
মাগো দেখে যাও
আমার বৌ-দীর রিমিক্স বাঙ্গালীয়ানা।
রং চায়ে খেলে সূর্য্য কিরন,
সাড়ে আটটায় নিদ্রা পতন,
সব্জি শশার বস্ত্র হরন!
সাড়ে ন’ টা, বৌদী আমার-
স্নানাগারটা তবু ছাড়লো না-।
দাদা জীবন যুদ্ধে যাবে,
মাথা নুইয়ে হিসেব কষবে,
ভাতিজাটার স্কুলের সময়-
টিফিনটা রেডি হলোনা।
ওগো শুনছো বৌ-দী
বড়দা আমার ডিম ভাজবে,
নুনের ডিব্বা পাচ্ছে না____।
পেয়াজে কেমন উটকো গন্ধ
হাতের ইজ্জত থাকে না,
আলু কাটলে ভিষন বিপদ
নখের কালো মুছে না,
ডাল ভাতটা বৌদী রাধবে
সব্জী ভাজবে ময়না,
কি আর করা এতো বছরেও
কিচেনে টিভি হলো না।
সিরিয়ালটার সময় গড়ালো
চলবে না কোন বাহানা,
জলশা টিভির আপুদের দেখ
ওরা কি রান্না করে না ?
বছর গড়ালো একদিন ও ওরা
খুলেনি গায়ের গহনা,
মা গো দেখে যাও ডিজিটাল বৌদীর
রিমিক্স কান্ড কারখানা।
বাচ্চা ফিরেছে স্কুল শেষে,
বৌদী তো চোখ খুলে না!
চোখের উপর শশার চাকা,
আধা ঘন্টাও হলো না।
নিমন্ত্রন্ন পাশের বাসায়-
আজ বুঝি যাওয়া হলো না,
কখন হবে ফেসিয়াল আর
কখন ঝুলবে গহনা।
এমনি কি আর জীবন কাটে-
কাজ কর্ম আর রান্নার হাটে ?
আশে পাশের সব বৌদীরা যেন-
ঘর সংসার আর করেনা।
পার্লারের সাজ বেশ পরিপাটি
ঘরের সাজে হয়না,
একলা বৌদী পার্টিতে যাবে
বাচ্চাটা সাথে যাবে না।
মা গো দেখে যাও, সেজেছে বৌদী
যেন ষোড়ষী কোন ললনা,
টি. শার্ট আর জিন্স পড়লেও
হিজাবটা কিন্তু ভুলে না-।
কর্ম শেষে ভাইটা ঘরে
খাবার টা গরম ছিলো না,
আন-রিচএ্যবল, দশটা কল
বৌদী মোবাইল তুলেনা।
স্বামী ছেলেতে কি পার্টি চলে
বৌদী ভিষন শেয়ানা !!
রাতেও তেমন খাবার লাগে ?
বুদ্ধু বেচারা;
বাইরেও যেতে পারে না !
সপ্তাহে শেষে একটা পার্টি
এ ও কি সহ্য হয় না !!
মুখটা উজ্জল হাতে লাল জল
হাসিটা ও ঠোট ছাড়েনা,
বৌদী আমার শুদ্ধ বাংলায়
হিন্দী বলতেও ভুলেনা।
চৌদ্দটা সিরিয়ালের সব ঘটনা
বৌদীর নয় অজানা,
মাগো দেখে যাও আমার বৌদীর
নেই যে কোন তুলনা,
সামনের সপ্তাহে সাত সাতটা পার্টি
কেউ নিমন্ত্রন দিতে ভুলেনা___।
বারোটার ঘরে ঘড়ির কাঁটা
ঢুলোঢুলো চোখ, এলোমেলো হাটা,
বারো বছরের চাকরি স্বামীর
গাড়ি কেনার মুরদ হলো না।
মাতাল বৌদীর একলা রাতে
হাটা চলাও ঠিক না,
পাশের বাড়ির বৌদী বললো
আজ আর বড়ি যেওনা।
বৌদি খাটে – আর খোলা দরজা
বদলে গেছে সে জামানা,
কে কার সাথে কোন ঘরে গেল
খোঁজ খবরও কেউ রাখেনা।
আজও স্নানঘরে বৌদী একা
থামেনা যেন কান্না,
যত ঢাল জল, খুলে দিয়ে কল
এ দাগ যে জলে ভাসবে না।
সোফায় কয়জন এলো গেলো
সে খবর ও তুমি পেলে না__!!
জি সিনেমার, সেই সিরিয়ালটা
একটুও বাস্তবের ধার ধারে না।
মা গো দেখে যাও বৌদী আজকাল
চোখ তুলে কথা কয়না,
হারিয়েছে সব সম্ভ্রম, সম্মাণ
এক জীবনেও যা মিলবে না।
ডিজিটাল যুগের রিমিক্স বৌদীদের
এর আগে কি শিক্ষা হয় না !!??
-০-
– ১৯/১১/২০১৮
প্রতিকি ছবি- নেট দুনিয়া-
৩৭টি মন্তব্য
মনির হোসেন মমি
মা গো দেখে যাও বৌদী আজকাল
চোখ তুলে কথা কয়না,
হারিয়েছে সব সম্ভ্রম, সম্মাণ
এক জীবনেও যা মিলবে না।
ডিজিটাল যুগের রিমিক্স বৌদীদের
এর আগে কি শিক্ষা হয় না !!??
গর্তে না পরলে হুস হয় না।বিশাল কবিতা সিরিয়াল থিম ধরে রেখেছেন খুব ভাল ভাবেই।সুন্দর।
এস.জেড বাবু
সবই আপনাদের দেয়া অনুপ্রেরনার ফসল।
মন্তব্য ভাল লাগে – আর একটা থীম নিয়ে লিখার আগ্রহ জাগে।
ভাল থাকবেন ভাইজান
কামাল উদ্দিন
এমন বৌদি যেন কারো ঘরে না আসে ,,,,,,,,,, কবিতায় ভালোলাগা জানিয়ে গেলা।
এস.জেড বাবু
এইটাই আমাদের সবার চাওয়া।
এমন যেন না হয়।
ধন্যবাদ ভাই।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপনাকেও
ছাইরাছ হেলাল
বুঝতে পারছি, পুরুষ দিবস বলে বদলা নিচ্ছেন!
নারী দিবসের জন্য তৈরি আছেন তো!
এবার বুঝতে পারছি, আপনি মানুষ ভালা না, বৌদিদের দেখতে-ই পারেন না।
এস.জেড বাবু
আমার কোন প্রতিপক্ষ নেই।
বিকৃত রুচির বিরোধিতা আমি করি, সে পুরুষ হউক বা নারী।
সংস্কৃতির সাথে মানানসই সবই সুন্দর-
তবে তা যেন অর্ধেক ইংলিশ (পোষাকে) অর্ধেক বাংলা (চরিত্রে) এমনটা না হয়। পোষাকেও চরিত্রের ছাপ থাকে।
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
দারুন অন্যবদ্য কাব্য। কিছু বলার নাই। যুগের ঘটনায় ঘটছে। এমনই হচ্ছে।
এস.জেড বাবু
শুভেচ্ছা মজিবর ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে।
জিসান শা ইকরাম
এত্ত বড় কবিতা?
পারেনও বটে আপনি।
এটি সমসাময়িক বিভাগ কেনো?
শুভ কামনা।
এস.জেড বাবু
আমি মূলত দুটি জিনিষ প্রাধান্য দেই-
১। সহজ বোধগম্য শব্দ
২। একটা থীম ( যা বলতে চাই ) পরিপূর্ণ ভাবে প্রকাশ করা।
আধুনিক পোষাকের সংস্কৃতি আমার কাছে খুবই জঘন্য লাগে। বিশেষ করে ইংলিশ পোষাকে যারা বাংলিশ চরিত্র লালন করে।
অনেক ধন্যবাদ ভাইজান।
তৌহিদ
আপনি যা বলেছেন তা কিছুটা সত্য তবে সবার ক্ষেত্রে নয়। আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়েই সবাইকে চলতে হয়। সবাইকে সাথে নিয়ে মিলে-মিশে যারা থাকতে পারে তারাইতো প্রকৃত মানুষ।
ভালো থাকবেন ভাই।
এস.জেড বাবু
আমার বাবা একটা কথা বলতেন-
সব ফেরেস্তাদের সাথে দুইজন খারাপ টিকে না-
সব খারাপের সাথে দুই চারজন ফেরেস্তা টিকবে না।
আমাদের সমাজে সবই যদি আল্ট্রা মর্ডান হতো তবে সেটা নিয়ম বা সার্বিক সংস্কৃতি হতো।
আসলে কিন্তু তেমন না- কিছু সংখ্যক আল্ট্রা মর্ডান বলেই তাদের শুধরানোর চেষ্টা চলে, খানিক তির্যক আলোচনার মাধ্যমে।
সবই ভালো- তাই কিছু সংখ্যক মানুষের রুচির পরিবর্তন হউক। জিন্স আর টিশার্টের উপর উড়না ছাড়া হিজাবের মানে আমার কাছে রিমিক্স টাইপের মনে হয়।
পুরুনো বাংলা গানে আধুনিক মিউজিক/ তার উপর ডি.জে।
আন্তরিক ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
সবাইকে সাথে নিয়ে মিলে-মিশে যারা থাকতে পারে তারাইতো প্রকৃত মানুষ।
প্রক্রিত মানুষ বলতে কি বোঝালেন তৌহিদ ভাই। এই যুগের সাথে হাফ প্যান্ট, গেঞ্জি, মহিলারা সার্ট প্যান্নট পর্বে এটাই। এরাই প্রক্রিত মানুষ!!!!!!!!!!
আর যারা সততা, ধারমিক, ন্যায়নিতি থাকবে নিরিবিলি থাকবে তারা সামাজের অমানুষ বলবেন!!!!
নিতাই বাবু
আজকাল এমন বৌদিদের কিছু বলাও যায় না! তাঁরা কারোর কথা শুনেও না। চলুক না এভাবে, আমরা নাহয় দেখে মজা করি।
সত্যি মজা পাইলাম! ধন্যবাদ জানবেন!
এস.জেড বাবু
আমি বলে ফেলি-
শুধু পরিচিত হলেই বলি, আত্মীয় হলে ধোলাই করে ছাড়ি।
সবাইকে বলার ক্ষমতা/ অবস্থা/ মানষিকতা আসলেই নেই।
ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান
রেজিনা আহমেদ
বাস্তব ঘটনা তুলে ধরেছেন, তবে ব্যাতিক্রম আছে যারা মডার্ন হয়েও নিজের কর্তব্য পালন করতে ত্রুটি রাখেনা
এস.জেড বাবু
শুধু আছে বললে কম হবে। বরং
ব্যাতিক্রম এবং সুন্দর রুচির মানুষ অনেক বেশি।
তাইতো অল্প সংখ্যক অতি আধুনিকদের দেখতে কেমন লাগে। ওদের বেশিভাগ শুধুই পোষাকে আধুনিক।
অনেক ধন্যবাদ আপু
শুভেচ্ছা রইলো।
অনন্য অর্ণব
বাচ্চা ফিরেছে স্কুল শেষে,
বৌদী তো চোখ খুলে না!-
আমি একটা কলিজা আছে যে এইরকম। বাচ্চার স্কুল শেষ হয় কিন্তু আমার কলিজার ঘুম আর ভাঙ্গে না 😭 তবে সে সিরিয়াল দেখে না, বরং সিরিয়াল দেখে❤️❤️❤️
এস.জেড বাবু
চারপাশে এমন অনেকই আছে।
ওদের রুচিবোধ- যে কোন বোধ সম্পন্ন মানুষ ঘৃণার চোখেই দেখে অন্তত আমাদের সংস্কৃতিতে।
পোষাক রুচিবোধের পরিচয়।
শালীনতা অনেক বড় সৌন্দর্য।
চমৎকার বাস্তব মন্তব্য
ধন্যবাদ ভাইজান।
নৃ মাসুদ রানা
রিমিক্স ভাইয়ের কিছু আছে নাকি?
এস.জেড বাবু
অবশ্যই আছে-
যদি মনে থাকে তবে নারী দিবসে লিখবো।
ধন্যবাদ প্রিয় লিখক ভাই
মোহাম্মদ দিদার
হাহাহাহ রিমিক্স…
আমার কিছু বলার নেই।
তবে, পরতে বেশ তৃপ্তিপেয়ে।
এস.জেড বাবু
বলতে হবে না থাক।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ভাইজান ।
সঞ্জয় মালাকার
মা গো দেখে যাও বৌদী আজকাল
চোখ তুলে কথা কয়না,
হারিয়েছে সব সম্ভ্রম, সম্মাণ
এক জীবনেও যা মিলবে না।
ডিজিটাল যুগের রিমিক্স বৌদীদের
এর আগে কি শিক্ষা হয় না !!??
সঞ্জয় মালাকার
চমৎকার লেখা বাবু ভাই, বাস্তব ঘটনা তুলে ধরেছেন,, ধন্যবাদ আপনাকে।
এস.জেড বাবু
আমি আমাদের পোষাকের সংস্কৃতি অনেক ভালবাসি।
বিশেষ করে শালীনতা বোধ।
একজন নারীর সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য শালীনতায়।
একজন নিকৃষ্ট পুরুষও শালীনতায় মূল্যায়ন করে। নিজের পরিবার শালীন রাখতে চেষ্টা করে।
ধন্যবাদ ভাই
এস.জেড বাবু
আমার মনে হয় এর আগে শিক্ষা হয়না।
শুভেচ্ছা প্রিয় ভাই
সঞ্জয় মালাকার
ধন্যবাদ বাবু ভাই,
তবে এর আগের হয়েছে কি না জানিনা,
তাই শিক্ষার কখনো শেষ হবে না ।।
রেজওয়ান
বর্তমান সমাজের পরিস্থিতি কাব্যিক ভাষায় বুঝে নিলাম ভাল থাকুন সব সময়😇
এস.জেড বাবু
কিছু কিছু মানুষ এমন। সবাই না।
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ভাইজান।
ভাল থাকবেন সবসময়।
সাবিনা ইয়াসমিন
কবিতা পড়ে হাসতে হাসতে আমার পেট ব্যাথা হয়ে গেছে,,, ক্যামনে লিখলেন!!
” মা গো দেখে যাও, সেজেছে বৌদী
যেন ষোড়ষী কোন ললনা,
টি. শার্ট আর জিন্স পড়লেও
হিজাবটা কিন্তু ভুলে না-।”
হাহাহা, যে এত কিছু পারে, সে কি আর হিজাব লাগাতে ভুলবে 😀😀
রম্য কবিতা ভালো লাগলো, কিন্তু ছবিটা,,, না।
এস.জেড বাবু
চারপাশের অবস্থা যা দেখি
অদ্ভুত লাগে।
সত্যিকার মর্যাদায় হিজাব না পড়লে, ওদের পড়তে কে বলেছে।
ভাল লাগল আপু কমেন্ট, ছবির জন্য লজ্জিত।
শুভেচ্ছা রইল।
সঞ্জয় কুমার
কবিতার বিষয়বস্তুর সাথে ছবিটা কোনভাবেই যায় না৷
বৌদিরা কি হিজাব পড়ে?
দেখিনি কখোনো !!!
বানানের প্রতি আরেকটু যত্নশীল হলে, আপনার লেখার মান আরও সুন্দর হবে আশারাখি৷
এস.জেড বাবু
সুবিচারের জন্য ধন্যবাদ।
বানান এ আমি বরাবরই কাঁচা। বাংলায় টেনেটুনে পাশ। সে কালে হয়নি, একালে তো চোখেও কম দেখি। ভিত্তিহীন আজগুবি লিখালিখি- এসবের মান উন্নয়নে আর কি হবে !
লিখালিখি আসলে আমার অবসর সময় কাটানোর ফন্দি ।
অনেক ধন্যবাদ ভাইজান।
নুর হোসেন
বাঙ্গালী নারীদের আচরণ অনেকটা গুহা মানবদের কাছাকাছি।
শিক্ষা, ঘর সংসার, সন্তান পালন ছাড়া তাদের আর কোন প্রয়োজনে আধুনিক হলেই বিপদ!
আধুনিক নারীদের কঠোরতায় সেকেলে পুরুষেরা আগামীতে সন্তান জন্ম দিবে হয়তো।
এস.জেড বাবু
কপালে লাল টিপ সুন্দর দেখায়- তাই বলে টিপ পড়া সব ধর্মে জায়েজ করা যাবে না।
চিরায়ত বাঙ্গালী পোষাকে আধুনিকতা নেই এটাইবা কেমন নজরে দেখলে সম্ভব হবে !
আর শুধু পশ্চিমা পোষাক পড়লেই আধুনিক বলা যাবে এই কথাটাও কতটা ওজন রাখে।
আধুনিক তো তাকেই বলা যায়- যে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা, রুচিবোধ, স্ব-দেশী সংস্কৃতি, নিজের ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলবে এবং মানিয়ে চলবে।
খৃষ্টান / ইহুদি সংস্কৃতির পশ্চিমা পোষাক পড়ে, যারা নিজের বাঙ্গালী সংস্কৃতি, ধর্মীয় সংস্কৃতির বারোটা বাজায়- ওদেরকে সেকেলেরা ই আধুনিক না বলে “নোংড়া রুচিবোধ” বলে।
সেলোয়ার কামিজ, শাড়ি পড়া আধুনিক মননশীল / রুচিবোধ / ব্যাক্তিত্বের অধিকারি নারী নিজের ধর্ম/ কালচার ঠিক রেখেও তথাকথিত পশ্চিমাদের টক্কর দিতে পারে, যেখানে পোষাক একমাত্র মূখ্য বিষয় নয়।
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য।