শ্মশান সুন্দরী

ছাইরাছ হেলাল ২০ জানুয়ারি ২০১৭, শুক্রবার, ১১:০৩:০০অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২০ মন্তব্য

নাহ্‌,
কোন এক রাতের শেষ বা নিস্তব্ধ মধ্যরাতে নয়, হুড়মুড় করে হাজির সন্ধ্যা রাতেই, না বলা-কওয়াতেই,
যেমন হয় সব সময়ে, এক্ষুণি যেতে হবে শ্মশানে, এক অষ্টাদশী বিশ্বসুন্দরী এসেছে, বৃথা চোখজনম না দেখলে গোল গোল চোখে, আরে দেখে-টেখে কী বা হবে? সুন্দরী-ফুন্দরী লাগেই নি কোন কালে, কী সব জ্বালাতন এই শীতে, যেতেই হবে।
হেঁটে হেঁটে যেতে হবে, হাওয়ায় উড়ে তো যেতে পারি ই না, না পুড়িয়ে এতক্ষণ বসে থাকবে নাকি দেখানোর জন্য, কে হে আমি!! সে ভাবনা আমার না! কায়দা করাই আছে, আগুন জ্বলবেই না, দেখা-দেখির শেষ না হওয়া অব্দি।
পৌঁছুলাম হাড়কাঁপিয়ে, শ্মশান কর্মীরা বসে আছে চুনমুখে, আগুন জ্বালাতে পারেনি বাতাসের ঝড়ো তেজী তোড়ে, শীতের শীর্ণতায় অমারাত্রির ডাইনি ছলনাতে।

প্রাণ-বিযুক্ত দেহেও অনিন্দ্য সুন্দর বলে যদি কিছু থাকে, তাই ই দেখছি আর দেখছি হালকা ধোয়ার উৎসারণে, আনমনে। অনাঘ্রাত গোলাপি যৌবন নিঃশেষ হয়েছে নপুংসক বৃদ্ধ সময়ের হাতে, প্রকৃতির দারুণ নিষ্ঠুর অপচয়ে! দাউ দাউ করে উঠল আগুন জ্বলে; ছিটকে দূরে চলে এলাম কনুইয়ে হ্যাঁচকা টানে,
এসে বসে আছি শ্মশানের ঘাটে বোবা মুখে, গরবর হয়েছে কোথাও কোন, কী তা?

ধাক্কা ও ঝুপশব্দ যুগপৎ ঘটে গেলে, নিজেকে আবিষ্কার করলাম বরফশীতল জলের নীচে, তলিয়ে যাচ্ছি মৃত্যুর অতলস্পর্শে; নিষ্ক্রিয় ত্রাহিস্বরে। দেখতে পেলাম সম্বিৎ ফিরলে, শ্মাশানকর্মিরা অর্ধনিঃশেষিত জ্বলন্ত চিতার পাশে ফেলে, বাঁচানোর প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছে মরণঠাণ্ডা থেকে,

ডাইনির হি হি হাসি রিন রিন করে ভেসে বেড়াচ্ছে দূরবাতাসে,
হিমশীতলঅন্ধকারলেপা পথের ধোঁকা এড়িয়ে এক পা দু’পা করে সংক্ষিপ্ততম ফেরার পথে ফিরি,
নিভাঁজ অন্ধকারে ডাইনিচোখের আলোয় পা ফেলি, পা ফেলায়;

৭৯০জন ৭৯০জন

২০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ