সেই আমি, এই আমি

জিসান শা ইকরাম ৫ আগস্ট ২০১৬, শুক্রবার, ১২:৩৬:২৩পূর্বাহ্ন একান্ত অনুভূতি ৫০ মন্তব্য

সেই আমি, আট আগষ্ট ২০১০
#
Jeshan4u_1281326537_1-running_horse_1600x1200__1024x768_
স্বপ্নীল চোখে ভাসে শূণ্য উপত্যকা,
ছুটন্ত ঘোড়া…
একাকি ছুটছে…
ছুটছে…

##
Jeshan4u_1281326625_2-ALIM0022__1024x768_
চোখ হতে চশমা টেবিল এ রাখতে গিয়ে দুর্ঘটনা। মেঝেতে পড়ে গিয়ে দুই ভাগ।
আমার অনেক প্রিয় চশমা। ২৪ ঘন্টার ১৮ ঘন্টার সাথী। কত দেশ ঘুরেছে আমার সাথে।
কত কিছু পড়েছি, কত প্রিয়জনকে দেখেছি,
আকাশ নদী সাগর গাছ ফুল পাখি …সব ভুবন ওর মাঝ হতে দেখেছি।
কখন যেন শরীরের একটা অংশ বনে গিয়েছিল।
ওটাই ভেঙ্গে গেল ? আর আমি ওটা চোখে দিতে পারবো না?

Jeshan4u_1281326693_3-ALIM0024__1024x768_
জীবনের প্রয়োজনটা অনেক বেশী,
ইচ্ছা অনিচ্ছায় জীবনটা হয়ে যায় বহতা নদী ।
দিনের শেষে নতুন চশমা কিনেছি।
নতুন চশমা চোখে দিয়ে পুরানো চশমার কথা লিখছি।

এই আমি, পাঁচ আগষ্ট ২০১৬
##
মাঝে মাঝে চশমা চোখে দিয়েই ঘুমিয়ে পরি। কাছে কম দেখি বলে ঘুমের মধ্যে একদম কাছের স্বপ্ন যদি দেখতে না পাই চশমা ব্যতীত? এটি অবশ্য কারণ নয় 🙂 কারণ হচ্ছে
অন্তর্জালের সমুদ্রে জাল দিয়ে মৎস শিকার করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পরি জানিনা
( ব্যাক গ্রাউন্ডে……… মৎস মারিব খাইব সুখে বিজ্ঞাপনী গান )। ইমো, ভাইভার, হোয়াটসএপ, মেসেঞ্জার, স্কাইপ, উই চ্যাট, লাইন-বেলাইন এসব আমার মোবাইলে আছে। থাকলেই কি ব্যবহার করতে হবে? ফলের দোকানে ফল বা মিষ্টির দোকানে মিষ্টি থাকে। দোকানদার কি খায়? খেলে দোকানে তো ফল মিষ্টিই থাকতো না। একেই সংযম বলে 🙂
যাই হোক ভোরে ঘুম থেকে জেগে বালিশের পাশে চশমা খুঁজে পাইনা। চশমাকে পাওয়া গেলো পিঠের নীচে। প্রায়ই ইনি পিঠের নীচে রাতে ঘুমায়। শরীরের ওম পছন্দ করে নাকি চশমা? হাতে এলো চশমার একটি ডাট, আরে একটি ডাট কেন? গ্লাস কই? লাফ দিয়ে উঠে বসে পাওয়া গেল গ্লাস সহ অন্য ডাটটিকে। এখন কি করা যায়? এত প্রিয় নতুন চশমাটি, আর একটি অবশ্য ছিল, তবে সেটি চোখে দিয়ে অতটা ভাব আসেনা।

IMG_20160804_221442এক টিভির বিজ্ঞাপনে দেখেছিলাম, কি এক সুপার গ্লু দিয়ে ভাঙ্গা লোহা জোড়া দিয়ে দুই প্রান্তে দুই হাতি টেনে জোড়া খোলার চেষ্টা করছে, হাতি ব্যার্থ।
বাহ, কিনতে হবে ঐ সুপার গ্লু, কিন্তু নাম তো জানিনা। কেয়ারটেকারকে বললাম ‘হাতি মার্কা’ সুপার গ্লু আনো, লাগালে যেন ছুটে না যায়। কোন কথা না বলে কেয়ারটেকার বাজার থেকে নিয়ে এলো ‘ এভার বন্ড সুপার গ্লু।’ এটিই নাকি সবচেয়ে ভাল, হাতি মার্কা সুপার গ্লু নেই কোন দোকানে। শহরের সমস্ত দোকানে খুঁজে দেখেছে। মন আমার খারাপ। হাতি মার্কা সুপার গ্লু নেই কেন শহরে? মানুষ কি ভাল জিনিস কিনতে চায় না? যাক যেটা এনেছে সেটার নামও তো এভার বন্ড। বৃক্ষ তোমার নাম কি, ফলে একটু পরিচয় দাও তো দেখি।

ভেঙ্গে যাওয়া স্থানটি পরিষ্কার করে এভার বন্ড গ্লু দিয়ে দুই হাতে চেপে চেপে রাখলাম প্রায় পাঁচ মিনিট। লেগে গিয়েছে 🙂 চোখে দিয়ে দেখি, হ্যাঁ কাজ হচ্ছে ছুটে যাচ্ছে না। জোড়া এমন ভাবে মিশে গিয়েছে যে, সামান্য দাগও নেই। অবাক এর অনুভূতি অবাক হয়ে গেলো। একদিন পর দেখিনা কি হয় ভেবে একটু টান দিলাম ছুটে যায় কিনা। না ছুটছে না 🙂 এরপর জোরে আরো জোরে কিছুতেই ছুটছে না…… এভার বন্ড নাম, বুঝতে হবে।
IMG_20160804_221129kkkk

কত কারণে অকারণে ভেঙ্গে যায় মানুষের হৃদয়, ভেঙ্গে যায় সম্পর্ক। ব্রেক আপ তো কথায় কথায়। দীর্ঘ বছরের বয়ে চলা সম্পর্ক গুলো নিমিষেই ছিন্ন হয়ে যায়। যে স্বপ্ন নিয়ে একজন নারী পুরুষ ঘর বাঁধে, হঠাৎ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। যারা পারেনা, একই বিছানার একই চাদরে শুয়ে থেকেও থাকে লক্ষ যোজন দূরে। মানুষের আনন্দ ভেঙ্গে যায়, ভেঙ্গে যায় সুকুমার প্রবৃত্তি। এভার বন্ড সুপার গ্লু দিয়ে যদি সব জোড়া লাগান যেতো!

একটু তাড়া আছে,

১৬৫৫জন ১৫৯৩জন

৫০টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ