
১৩ অক্টোবর ২০১৫
কচুপাতার উপরে জমে থাকা পানি দেখতে কত ভালো লাগে
স্বচ্ছ গোলাকার হিরা যেন
কখনোই এই স্বচ্ছ স্ফটিকের মত পানি পাতায় লেগে থাকে থাকে না,
সামান্য বাতাসে পরে যায়, বা রোদ উঠলে তা শুকিয়ে যায়
দেখতে যতই ভালো লাগুক না কেনো……
১৩ অক্টোবর ২০১৩
দুপুর থেকে খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা তানিয়া আর রিপনকে । তানিয়ার বাবা কালাম এর ফোন পেয়ে চমকে উঠলাম।
আমিঃ মানে ? কি হয়েছে ?
কালামঃ হাদির ছেলে রিপন তানিয়াকে নিয়ে পালাইছে। আপনি একটু আসুন প্লিজ।
আমিঃ আসছি এখনই।
গাড়ী হসপিটাল এ গত দুদিন থেকে। ড্রাইভার নাই। অনেক মাস পরে মটর সাইকেলে কীক দিলাম । ড্রাইভ করতে করতে ভাবছি- রিপন তানিয়াকে নিয়ে পালিয়েছে , এই কথাটা আসলে ভুল। পুরুষতান্ত্রিক কথা । তানিয়া কি একটি বস্তু ? অলংকার , দামী কোন মোবাইল বা ল্যাপটপ ? যে তা নিয়ে পালিয়েছে ?
এসব বলে লাভ নেই আসলে – প্রচলিত চিন্তা ভাবনা , ছেলে মেয়েকে নিয়ে পালিয়েছে।
কালাম এর বাড়িতে ভিড় । চিৎকার করে কাঁদছেন কালামের স্ত্রী। আজ দুপুর থেকে পাওয়া যাচ্ছেনা। একা কথা বললাম কালামের স্ত্রীর সাথে। ঈদের পরে তানিয়ার বিয়ের কথা আপন খালাতো ভাইয়ের সাথে । মেয়ে দেখে আংটি পরিয়ে গিয়েছে। মেয়ে রাজি নয় এই বিয়েতে। মা ভেবেছিলেন , বিয়ের পর ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু বাবা মা এর মুখে চুনকালি দিয়ে তানিয়া এমন করলো ।
বুঝলাম সব । দুজনেই দুজনকে নিয়ে পালিয়েছে। এর মধ্যে আংটি দেয়া খালাত ভাই হাজির। ঘন্টা খানেক মটর সাইকেলে খুজে খুজে হাঁপাতে হাঁপাতে এসেছে। ” পাই নাই , পাই নাই ”
কিছুক্ষণ পর রিপনের বাবা হাদির ফোন ” ভাই থানা পুলিশ যেন না হয় , চেষ্টা করছি খুজে বেড় করার জন্য। ” ==== আশ্বাস দিলাম আমি।
খুজে পাওয়া যায় কিভাবে ? তানিয়ার ছোট বোন ফারজানাকে একা ডাকলাম। এর কাছ থেকে নিলাম তানিয়ার গোপন একটা নাম্বার। বাইরে এসে ফোন দিলাম, হুম রিং হচ্ছে। কয়েকবার ফোন দেয়ার পর ধরলো রিপন ।
আমিঃ তানিয়াকে দাও , আমি জিসান ।
রিপনঃ এটা তানিয়ার নাম্বার না ।
আমিঃ তোর বাবা হাদিকে এখন দড়িতে বেঁধে থানায় নিয়ে যাবো। ফোন দে তানিয়াকে। ( কাজ হয়েছে এতে )
তানিয়াঃ কাকা আমি তানিয়া।
আমিঃ কেমন আছো মা ? রিপনকে বিয়ে করবা
তানিয়াঃ হ্যা কাকা।
আমিঃ আজ রাতে থাকবা কই? কোন আত্মীয়ের বাসায় থেকো, কোন মতেই হোটেলে না।
তানিয়াঃ আচ্ছা কাকা।
আরো কিছু কথা হয়েছে , এত বলে কি হবে ? ওদের বিয়ে হবে ঈদের পর। খালাত ভাইকে বললাম আংটি ফেরত নিয়ে যেতে। ছেলেটার দুঃখী মুখ দেখে মায়া হয়েছিল । কিন্তু এই মুহূর্তে এর সাথে বিয়ে দেয়ার চিন্তাও করা উচিৎ না।
আজকের ঘটনা এটি। এর প্রতিটি চরিত্র বাস্তব। কালাম হচ্ছে আমার খুবই পরিচিত একজন লোক । আমার একটু সিনিয়র। খুব কাছের একজন মানুষ।
ভালো থাকুক প্রিয় মানুষেরা।
১৩ অক্টোবর ২০১২
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি —-
হতে পারি আমি একটু বেশী আবেগি , এই আবেগ আমার গর্ব , আমার অলংকার , আমার অহংকার ।
তাইতো টিভিতে বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলার সময়ে যখন আমাদের দেশের জাতীয় সংগীত বেজে উঠে , আমি আবেগ তাড়িত হই , আমার শরীরের প্রতিটি লোমকুম কিভাবে যেন জেগে উঠে। চোখে পানি চলে আসে নিজের অজান্তেই। আমার ছেলেরা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে। বিশ্বাস করুন – এসব আমি ইচ্ছে করে করি না ।
বিদেশের কোন বড় অনুষ্ঠানে ষ্টেজে যখন আমাদের দেশের লাল সবুজ পতাকা উড়িয়ে হেটে যায় আয়োজকদের নির্বাচিত অচেনা অজানা কেউ – মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকি পতপত উড়তে থাকা পতাকার দিকে। ওই তো আমার পরিচয় , এই পরিচয়ের জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছেন ৩০ লাখ মানুষ , সম্ভ্রম হারিয়েছেন ২ লাখ মা বোন , এক কোটি লোক উদ্বাস্তু হয়ে মানবেতর জীবন কাটিয়েছেন- ভীন দেশে। দাড়িয়ে গিয়ে গাইতে থাকি ” আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি ” ।
হয়ত আপনি এভাবে ভাবেন না , কিন্তু আমার এই আবেগকে আপনি বাঁধা দিতে পারেন না । উপহাসও করতে পারেন না । আমি নিজেকে পাল্টাতে চাইনা – এ আবেগকে বয়ে নিয়ে যেতে চাই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ।
@ একজন ফেইসবুক ফ্রেন্ডকে , যিনি দেশের প্রতি আমার এত আবেগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
২২টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
সুন্দর একটি লেখা ভাইয়া। দেশের প্রতি পতাকার প্রতি এই আবেগ থাকা খুব অহংকার ও সন্মানের। স@লাম আপনাদের মত ব্যাক্তির সাক্ষাত ও পাশে পেয়ে জান্তে ও শিখতে পারছি বলে।
ভাল থাকুন ভাইয়া।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ ভাই,
লেখায় আরো দুটো অংশ আছে 🙂
শুভ কামনা।
মোঃ মজিবর রহমান
ও সরি ঘটনার উপস্থাপন ও বাস্তব প্রয়গ খুব পক্সহন্দ হয়েছে ভাইয়া।
জিসান শা ইকরাম
আবার ধন্যবাদ মজিবর ভাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
তানিয়ার সাথে রিপনের বিয়ে হয়েছিলো? খালাতো ভাই বা পরিবারের সবাই মেনে নিয়েছিলো বিয়েটা? কেমন আছে তারা?
জিসান শা ইকরাম
হ্যা তানিয়ার সাথে রিপনের বিয়ে হয়েছিলো,
মেনে নেয়া ছাড়া তো কোনো উপায় ছিলো না।
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
দেশপ্রেম, জাতীয় সংগীত সব আবেগ কিনা জানিনা। তবে আমরা কাঁদি।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা, আমিও কাঁদি,
শুভ কামনা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাবলীল ভাষায় ধারাবাহিক লেখনী দাদা।
কেউ বাস্তবে কাঁদে,কেউ আবেগে কাঁদে।
তবে দেশের প্রতি আবেগ,ভালোবাসা,সম্মান প্রয়োজন।
একটি দেশ মায়ের সমতুল্য।
বাস্তব প্রয়োগ দাদা।
জিসান শা ইকরাম
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ প্রদীপ,
শুভ কামনা।
নীরা সাদীয়া
তানিয়া আর রিপনের ঘটনাটা ভালোই লাগলো। এরকম একটা কিছুই ভেবেছিলাম, ফোনটা তানিয়াকে দেবার পর এটাই ঘটেছে!
জিসান শা ইকরাম
হ্যা তাই হয়েছে।
নিতাই বাবু
কচুপাতায় হিরের টুকরোর মতো গোল হয়ে থাকা এক বিন্দু পানির ফোঁটা দেখতে সত্যি ভালো লাগে। যতই ভালো লাগুক-না-কেন, একটুখানি টোকাতে গড়িয়ে পড়ে যায়। এ-ই ভালোলাগার মানে কী?
তানিয়া মনের কথা আগে কেউ জানতো না। কিন্তু হঠাৎ করেই সবাই জেনে গেল। জানাজানি হয়ে গেল। হোক, এটা এখনকার সময়ের ছেলে মেয়েদের নিজস্ব মনোভাব। যার যাকে ভালো লাগে। কিন্তু এখনকার ছেলে মেয়েরা একটুও ভেবে দেখে না, এ-ই ভালোলাগা থাকবে ক’দিন আর ক’বছর? তবুও তানিয়ার জন্য রইল আমার শুভকামনা। ভালো থাকুক তানিয়া।
একবার মনের দুখে ভারত গিয়েছিলাম। মনে করেছিলাম ভালো কাজ পেলে সেখানেই থেকে যাবো। কিন্তু ক’দিনের পর দিনেক পনেরো দিন যেতে-না-যেতেই আমার মনখারাপ হয়ে গেল। মনখারাপ মানি, একেবারেই খারাপ হয়ে গেল নিজের জন্মভূমি মাতৃভূমির জন্য। প্রাণ কাঁদতে শুরু করে দিলো আমার সোনার বাংলার জন্য। ভারতের বাড়িতে যেখানেই যেতাম, “মনে মনে গাইতেই থাকতাম, “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”। আমার সাথে আমার বন্ধু “কানাই” ও গাইতো, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’। আমাদের জাতীয় সংগীত কানাইর গাওয়ার কারণও ছিল। কারণ হলো, কানাইও কিন্তু বাংলাদেশি।
জিসান শা ইকরাম
কচুপাতার উপরে স্বচ্ছ পানি দেখতে ভালো লাগে খুবই, এর আর কোন মানে নেই।
কিসে এবং কোথায় যে আমাদের শান্তি তা আমরা জানিনা দাদা।
এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ছাইরাছ হেলাল
কচুপাতার পানিকে কচুপাতার পানি ভাবতে পারলেই ভাল।
ফলাফলের জন্য ভাবতে হয় না, তবে এমন হীরের-পানি কে তো সহজে হেলাফেলাও করা যায় না।
ভালুবাসা নিপাত যাক।
আহা খালাত ভাই!!
জিসান শা ইকরাম
তানিয়ার খালাতো ভাইর জন্য দুঃখই লাগে,
মনির হোসেন মমি
দিন মাস বছরের ঘটনাগুলো মনে রাখেন কেমনে। খালাত ভাইটির জন্য আফসোস।যতই আমরা সমান অধিকার চাই যে কোন ঘটন অঘটে পুরুষের নামটিই প্রথমে চইলা আইব।
” আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি ” ।
এ এক অনন্য শপথ
দেশকে ভালবাসবার… এর সূর কথা সব কিছুই আমাকেও পাগল করে তাইতো সারেগামাপা এর দেশী হিসাবে নোবেলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছি আবার জাতীয় সঙ্গীতের বিতর্কে তাকে ঘৃণা করেছি।
আমার শেষের কথাগুলো মনকে নাড়িয়ে গেল। জয় হোক মা মাটি দেশের।
জিসান শা ইকরাম
জয় হোক মা মাটি দেশের।
ইঞ্জা
তানিয়ার ঘটনা পড়ে হাসছিলাম, বেচারা খালাতো ভাইয়ের চেহেরাটা ভাবছিলাম মনে মনে। 😂
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, সত্যি ভাইজান কেমন যেন রক্তে নাচন ধরে, আমি হেড়ে গলায় জোরে জোরে গায়, আমার ছেলে মেয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, এই ভালোবাসা সবার মনে জাগরুক হোক এই কামনা করি।
জিসান শা ইকরাম
কিছুদিন আগেই তো বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলা হলো,
দেশের যেদিন খেলা থাকতো, জাতীয় সংগীত বাজতো মাঠে, কত যে ভালো লাগতো, তা প্রকাশ করার মত নয়।
তৌহিদ
রিপন তানিয়ার মত একই ঘটনা মনে পড়ে গেলো। লেখার ইচ্ছে আছে। আহা! বেচারা খালাত ভাই। তার মুখটা নিশ্চই বাংলা পাঁচের মতন হয়েছিলো?
দেশপ্রেম সবার মধ্যে থাকেনা। এখন অনেকে দেশপ্রেমিক নজরে আসছে যাদের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুধুই গণ্ডগোল!! ধিক্কার জানাই তাদের।
শুভকামনা রইলো ভাই।
জিসান শা ইকরাম
লিখবেন, অপেক্ষায় থাকলাম।
‘ যাদের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুধুই গণ্ডগোল!! ধিক্কার জানাই তাদের।’ তাদের প্রতি চরম ঘৃনা।