
ধুর শালা, শালা বেজন্মার দল, যত রাগ ওই ঘরগুলোর ওপর! সব মিশমার করে দিলো চোখের পলকে! নেশার পয়সাটাই মাটি। ভর সন্ধ্যেবেলায় নেশা করে গায়ে এমন জ্বালা ধরেছিল যে বলার না। এসে দেখি কিচ্ছু নেই? ঘর টর ভেঙে ফেলে তাড়িয়ে দিয়েছে সবাইকে!
কাঁদু ঠিক বুঝতে পারলো না, লোকটা কি নেশার ঘোরে ভুল বকছে? কার ঘর ভাঙলো? কেই বা ভাঙলো? বুকের ভেতর যেন ডুম ডুম করে উঠলো হঠাৎ। কৌতূহল দূর করা দরকার! অন্ধকারে আবছা লোকটা ততক্ষণে পাশ কাটিয়ে গেছে। কিছুটা পিছিয়ে এসে জানতে চাইলো কাঁদু,
কোন ঘর ভেঙেছে, আপনি কি পরিষ্কার করে বলবেন আমাকে? থমকে দাঁড়ায় টলমলে লোকটা। অন্ধকারেও বোধহয় অনুমান করতে পারে কাঁদুর বয়স। বলে,
তুমি কে গো ছোকরা? এই বয়সেই ওসব পাড়ায় যাতায়াত শুরু করেছো? ভালো ভালো….. শুরু করলে আগেই করা উচিত! আমার বয়সে যেতে যেতে তুমি অভিজ্ঞ হয়ে উঠবে অনেক, হা হা হা….
বিরক্ত হয়ে কাঁদু বললো, যা হবে দেখা যাবে, দয়া করে বলুন তো কি হয়েছে?
হবে আবার কী! ওই যে রাস্তার মেয়েমানুষগুলো ঘর তুলে ব্যবসা করছিল, ওটা তো সরকারি জায়গা। ওখানে কেন থাকবে ওরা? পরিবেশ নষ্ট! তাই ঘর ভেঙে ফেলে তাড়িয়ে দিয়েছে ওদের। আসলে কি জানো, বনিবনা হয়নি বোধহয়, ওই শালার পুলি……
আর শোনার দরকার নেই। কাঁদুর বুকের ভেতরটা হু হু করে উঠলো। তাড়িয়ে দিয়েছে? কোথায় গেছে তাহলে সুরভী, খুঁজে যদি না পায় আর!
শীত কোথায় উধাও হয়ে গেল যেন। পায়ের নিচের এবড়োখেবড়ো শক্ত মাটির চটি ভেদ করে গুঁতো দেয়া উপেক্ষা করে ছুট লাগালো জোরে। যেন ওখানে গিয়ে দেখতে পাবে সুরভী ওই ভেঙেফেলা ঘরগুলোর স্তুপে বসে আছে চুপটি করে। কারণ সুরভী তো জানে, কাঁদু যে খুঁজবে তাকে! গভীর বেদনা যখনই ভর করে, তখন যে সুরভী ছাড়া কাঁদুর আর কোনও আশ্রয় নেই! কী এক অদ্ভুত আশায় ছুটতে ছুটতে অবশেষে পৌঁছায় কাঁদু ওখানে। অন্ধকারেও তছনছ ঘরগুলো করুণচোখে তাকিয়ে আছে কাঁদুর দিকে। খুঁজতে থাকে কাঁদু। খুঁজতে খুঁজতে পৌঁছে যায় ধ্বংসস্তুপের পেছন দিকে। একটু আলো যেন দেখা যাচ্ছে ওখানে!
কে আছে? কেউ তো আছেই! ক্ষীণ আলোয় বড় উজ্জ্বল দেখালো একটি মুখ। সব ভয় কাটিয়ে মুখটি তাকিয়ে আছে কাঁদুর দিকে।
রাত কত হয়েছিল কে জানে, সুরভীর একটা হাত শক্ত করে ধরে কাঁদু বললো, চলো!
মেয়েটা ঠিক বুঝতে পারেনি। বললো, কেন… কোথায়?
চলবে…..
বিঃদ্রঃ গল্পটা একটু বড়। ধৈর্য ধরে যারা পড়ছেন কৃতজ্ঞতা জানাই তাদের । তবে আর বেশি ধৈর্য ধরতে হবে না , আগামী পর্বেই শেষটুকু দিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো। আশাকরি সাথে থাকবেন সবাই। ধন্যবাদ সবাইকে ।।
২৫টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
কাঁদু তো দেখছি বিরাট মানবিক কাজে জড়াচ্ছে ক্রমান্বয়ে।
রেহানা বীথি
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভালো থাকুন সবসময়।
সুরাইয়া পারভীন
আমি ভয় পেয়েছিলাম
কালু বোধহয় খুঁজে পাবে না সৌরভীকে।
পেয়েছে জেনে শান্তি পেলাম
পরিণতির অপেক্ষায় রইলাম
রেহানা বীথি
কথায় আছে না, যে যা ধায় সে তা পায়? ভালো থাকবেন সবসময়।
শুভকামনা নিরন্তর।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
খুব ভালো লাগছে বড় হলেও। ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন সবসময়
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ আপু।
ভালো থাকুন সবসময়।
জিসান শা ইকরাম
অকর্মন্য কাঁদু বিরাট সাহসের পরিচয় দিলো এই পর্বে।
দেখা যাক আগামী পর্বে কি হয়।
ভালো লাগছে গল্প।
শুভ কামনা।
সুপায়ন বড়ুয়া
জিসান ভাই লেখার স্পেস বেশী হচ্ছে , সুপর্না দির হলো। যেটা আমার হয়। একটু দেখেন প্লিশ।
রেহানা বীথি
ভালোলাগাটুকুই আমার পরম পাওয়া।
ভালো থাকুন ভাইয়া।
প্রদীপ চক্রবর্তী
কাঁদু অবশেষে সফল হতে চলছে।
পরের পর্বের অপেক্ষায় দিদি।
রেহানা বীথি
ভালো থাকবেন ভাই।
শুভকামনা রইল।
সুপায়ন বড়ুয়া
বড় হলেও ধরে রাখার কৌশলতো
আপনার জানা। ভাল লাগলো।
শুভ কামনা।
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ দাদা।
ভালো থাকুন সবসময়।
তৌহিদ
সুরভীর প্রেমে পড়ে কাঁদু মানবিক হচ্ছে মনে হয়! প্রেমে পড়লে মানুষ কত কিছুইনা করে! ভালো লাগছে পড়তে। চলুক গল্প।
তৌহিদ
নববর্ষের শুভেচ্ছা আপু
রেহানা বীথি
মানুষের মন বড় রহস্যময়। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কি হয়। আগামীকাল পুরোটা দিয়ে দেবো।
শুভ নববর্ষ ভাই।
হালিম নজরুল
আগেই বলে দিলাম অসাধারণ হতে যাচ্ছে গল্পটি।
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময়।
ইসিয়াক
গল্পটি দারুণ লাগছে।
নববর্ষের শুভেচ্ছা আপু ।
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
নববর্ষের শুভেচ্ছা আপনাকেও।
কামাল উদ্দিন
কাঁদুর ভালোবাসা এখন হয়তো অন্ধ। তাই ওকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সাহস দেখাচ্ছে। কিন্তু আমাদের সমাজ বড়ই নির্মম। দেখি কাঁদু ওকে নিয়ে কোথায় যায়, বা গল্পটাই কোন দিকে মোড় নেয়…….শুভ নববর্ষ আপু।
রেহানা বীথি
সমাজের বিরুদ্ধে দাঁড়াতেও সাহস দেখায় কেউ কেউ।
ভালো থাকবেন ভাই।
নববর্ষের শুভেচ্ছা রইল।
কামাল উদ্দিন
কিন্তু সমাজের বিরুদ্ধে দীর্ঘ যুদ্ধে সহযোদ্ধা পাওয়া যায় খুবই কম।
সুরাইয়া নার্গিস
অসাধারন গল্প আপু।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইল।
রেহানা বীথি
অনেক ভালোবাসা আপু। শুভকামনা আর নববর্ষের শুভেচ্ছা রইল।