
আসলে করোনা ভাইরাস নিয়ে এতো বেশি লেখা হচ্ছে যে কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা তা নিয়ে আমাদের অনেকেই কনফিউজড হয়ে গিয়েছি, কিন্তু কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস কি এখন আমরা সবাই জানি।
করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি চীনের উহানে হলেও বর্তমানে এ ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর ১৭৭টা দেশে, এই মুহূর্তের হিসাব অনুযায়ীঃ
বাংলাদেশে আক্রান্ত ২৪, সুস্থ ৩, মৃত্যু ২।
বিশ্বে আক্রান্ত ২,৩৪,০৭৩, দেশ ১৭৭, মৃত্যু ৯,৮৪০।
তাহলে অবস্থা কতটুকু খারাপ তা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন।
অথচ আমরা সবাই চীনকে গালাগাল দিচ্ছি করোনা ভাইরাসকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য, কিন্তু সেই চীনই ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে এই করোনা ভাইরাসকে নির্মূল করতে, একদল অতিমানবের দিন রাত অক্লান্ত ঘুমহীন সেবা আর চিকিৎসার কারণে চীনের উহান আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে, গত দুইদিন ধরে সেখানে আর কোন নতুন লোক করোনায় আক্রান্ত হয়নি, ৩৭ জন নতুন করে করোনা ভাইরাস নিয়ে সেখানে ঢুকেছে, তারা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হয়ে গেছে।
এখন তারা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ব জয়ে, কিছুদিনের মধ্যে দুনিয়া-কেও তারা জয় করে ফেলবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
সবচেয়ে বিপদজনক অবস্থায় পড়েছে ইটালি, ইউরোপের উন্নত দেশ গুলোর মধ্যে ইটালি পর্যদুস্ত হয়েছে করোনা আক্রান্তদের নিয়ে, বিশ্বের সবচাইতে বেশি মৃত্যুবরণ করেছে এই ইটালিতেই, অথচ এর আতুর ঘর চীনে তেমন মানুষ মরেনি যা ইটালিতে মরেছে, এর কারণও আছে।
শুধু মাত্র হেলাফেলা করার কারণে ইটালিতে করোনা আক্রান্ত এবং মৃত্যু সবচাইতে বেশি, যখন সে দেশে মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছে, তখনো সুস্থ রা ড্রিংক্স বারে জমা হয়ে মদ গিলছে, শুধু মাত্র একটা চার্চ (গির্জা) থেকেই হাজারে হাজারে সংক্রমিত হয়েছে, তাহলে বুঝুন কি অবস্থায় না হয়েছে।
এই মুহূর্তে পুরা বিশ্বের মায় বাপ খ্যাত আমেরিকা জুজে চলেছে করোনা আক্রান্তদের নিয়ে, ফ্রান্স, সৌদি আরব, কুয়েত, ইরান, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ভারত সহ ১৭৭টি দেশ বিপদ পারদের সর্বোচচ শিখড়ে, সবাই যেন এক যুদ্ধ অবস্থায় বিচরণ করছে, পৃথিবীর অনেক দেশ এখন লক-ডাউন অবস্থায় আছে।
এখন আসি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেঃ
খেয়াল করুণ, উহান, হুবেই তথা চীনে যখন এই করোনা রোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লো তখন বাংলাদেশ সরকার নিজ দায়িত্বে প্রায় দেড়শ জনের কাছাকাছি বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনে নিজ দেশে এবং তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় আশকোনার হজ্ব ক্যাম্পে, তাদের মধ্যে কয়েকজনকে কুর্মিটোলা হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়, কিন্তু চৌদ্দ দিন পর তাদেরকে সুস্থ থাকায় বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু ইটালিতে করোনা ছড়িয়ে পড়াতে ওখান থেকে হঠাৎ করে বেশ অনেক বাংলাদেশি প্রবাসী ফেব্রুয়ারীর শেষ দিকে এমিরেটস এয়ারলাইনস ভর্তি করে আসতে শুরু করে, তখন সরকার তাদের হজ্ব ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং সেখানেই এই প্রবাসীদের হম্বিতম্বি দেখে, তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবে মুচলেকা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে দেয়, এর পিছু পিছু আরও প্রবাসী ইটালি, সৌদি আরব, আরব আমিরাত সহ বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরে আসতে থাকে এবং তাদেরকেও হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।
আমরা বাঙ্গালী জাতি, কখনো কি কারো কথা শুনেছি না মেনেছি? আমাদের ভাব সবসময় থাকে যেমন কি “হামারা বাপ সুলতান থা” (আমার বাবা রাজা ছিলো), তেমনি অবস্থা হলো এই প্রবাসী বাঙ্গালীদের। তারা কেউ বাড়ি ফিরেই বিয়ের পিঁড়িতে, কেউ বিয়ের শপিং, বাজার সদাই করছে, কেউ চায়ের দোকানে, বাজারে আড্ডা মারছে, অতি মুসল্লি যাচ্ছে মসজিদে।
আজ দেখুন কতজনকে তারা আক্রান্ত করলো এই কোরানা ভাইরাসে।
মাত্র তো আক্রান্ত করা শুরু হলো, মাত্র তো চব্বিশ জন্য আর মারা গেলো মাত্র দুইজন।
আরেহ না ভাই, বিশেষজ্ঞরা বলছেন আগামী চব্বিশ দিন হলো ডেঞ্জার পিরিয়ড, এ সময় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশংকাজনক ভাবে বেড়ে যাবে, বাড়বে মৃতদের সংখ্যা।
এখন তাহলে কি করা উচিত আমাদের?
চীন বাংলাদেশ ইটালি
আমি কোনো বিশেষজ্ঞ নই, নই আমি ডাক্তার কিন্তু আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা করা উচিত বলে মনে করি তা হলো যথাক্রমেঃ
১) এই মুহূর্ত থেকেই আমাদের আর কোনো ভুল করা যাবেনা, সামান্যতমও নয়। যদি ভুল হয় তাহলে এর খেসারত আমাদেরকে জীবন দিয়ে দিতে হবে।
২) এই মুহূর্তেই বাংলাদেশ সরকারের উচিত সকল বিমান চলাচল বন্ধ করা, সকল বর্ডার সিল করে দেওয়া, যাকে ইংরেজিতে বলে No ins, no out.
কাউকেই এই দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবেনা এবং বের হতে দেওয়া যাবেনা।
৩) সকল ধরণের জমায়েত, মিছিল, মিটিং বা যেখানে প্রচুর মানুষ জমায়েত হতে পারে তা বন্ধ করা, যার কিছু কিছু করাও হয়েছে।
৪) সকল ধরণের শপিংমল, শপিং এরিয়া শুধু মাত্র খাদ্য দ্রব্য বিক্রি হয় এমন বাজার ছাড়া সকল কিছু বন্ধ ঘোষণা করা উচিত।
৫) যত ফেরত প্রবাসী এসেছেন তাদের বাড়িঘর পুলিশ, আনসার, বিজিবি দিয়ে ঘেরাও করে রাখা উচিত, তাদের বাধ্য করা উচিত যেন তারা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকে।
৬) যারা অমান্য করবে, তাদের দৃশ্যপটে এনে, বেঁধে পিটিয়ে সবার জন্য শিক্ষণীয় উদাহরণ সৃষ্টি করা উচিত।
এখন আসি হাসপাতালের বিষয়ে, বাংলাদেশ সরকারের উচিত জরুরী ভাবে বিমানে করে বিদেশ থেকে নিম্নলিখিত বিষয় গুলো নিয়ে আসা, যার জন্য No tender, no work worder, no permission এর ব্যবস্থা করতো জরুরী ভাবে হাসপাতাল গুলোতে দেওয়া উচিত।
১) কয়েকশো লাইফ সাপোর্ট ইউনিট, কয়েকশো সিসিইউ, আইসিইউ ইউনিট যা করোনা ভাইরাস ছাড়াও অন্যান্য রোগের রুগীদেরও কাজে লাগবে।
২) দ্রুত দেশের সকল ডাক্তার নার্সদের জন্য পিপি (পার্সোনাল প্রটেক্টিভ স্যুট) দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
৩) জরুরী ভাবে করোনা আক্রান্তদের সুস্থ করার প্রয়াসে যা মেডিসিন এবং ছোটোখাটো ইকুইপমেন্ট নিয়ে আসা উচিত।
৪) শুধু মাত্র দুই চারটা হাসপাতাল নয়, জরুরী ভাবে বাংলাদেশের সকল হাসপাতাল গুলোতে অধিক পরিমাণে করোনা ইউনিট গঠন করা উচিত।
৫) চীন সরকার যেহেতু ফাইটিং করোনার জন্য তাদের ডাক্তার, নার্স ইত্যাদি পাঠাতে চেয়েছে, তা দ্রুত এবং জরুরী ভাবে এনে আমাদের ডাক্তার নার্সদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬) দ্রুত উল্লেখযোগ্য হারে কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশনের জন্য স্থান নির্ধারণ এবং নির্মাণ করা।
৭) দরকার হলে দেশের আর্মির সহায়তা নিতে হবে।
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলোতে কোনো কম্প্রোমাইজ করা উচিত হবেনা।
এখন আসি আমরা সাধারণ জনগণের কি করা উচিত, খেয়াল করুণ এই রোগের কোনো চিকিৎসা নেই, তাহলে আমরা কি করবো?
১) আমাদের উচিত যথাসম্ভব নিজেদেরকে গুটিয়ে নেওয়া, সকল ধরণের সামাজিকতা থেকে, আড্ডা থেকে দূরে থাকুন, কারণ আমাদেরকে বাঁচতে হবে, খেয়াল করুণ, নিজেকে বাঁচাতে হবে।
২) খেয়াল করুণ, ইতিমধ্যে আসা সকল প্রবাসীদের কে বলছি, প্লিজ আপনারা যা করার করে ফেলেছেন আর করবেন না, দয়া করে আপনার নিজ স্বার্থে, নিজের বউ বাচ্চা, বাবা মা, ভাই বোনদের জন্য হলেও নিজ ঘরের একটা রুমে নিজেকে আগামী চৌদ্দ দিনের জন্য আবদ্ধ করে রাখুন, নিজে বাঁচুন, অন্যদেরকেও বাঁচতে দিন।
৩) সকলের উচিত ঘরে বাইরে যেখানেই থাকুন নিজের চোখে, মুখে, নাকে হাত দেবেন না, এতে করোনা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সমূহ চান্স থাকে।
৪) ঘনঘন হাত ধোয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করুণ, এতে আপনি করোনা আক্রান্ত হতে বেঁচে যাবেন।
৫) ঘরে বাহিরে খেয়াল করুণ, ঘরে বা বাইরের কারো দরজা, কলিংবেল, লিফটের বোতাম, ইলেক্ট্রনিক সুইচ, ইলেক্ট্রনিক আইটেম, মোবাইল ফোন ইত্যাদি পরিষ্কার রাখুন বিশুদ্ধ করার মেডিসিন দিয়ে। কিছু ধরতে হলে একবার ব্যবহারযোগ্য হ্যান্ড গ্লাভস, টিস্যু দিয়ে ধরুন এবং একি জিনিস দ্রুত প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখুন এবং দ্রুত তা আবার জ্বালিয়ে ফেলুন, খেয়াল রাখতে হবে তা যেন একবারের বেশি ব্যবহার নাহয়।
৬) প্রতিদিনের পরিধানের কাপড় প্রতিদিন ধুয়ে ফেলুন, প্রতিদিন ব্যবহার্য ফেইস মাস্ক প্রতিদিন জ্বালিয়ে ফেলুন অথবা ধুয়ে ফেলুন গরম পানিতে।
৭) ব্যবহার করা টিস্যু, মাস্ক কখনোই ব্যাগে, পকেটে খোলা রাখবেন না বা বাইরে রাস্তাঘাটে, ডাস্টবিনে না ফেলে তা প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখুন এবং পরে জ্বালিয়ে ফেলুন।
৮) কারো সাথেই, আবার বলছি কারো সাথে কোলাকুলি, হ্যান্ডশেক করবেননা বা গা ছোঁয়াছুঁয়ি থেকে বিরত থাকুন।
৯) থুথু কাশি হলে বা কফ রাস্তাঘাটে, এদিকে সেদিকে ফেলবেন না, জানেন তো এইসব থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়ায়।
১০) হাঁচি আসলে দুই হাত দিয়ে মুখ না ঢেকে, হাতটিকে বাঁকা করে ইংরেজি V অক্ষরের মতো করে V এর মাঝে বা মাঝ বরাবর হাঁচি দেন, এতে আপনার হাতে তালু থেকে করোনা রোগ ছড়াতে পারবেনা এবং যত দ্রুত পারুন আপনার হাত, কাপড় ধুয়ে ফেলুন।
এ ছাড়া হঠাৎ হাঁচি এলে খোলাখুলি ভাবে হাঁচি দেবেন না, যেভাবে বলেছি সেভাবেই হাঁচি দেবেন।
১১) জ্বর, সর্দি কাশির সিজন হলেও খেয়াল রাখবেন জ্বর, সর্দি কাশি হয়েছে, তাহলে দ্রুত অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা একটা রুমে আবদ্ধ করে নিন। অন্যদের থেকে কমছে কম ছয় হাত দূরে থাকুন, বলে দিন আপনার খাবার দাবার, মেডিসিন সব দরজার সামনে রেখে যাবে, ওরা চলে গেলে আপনি নিয়ে নেবেন, আপনার নিজের ব্যবহৃত বাসন, প্লেট, বাটি, চামুচ সব আলাদা রাখুন, নিজেই পরিষ্কার করে কাছেই রাখুন, খাবার দাবার দেওয়ার সময়, এবং বাসন কোসন নেওয়ার সময় সেইসব গ্লাভস পরিধান করুণ।
দ্রুত হটলাইনে যোগাযোগ করে হাসপাতালে যাওয়ার ব্যবস্থা নিন বা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুণ।
১২) ঘনঘন কুসুম গরম পানি, এন্টি অক্সিডেন্ট আছে এমন ধরণের খাবার খান। ফল খান বা অসুস্থ হলে জুস খান, ওটস, লেবু পানি, কমলা, আপেল, টমেটো স্যুপ খান, গাজর খান বা জুস খান, এইসবে করোনা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
সব শেষে অনুরোধ করছি, পারলে নিজেরা আগামী কিছুদিন ঘরে থাকুন যাকে বলে সেল্ফ কোয়ারেন্টাইন করা, নিয়ম করে রাতে ঘুমান (কমছে কম আট ঘন্টা ঘুমান), পুষ্টিকর খাদ্য খান, গণপরিবহন এড়িয়ে চলুন, নিজে বাঁচুন, দেশকে বাঁচান।
আল্লাহ রহমানুর রহিম আমাদের সকলকে নেক হায়াৎ দান করুণ, আমীন।
ছবিঃ গুগল।
৩৬টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
খুব ভালো লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। সবার সচেতনতার জন্য এমন পোস্ট দরকার কিন্তু কতজন এই বিষয়টি মেনে চলছেন সেটাই ভাবনার বিষয়। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
ইঞ্জা
অফুরন্ত ধন্যবাদ আপু, লেখাটি যদি সবার কাজে লাগে তাহলে অবশ্যই ভালো হবে মনে করছি, কতজন করবে তা নিয়ে বলছি, আপনি সচেতন হলে আর দশজন সচেতন হবে, উনারা হলে আরও একশজন, এরপর হাজার, দশ হাজার এইভাবেই সচেতনতা বাড়তে থাকবে।
শুভকামনা জানবেন।
ছাইরাছ হেলাল
করোনা নিয়ে আপনি এর আগেও লিখেছেন, এখন ও লিখে যাচ্ছেন,
আমাদের সচেতনতা তৈরির জন্য, এর থকে কেউ সামান্যতম ভাবেও উপকৃত হলে ও সেটি-ই
অনেক পাওয়া, আমরা হুজুগে এবং কথা না-শোনা জাতি।
আল্লাহ আমাদের রহম করবেন এই প্রার্থনা করি।
আপণাকেও ধন্যবাদ, সাবধানে থাকবেন ভাই।
ইঞ্জা
আমীন, ধন্যবাদ ভাইজান।
সাবিনা ইয়াসমিন
যথাযথ প্রচারের ফলে যেকোনো বিষয় / বস্তুই জন সাধারণের দৃষ্টিতে আসে। আর যেটা মানুষের জীবন রক্ষার্থের জন্য প্রয়োজন তা থেকেও মানুষ বেশিদিন নির্বিকার থাকতে পারে না। মহামারী ভাইরাস করোনা এখন মুখে মুখে প্রচারিত এর ভয়াবহতার জন্যে। গতকালও যাদের নির্বিঘ্নে পথে ঘাটে চলতে দেখেছি, আজ তাদের ভিন্নরুপ দেখতে পাচ্ছি। জাস্ট আমাদের এলাকার কথা বলছি। সকালে আমাদের পার্শ্ববর্তী এলাকার ইটালি ফেরত একজন লোক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করেছেন। খবরটি প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে ঐ মৃত ব্যক্তি যে বিল্ডিং এ থাকতেন, সেই বিল্ডিংয়ের বাস করা ত্রিশটি পরিবার সহ সমস্ত এলাকা পুলিশ লক ডাউন করে দিয়েছে। পাশাপাশি আমাদের এলাকা সহ আশেপাশের সব এলাকায় মসজিদে বারবার মাইকিং করা বলা হচ্ছে, মানুষ জনকে অপ্রয়োজনে বাসা থেকে বের না হতে।
এতেই বোঝা যায় মানুষ সচেতন হতে শুরু করেছে। সবাই মিলে যদি চেষ্টা করা হয় তাহলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কমানো সম্ভব হবে।
তবে দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দেশের জনগণের মাঝে ভয়ের চাইতে কৌতুহল বেশি কাজ করে। করোনা আক্রান্ত বাড়িটি দেখার জন্যে প্রচুর লোক জড়ো হয়েছিলো। পুলিশ লাঠি দিয়ে তাদের তাড়াতে বাধ্য হয়েছে 🙁
শুরু থেকে এখন পর্যন্ত করোনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সহ ধারাবাহিক পোস্ট দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইজান। আপনার লেখনী শক্তি আরও বৃদ্ধি পাক,
শুভ কামনা নিরন্তর 🌹🌹
ইঞ্জা
বিষয়টা আমিও খবরে পড়েছি এ বিষয়ে, কিন্তু আপনাদের এলাকার ঘটনা শুনে আহত হলাম, আপু আপনারা সবাই সাবধানে থাকবেন।
সবাই মানছে কিনা তাতে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে, যারা মানছেন তারা অতি নগন্য সংখ্যক, সবাই মানলে তো কথায় ছিলোনা।
আর কৌতুহলের কথা বলছেন, এই দেশের মানুষ কত যে ফাউল তার প্রমাণ তো আমরা বারেবারেই পাচ্ছি, যারা গুজবে কান দিয়ে মানুষ খুন করে,ভতারা আর কতো ভালো হবে বুঝতেই পারছেন।
আপু সত্যি আমি কৃতজ্ঞ আপনার কাছে, এটলিস্ট আজকের লেখাটি আপনি উৎসাহ না দিলে লিখতাম না।
আন্তরিক ধন্যবাদ অসাধারণ বিশ্লেষণ ধর্মী মন্তব্যের জন্য।
জিসান শা ইকরাম
আমাদের সচেতনতার খুবই অভাব।
উহান থেকে ছাত্র আসার পরে হাজি ক্যাম্পে উঠানো হলো, তারা ১৪ দিন বসবাস করার পরে ঐ ক্যাম্প আর পরিস্কার করা হয়নি। এই অবস্থায় হঠাৎ এসে পরা ইতালি প্রবাসীদের সেখানে নিয়ে গেলে ঝামেলা হয়। এই ঝামেলায় তাদের বাড়ি যেতে দেয়া হয়। চরম ভুলটা এখানেই হয়।
তারা বাড়ী গিয়ে কোয়ারেন্টাইনে না থেকে সমাজে মিসে গিয়েছিল। ক্ষতি হয়ে যায় এতে।
আগামী তিন সপ্তাহ খুব সংকটকাল। কতটা ক্ষতি হয়েছে বুঝা যাবে একুশ দিনের মধ্যেই।
আমরা নিজেরা এই ভাইরাসের ভয়াবহতা বুঝিনা, সরকারও উপলব্দি করেনি।
আল্লাহ আমাদের এই বিপদ থেকে রক্ষা করো …..
অত্যন্ত ভালো একটি পোস্ট দিয়েছেন। আমাদের সবার উচিত এই পোস্ট ফেইসবুকে নিজের ওয়ালে শেয়ার দেয়া।
ভাল থাকুন ভাই।
ইঞ্জা
প্রথমেই ভাইজান সরকারের কথা বলি, যে সরকার আমাদের জীবনের দ্বায়িত্ব এতো হেলায় ফেলায় নেয়, তাহলে আমাদের মৃত্যুর জন্য তাদের কি করা উচিত আমি ভেবেই পাচ্ছিনা, জাতিসংঘের বারবার ওয়ার্নিংয়ের পরেও কেমনে উনারা এমন অবহেলা করলেন তা আমার মাথায় আসেনা, আমি সত্যি হতবাক হয়েছি।
আমি সত্যি চাই সরকার এখন ফাইটব্যাক করুক, কিন্তু আমি সন্দিহান এখনো।
অশেষ ধন্যবাদ অসাধারণ বিশ্লেষণের জন্য, এমন মন্তব্য সত্যি আমাকে লেখার সাহস যোগায়।
আবারও ধন্যবাদ ভাইজান।
সুপায়ন বড়ুয়া
ইন্জা ভাই বিশদ ভাবে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। আতন্ক সৃষ্টি করে মানুষকে বিপদে ফেলা যাবে না।
জাতিসংঘ বা বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা যদি শাটডাউন করতে বলে সরকার ও প্রস্তুতি নিয়ে করবে। তাতে সন্দেহ নেই।
যারা গুজব রটিয়ে মজুদ করছে বিপদটা এখানে।
কারখানা গুলো চালু আছে । পরীক্ষা করে ঢুকায় সাস্থ্য সম্মত উপায়ে। সচেতনতা ট্রেনিং চালু রেখে।
বন্ধ করলে বেতন দিয়ে করতে হবে। না হলে বিপরীত ও হতে পারে।
এদেশ সমাজতান্ত্রিক চায়না নয়। মনের ভয়ে ডাক্তার ও অন্য রোগের চিখিৎসা করতে ভয় পাচ্ছে।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
ইঞ্জা
সম্পূর্ণ একমত দাদা আপনার প্রতিটি কথার সাথে, সাথে এও চাই আমাদের সরকার ফাইটব্যাক করুক, জীবন বাঁচাক এই দেশের মানুষদের।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সুপায়ন বড়ুয়া
ধন্যবাদ।
ফাইট ব্যাক চলবে।
হাল ছাড়ে না বাঙালী
মরার আগে লড়বে।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
ইঞ্জা
বাঙ্গালী ফাইটব্যাক করবে কিন্তু সরকার কি করছে, ডাক্তার নার্সদের পিপি দিয়েছে কাপড়ের, বুঝুন অবস্থা, ইটালি থেকে আগত প্রবাসীদের এইভাবে না ছাড়লে করোনার বাপও ছড়াইতে পারতো কি দাদা?
ইসিয়াক
আমাদের সচেতনও সতর্ক হতে হবে আরো বেশি।
সেই সাথে দ্বায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
পোষ্টে ভালো লাগা।
ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন ভাইয়া।
আপনজন নিয়ে সাবধানে থাকুন।
দোয়া রইলো।
ইঞ্জা
হাঁ সম্পূর্ণ একমত ভাই, এখন সচেতনতায় জরুরী।
ধন্যবাদ।
এস.জেড বাবু
চমৎকার দিক নির্দেশনা রয়েছে লিখায়।
ধন্যবাদ আপনাকে।
/////আসলে করোনা ভাইরাস নিয়ে এতো বেশি লেখা হচ্ছে যে কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা তা নিয়ে আমাদের অনেকেই কনফিউজড হয়ে গিয়েছি
আসলে কনফিউজড ওরা নিজেরা এবং আমরা সবাই।
কেন লিখছে / বলছে !!
এমন একটা মূহুর্তে ওরা হটাৎ ডাক্তার বলে গেল-
আল্লাহ সবাইকে সুমতি দিন, রক্ষা করুন।
ইঞ্জা
সত্যি তাই, এমনিতেই আমরা কনফিউজড বাঙ্গালী, সাথে সাথে অন্যরা আরও কনফিউজড করছে।
ধন্যবাদ ভাই।
এস.জেড বাবু
শুরু থেকেই করোনা নিয়ে আপডেট তথ্য এবং সুন্দর সব পোষ্ট এর মাধ্যমে সচেতনতা তৈরী করে যাচ্ছেন-
আপনার জন্য অনেক দোয়া।
সবাইকে নিয়ে ভালো থাকবেন সবসময়।
ইঞ্জা
এ আমার দ্বায়িত্ব থেকে করছি ভাই, আপনাদের দোয়া আর ভালোবাসা আমাকে পথ দেখায় সবসময়, ভালো থাকবেন ভাই, ধন্যবাদ।
আরজু মুক্তা
ভাই অনেক কিছু জানলাম।
গণসচতনামূলক পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
আন্তরিক ধন্যবাদ আপু।
সৈকত দে
সচেতনতামূলক পোস্ট। সবকিছু বেশ ভালো ভাবেই উঠে এসেছে কিন্তু আমরা বরাবরই অসচেতন জাতি। অনেক টা হুজুগেও বটে, এই কয়দিনে প্রায় সব দ্রব্যমূল্যের দাম একটু বেশি সেই সাথে প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম ও।
ইঞ্জা
সত্যি তাই, আমরা হুজুগে জাতি, গুজবে কান দিই বেশি, এরপরেও বলবো সবাইকে সচেতন হতে দোষ নেই, নেই কোনো ক্ষতি।
ধন্যবাদ দাদা।
রেহানা বীথি
সময়োপযোগী পোস্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আর এক মুহূর্তও দেরি করা যাবে না, সচেতন হতে হবে এখনই। অন্তত আগামী ১৪ দিন সর্বত্র লক ডাউন করলে বোধহয় বিস্তার রোধ করা সম্ভব হতো অনেকখানি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মতো সরকারেরও কেন যেন ঢিলেঢালা ভাব। ভীষণ দুশ্চিন্তা হচ্ছে ভাইয়া।
ইঞ্জা
আপু সত্যি উনাদের নড়াচড়া দেখে আমরা আতংকিত, ধন্যবাদ অনিঃশেষ।
তৌহিদ
চমৎকার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ভাই। আসলে করোনা নিয়ে আমাদের দেশের দায়িত্বশীলদের অবহেলা দেখে মর্মাহত হয়েছি, হচ্ছি।
কোয়ারান্টাইনের যে পরিবেশ থাকা দরকার তা না করেই সেখানে লোক পাঠানো উচিত হয়নি। অন্যদিকে বিদেশ থেকে এখনো লোক আসছে। এমন অবহেলার খেসারত এখন ইতালি দিচ্ছে। আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা জরুরি।
ভালো থাকবেন ভাই।
ইঞ্জা
দুঃখ তো ওখানেই, সত্যি বলতে কি আজকের এবং আগামীর পরিস্থিতির জন্য দ্বায়িত্বশীলরাই দায়ি এবং বর্তমানে তাদের আচার ব্যবহার উদ্বেগ জনক।
ধন্যবাদ, খুব সুন্দর এবং অর্থবহ মন্তব্য দিলেন ভাই।
মনির হোসেন মমি
খুবই মান সম্পন্ন পোষ্ট।পোষ্টটি স্টিকি করায় ধন্যবাদ।
আসলে তাই নিজের সচেনতার বিকল্প নাই।
ইঞ্জা
আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এবং ব্লগ সঞ্চালককে লেখাটিকে স্টিকি করার জন্য।
সত্যি তাই এখন সচেনতার বিকল্প নাই।
নীরা সাদীয়া
খুব মূল্যবান পোস্ট। তবে পোস্টে উল্লেখ নাই এমন একটা অপ্রাসঙ্গিক কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে। যখন চীনে প্রথম করোনা এলো ইঞ্জা ভাইয়ের আমি একমত যে সবাই চীনকে বকাবকি করতে লাগলো। বলতে লাগলো, এরা ধর্ম মানে না হেন তেন। তাই এদের করোনা হইছে। এরপর যখন এটা এদেশেও চলে আসলো, তখন বলতেছে এদেশের নারীরা পর্দা করে নাই, তাই করোনা হইসে। আর ঠিক এই কথাটাই জানুয়ারীর শেষদিকে আমি আমার বান্ধবীকে বলছিলাম, এদেশে করোনা হলে এরা এসবই বলবে। এদেশের একটা কালচার হলো একে অন্যের ওপর দোষ চাপানো।
যাই হোক, আমাদের সকলের উচিত সাবধানতা বজায় রাখা। সবার জন্য শুভ কামনা।
ইঞ্জা
সত্যি আমরা অন্যকে দোষ দিয়ে অভ্যস্ত, কিন্তু নিজে ভাবিনা এর প্রতিক্রিয়া কি হতে পারে?
আল্লাহ সবাইকে রক্ষা করুন, আমীন।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু। 😊
হালিম নজরুল
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লেখা। ধন্যবাদ ভাই।
ইঞ্জা
আন্তরিক ধন্যবাদ প্রিয়জন।
রুমন আশরাফ
অনেক কিছু জানতে পারলাম। অনেক সুন্দর পোস্ট। ধন্যবাদ ভাই।
ইঞ্জা
নিজে বাঁচুন অন্যকেও বাঁচান, আল্লাহ নিশ্চয় সহায় হবেন, ধন্যবাদ ভাই।
নিতাই বাবু
এই আসলামের মধ্যে দেশ-সহ দশকে ফেলেছে একমাত্র এদেশের বর্তমান সকারের কিছু আদুরে মন্ত্রীরা। যাঁরা নিজে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুব কাছের মানুষ মনে করে থাকে, তাঁরা। তাঁরা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের আদর করতে গিয়েই আজকে সারাদেশের এই অচলাবস্থার সৃষ্টি-সহ দেশের জনগণের মরণাবস্থা। আবার ইদানীং সারাদেশই কার্যত বন্ধ ঘোষণা করে ফেলেছে। অথচ কয়েকদিন আগেও ক্ষমতার চেয়ারে বসে কয়েকজন মন্ত্রী বড়বড় বুলি ছেড়ে বলেছে, “আমরা করোনা ভাইরাসের চেয়েও বেশি শক্তিশালী!” এখন তাঁদের সেই শক্তিরও অচলাবস্থা। এতে মরছি কেবল আমরা বহুসংখ্যক গরিব মানুষ। সত্যি কথা বলতে গেলে বলতে হয়, বর্তমান আমার মতো গরিবদুঃখীরা করোনা ভাইরাসে আতংকিত নয়! আতঙ্কিত হচ্ছে আগামীকাল নিয়ে। রাত পোহালে খাবে কী, এই নিয়ে।
এইরকম সময়োপযোগী পোস্টখানার জন্য আমার শ্রদ্ধেয় ইঞ্জা দাদাকে অজস্র ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সাথে কামনা করছি এই সময়ে সপরিবারে সবাই ভালো থাকার।
ইঞ্জা
শতভাগ সহমত দাদা, আগামী দিন গরীব দুঃখিরা কি খাবে তা নিয়ে সত্যি আমি চিন্তিত, জানিনা সৃষ্টিকর্তার কি চিন্তাভাবনা আমাদেরকে নিয়ে, এরপরেও বলবো, প্লিজ সেইফে থাকুন।
ধন্যবাদ দাদা, সুচিন্তিত মতামত দিলেন।