দীপা বেডসুইচটা অন করে দিল। নিলয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, “ঘুমোচ্ছেন না কেন? খালি এপাশ ওপাশ করছেন। ঘুমুন তো। নাকি ডরমিকাম (ঘুমের ওষুধ) নিয়ে আসবো?”
“কিছু লাগবে না” বলল নিলয়।
লাইটটা অফ করে শুয়ে পড়লো দীপা। পিছন থেকেই জড়িয়ে ধরল নিলয়কে। বলল, “টেনশন হচ্ছে?” নিলয় কোন উত্তর দিল না। দীপা আবার বলল, “সব ঠিকমতো হবে”
নিলয় এবার ঘুরে দীপাকে নিজের বুকের কাছে টেনে নিল। বলল, “বাইরে ঝড় হচ্ছে, শুনতে পাচ্ছো?”
“গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। ঝড় হচ্ছে আপনার মনে”
“তোমার মনে আছে, ২০০১এর দিকে যখন তোমার আমার পোস্টিং ছিল দেশের দুইপ্রান্তে। প্রতি বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিউটি শেষে দু’জন দু’জনার কাছে যাওয়ার জন্য ছুটতাম। তুমি দূর থেকে যখন আমাকে দেখতে একটা হাসি দিতে। আশেপাশে লোকজন না থাকলে স্যুটকেস মাটিতে ফেলে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরতে আর ক্ষণিকবাদেই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে। রাতে ঘুমানোর সময় আমাকে জড়িয়ে ধরতে আর বলতে ‘আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরুন’”
“হুম। মনে আছে। আর আমার সব রোমান্সে পানি ঢেলে দিয়ে বলতেন, ‘এই গরমে এতো জড়াজড়ি ভাল লাগে না। এই ছাড়ো তো’।”
“আর তুমি রাগ করে ছেড়ে দেয়ামাত্র আমি তো আবার জড়িয়েও ধরতাম”
“বিয়ে-প্রেমে প্রথম প্রথম অনেক উত্তেজনা থাকে। পরে মিইয়ে যায়”
“এখন উত্তেজনা নেই বুঝি?”
“সামনে ছেচল্লিশে পা দেবেন। আবার উত্তেজনা। কিছু কিছু বুড়ো ব্যাটাদের উত্তেজনা থাকে আজীবন। আর সেটাই হল ভীমরতি”
“আমি কি বুড়া ব্যাটা?”
“তো আপনি কি? খোকা?”
“না। কচি বুড়ো”
দীপা হাসতে লাগলো। অন্ধকারেই মাথা তুলে তাকালো নিলয়ের দিকে। বলল, “আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরুন”।
নিলয় বলতে লাগলো, “দীপা, তোমার মনে আছে যে বিয়ে দু’মাস যেতেই আমি তোমাকে বলেছিলাম, ‘ঐ ব্যাংকারকে বিয়ে করলেই পারতে। সোনা দিয়ে মুড়িয়ে রাখতো তোমায়। তোমার আফসোস হয় না?’ তখন তুমি হঠাৎ করেই আমাকে-”
“সব মনে আছে। তারপর বলেছিলাম, ‘An eye for an eye. আপনার মুখ বন্ধ করার জন্য এর থেকে মোক্ষম অস্ত্র নেই। গান শোনেন নি, ‘You say it best when you say nothing at all’?”
“কোন বিয়ের অনুষ্ঠানে তোমার সব বান্ধবীদের মধ্যে সবচেয়ে সাদামাটা পোশাকে থাকতে তুমি। তোমার বান্ধবীরা যারা পুলিশ, উকিল, ব্যাংকার, ইঞ্জিনিয়ার বিয়ে করেছে, সবাই ভারী ভারী জুয়েলারী পড়ত। আমার ভেতরটা হু হু করে উঠত। মনে হতো, কি পেলে আমাকে বিয়ে করে? তুমি বুঝতে পেরে আমার মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে বলেছিলে, ‘আপনাকে পেয়েছি, আমার গহনা, আমার এফ.সি.পি.এস পার্ট ওয়ান গহনা। গহনার কাজ কি? শো-অফ। আপনি আমার শো-অফ’।”
“এত্ত ভাল একটা বউ থাকলে লোকজন কত্ত সোহাগ করে”
“আমি কম করি সোহাগ?”
“এহ। সোহাগ বোঝেন আপনি? আমার পার্ট ওয়ান পরীক্ষার আগে কি করেছিলেন- মনে নাই?”
“সোহাগ করেছিলাম। আর কি করবো?”
“আপনার কি উচিত ছিল না এক কাপ চা বা কফি বানিয়ে দেয়া? তা-না”
“আরে, ভুয়া। দীপা ম্যাডাম আমার দেখা ভাল মানুষদের মধ্যে একজন। উনি সার্জন হিসেবেও প্রশংসার দাবি রাখেন। ওটিতে ওপেন করার পর অবস্থা দেখে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এসব ক্ষেত্রে অনেক অ্যাকসিডেন্ট হতেই পারে। অনেক রিস্কি জানা সত্ত্বেও পেশেন্টকে বাঁচানোর জন্য সার্জনরা ডিসিশন নেয়, ক্যারিয়ারের ঝুঁকি নেয়। মানুষের শরীর তো আর ডিসাইন্ড ডিভাইস না যে হলুদ তারের জায়গায় হলুদ তার আর লাল তারের জায়গায় লাল তার থাকবে। এক একজনের শরীরের ভেতরটা এক এক রকম, রিপোর্টাররা সেটা বোঝে? ম্যাডামের পক্ষে Gross Negligence সম্ভব না। উনি ভীষণ অনেস্ট ও রেস্পন্সিবল মানুষ”
“উনি হাইড্রোসিলির পেশেন্টের টেস্টিস ফেলে দিলেন- ব্যাপারটা কেমন অদ্ভুত না?” [হাইড্রোসিলি হল শুক্রাশয়ের এমন একটি রোগ যেখানে অন্ডকোষের চারপাশে তরল জমা হয়ে স্ফীতাকার ধারণ করে]
গল্পের বাকী অংশ পড়তে চলে আসুন বইমেলায়, সংগ্রহ করুন “অনুভূতি গেছে অভিসারে”।
Once upon a time I decided to take out your balls”
দ্যা বেস্ট ডায়ালগ! উফ আপনি এতো ভালো লেখেন কেনো?
সোনেলা পেইজে শেয়ার দেওয়া লেখার শুরু দেখেই বুঝেছি আপনার লেখা! 🙂
আপনি আছেন কেমন??
স্তব্ধ হয়ে পড়ে গেলাম, মাঝে মাঝে উত্তেজনায় কেঁপে কেঁপে উঠছিলাম, অসাধারণ এক চরিত্রের সৃষ্টি করলেন যা আমাদের মেয়ে পুরুষ ডাক্তারদের জন্য আদর্শ হতে পারে, আপনাকে ধন্যবাদ না দিয়েই পারলাম না আপনার এই অনবদ্য গল্পটির জন্য, শুভকামনা।
দারুন এক প্রতিশোধ, ইশ আমাদের দেশের সব ডাক্তার যদি এমন হতেন, গুন্ডা বদমাশদের খোঁজা করে দিতে পারতেন। গল্পের বিষয়বস্তু এবং উপস্থাপনায় আপনি সব সময় আলাদা আপু।
অনেক দিন পরে সোনেলায় এসে আপনার লেখা পেলাম, আনন্দিত আমি। আরো আনন্দিত আপনি লেখা দিচ্ছেন এটি দেখে।
আমাদের দেশে ডাক্তারদের কোন নিরাপত্তা নেই… 🙁 ডাক্তাররা কোথায় কাজ করতে গেলে জান হাতে করে নিয়ে যায়। কথাটি শুনতে খারাপ হলেই সত্যি।
উপজেলা বা জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে প্রায়ই হুমকির সম্মুখীন হয়ে ডাক্তাররা অনেক কিছু করতে বাধ্য হয় এবং সারাটা জীবন তাদের আফসোস হয় “কেন হলাম ডাক্তার?”
আপু ডাক্তারদের ইমেজ সঙ্কট আছে। এজন্য দায়ী কিছু সংখ্যক ডাক্তার। যখন একজন ডাক্তারের খুব নাম ডাক হয়, তার ব্যবহার আর পুর্বের মত থাকেনা। চিকিৎসার পরিবর্তে মুনাফাই মূখ্য হয়ে যায় তার কাছে। ডায়গনষ্ঠিক সেন্টার গুলোতে ৫০% কমিশন পান একজন ডাক্তার যে কোন পরীক্ষায় এবং ডাক্তারগনই এটি গ্রহন করে। শুধু রেফার করলেই এই টাকা। এতে অনাবশ্যক টেষ্ট এর প্রশ্ন চলেই আসে। একজন ডাক্তার দিনে ১০০ জন নতুন পেশেন্ট কিভাবে দেখেন? পুরাতন পেশেন্টও আছেন এর বাইরে। কতটা সময় দিতে পারেন উনি একজন নতুন পেশেন্টকে? কোয়ালিটির তুলনায় কোয়ান্টেটিই কি এনাদের কাছে বেশি নয়? এনারাই মুলত ডাক্তারদের গ্রহনযোগ্যতা প্রশ্নের সম্মুখীন করে ফেলেছেন।
লীলাবতি মন্তব্যের সাথে আমি একমত। আমি জন্মসূত্রেই সরকারি হসপিটাল আবাসিক ক্যাম্পাসে বড় হয়েছি, তাই জানি এর বাস্তব চিত্র কি।
ব্লগার সজীব
কৃন্তনিকা আপু, আপনার লেখাটি আগেই পড়েছি। লগিন হয়ে মন্তব্য করা হয়নি। প্রতিশোধ মুলক গল্পটি আপনি আপনার মত করেই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। ডাক্তারদের দেশ প্রেম এবং সমাজের প্রতি দায়িত্ব আপনার লেখায় এসেছে। বাস্তবে না হলেও আপনি যে এমন ইচ্ছে পোষোন করেন তা আমরা আপনার আরো কয়েকটি লেখায় পড়েছি।
কিছুটা হতাশ হয়েছি লীলাপুর মন্তব্যের জবাবে আপনার লিংক দেয়ায়। লিংক দিয়ে কি আপনি আপনার মন্তব্য দিলেন? ঐ লিংক যদি আপনার বক্তব্য হয়, তবে এই লেখাটি কিন্তু পরস্পর বিরোধী হয়ে যায়। লীলাদির মন্তব্যের শুরুতে উনি লিখেছেন ” আপু ডাক্তারদের ইমেজ সঙ্কট আছে। এজন্য দায়ী কিছু সংখ্যক ডাক্তার। ” আপনি সম্ভবত কোন কারনে এই বাক্যটি পড়েন নি। আপনি জবাব দিলেন এমন ভাবে যে লীলাদি সমগ্র ডাক্তারদের উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করেছেন। এতে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ আছে।
লেখা ভাল লেগেছে কিন্ত সমস্যা হল এগুলো আসলে এক ধরনের প্রতিবিপ্লবী ভাবনা বা আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ। বিপ্লব টেকে , প্রতিবিপ্লব না। এই জাতীয় প্রতিবিপ্লবী ভাবনা বরং সিনেমার পর্দায় দেখতে ভাল লাগে ( উদাহরনঃ রং দে বাসন্তী, ভি ফর ভ্যান্ডেটা)। রিয়েল লাইফে এই জাতীয় বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের কোন মুল্য নেই , প্রতিবাদকারীর মনে সামান্য একটু সুখানুভিতি তৈরি করে , ব্যস এটুকুই।
অনেক ভাল লিখেছেন আপনি। খুব ভাল লেগেছে আপনার লিখা পরে। ডাক্তার সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না, অভিজ্ঞতা অনেক খারাপ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে, তবে দেশের বাইরের ডাক্তারদের বেলায় অভিজ্ঞতা সত্যি অনেক ভাল।
পড়েই চলেছি, কিন্তু শেষ আর হচ্ছে না, টেনে হিচড়ে শেষে এনে তারপর ছাড়ল।
কয়েকটা কথা বেশ ভালো লেগেছে,
গহনার কাজ কি? শো-অফ। আপনি আমার শো-অফ’।”
“এই দেশে এমনিই তোদের থাকা সমস্যা। ইন্ডিয়াতে তো যাবিই। ইজ্জতসহ যাবি না ছাড়া যাবি- ভেবে দ্যাখ”।
আবার খারাপও লেগেছে, আমি ডাক্তারের পক্ষেই কথা বলি সব সময়, তবে এই ক্ষেত্রে একটা বিষয় আমি ডাক্তারদে বলি, কোটি পতির সাথেই কোটি টাকার ব্যবসা করা যায়, তার সাথে নয় যার নুন আনতে পান্তা ফুরোয়।
স্যার আর্থার কোনাল ডয়েল এর কথা মনে পড়ল, শালক হোর্মস লিখে বিখ্যাত হয়েছে কিন্তু পেশায় একজন ডাক্তার ছিলেন। ডাক্তার কিন্তু আপনিও।
একজন ডাক্তার হয়েও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা মাঝে মাঝে হতাশার জন্ম দেয় এই পেশার প্রতি। তবে একটা জিনিস আমি বলতে চাই, একটি লেখার আলোকে যদি মন্তব্য করি তবেই কিন্তু অনেক ভুল বোঝাবুঝি দূরে সরে যায়। কতটা জিম্মি অবস্থার মধ্যে থাকলে এধরনের লেখা আসে, এটা কী কেউ বোঝার চেষ্টা করেছেন? অপার্থিব এর মন্তব্যের আলোকে বলছি, তিনি বলেছেন, এই জাতীয় প্রতিবিপ্লবী ভাবনা বরং সিনেমার পর্দায় দেখতে ভাল লাগে। এটা কিন্তু একটা গল্পই ছিলো। যে গল্পে মানুষ তার হতাশা ব্যক্ত করে সত্যির কল্পনায়। ট্রুলি বলছি, কেউ কার পেশাগত সমস্যার দিকটা বুঝতে সক্ষম নয়। যেভাবে দূর্নীতি ছেয়ে গেছে চারিদিকে, তার থেকে কেউই কি রক্ষা পাচ্ছে? শুধু ডাক্তারদের উপর এত ক্ষোভ থাকা ঠিক নয়।
আমার দেশের ডাক্তারদের অভিজ্ঞতা আমার নিজের ক্ষেত্রেও ভালো নয়, সেটা কিন্তু ভিন্ন প্রসংগ। ইন্টার্নী করেছি এক বছর, স্বচোক্ষে দেখেছি কিভাবে কাজ করতে হয় ডাক্তারদের। লিখতে ইচ্ছে করে, আবার ভাবি কি হবে এসব লিখে?
কৃন্তনিকা অসাধারন লেগেছে গল্পটা, যা সবসময়ই লাগে। অপেক্ষা থাকে আপনার নতুন লেখার। -{@
২৬টি মন্তব্য
মেহেরী তাজ
Once upon a time I decided to take out your balls”
দ্যা বেস্ট ডায়ালগ! উফ আপনি এতো ভালো লেখেন কেনো?
সোনেলা পেইজে শেয়ার দেওয়া লেখার শুরু দেখেই বুঝেছি আপনার লেখা! 🙂
আপনি আছেন কেমন??
কৃন্তনিকা
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 🙂 🙂 🙂
গল্পটার প্লট ও এই ডায়লগটা অনেক আগেই মাথায় ছিল, কিন্তু কাহিনী সাজাতে সময় লেগে গেল…
ভাল নেই। বেকার ডাক্তার, চাকরীর জন্য তাই প্রতিদিন সিভি নিয়ে বের হই বাংলা সিনেমার নায়কদের মত… 🙁
পড়াশুনা করা দরকার… সময় হয় না…
সঞ্জয় কুমার
অসাধারণ । পুরোটা একবারে শেষ করেছি
কৃন্তনিকা
পড়ার জন্য ধন্যবাদ 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এমন লেখার কৌশলী গল্প কি পড়তে গেলে থামা যায়।নাহিদ নীলার রোমান্টিজমের কথপোকথন বেশ ভাল লাগল।মনে হলো অনেক দিন পর ভাল একটি গল্পের পার্ট পড়লাম। -{@
কৃন্তনিকা
জেনে ভাল লাগলো 😀
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ইঞ্জা
স্তব্ধ হয়ে পড়ে গেলাম, মাঝে মাঝে উত্তেজনায় কেঁপে কেঁপে উঠছিলাম, অসাধারণ এক চরিত্রের সৃষ্টি করলেন যা আমাদের মেয়ে পুরুষ ডাক্তারদের জন্য আদর্শ হতে পারে, আপনাকে ধন্যবাদ না দিয়েই পারলাম না আপনার এই অনবদ্য গল্পটির জন্য, শুভকামনা।
কৃন্তনিকা
পড়ার জন্য ধন্যবাদ 🙂 🙂 🙂
আপনার জন্য রইল শুভকামনা। ভাল থাকবেন।
লীলাবতী
দারুন এক প্রতিশোধ, ইশ আমাদের দেশের সব ডাক্তার যদি এমন হতেন, গুন্ডা বদমাশদের খোঁজা করে দিতে পারতেন। গল্পের বিষয়বস্তু এবং উপস্থাপনায় আপনি সব সময় আলাদা আপু।
অনেক দিন পরে সোনেলায় এসে আপনার লেখা পেলাম, আনন্দিত আমি। আরো আনন্দিত আপনি লেখা দিচ্ছেন এটি দেখে।
কৃন্তনিকা
আমাদের দেশে ডাক্তারদের কোন নিরাপত্তা নেই… 🙁 ডাক্তাররা কোথায় কাজ করতে গেলে জান হাতে করে নিয়ে যায়। কথাটি শুনতে খারাপ হলেই সত্যি।
উপজেলা বা জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে প্রায়ই হুমকির সম্মুখীন হয়ে ডাক্তাররা অনেক কিছু করতে বাধ্য হয় এবং সারাটা জীবন তাদের আফসোস হয় “কেন হলাম ডাক্তার?”
গল্পটি শুধুই হতাশা থেকে জন্ম নেয়া কল্পনা…
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
লেখা দিতে পেরে আমিও আনন্দিত। 🙂 🙂 🙂
লীলাবতী
আপু ডাক্তারদের ইমেজ সঙ্কট আছে। এজন্য দায়ী কিছু সংখ্যক ডাক্তার। যখন একজন ডাক্তারের খুব নাম ডাক হয়, তার ব্যবহার আর পুর্বের মত থাকেনা। চিকিৎসার পরিবর্তে মুনাফাই মূখ্য হয়ে যায় তার কাছে। ডায়গনষ্ঠিক সেন্টার গুলোতে ৫০% কমিশন পান একজন ডাক্তার যে কোন পরীক্ষায় এবং ডাক্তারগনই এটি গ্রহন করে। শুধু রেফার করলেই এই টাকা। এতে অনাবশ্যক টেষ্ট এর প্রশ্ন চলেই আসে। একজন ডাক্তার দিনে ১০০ জন নতুন পেশেন্ট কিভাবে দেখেন? পুরাতন পেশেন্টও আছেন এর বাইরে। কতটা সময় দিতে পারেন উনি একজন নতুন পেশেন্টকে? কোয়ালিটির তুলনায় কোয়ান্টেটিই কি এনাদের কাছে বেশি নয়? এনারাই মুলত ডাক্তারদের গ্রহনযোগ্যতা প্রশ্নের সম্মুখীন করে ফেলেছেন।
কৃন্তনিকা
সবাই আপনার মত ধারণা পোষণ করে যা খুবই দুঃখের বিষয়।
আপনার সকল প্রশ্নের উত্তরটি পেয়ে যাবেন এই লিঙ্কেঃ
http://www.platform-med.org/%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%87/
মৌনতা রিতু
লীলাবতি মন্তব্যের সাথে আমি একমত। আমি জন্মসূত্রেই সরকারি হসপিটাল আবাসিক ক্যাম্পাসে বড় হয়েছি, তাই জানি এর বাস্তব চিত্র কি।
ব্লগার সজীব
কৃন্তনিকা আপু, আপনার লেখাটি আগেই পড়েছি। লগিন হয়ে মন্তব্য করা হয়নি। প্রতিশোধ মুলক গল্পটি আপনি আপনার মত করেই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। ডাক্তারদের দেশ প্রেম এবং সমাজের প্রতি দায়িত্ব আপনার লেখায় এসেছে। বাস্তবে না হলেও আপনি যে এমন ইচ্ছে পোষোন করেন তা আমরা আপনার আরো কয়েকটি লেখায় পড়েছি।
কিছুটা হতাশ হয়েছি লীলাপুর মন্তব্যের জবাবে আপনার লিংক দেয়ায়। লিংক দিয়ে কি আপনি আপনার মন্তব্য দিলেন? ঐ লিংক যদি আপনার বক্তব্য হয়, তবে এই লেখাটি কিন্তু পরস্পর বিরোধী হয়ে যায়। লীলাদির মন্তব্যের শুরুতে উনি লিখেছেন ” আপু ডাক্তারদের ইমেজ সঙ্কট আছে। এজন্য দায়ী কিছু সংখ্যক ডাক্তার। ” আপনি সম্ভবত কোন কারনে এই বাক্যটি পড়েন নি। আপনি জবাব দিলেন এমন ভাবে যে লীলাদি সমগ্র ডাক্তারদের উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করেছেন। এতে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ আছে।
নিয়মিত লেখুন সোনেলায়।
ছাইরাছ হেলাল
আপনার লেখার হাতটি বরাবরের মতই চমৎকার।
এত বড় লেখা, তাও ঝিমিয়ে পড়েনি কোথাও, টানটান রেখেছেন।
পড়ে ভাল লাগল।
কৃন্তনিকা
পড়ার জন্য ধন্যবাদ 🙂
আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো।
শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
অপার্থিব
লেখা ভাল লেগেছে কিন্ত সমস্যা হল এগুলো আসলে এক ধরনের প্রতিবিপ্লবী ভাবনা বা আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ। বিপ্লব টেকে , প্রতিবিপ্লব না। এই জাতীয় প্রতিবিপ্লবী ভাবনা বরং সিনেমার পর্দায় দেখতে ভাল লাগে ( উদাহরনঃ রং দে বাসন্তী, ভি ফর ভ্যান্ডেটা)। রিয়েল লাইফে এই জাতীয় বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের কোন মুল্য নেই , প্রতিবাদকারীর মনে সামান্য একটু সুখানুভিতি তৈরি করে , ব্যস এটুকুই।
কৃন্তনিকা
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 🙂
জ্বী, আপনি অতি বাস্তব কথা বলেছেন।
জিসান শা ইকরাম
কিভাবে প্রতিশোধটা গুছিয়ে এনে মিলালেন!
প্রথম দিকে ধারনাই করতে পারিনি এভাবে হবে সমাপ্ত।
আপনার লেখার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট হচ্ছে পাঠকের আগ্রহকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখা
কখনোই ক্লান্তি আসবেনা আপনার গল্পে……
শুভ কামনা।
কৃন্তনিকা
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 🙂
আপনার জন্যও রইল শুভকামনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপনি লেখেন অসাধারণ। আপনার গল্পের অপেক্ষায় থাকি। হয়তো জানেন, নয়তো না।
তবে ডাক্তারদের সম্পর্কে কিছু বলতে চাইনা। এতো বেশী বাজে অভিজ্ঞতা আছে যা ভাবতেও চাইনা।
ইকবাল কবীর
অনেক ভাল লিখেছেন আপনি। খুব ভাল লেগেছে আপনার লিখা পরে। ডাক্তার সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না, অভিজ্ঞতা অনেক খারাপ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে, তবে দেশের বাইরের ডাক্তারদের বেলায় অভিজ্ঞতা সত্যি অনেক ভাল।
আজিম
অসাধারন প্রতিশোধ এবং লিখাও।
মৌনতা রিতু
আকাশে বাতাশে ভাল লাগা ছড়িয়ে গেল। সুন্দর সাজানো গোছানো লেখা। ভালবাসলে আসলেই দুর্বলতা চলে আসে। তা সে সন্তান হোক আর জীবন সংগি হোক।
আবু খায়ের আনিছ
পড়েই চলেছি, কিন্তু শেষ আর হচ্ছে না, টেনে হিচড়ে শেষে এনে তারপর ছাড়ল।
কয়েকটা কথা বেশ ভালো লেগেছে,
গহনার কাজ কি? শো-অফ। আপনি আমার শো-অফ’।”
“এই দেশে এমনিই তোদের থাকা সমস্যা। ইন্ডিয়াতে তো যাবিই। ইজ্জতসহ যাবি না ছাড়া যাবি- ভেবে দ্যাখ”।
আবার খারাপও লেগেছে, আমি ডাক্তারের পক্ষেই কথা বলি সব সময়, তবে এই ক্ষেত্রে একটা বিষয় আমি ডাক্তারদে বলি, কোটি পতির সাথেই কোটি টাকার ব্যবসা করা যায়, তার সাথে নয় যার নুন আনতে পান্তা ফুরোয়।
স্যার আর্থার কোনাল ডয়েল এর কথা মনে পড়ল, শালক হোর্মস লিখে বিখ্যাত হয়েছে কিন্তু পেশায় একজন ডাক্তার ছিলেন। ডাক্তার কিন্তু আপনিও।
গল্পটা অসাধারণ ভালো লেগেছে, শুভ কামনা।
শুন্য শুন্যালয়
একজন ডাক্তার হয়েও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা মাঝে মাঝে হতাশার জন্ম দেয় এই পেশার প্রতি। তবে একটা জিনিস আমি বলতে চাই, একটি লেখার আলোকে যদি মন্তব্য করি তবেই কিন্তু অনেক ভুল বোঝাবুঝি দূরে সরে যায়। কতটা জিম্মি অবস্থার মধ্যে থাকলে এধরনের লেখা আসে, এটা কী কেউ বোঝার চেষ্টা করেছেন? অপার্থিব এর মন্তব্যের আলোকে বলছি, তিনি বলেছেন, এই জাতীয় প্রতিবিপ্লবী ভাবনা বরং সিনেমার পর্দায় দেখতে ভাল লাগে। এটা কিন্তু একটা গল্পই ছিলো। যে গল্পে মানুষ তার হতাশা ব্যক্ত করে সত্যির কল্পনায়। ট্রুলি বলছি, কেউ কার পেশাগত সমস্যার দিকটা বুঝতে সক্ষম নয়। যেভাবে দূর্নীতি ছেয়ে গেছে চারিদিকে, তার থেকে কেউই কি রক্ষা পাচ্ছে? শুধু ডাক্তারদের উপর এত ক্ষোভ থাকা ঠিক নয়।
আমার দেশের ডাক্তারদের অভিজ্ঞতা আমার নিজের ক্ষেত্রেও ভালো নয়, সেটা কিন্তু ভিন্ন প্রসংগ। ইন্টার্নী করেছি এক বছর, স্বচোক্ষে দেখেছি কিভাবে কাজ করতে হয় ডাক্তারদের। লিখতে ইচ্ছে করে, আবার ভাবি কি হবে এসব লিখে?
কৃন্তনিকা অসাধারন লেগেছে গল্পটা, যা সবসময়ই লাগে। অপেক্ষা থাকে আপনার নতুন লেখার। -{@