KNOW THYSELF

ফ্রাঙ্কেনেস্টাইন ৯ নভেম্বর ২০১৪, রবিবার, ০১:১৭:২৪অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৮ মন্তব্য

সমবয়সী অনেক মেয়েই আমার সাথে তাদের কষ্টের কথা শেয়ার করে …

অদ্ভুত হলেও সত্য যে তাদের কেউ আমাকে কখনো দেখেনি, আমার সাথে ফেসবুক ছাড়া তাদের কোন পরিচয়ের সূত্র নেই … তারপরেও তারা শেয়ার করেছে !! আর অদ্ভুত কারণে আমিও কখনো কাউকে জিজ্ঞেস করিনি যে কেন আমার সাথেই তাদের কষ্টগুলো শেয়ার করছে। নিজের ভাবনা-চিন্তায় যতটুকু পেরেছি ততটুকুই চেষ্টা করে গেছি তাদের সাহায্য করতে … বলাই বাহুল্য সমস্যা গুলো ৯৫ শতাংশই ছিল প্রেমজনিত। নিজে এখন পর্যন্ত ওই ধরণের কাজে যুক্ত হতে পারিনি তাই বোধহয় খুব সহজেই একটা কথা বলে দিতে পারি। কিন্তু তারপরেও কিছুটা হলেও অনুভব করার চেষ্টা করি যে এই বয়সে এই ধরণের পরিস্থিতির শিকার মেয়েদের মনের অবস্থাটা কিরকম হতে পারে !!

 

সবাইকেই আমি খুব কমন একটা কথা বলে এসেছি, ” যে চলে গেছে তাকে নিয়ে পরে থেকে কি হবে !! তুমি বরং আনন্দিত হও কারণ তুমি এমন একজনকে হারিয়েছ যে কিনা তোমাকে ভালোবাসেনি আর সে এমন একজনকে হারিয়েছে যে কিনা তাকে সত্যিকার অর্থে ভালোবেসেছিল। ”

এই কথা তো ফেসবুকে সবাই হাজার জায়গাতে দেখেছে !!আর বলা যত সহজ করা কি তত সহজ নাকি ?? আপনি চাইলেই এটা ভেবে সান্ত্বনা নিতে পারবেন ?? আমার তো মনে হয় না। মনে হয় না কারণ যখন কোন আপনজনের মৃত্যু হয় তখন ” সবাইকে একদিন আল্লাহর কাছে যেতে হবে ” ভেবে নিজের কষ্টটা পুরাপুরি চাপা দিতে পারেন ?? পারেন না। কেউ পারে না। এই ব্যাপারটা আমি নিজে সদ্য খেয়াল করেছি।

অনেকেই বলেন সময়ের কথা। সময় অতিক্রমের সাথে সাথে অনেক কিছু পরিবর্তন করে দেয়। আজকে যাকে ছাড়া বাচা অসম্ভব মনে হয় একদিন তাদের ছাড়া বেঁচে থাকাকে সম্ভব করে তুলে সময়ই। এই সময় অতিক্রম হওয়ার অপেক্ষা করে ধাতস্থ হওয়াটা অনেক ভালো উপায়। তবে সেইসব ক্ষেত্রে যে সব ক্ষেত্রে ভালোবাসার মধ্যে বাস্তবতার চেয়ে আবেগ বেশি থাকে। কিন্তু যেগুলো বাস্তবতার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সক্ষম সেগুলোও কি একই পর্যায়ে পরে ?? এতদিন ধরে মানতাম সময় অতিক্রম হওয়ার সাথে সবই সম্ভব।

কিন্তু সেটা যদি অনেক দীর্ঘ হয় তাহলে এত দীর্ঘক্ষণ ধৈর্য কয়জন ধরে রাখতে পারবে এই প্রশ্নটা উঠতেই পারে। সাধারণ অবস্থাতেই যেখানে দীর্ঘ সময় ধৈর্য ধরাটা অনেক কঠিন আর সবার পক্ষে সম্ভবও না সেইখানে ভাঙ্গা হৃদয় নিয়ে মানুষ কতদিন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে পারবে বলে আপনি মনে করেন ?? অনেক অনেক কঠিন। কতটা কঠিন তারাই অনুভব করতে পারবে যারা নিজেরা এই পরিস্থিতিতে পড়েছেন তারাই ভালো জানবেন। তো এই সমস্যার সমাধান কি ?? আমি আগেই বলেছি আমি নিজে এই ব্যাপারে অভিজ্ঞ নই তাও একটা সমাধানের কথা বলতেই পারি … সেটা হচ্ছেঃ

” KNOW THYSELF ” ঢাকা কলেজের মেইন গেটের ভিতরের দিকে উপরে এই কথাটা লেখা আছে। পড়ে মনে হতে পারে খুব সাধারণ একটা কথা। কিন্তু আসলেই কি তাই ?? একটু ভেবে দেখুন। একজন মানুষ যখন নিজেকে চিনতে সময় ব্যয় করবে সে কি করে পারবে আরেকজনের চলে যাওয়ার কষ্টে কষ্ট পেতে !! নিজেকে চেনা কিন্তু সহজ কাজ নয়।

অনেকেই বলেন, ” নিজেকে চেনা পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ। ” আমি অতটা জটিল করবো না। তবে এটা ঠিক নিজেকে চেনা কঠিন তবে আপনি যদি সঠিক পন্থায় ভাবেন তাহলে ততটা কঠিনও না। তাহলে সঠিক পন্থা কোনটা ?? উত্তর হচ্ছে একেবারে যখন গোড়া থেকে মানে আপনার জন্ম থেকে ভাবতে শুরু করবেন। ভেবে দেখেন জন্মের পর থেকে আপনি কিভাবে বড় হলেন, কি করে আপনি কাউকে ভালবাসার উপযুক্ত হলেন !!

সময় অতিক্রম হওয়ার অপেক্ষা না করে নিজেকে সময় দিয়ে নিজেকে নিয়ে ভাবেন। দেখবেন সব সমস্যা দূর হয়ে যাচ্ছে। যার জন্য কষ্ট পাচ্ছেন দেখবেন আস্তে আস্তে সে অনেক দূরে সরে যাচ্ছে। একদিন তার কথা মনে পড়লে আপনার হয়তো হাসি পাবে ” হায় !! আমি কি পাগলই না ছিলাম। ”

নিজেকে নিয়ে ভাবেন, নিজেকে চেনার কাজে সময় ব্যয় করেন। পৃথিবীর কারো জন্য আপনি কষ্ট পাবেন না।

শুধু একবার চেষ্টা করেই দেখুন না !!

৫১৬জন ৫১৬জন
0 Shares

১৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ