“যে আমাকে ভালোবাসেনা, তাকেও আমি ভালোবাসি”- তবুও দিনশেষে আমরা সবাই একা, আর সবচেয়ে বড় একাকিত্ব হলো কবর। মৃত্যু চিরন্তন, তবুও আমরা বলি এটা কেমন করে হয়, তারও তো একটা সময় থাকা চাই! কতো বৃদ্ধ- বৃদ্ধারা কোমর বাঁকিয়ে চলছেন অথচ মাঝে মাঝে এমন কেউ চলে যায়, যা মেনে নিতে সত্যিই সহজ হয় না। অনেক অনেক কষ্ট হয়। আর সেই জায়গাটি কেউ পুরনও করতে পারেনা। ভালো মানুষের স্হায়ীত্ব কেন কম হয়? এটা ভাবতেই মাথা আউলায় যায়।
আমার শোকবার্তায কেউ কেউ অনুচিত বলেছেন, আমিও জানি ওভাবে লেখা ঠিক হয়নি। আমি ভীষন ভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি নিজেকে স্থির রাখতে পারছিলাম না সে সময়টাতে। হাত কাঁপছিলো, গলা শুকিয়ে যাচছিলো ঝোঁকের মাথায় যা মনে হয়েছে লিখেছি। কাল আকাশ বাতাসও তার জন্য কেঁদে- কেটে হয়তো আমার মতোই অভিযোগ করেছে। কোনকিছুর বিনিময়ে তাকে যদি ফেরত আনা যেত; মনে হয়েছিলো তাই করতাম। কিন্তু তা তো আর সম্ভব নয়।
সবচেয়ে বেশি ফোন রিসিভ করতে হয়েছে আমাকে। তার বিশ বছর আগের এক ছাত্র আমাকে ফোন দিয়ে রাগারাগী; কেন ফোন ধরছি না। আমি নিজেকে কিভাবে আটকে রেখে সবার কথার জবাব দিচ্ছিলাম সে শুধু আমিই জানি।
আরজু মুক্তার ম্যামের মায়ের পাশে থাকার ইচ্ছা ছিলো। শনিবার বিকেল ৫.৩০ রংপুর মেডিকেল বিভাগের কার্ডিওলজি বিভাগে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে সোমবার তিনি মডারেটর গ্রুপে জানান তার কোন সমস্যা নেই তিনি ভালো আছেন।
আসলে ডাক্তার এবং রিপোর্ট দুই তথ্যই ভুল ছিলো। এরপর দিত্বীয় স্ট্রোক করেন বুধবার। তারপর থেকেই চিকিত্সাধীন থাকা অবস্থায় মারা যান। যত্র- তত্র ডায়াগনষ্টিক সেন্টার আর ভুল রিপোর্ট কিংবা ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় এ রকম হাজারো সোনা রোদ ঝরে যায়। এর সঠিক সুরাহা ও আইনি ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
শনিবার রাত ১০.৩০ এ তাকে কুড়িগ্রাম এ বাবার বাসায় নিয়ে আসা হয়। আমি যখন গেলাম তখন গোসল করানো হচ্ছে। গোসল শেষ করে তাকে দেখলাম, যেন এক মুক্তোই শুয়ে আছেন।
রবিবার সকাল ১০.০০ টায় মাটি হয়েছে। অনেক মানুষ তার জানাজা ও মাটি দিতে এসেছিলো। মহিলারা কেদে কেদে অস্থির। তিনি যেমন সবাইকে ভালোবাসতেন সবাই তাকে তেমনি ভালোবাসে, ভালোবাসবে আজীবন।।
আরজু ম্যামের পরিবার থেকে জানানো হয়েছে এ মাসের শুক্রবার ২৪ তারিখ তার জন্য দোয়ার আয়োজন করা হবে। আমি সোনেলা পরিবার থেকে আমাদের অংশগ্রহনের কথা জানিয়েছি। কাল জানাবে বলেছে।
তিনি আমাদের অনেক দিয়ে গেছেন অথচ আমরা তার জন্য কিছুই করতে পারলাম না এটা বড় আফসোস। আজ সোনেলা পরিবারের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো। এ ক্ষতি কোনদিন পুশিয়ে উঠবে না। আর আমরা নতুন যারা তার আগ্রহে, উত্সাহে লিখতাম, জানিনা তারা এর পরে লিখতে পারবো কিনা?
তিনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। নিজের সব ছাপিয়ে অন্যের কষ্টের ভাগিদার হতেন। এমন মানুষ অবশ্যই বেহেস্তী। আল্লাহ তার ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে আর সকল ভালো কাজের অছিলায় তার বেহেস্ত নসিব করুক আমরা এই দোয়াই করবো সবসময়।।
২২টি মন্তব্য
বোরহানুল ইসলাম লিটন
অত্যন্ত দুঃখজনক।
দোয়া করি, মহান রাব্বুল আলামীন যেন
তার খাস রহমতের ছায়াতলে তাকে আশ্রয় দান করেন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমিন
আলমগীর সরকার লিটন
মহান আল্লাহ মুক্তা আপু জান্নাত বাসি করুন আমিন
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমিন
নাজমুল হুদা
আল্লাহ যেন আপুকে অনেক অনেক ভালো রাখেন।
এই আকস্মিক মৃত্যু আমাকে খুব নাড়িয়ে দিয়েছে।
মনে হলেই খুব কষ্ট হয়, চোখ ভিজে যায়। 😢
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমার তো মাথা পুরাই হ্যাং।। ভালো থাকবেন পরপারে।।
মনির হোসেন মমি
আসলে এদেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থার কথা আর কী বলব!! বিশেষ করে ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারগুলো।ওদের নিয়ন্ত্রণে না আছেন সরকার না আছে মানুষের বিবেক।
যাই হোক অবশ্যই সোনেলার অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।২৪ তারিখ দোয়ার আয়োজনে সোনেলার পক্ষ হতে যাওয়া উচিত।এ বিষয়ে ব্লগ কর্তৃপক্ষ কী বলেন তা দেখতে হবে।বেশী লোক না হলেও তার কাছাকাছি যারা আছেন তাদের যাওয়াটা উচিত।
আল্লাহ আপুকে বেহস্ত নসীব করুন এই প্রার্থণা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমিন। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক।
অনন্য অর্ণব
কেবল হৃদয় ভাঙ্গা আর্তনাদ !!!
এছাড়া আর কোন কথাই সরছে না। আপনি ঠিকই বলেছেন ভালো মানুষ হায়াত কম পায়। আরজু আপুর জন্যে কেবল দোয়া করা ছাড়া আমরা আর কিই বা করতে পারি?
মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা যেন আরজু আপুকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন। আমীন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক।।
নিতাই বাবু
সম্মানিতা ব্লগার মরহুমা আরজু মুক্তার বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা-সহ উনার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। সেইসাথে প্রার্থনা করি মহান সৃষ্টিকর্তা যেন উনাকে ওপারে ভালো রাখে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আমিন
ছাইরাছ হেলাল
লাভ ক্ষতি জানি না, এক ধরণের শূন্যতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।
সব কিছু ফাঁকা ফাঁকা লাগে/লাগতেছে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
কি যেন নেই নেই মনে হচ্ছে।।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সবকিছু কেমন জানি অসাড় লাগছে, এমন মৃত্যু আসলে কারো পক্ষেই মানা সম্ভব নয় তবুও এছাড়া আর কিইবা করার আছে? ঈশ্বর এর কাছে আমরা এখানেই ধরা। মৃত্যুর সময় হলে কেউ কিছু করতে পারে না 😥😥😥😥। তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। কখনো ভুলতে পারবো না তাকে
রোকসানা খন্দকার রুকু
আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।।।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
‘আরজু মুক্তা” আপার হঠাৎ করে বিদায় নেয়া মেনে নেয়া গেলেও বাস্তবতা হচ্ছে তিনি আর আমাদের মাঝে নেই।
আল্লাহ্ সুবাহানা তায়ালা তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করুন। আমীন।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক।।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আমীন। ছুম্মা আমীন।
হালিমা আক্তার
বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো। আল্লাহ আপাকে জান্নাত বাসী করুন।
সাবিনা ইয়াসমিন
কেউ কারো স্থান নিতে পারে না। আরজু মুক্তার শূন্যস্থান কখনো পুরণ হবার নয়।
আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতবাসী করুন। আমিন।
জিসান শা ইকরাম
খুব ইচ্ছে ছিলো আরজু মুক্তার জানাজায়, মিলাদে অংশ নেয়ার।
শুধু মাত্র আমার শারীরিক অসুস্থতার কারনে যাওয়া হলো না।
তবে অবশ্যই আমি যাবো ওর কবর জিয়ারত করতে, আশাকরি আরো কয়েকজন যাবে আমার সাথে।
আরজুর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।