
একদা জীবন পরিক্রমায় তন্বী তরুণীর হৃদয় হয়েছিল শতধা!
হাসতে ভুলে গিয়েছিল সে, কঠিন পৃথিবীর ঘুর্ণিপাকে!
বিমূর্ত রূপের বিমর্ষ চেতন ন্যুজ্ব প্রায় স্ব ভারে,
তারপর কেটে গেছে বহুদিন, মাস রাহু গ্রাস।
পুনরায় হাসতে শিখেছিলো সে,
সেই ভিখিরী বুড়ি দিদার কাছ থেকে,
হাড় জিরজিরে শরীর হদিস নেই দাঁতের পাটির,
প্রায়শই দরজার কড়া নেড়ে যেতো অনর্গল,
দরজা খুলতেই একগাল নির্মল হাসি!
শুধায় __”কিছু দিবি মা?”
তরুণীর নিজের দুঃখ বুড়ি দিদার দুঃখের কাছে হেরে
যায়!
হাসতে শিখেছিলো সে,
পাড়ার মোড়ে উদোম গায়ে সেই বুড়ো রসিক ঝালমুড়ি ওয়ালার কাছ থেকে,
আলুর চপ, ডালমুটের চচ্চড়ির সাথে
কাঁচা মরিচ,ধনিয়াপাতা,পেঁয়াজ কুচো,
সরিষার তেল দিয়ে মুড়ি মাখিয়ে কি যেন অমৃত বানায়,
ছেলে পুলেদের লাইন পড়ে যায়!
বুড়োর গায়ের কমপক্ষে ছত্রিশ খানা হাঁড় বাধা দেয়,
তবুও বুড়ো থামেনা,
সালাদ কাটে আর নিজের বাঁধা ছড়া কাটে __
“ক খ গ ঘ ঙ মাস্টর বেটা ঘুমো”
বুড়ো ঝালমুড়ির ডিবা ঝাঁকায় আর ভাটিয়ালী গায়,
জগতের সব সুখ যেন ঝালমুড়ির কৌটায়…..
তাই দেখে তরুণীর দুঃখরা লজ্জাবতী’র মতো চুপসে যায়।
হাসতে শিখেছিলো সে,
চৈতালী দুপুরে তীর্যক রোদে পুড়ে
বুড়ো রিক্সাওয়ালা যখন হেলেদুলে প্যাডেল চেপে তরুণীকে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়,
রেট ভাড়া হাতে পেয়ে হাসি হাসি মুখে আবার হাত বাড়িয়ে বলে __
“আর কিছু দিবেন নি আম্মা?
দেখছেন ত রোদের কি তেজ!”
তরুণীর দুঃখ তখন পড়ি কি মরি করে পালায়…
তরুণী হাসতে শিখে যায়….
এ হাসি থামবার নয়…
এ হাসি বিধাতার অকৃপণ দান…
এ হাসিতে মেতে উঠে সকল মহৎ প্রাণ।
১২/০৭/২০২০ইং
৩০টি মন্তব্য
ইঞ্জা
তরুণী হাসতে শিখে যায়….
এ হাসি থামবার নয়…
এ হাসি বিধাতার অকৃপণ দান…
এ হাসিতে মেতে উঠে সকল মহৎ প্রাণ।
কাব্যিকতায় নান্দনিক প্রকাশ, এভাবেই হাসিখুশি থাকুন আজীবন, এই কামনা রইলো।
খাদিজাতুল কুবরা
ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্য আমার কলমের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
আন্তরিক ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন সবসময়।
ইঞ্জা
শুভকামনা রইলো।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ অনুভূতির প্রকাশ কবি আপু
খাদিজাতুল কুবরা
আমার আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন
দাদা।
ভালো থাকুন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দুঃখজনের মুখে হাসি ফোটাতে ঈশ্বর কাউকে না কাউকে উছিলা হিসেবে পাঠায়। তখন দুঃখরা সত্যি লজ্জা পেয়ে যায়। যাক শেষপর্যন্ত তরুণীর হাসি চিরস্থায়ী হলো জেনে ভালো লাগলো। শুভ কামনা রইলো
খাদিজাতুল কুবরা
দিদি খুব সুন্দর বলেছেন,
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
আন্তরিক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা রইল।
মনির হোসেন মমি
খুব সুন্দর প্রকাশ।হাসি যেন থাকে অমলিন।
খাদিজাতুল কুবরা
আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।
সুন্দর মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগলো।
ভালো থাকুন সবসময়।
নীরা সাদীয়া
অবশেষে তরুণী হাসতে শিখলো।
মুখরোচক খাবারের নামগুলো যোগ করলো আরেক মাত্রা।
খাদিজাতুল কুবরা
সুন্দর মন্তব্য পেয়ে উৎসাহ পেলাম আপু।
ভালো থাকুন সবসময়।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
কাব্যিক প্রকাশ — তরুণী হাসতে শিখে যায়….
এ হাসি থামবার নয়…
এ হাসি বিধাতার অকৃপণ দান…
এ হাসিতে মেতে উঠে সকল মহৎ প্রাণ।
শুভেচ্ছা রইল।
খাদিজাতুল কুবরা
ভাইয়া আপনার মূল্যবান মন্তব্য পেয়ে অনুপ্রাণিত হলাম।
ভালো থাকবেন শুভেচ্ছা অবিরাম।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপনিও ভালো থাকবেন। প্রীতিময় শুভেচ্ছা নেবেন।
ফয়জুল মহী
অত্যন্ত সৃষ্টিশীল অভিব্যক্তি ।
খাদিজাতুল কুবরা
আন্তরিক ধন্যবাদ সবসময় পাশে থেকে অনুপ্রাণিত করার জন্যে।
ভালো থাকুন সবসময়।
সুরাইয়া নার্গিস
চমৎকার! অনুভূতির প্রকাশ দারুন লাগছে।
খাদিজাতুল কুবরা
আপু আমার আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন।
মোঃ মজিবর রহমান
সেই ভিখিরী বুড়ি দিদার কাছ থেকে,
হাড় জিরজিরে শরীর হদিস নেই দাঁতের পাটির,
প্রায়শই দরজার কড়া নেড়ে যেতো অনর্গল,
দরজা খুলতেই একগাল নির্মল হাসি!
শুধায় __”কিছু দিবি মা?”
হাসি এখানে শিখলেও খুব অনুভুতিশীল অবস্থান লেখায় এখানে। মুগ্ধ হলাম। কাব্যময় হাসির উতসে।
খাদিজাতুল কুবরা
চমৎকার মন্তব্য পেয়ে ভীষণ উৎসাহিত হলাম।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন শুভকামনা নিরন্তর।
মোঃ মজিবর রহমান
শুভেচ্ছা নিরন্তর। ভাল থাকুন।
নিতাই বাবু
সুন্দর মনের মনোমুগ্ধকর এক কবিতা। পাঠে মুগ্ধ হলাম।
শুভেচ্ছা জানবেন।
খাদিজাতুল কুবরা
দাদা আপনার এতোটুকুও ভালো লাগলে সেটাই আমার কলমের প্রাপ্তি।
সুন্দর মন্তব্য করে অনুপ্রাণিত করার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন শুভকামনা সর্বক্ষণ
ছাইরাছ হেলাল
তরুণী তো বুড়োদের আর বুড়ির হাসির কাছ থেকেই সব সুখ কুড়িয়ে নিল !
সে দেশে বুঝি কোন যুবক আর বেঁচে নেই !! বা অকাল লেগেছে! যুবক-মন্বন্তর !!
আপনি ভাল লেখেন।
খাদিজাতুল কুবরা
এটা একদম একপেশে হয়ে গেছে। একজন তরুণের উপস্থিতি দরকার ছিলো।
হা হা হা।
পরবর্তী কবিতায় তরুণ থাকবে পাক্কা।
আসলে জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে যারা হাসিমুখে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে পিছু হটেনা তারা আমাদের জন্য অবশ্যই ভুলে যাওয়া হাসির উৎস।
সেই ভেবেই লেখা।
প্রশংসা পেয়ে অনুপ্রাণিত হলাম।
অশেষ ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
ছাইরাছ হেলাল
সোনেলা ছাড়া আর কোথায় কোথায় লেখেন?
খাদিজাতুল কুবরা
আমি ছোট বেলা থেকেই ডায়রি লিখতাম।
আবার কয়েকদিন পর ছিড়ে ফেলতাম।
কিছু কবিতা ও লিখেছি স্টুডেন্ট লাইফে।
সে সবকিছু বিয়ের পর পুকুরে ফেলে দিয়েছিলাম।
মাঝে পনেরো বছর লিখিনি, পড়িও নি।
মাস ছয়েক হলো কয়েকটি ফেসবুক পেজে লিখছি।
একান্ত অনুভূতি শেয়ার করতে পেরে বেশ হালকা লাগছে।
আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট হলে দুঃখিত।
ভাইয়া আপনাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতে চাই।
তৌহিদ
বেঁচে থাকার এ লড়াইয়ে সকল নারী এগিয়ে থাকুক এটাই চাই। দারুণ লিখেছেন কিন্তু!
শুভকামনা সবসময় আপু।
খাদিজাতুল কুবরা
আপনার মন্তব্য এবং আপনার পোস্টগুলো পড়ে আপনার সুন্দর মনের পরিচয় পেয়েছি।
আমি খুব আনন্দিত এটা জেনে যে আপনার মতো শুভাকাঙ্খী আছে মহিলাদের জন্য।
খুব ভালো থাকুন শুভকামনা নিরন্তর।
তৌহিদ
আপনিও ভালো থাকুন আপু।