
-কীগো কই গেলা?
দূর রান্না ঘর হতেই গিন্নীর কর্কস গলার শব্দ।
-কী হইছে এতো চিল্লাও কেন?
-আরে আমিতো খুজেঁ পাচ্ছি না।
-ভাল করে খুজেঁ দেখ পাবে
-না,কোথাওতো খুজেঁ পাচ্ছি না,তুমি একটু এদিকে আসবে।
গিন্নী একগাল গোস্সা নিয়ে আনমনে বিরবির শব্দ করতে করতে স্বামীর কাছে এল।
-বলো কী হয়েছে?
-আমাকে বলছ?
-দেহতো এহন হেয় কয় কী!তুমিইতো ডাকলে আর এখন বলছো…!!
-আমি তোমাকে ডাকছিলাম বুঝি!
-জ্বি জনাব(হাতে রান্নাঘর হতে আনা বড় একটা চামচ উচিয়ে)
-ও!তাহলে মনে নেই।
আচ্ছা তোমার হয়েছেটা কী বলোত?আজ কয়দিন ধইরাই তুমি কেমন সব উল্টাপাল্টা কাজ করতাছো।গতকাল তুমি আমার একমাত্র ভাইটিরও চিনলানা!ভাইটি কত বছর পর আমার এহানে আইলো আর তুমি কীনা তারে চিনলানা বলে কথাও কইলানা? তোমার নিজের মেয়ের জন্মদিন গেল পরশুদিন-তোমাকে কইছিলাম ছোট একটা কেক আনতে আর তুমি কী আনলে?কতগুলো বইয়ের গাট্টি।তাও তোমার ঐ সব প্রিয় লেখক না ফেকক তাদের বই।আবার সেদিন অফিসে যাবে দুই পায়ে দুই রকমের মুজো পড়েছিলে!!!……।।আর একটা বদ অভ্যাস বহু বছর ধরে আছে-যখন যেখানেই যাও তখনি মোবাইল টিপাটিপি করো।
গিন্নীর এসব বকবকানী যেন তার কানেই ঢুকছেনা।সে আপণ মনে হাতে থাকা তার মোবাইল স্কিন স্ক্রুল করেই যাচ্ছেন আর মাঝে মাঝে হাসছেন আবার কী যেন লিখছেন।এর মধ্যে গিন্নীর চোখ আটকে গেল তার মোবাইল স্কিনে।সে হঠাৎ ফোনটা ধরার চেষ্টা করল।মফিজ তার হাতটা সরিয়ে নিল।
-কী করছ তুমি!!!দেখি দেখি।
বলে এবার মোবাইলটা গিন্নীর নিজ হাতে নিয়ে নিলেন।মোবাইলে চোখ রাখতেই গিন্নীর চোখ ছানা বড় বড় হয়ে গেল।একবার স্বামীর দিকে তাকায় আবার মোবাইল স্কিনের দিকে তাকিয়ে কী যেন পড়তে লাগল।বেচারা মফিজতো ভয়ে নিশ্চুপ হয়ে বউয়ের দিকে এতিমের মত ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন আর অপেক্ষা করছেন বউয়ের প্রশ্ন বানের ঝরের তান্ডপের অধ্যায়।কিছু ক্ষণ পর মফিজ এবার লক্ষ্য করছেন বউয়ের মুখের দিকে কী প্রতিক্রিয়া হয়।নাহ্ বউয়ের মুখবয়ে ধীরে ধীরে হাসির ঝলক দেখতে পেয়ে মনে যেন তার পানি এলো।
-তাইতো বলি তোমার এই দিনটা এলেই কেন বছর বছর এতো উল্টাপাল্টা কান্ড ঘটাও!
-কী বলছো তুমি!আমিতো তোমার কথার মাথা মন্ড কিছুই বুঝতে পারছি না!
-এসব কী লিখেছো?তোমার আবার আরেক পরিবার কবে হলগো?সেই পরিবারের প্রিয়তমার নাম দেখছি সোনেলা।আর মেয়েগুলোর নামও দেখছি-ঐ প্রিয়তমার নামের সাথে মিল করে রাখা-একজনের নাম সো’নালী,দ্বিতীয় জনের নাম না’বিলা,তৃতীয়জন এখনো অভূতপূর্ব!জন্মই হয়নি অথচ নাম রেখে দিয়েছো লী’লাবতী!বাহ্ চমৎকার তোমার দ্বিতীয় সংসার।
বউ আরো কিছু অংশ পড়লেন এবং মফিজকে যা বললেন তা শুনেতো রীতিমত সে অবাক।যার ভয়ে মফিজ মোবাইল দেখেন চুপি চুপি সে আজ এতো খুশি!
-তোমার পরিবারে আমিও যাব,নিবে আমায়?
-মানে?
-মানে হল ২৩ সেপ্টেম্বর তোমার পরিবারের জন্মদিন।সেই জন্মদিনে নিশ্চয় পার্টি হবে,হবে ভাল মন্দ খাওয়া দাওয়া?কত লোক আসবে তাদের সাথে পরিচিত হতে আমার না খুব ইচ্ছে করছে।এই সাত বছরে তুমি আমাকে বহু ঠকিয়েছ আর ঠকতে চাই না।বলো নিবে কীনা?
এবার কী উত্তর দিবো বলেন প্রিয় পরিবারের প্রিয় ব্লগার ভাই বন্ধুরা ?
উত্তর যাই হোক প্রায় সাত বছর পর বউ জানল এতোদিন চুপি চুপি যে প্রেম করে চলেছি,যার সাথে সে আর কেউ নয় সবার প্রিয় আমাদের এই সোনেলা ব্লগ পরিবারের সাথে।তার জন্মদিনে বউ আমার স্পেশাল উইস জানিয়ে বলল আমাকে নাকি বিশেষ জরিমানা করাবে!এতোটা বছর কেন তাকে জানাইনি এই পরিবার ছাড়াও আমার আরেকটি পরিবার আছে- যার নাম “সোনেলা ব্লগ”
সোনেলা ব্লগ পরিবারে সবাইকে নয় বছর পদার্পনে শুভেচ্ছা-অভিনন্দন।
ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।জয়তু সোনেলা।
৩৪টি মন্তব্য
নাজমুল আহসান
পুস্পস্নাত শুভ জন্মদিন সোনেলা।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ প্রিয়।
পুস্পস্নাত শুভ জন্মদিন সোনেলা ব্লগ।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি তো পরকিয়া করে ধরা পড়ে এখন নানান কথা বলছেন।
শুভেচ্ছা আপনাকেও।
মনির হোসেন মমি
হা হা হা-হ্যা ভাইজান।এখন আর সমস্যা নেই।সতীন বলে মেনে নিয়েছে।
শুভেচ্ছা অনবরত।
ফয়জুল মহী
ফুলেল শুভেচ্ছা সোনেলা । দীর্ঘায়ু হোক, জয়তু সোনেলা।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ প্রিয়।
সুরাইয়া পারভীন
ধুর! আমি তো ভাবলাম হাতের চামুচ দিয়ে আগে কয়েক ঘা দেবে
তা না সুবোধ বালিকার মতো সোনেলার প্রেমে পড়ে গেলো।
এবার ভাবীকে নিশ্চয়ই নিয়ে আসবেন ভাইয়া
চমৎকার পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ অশেষ
ভারো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
মনির হোসেন মমি
ধুর! আমি তো ভাবলাম হাতের চামুচ দিয়ে আগে কয়েক ঘা দেবে
হা হা হা—একেই বলে ভাবীভক্ত।
চেষ্টা থাকবে-শুভ ব্লগিং। জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
সুরাইয়া পারভীন
হা হা হা হা
আপনাকেওঅনেক অনেক শুভেচ্ছা
মোঃ মজিবর রহমান
ব্লগ মানেই সোনেলা, ঘরসংসার সোনেলা।
হাসা কথা আজই একখানা কই আমি।
আমি একদিন মন্তব্য লিখছি বউ কাইড়া নিল মোবাইল। সেও মন্তব্য লিখবে? লেখ বললাম সে যা করল আমি বিপদেই পড়ে গেলাম। ভাগ্যিস সেন্ড করেনাই। আমার বদলে তার পক্ষ থেকেই লিখে বসে আছে।
আমার বাস্তব ঘর ভাংগার জোগাঢ় হচ্ছিল।
মনির ভাইয়ের লেখায় মনে পড়ল।
অন্তর মমে আছে গেথে, থেকে আজিবন।
জয়তু সোনেলা।
মনির হোসেন মমি
এরকম ঘটনা প্রায় আমাদের সবার বেলায় ঘটে।
ধন্যবাদ প্রিয় শুভ ব্লগিং। জন্মদিনের শুভেচ্ছা
মোঃ মজিবর রহমান
জয়তু সোনেলা।
সুপায়ন বড়ুয়া
মফিজের বউ তো ভারী মজার
এতদিন পরে জানলো জন্ম সোনেলার।
শুভ শুভ দিন সোনেলার জন্মদিন।
ভালই লিখলেন। শুভ কামনা।
মনির হোসেন মমি
জ্বী ভাইজান।
শুভ ব্লগিং। জন্মদিনের শুভেচ্ছা
আরজু মুক্তা
এতোদিন লুকায় না রাখলে, আমরা আর একজন ভালো ব্লগার পেতাম।
হা হা।
জয়তু সোনেলা
মনির হোসেন মমি
হা হা হা
জয়তু সোনেলা
শুভ ব্লগিং। জন্মদিনের শুভেচ্ছা
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চমৎকার ভাইয়া । সোনেলার জন্মদিনের শুভ এই ক্ষণে হাসতে হাসতে, খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলাম। ভাবী এতো সহজেই সতীনকে মেনে নিবে ভাবতে পারিনি। সেই উপলক্ষে মিষ্টিমুখ করাতে হবে। সোনেলার জন্মদিনের শুভেচ্ছা
মনির হোসেন মমি
আর কইয়েননা আপু বেশ যন্ত্রণায় ছিলাম।ব্লগের প্রয়োজনে মোবাইনেতো চোখ রাখতে হত কিন্তু সে বেশ বিরক্তবোধ করত।গত দুদিন আগে সোনেলা পরিবারে অংশীদার বানিয়ে ফেলেছি।এখন আর আমার চিনতা নেই।ঘরতো ঠান্ডা হল।
শুভ ব্লগিং। জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
তৌহিদ
সোনেলা ব্লগের অষ্টম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সোনেলায় বিচরণকারী সকল ব্লগার, পাঠক এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রাণঢালা অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জানাই।
সোনেলা আমাদের পরিবার আপনার লেখায় তা আবারো প্রমাণিত হলো।
শুভকামনা জানবেন ভাই।
মনির হোসেন মমি
হুম শুভ ব্লগিং
জন্মদিনের শুভেচ্ছা
আলমগীর সরকার লিটন
চমৎকার লেখেছেন মমি দা অনেক অনেক শুভজন্মদিন শুভেচ্ছা জানাই
মনির হোসেন মমি
অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় কবি।
শুভ ব্লগিং। জন্মদিনের শুভেচ্ছা
রেহানা বীথি
দারুণ মজার ব্যাপার তো! ভাবীসাহেবাকে দেখতে চাই সোনেলায়। অনেক শুভেচ্ছা আপনাকে এবং সোনেলা পরিবারকে।
মনির হোসেন মমি
গোয়ারা টাইপের ভাবী আপনার- লেখাপড়া জানা থাকলেও টার্চ মোবাইলই সে চালায় না।ফেবুক ব্লগতো দূরকা বাত।
শুভ ব্লগিং। জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
জিসান শা ইকরাম
সোনেলা আমাদের অনেকের কাছেই একটি আবেগের নাম,
একটি আন্তরিক পরিবারের নাম,
একটি আনন্দ বেদনার কাব্যের নাম।
সুখ দুঃখ হাসি আনন্দে মিশেছিলাম গত আটটি বছর, নয় বছরে পদার্পন করেছে আজ।
সোনেলার জন্মদিনের সোনেলা শুভেচ্ছা আপনার এবং সকলের জন্য।
শুভ ব্লগিং।
মনির হোসেন মমি
শুভ ব্লগিং। জন্মদিনের শুভেচ্ছা সহ কৃতজ্ঞতা জানাই ব্লগ কর্তৃক্ষকে।
রেজওয়ানা কবির
হায় হায়! এত লুকোচুরি,ভাগ্যিস ভাবি এত বছর পর জানলো,তবে মেনেও নিল,এটা জেনে ভালো লাগল।তবে ভাবিকে একটা স্পেশাল ট্রিট দিয়েন।ভালো থাকুন,আপনার দুই পরিবার নিয়ে।
মনির হোসেন মমি
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
শুভেচ্ছা রইল।
প্রদীপ চক্রবর্তী
গল্পে ভারী মজা দিলেন, দাদা।
শুভ্র শরতে সোনেলার জন্মতিথিতে বৃষ্টিস্নাতের ন্যায় আজ পুষ্পবৃষ্টি হচ্ছে।
বেশ ভালো লাগলো।
শুভ জন্মতিথি প্রাণের সোনেলা🌹
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ প্রিয় দাদা।
শামীম চৌধুরী
সোনেলা জন্মদিনে শুভেচ্ছা।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান। শুভেচ্ছা জন্মদিনের।
রোকসানা খন্দকার রুকু
দুই পরিবার তাহলে তো আমাদের সবারই।কি সর্বনাশ!
শুভ কামনা রইলো দুজনের জন্যই।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ আপু।ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। শুভেচ্ছা অবিরত।