এ পবিত্র সময়ে অন্য সময় থেকে কাজকর্ম নিয়ম মেনেই একটু বেশি থাক ঘুমাতে যেতেও দেরি হয়।কেবল মাত্র শুয়ে চোখের পাতা এক করেছি মাত্র , মৃদু কান্নার শব্দে সত্যি বিরক্ত হলাম। একটু চুপ করে ডুব মেরেও রইলাম।‘এরই মধ্যে ঘুমিয়ে গেলে ? একটু দেখেও গেলে না ?’
বিরক্ত হয়ে বললাম ‘কান্নাকাটির কী হল , কী হয়েছে তাই বল ?’ কান্নার শব্দ আরও বেড়ে গিয়ে চিৎকারে রূপান্তরিত হল।
‘একটা কালো পোকা কামড়ে ফুটো করে ফেলল ,তাড়াতাড়ি উঠে এসো’।
তড়াক করে উঠে সব আলো জ্বালিয়ে দিলাম।দেখলাম একটা কালো পোকা একটি বড় পাতা খেয়ে ফুটো করে ফেলছে। পোকাটাকে ধরে বাইরে ফেলে দিতেই কান্নাকাটির চিৎকার থেমে এবার খিল খিল শব্দ বেরিয়ে এলো। যাক বাবা ঝামেলা গেল ।
একজন গাছ ডাক্তার (প্রায় ভুয়া ) লাউয়াছড়া বন থেকে তার পছন্দের কিছু গাছ তুলে এনেছিলেন নিজের জন্য।সেখান থেকে আমাকেও দিয়েছেন অনেকগুলো একই প্রজাতির।বিদঘুটে জটিল কী সব নামধাম। নামে আমার কোন কাম নেই।গাছ-টাছের প্রতি আবার একটু বেশি মায়া মহব্বত আমার। গপসপ করি ওদের সাথে তাও জানেন তিনি।নিজ উদ্যোগে সাইন্টিফিক ষ্টোর থকে মাঝারী সাইজের তিনটি কনিকাল বিকার এনেছেন।প্রায় অর্ধেক বিকার পানিতে গাছ গুলো রেখে আমাকে দিয়েছেন । মহানন্দে আমার পড়ার টেবিলে রেখে দিয়েছি। মাটির গাছ পানিতে টিকবে কী না ইচ্ছে করেই জানতে চাইনি। চিকিৎসা সহ প্রয়োজনীয় দেখভাল নিজ থেকেই করেন। সাপ্তাহিক , পাক্ষিক ও মাসিক। মাঝে মধ্যে আবার পানির মধ্যে কী সব যেন দেয়ট্যায়। যা খুশি দিক। কদিনেই দেখতে দেখতে বেশ ডাগর ডাগর নাদুস নুদুস হয়েছে । আমি শুধু চোখে চোখে ও চোখে চোখ রাখি।
বেত্তান্ত এই ই ।
আবার ঘুমের আয়োজন , ফুছ ফুছ করে নাকি নাকি কান্না।(ধরে নেবেন না যেন আবার এরা পেট কান্দুরা)। বিরক্ত হলাম , সমস্যা জানতে চাইলাম ।
‘ মা ,আমরা তোমার কাছে ঘুমাবো’।
হে ঈশ্বর , আমাকে অরণ্য করে দাও ।
২৩টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
মাঝে মাঝে আমারও তো গাছ , অরণ্য হতে ইচ্ছে করে ।
যাক ইচ্ছের প্রকাশটা আপনার মাঝে দেখলাম 🙂
‘ পেট কান্দুরা ‘ এই প্রথম শুনলাম ।
মাছ পর্ব শেষে এখন গাছ পর্ব শুরু
ভালো ভালো —-
লেখা কিন্তু অনেক ভাল্লাগছে ।
শুন্য শুন্যালয়
আসলেই পেট কান্দুরা কি?
বনলতা সেন
বলেই দিয়েছি ।
বনলতা সেন
তাহলে অরণ্য হওয়ার ইচ্ছের একাত্মতা পাওয়া গেল ।
পেট কান্দুরা অপ্রচলিত শব্দ , এর অর্থ হল মায়ের ন্যাওটা হয়ে মা যখন কাঁদে সে ও দেখাদেখি কাঁদে।
আবার কথায় কথায় ফুছ ফুছ কাঁদে এমন । আমার গাছেরা কিন্তু এমন না ।
কত পর্ব যে আছে আল্লাহ্ মালুম ।
কষ্ট করে পড়ার জন্য আনন্দিত বোধ করছি ।
শুন্য শুন্যালয়
হে ঈশ্বর আমাকে অরণ্য করে দাও। মা যে এমনিতেই এক অরণ্য। পড়ার টেবিলের অই গাছগুলো দেখতে মন চায়।
ঈশ্বর বাঁচিয়ে রাখুক পোকার কামড়ের হাত থেকে এই গাছগুলোকে, অরন্যকে। অনেক দিন পর বেত্তান্ত পড়ে ভালো লাগলো 🙂
বনলতা সেন
আমারও ঐ গাছ গুলো দেখাতে পারলে আরও আনন্দ হত ।
এমন বেত্তান্ত পড়ার মানুষ খুবই কম । চাই গাছগুলো আমার থেকেও বেশি কাল বেঁচে থাকুক
সুখের শান্তিতে ।
মায়েরাই অরণ্য । কেউ মানুক বা না মানুক ।
আবার এসে আপনাদের মাঝে আউল ফাউল লিখতে পারছি দেখে ভালোও লাগছে ।
আপনার কাছ থেকে সুন্দর ছবি দেখতে চাই । কঠিন ছবি নু কিন্তু । তাহলে আপনাকেই আবার বুঝিয়ে
বলে দিতে হবে । ছবিও নাকি কবিতা ?
এখনই ভয় পাচ্ছি । না ,কবিতাকে আবার ভয় কী ? সে তো আরও আপন ।
ভালো থাকুন । ছবিতে কবিতা লিখুন ।
শুন্য শুন্যালয়
প্রথমেই আউল ফাউল লেখা এই কথায় তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গাছ বেঁচে থাকুক, তবে সবাই চলে যাবার সময় সাথে নিয়েই যায় কিছু।
ছবি তে কবিতা লেখা যায়, কবিতা গল্পও বলে, কিন্তু সেতো আমার দ্বারা সম্ভব না গো বনলতা দি। কেউ নিশ্চয়ই পারে।
দেখাতে চাইলে নিশ্চয়ই পারবেন। আরো পড়তে চাই, এমন বেত্তান্ত হলেও চলবে।
বনলতা সেন
আপনাদের উৎসাহে সত্যি সত্যি এমন বেত্তান্ত লিখে যেতে পারতাম তাহলে
কতই না আনন্দ হত । যা এবং যেমন লিখতে চাই তা হচ্ছে না কিছুতেই । যন্ত্রণা এখানেই ।
কেন আপনাকে দিয়ে হবে না ? বলুন ?
মন দিয়ে ভালোবাসতে শুরু করুণ ছবিকে , ছবি কথা বলতে বাধ্য । না হয় প্রথমে
এলেবেলে হবে । হোক তা । আপনি থামবেন না । নিজ মনে চলুন ।একা চলুন ।
আমি আপনার ভাল ছবি , কথাবলা ছবি দেখবই । আমি ই কথা দিচ্ছি ।
শুন্য শুন্যালয়
হয়ে যাবে, পারলে বনলতা দি-ই পারবে। লিখে যান এমনই।
আমিও অপেক্ষাতেই থাকবো। আপনাদের সবার উৎসাহে চেস্টা চালিয়ে যেতে পারবো এটুকু জানি। ভালো থাকুন দি।
শিশির কনা
এ এক নতুন বনলতা সেন । সবাই কত কত পালটে গেলো , আমি যেখানে ছিলাম সেখানেই আছি । শকুন্তলা পড়েছি আপনার ।
কি বলবো !! কতটা ভালো হয়েছে !! মা তো অরণ্য । পরিপুর্ন অরণ্য হয়েই যান ।
বনলতা সেন
মোটেই কোন নূতন কেউ না । আমি এই আমি আপনাদের সেই জন ই ।
আপনিও আমাদের সাথেই আছেন । থাকবেন ও । ও লেখাগুলো পড়েছেন জেনে আরও ভালো লাগল ।
হ্যাঁ ,অরণ্যই মা । মায়েরা ই অরণ্য ।
আপনি সাথে থাকলে অনেক ভালো লাগে ।
ছাইরাছ হেলাল
‘ পেট কান্দুরা ‘ ! আপনি বলে না দিলে ………………কই পান ?
‘আমি শুধু চোখে চোখে ও চোখে চোখ রাখি।’ এমন বাক্য আপনাকেই সাজে ।
কোত্থেকে পান ! ভান্ডারটির ঠিকানা দিন অন্তত । এত দিন পর এসেই মেরে দিলেন বেমক্কা ।
অরণ্যদের হিংসে করব না আপনার লেখাকে তাও বুঝতে পারছি না ।
আপনি না হয় অরণ্য হলেন । হতেই পারেন , অসম্ভব কিছুই না ।
আমি ভাবছি আমাদের কী হবে ?
বনলতা সেন
এমন মন্তব্যের উত্তর দেয়া যায় না ।
কঠিন সত্য হল কারো জন্য কিছুই আটকে থাকে না ,থাকবেও না ।
আদিব আদ্নান
আমার মাথা আউলা আউলা লাগে । গাছের সাথে কথা বার্তা নিয়ে লেখা আগে পড়েছি বলে মনে পড়ে না ।
আপনি অরণ্য হলে হন তবে লেখা চালু রাখলেই হবে ।
এ সব লেখে কী করে ?
বনলতা সেন
ইহা কোন কঠিন কাজ নয় ।আপনিও কথা বলতে শুরু করে দিন ।
প্রথম প্রথম একটু বিদ্ঘুটে লাগলেও পড়ে আর সমস্যা হবে না ।
ভালো থাকুন । ফরমালিনকে না বলুন ।
ব্লগার সজীব
বনলতাদি , আপনি অরন্যই হয়ে যান । আমরা আপনার অরণ্যে চলে যাবো , এই কষ্টের সমাজ আর ভালো লাগছেনা । আপনার কাছে গিয়ে এত ভালো ভালো একান্ত অনুভুতি শুনবো ।
বনলতা সেন
আরে গেলে মানে যেতে পারলে বা যেতে দিলে আপনাদের নিয়েই যাব ।
বেশ সুন্দর করেই বলেছেন ।
মশাই
অজ্ঞাত কোন কারণে কেন জানি মনে হয়েছিল আপনার লেখা আজ পাব যাইহোক পেলাম ভাল লাগল।
অরণ্য হতে চান তাতে কোন সমস্যা দেখছি না
এখন তাকিয়ে থাকেন ঈশ্বরের দিকে, হলেও হতে পারে।
চোখে যদি পোকা ধরে পাতা রক্ষার দায়িত্ব দেবার কেউ আছে?
মাছের পর্ব শেষ করেই গাছের পর্ব! দারুণ।
যমক বলব না অনুপ্রাস?
বনলতা সেন
অরণ্য বলার ছল করে মাতৃত্ব বলতে চেয়েছি ।
সাহায্য একমাত্র ঈশ্বরের কাছ থেকেই পাবার আশা করি । পাই বা না পাই ।
কখন কোন পর্ব এসে যায় তার কোন ঠিক নেই ।
পড়লেন দেখে আনন্দিত হচ্ছি ।
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
শুধু পানিতে গাছ বাঁচে ? অবাক হলাম । লেখার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হলাম বনলতা আপু । আপনার চিন্তায় ব্যাপক ভিন্নতা এবং গভীরতা । সময় নিয়ে আপনার সব লেখা পড়তে হবে ।
বনলতা সেন
শুধু পানি । কোন রোদেও নিতে হয় না । গাঢ় সবুজ পাতা ।
নষ্ট করার মত অনেক সময় হাতে নেয়া ঠিক না ও হতে পারে ।
পড়ছেন তাতেই আনন্দিত ।
মিথুন
আমি আপনার অই অরণ্যের একটি গাছ হতে পারলেই খুশি হবো। এমন করে বর্ণনা দেয়া শিখে ফেলতে চাই আপু, শেখাবেন?
বনলতা সেন
আপনাকে শেখাতে হবে না । যা শিখেছেন তা থেকে একটু ধার দিলেই হবে ।
খুব সুন্দর লেখেন আপনি ।