ মানুষ সঠিক চিকিৎসা পাবে?
আমি লেখায় মনে হয় পঞ্চাশ পারসেন্ট বলিনি। যাই হোক, অধিকাংশ নারীকে কর্মজগতের বাইরে রেখে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। আপনি নিজেই দেখুন, নারী তার শিক্ষা দিয়ে কি করছেন? কতজন নারী তার মেধাকে দেশের জন্য কাজে লাগাতে পেরেছেন? একজন নারী দেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে বসে থাকছেন তার পরিবারের মাঝে। একটি শান্তনা বাক্য অবশ্য আছে- সন্তান মানুষের জন্য মাকে শিক্ষিত হতে হবে। দেশে প্রতি বছর কত ছাত্র ছাত্রী পাশ করছেন মাস্টার্স, এর মধ্যে কত জন ছাত্রী চাকরী করছেন? পুরুষ এবং নারীর কার কি অবস্থান তা যে কোন অফিসে গেলেই দেখা যাবে। আমার বাড়ির বউ চাকরি করবে কেন? এই মনোভাবে আচ্ছন্ন মানুষই বেশী আমাদের সমাজে। পুরুষরা আয় করবে, আর নারী সংসার চালাবে – এই চিন্তা আমাদের মজ্জাগত।
গনশৌচাগার এর সংখ্যা কতটি তা হাতে গুনে বলে দেয়া যায় ম্যাডাম। দেড় কোটির উপরের জনসংখ্যার শহর ঢাকা। বর্তমানে এই সংখ্যা নগন্য। তবে ২০৪১ সনের মধ্যে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব।
সময় অবশ্যই দিতে হয়। তবে জনগনের মন মানসিকতা পরিবর্তন না হলে আমরা ধনী হয়ত হতে পারবো, কিন্তু উন্নত হতে পারবো না। আমাদের সমাজের প্রচলিত ধারনা, মনোভাব ভাঙতে কত বছর লাগে কে জানে?
এমন বিশ্লেষণ মূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য উপাত্ত নিয়ে নানান প্রশ্ন আছে।
আমাদের সম্ভবনার অন্তরায়গুলো সঠিক ভাবে চিহ্নিত ও উপশমের রাস্তা খুঁজে পেলে এগিয়ে যাওয়ার পথ উন্মুক্ত থাকে।
তবে এখন-ই যদি সুইজারল্যান্ডকে অতিক্রম করে গিয়ে থাকি, তাহলে এত চিন্তার কিছু নেই।
জিসান শা ইকরাম
জনগনের চিন্তা চেতনাকে পালটে দিতে পারে এমন কিছু নেই বর্তমানে।
জনগনই একটি প্রধান অন্তরায়।
তৌহিদ
সুন্দর বিশ্লেষণ ধর্মী লেখার জন্য ধন্যবাদ জানবেন ভাই। আসলে এখানে আর নতুন কিছু বলার নেই, যা বলার আপনি লেখাতেই বলে দিয়েছেন।
যতক্ষন আমরা নিজেদের অবস্থানে সততা, যোগ্যতা এসব মাপকাঠি বিচার করবোনা ততদিন উন্নত শব্দটি গুণগত পরিবর্তন আসবেনা বলেই মনে করি। ধনী শব্দটি এখন ব্যক্তিগত হয়ে গেছে। আর এভাবে চলতে থাকলে গরীব চিরকাল গরীবই থাকবে। সমবন্ঠন দরকার।
কিন্তু এসব দেখবে কে? করবে কারা? এই প্রশ্নের উত্তরে নীতিনির্ধারকগন নিশ্চুপ। এদেশের রাজনীতির কালচারটাও নেগেটিভ দিকে প্রবাহিত।
তবে আমি আশাবাদী, হয়তো পরিবর্তন আসবে একদিন।
জিসান শা ইকরাম
অত্যন্ত সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে কোনো কিছুই সঠিক ভাবে চলছে না।
তৌহিদ
শুভেচ্ছা জানবেন ভাই☺☺
মনির হোসেন মমি
শুভ নব বর্ষ ১৪২৬ এর প্রথম দিনে দেশ ও দশের মনের কথা বললেন।সামাজিক অবক্ষয়ের দিক থেকে মনে হয়না আমরা সহজে বের হয়ে আসতে পারব।আর শিক্ষা ব্যাবস্থা সম্পর্কে আমি পুরোপুরি একমত।এ শিক্ষা ব্যাবস্থা বর্তমানে অচল।দূর্ণিতী দূর্ণিতীবাজরাতো এখন বড় শক্তিশালী যার কারনে ভবিষৎ এ সাম্যহীনতার রুধে আওয়াজ উঠবে।
জিসান শা ইকরাম
আমাদের দেশের সব ক্ষেত্রের সিস্টেমই নস্ট হয়ে গিয়েছে আসলে মনির ভাই।
শুভ কামনা।
নীরা সাদীয়া
একদম মনের কথা বলেছেন। আমরা হয়ত ধনী হতে পারব,কিন্তু মানসিকতা না পাল্টালে কিছুতেই উন্নত হওয়া সম্ভব নয়।
যে দেশে অন্যায়ের জন্য ভিকটিমকেই দায়ী করা হয়, যে দেশে ধর্মীয় যাঁতাকলে নারীকে পিষ্ট করে পুরুষ তার পুরুষত্ব প্রদর্শন করে, যে দেশের মানুষ পরিচ্ছন্নতা কি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ কিভাবে ব্যবহার ও রক্ষনাবেক্ষণ করতে হবে তা জানে না, সর্বোপরি যে জাতির মাঝে দেশপ্রেমের অভাব, রন্ধ্রে রন্ধ্রে নারী বিদ্বেষ, সে জাতি কি করে উন্নত হবে?
জিসান শা ইকরাম
ধনী হওয়া আর উন্নত মানসিকতার অধিকারী হওয়া এক নয়।
শুভ কামনা নীরা
মাহমুদ আল মেহেদী
মানসিক উন্নতিই প্রকৃত উন্নতি। খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা অনেক গুরত্ব দিয়ে লিখেছেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
জিসান শা ইকরাম
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ মেহেদী,
শুভ কামনা।
মোঃ মজিবর রহমান
আমার ইচ্ছা রাজনৈতিক আর মানুষের দুর্নীতি, অসৎ কারয্যকলাপ, ভুড়ি ভুড়ি ব্যাক্তি পেটমুটা থেকে মুক্ত হলে হইত সম্ভব। তাঁর চেয়ে মারাত্বক বাধা অতিরিক্ত জনসংখ্যা।
জিসান শা ইকরাম
ঠিক বলেছেন মজিবর ভাই,
শুভ কামনা।
অপার্থিব
ভাল লিখেছেন । উন্নত দেশ তথা উন্নত জাতি গড়ার জন্য প্রথমে যেটা দরকার তা হচ্ছে উন্নত মন মানসিকতার মানুষ তৈরী, আর উন্নত মানসিকতা তৈরির জন্য প্রয়োজন উন্নত শিক্ষা। বর্তমানে আমাদের দেশের শিক্ষাখাতের প্রায় পুরোটাই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে চলে গেছে, আছে বিভিন্নধারার শিক্ষা। শিক্ষার মত মৌলিক খাত যদি কর্পোরেটদের হাতে চলে যায় তবে সেখান থেকে উন্নত মানুষ তৈরির আশা বাতুলতা। শিক্ষার মুল উদ্দেশ্য মানবিক বোধ সম্পন্ন মানুষ তৈরী, এই উদ্দেশ্য থেকে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক দূরে।
দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রভাব হিসেবে দেশে কিছু কর্মসংস্থান বাড়বে, সেই সঙ্গে বাড়বে দুর্নীতি, অর্থনৈতিক বৈষম্য। এক শ্রেণীর মানূষ সম্পদের পাহাড় গড়বে, আর এক শ্রেনীর মানুষ দরিদ্রই থেকে যাবে । এই অসাম্য থেকে তৈরী হবে সামাজিক অসন্তোষ, এমনকি তৈরী হতে পারে বিশৃঙ্খলা, যেটার প্রভাব গিয়ে পড়বে অর্থনীতির উপর অর্থাৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে যদি ঠিক মত কাজে লাগানো না যায় তবে সেটা আবার নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি তৈরী করতে পারে।
জিসান শা ইকরাম
আপনার মন্তব্যের সাথে সম্পুর্নই একমত।
মানুষের মন মানসিকতার পরিবর্তন না হলে কখনো কাঙ্ক্ষিত উন্নত দেশে পরিনত হতে পারবো না।
আমরা উচ্চ শিক্ষা লাভ করছি, দেশে শিক্ষার হার প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে, প্রাতিষ্ঠানিক সনদ পাচ্ছি আমরা, কিন্তু মন মানসিকতা উন্নত করতে পারছি না। সহ মর্মিতা, সহনশীলতা, অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা বোধ, সর্বোপরি দেশাত্মবোধ থেকে দূরে চলে যাচ্ছি আমরা।
এমন মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
নতুন লেখা দিন, অপেক্ষা করছি।
নীলাঞ্জনা নীলা
উন্নত দেশের সংজ্ঞা পেয়ে গেলাম শেষ লাইনে এসে। যেদিন আমাদের মনমানসিকতার পরিবর্তন আসবে, সেদিনই দেশ উন্নত হবে। আদৌ কি তা হবে! মনে তো হয় না।
নানা তোমার লিখনীতে কিন্তু বহুমাত্রিক প্রতিভা আছে, আবারও তা প্রমাণিত হলো।
জিসান শা ইকরাম
মন মানসিকতার পরিবর্তন না হলে উন্নত দেশ বলতে যা বুঝায়, তা কখনোই হতে পারব না আমরা।
ধনী রাষ্ট্র হয়ত হতে পারবো, কিন্তু উন্নত রাস্ট্রে পরিনত হতে পারবো না।
শ্রদ্ধা করো তুই নানাকে তাই তার মধ্যে প্রতিভা দেখো বহুমাত্রিক 🙂
ভালো থাকিস নাতনী।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা দুটোই আছে। তবে তুমি আসলেই ভালো লেখো, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
অনেক ভালো থেকো।