
মন ভীষন খারাপ কিছু একটা করা চাই। কারো সাথে কথা বলা সমাধান নয় বরং ঝেপে পড়ুন মুভি কিংবা নাটকে। আর মন ভালো করতে অবশ্যই বেছে নিন কাজলের মুভি। কাজলের মুভি মানেই মজাদার, ক্ষুরধার আর হাসতে হাসতে পেটে খিল।
চলুন দেখা যাক এমনি এক মুভি ‘ হেলিকপ্টার ইলা’। কাজলের অপর নাম ‘ ইলা রায় তুর্কার’। দুরন্ত হাস্যরসে টইটুম্বুর এক তরুনী যার জীবনের উদ্দেশ্য ভালো গায়িকা হওয়া। গায়কী ভালো বলেই চোখে পড়েন মহেশ ভাটের মতো পরিচালকের। কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘুরতে ঘুরতেই আটকে যায়। এটুকু না দেখলে মজা হবে না তাই দেখে নেবেন।
অস্থির মানুষদের নাকি অপেক্ষা সয় না। কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত হওয়া চাইই চাই। তাই দুম করে বিয়ে করে ফেললেন তার অনেকদিনের প্রেমিক ‘ টোটা রায় চৌধুরীকে’। এ মুভিতে কাজলের স্বামীর ভূমিকায় তিনি অনবদ্য অভিনয় করতে পারেননি বরং আমরা তাকে ভালো বন্ধু দেখতেই পছন্দ করতাম।
তবুও সংসার ভালোই চলছিল। একদিন সামান্য কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাসে তার স্বামী নিরুদ্দেশ হয়। এখানে কেন টোটা কাজলকে ছেড়ে চলে যায় তা মুভিতেই দেখে নেবেন।
এদিকে অনেক অপেক্ষার পর ইলা বুঝতে পারেন স্বামী আর ফিরবে না এবং এখন একমাত্র সম্বল তার চার বছরের ছেলে। স্বামীকে হারিয়ে তার মনে অবিশ্বাস বাসা বাঁধে পাছে ছেলেও তাকে ফেলে চলে যায়। গানই যার জীবন ছিলো তিনি ছেলের জন্য গান ছেড়ে দিলেন এবং চরিত্র পুরাই বদলে গেলো।
কারও উপর খুব বেশী নির্ভরতা নাকি একপ্রকার ব্যাধি। কাজলেরও ছেলে নির্ভরতা ভয়ানক ব্যাধিতে রুপ নিলো। রীতিমতো চল্লিশ পার হয়ে যাওয়া মা ছেলেকে চোখে চোখে রাখবার জন্য তার কলেজে ভর্তি হয়ে গেলেন।এখানে শিক্ষক হিসেবে অনবদ্য অভিনয় করেছেন ‘ নেহা ধুপিয়া’। কাজলের ছেলের ভূমিকায় রয়েছেন ‘ রুিধি সেন’।
মুভিতে দুটো ম্যাসেজ থাকলেও প্রাধান্য পায় একটি তা হল- অতিরিক্ত ভালোবাসা ও ভালোচাওয়ার কারনে আমরা মায়েরা বুঝতেই চাই না সন্তানদেরও পার্সোনাল একটা গন্ডি আছে। কাজল এখানে যে অভিনয় করেছেন তা অনবদ্য কিন্তু বিরক্তিকর তার ছেলের জন্য। দর্শক হিসেবে আমারও বিরক্ত লেগেছে। গাল্ ফ্রেন্ডের সাথে লুকিয়ে কথা বলা শোনা, ঘুমন্ত ছেলের মুখ শুকে দেখা, শার্ট শুকে দেখা এমনকি তার ফেসবুক, টুইটার পর্যন্ত এড হয়ে যাওয়া রীতিমতো ইমব্যরেসিং। যেখানেই ছেলে সেখানেই মা হাজির। She’s here, She’s there, She’s everywhere!!!
প্রত্যেক মানুষের আলাদা সত্তা এবং যোগ্যতা থাকে এটা সবাই প্রকাশ করতে পারে না। কাজল তেমনি এক মেধাবী গায়িকা হবার পরও অতিরিক্ত ছেলে প্রেমে নিজেকে ভুলে যান। এখানে ছেলের অভিনয় ও ত্যাগ নিজের চোখে না দেখলে হবেই না। একেবারে অসাধারন! আর তাইতো এতো ইয়ংদের ভীরে আজও ইয়ং ‘ ইলা রায় তুর্কার’।
মুভির গানের মধ্যে যেমন নব্বইয়ের নস্টালজিয়া আছে তেমনই আজকের ফুরফুরে মেজাজও আছে।
আমাদের মন একটা বন্ধ আলমারী তাতে আমাদের দুনিয়া দিনের পর দিন বন্দি থাকে। আমরা নিজের অজান্তেই তা কখনো খুলিই না হয়তো সুযোগ হয়না কিংবা ইচ্ছে হয় কিংবা ভয় আঁকড়ে থাকে। সব ঝেরে ঝুরে দাঁড়াতে পারলে কেউ আটকাতে পারে না। আর বয়স কোন কথাই নয়।
মুভিতে এই গানটির কথাগুলো ভীষন সুন্দর ও বাস্তব। আর মা ছেলের অসাধারণ অভিনয় হাসির ও শিক্ষনীয়। তাহলে দেখে ফেলুন আর আমার মতো মন খারাপ ভাবও নিমিষেই উধাও।
Helicopter Eela: Directed by Pradeep Sarkar. With Kajol, Riddhi Sen, Tota Roy Chowdhury,Neha Dhupia.
5.6/10 (1,088)
ছবি- নেটের
২০টি মন্তব্য
বন্যা লিপি
ট্রেলার দেখছিলাম ছবিটার। কাজল আমার প্রিয় অভিনেত্রী। সুন্দর রিভিউ পোষ্ট লিখেছেন। চালু রাখুন সময় নিয়ে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা সময় দেবার জন্য। অবশ্যই চেষ্টা করবো। ভালো থাকবেন।
সৌবর্ণ বাঁধন
চমৎকার রিভিউ লিখেছেন। যদিও মুভি দেখা কম হয় কিন্তু মনে হচ্ছে মুভিটাতে মানুষের মন বিশেষ করে মায়ের অপত্য স্নেহের বিস্তার নিয়ে অনেক কিছু দেখানো হয়েছে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অতি স্নেহ ও যে বিরক্তিকর তা ফুটে উঠেছে। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
চমৎকার রিভিউ লিখেছেন — প্রত্যেক মানুষের আলাদা সত্তা এবং যোগ্যতা থাকে এটা সবাই প্রকাশ করতে পারে না। কাজল তেমনি এক মেধাবী গায়িকা হবার পরও অতিরিক্ত ছেলে প্রেমে নিজেকে ভুলে যান। এখানে ছেলের অভিনয় ও ত্যাগ নিজের চোখে না দেখলে হবেই না। একেবারে অসাধারন! আর তাইতো এতো ইয়ংদের ভীরে আজও ইয়ং ‘ ইলা রায় তুর্কার’।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাই।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
শুভ কামনা রইলো আপা।
ছাইরাছ হেলাল
ছবি দেখলে আরও ভাল মন্তব্য করতে পারতাম,
তবে মায়েদের এই পুলিশ ভুমিকা কিন্তু আমাদের সমাজে অনেক বেশী করে চালু আছে,
যা বিপর্য়য়ের কারণ অনেক সময়।
রোকসানা খন্দকার রুকু
মায়েরা ভাবেন তাঁরাই সব বোঝেন এবং সব সিদ্ধান্ত দেবেন। এটা ভেবে নিজেকে বাদ দিয়ে ছেলে মেয়ের পেছনে লেগে থাকেন এটা অবশ্যই বাড়া বাড়ি।
মনির হোসেন মমি
মেয়ের সর্বোক্ষেত্রে মায়ের বিচরণ।অনেকাংশে মেয়ে মেনে নিলেও কিছু স্থানে মেনে নেয়াটা অসম্ভব হয়ে পড়ে। যাই হোক মুভিটি রিভিউ চমৎকার হইছে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাইয়া।
হালিমা আক্তার
ছবিটির রিভিউ খুব ভালো লাগলো। সময়ের অভাবে ছবি দেখা হয়না। তবে এ ছবিটি সময় পেলে দেখার চেষ্টা করব।
বাংলাদেশি মায়েদের এক অনুপম চিত্র। সন্তান বড় হয়ে যাওয়ার পরও মায়েদের পুলিশের ভূমিকা কমেনা। এতে পরোক্ষ ভাবে সন্তানের ক্ষতি করছেন।
শুভ কামনা রইলো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
চেষ্টা করছি লেখার। পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
হালিমা আক্তার
অবশ্যই পাশে আছি। শুভেচ্ছা রইলো।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চমৎকার রিভিউ পোস্ট। মায়েদের চরিত্র দারুন ভাবেই উপস্থাপিত হয়েছে বোঝাই যায়। কাজলের অভিনয় নিয়ে কিছুই বলার থাকে না। আশা করি মুভিটি দেখবো। অফুরন্ত শুভকামনা রইলো
রোকসানা খন্দকার রুকু
জ্বী দিভাই তারাতারী দেখে ফেলুন। আর টিচারের ক্যারেক্টার (নেহা ধুপিয়া) পুরাই আমার!!!
ধন্যবাদ ।
আরজু মুক্তা
পুলিশি ভাব দরকার। একবারে ছেড়ে দিলেই তো মাথায় উঠবে।
মুভিটি দেখবো আজ রাতে
রোকসানা খন্দকার রুকু
হা হা মেয়ের অবস্থা খারাপ। পুলিশি ভাব শেখার জন্যই তার মা আজই মুভি দেখবে। নো প্রব্লেম আমরা তো আছি হেল্প লাগলে করবো।।
সাবিনা ইয়াসমিন
কাজলের অভিনয় আমার ভালো লাগে, যেকোনো চরিত্রের।
মা— মায়ের কাছে তার বাচ্চারা আশি বছরেও বড় হয় না। ছেলে হলেতো কোন কথাই নেই!
রোকসানা খন্দকার রুকু
বড় না মনে করা অন্যজিনিস। তা বলে পিছু লেগে থাকা মোটেও ঠিক নয় তাও নিজের ক্যারিয়ার বাদ দিয়ে। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা অশেষ।