নাহ্,
কোন এক রাতের শেষ বা নিস্তব্ধ মধ্যরাতে নয়, হুড়মুড় করে হাজির সন্ধ্যা রাতেই, না বলা-কওয়াতেই,
যেমন হয় সব সময়ে, এক্ষুণি যেতে হবে শ্মশানে, এক অষ্টাদশী বিশ্বসুন্দরী এসেছে, বৃথা চোখজনম না দেখলে গোল গোল চোখে, আরে দেখে-টেখে কী বা হবে? সুন্দরী-ফুন্দরী লাগেই নি কোন কালে, কী সব জ্বালাতন এই শীতে, যেতেই হবে।
হেঁটে হেঁটে যেতে হবে, হাওয়ায় উড়ে তো যেতে পারি ই না, না পুড়িয়ে এতক্ষণ বসে থাকবে নাকি দেখানোর জন্য, কে হে আমি!! সে ভাবনা আমার না! কায়দা করাই আছে, আগুন জ্বলবেই না, দেখা-দেখির শেষ না হওয়া অব্দি।
পৌঁছুলাম হাড়কাঁপিয়ে, শ্মশান কর্মীরা বসে আছে চুনমুখে, আগুন জ্বালাতে পারেনি বাতাসের ঝড়ো তেজী তোড়ে, শীতের শীর্ণতায় অমারাত্রির ডাইনি ছলনাতে।
প্রাণ-বিযুক্ত দেহেও অনিন্দ্য সুন্দর বলে যদি কিছু থাকে, তাই ই দেখছি আর দেখছি হালকা ধোয়ার উৎসারণে, আনমনে। অনাঘ্রাত গোলাপি যৌবন নিঃশেষ হয়েছে নপুংসক বৃদ্ধ সময়ের হাতে, প্রকৃতির দারুণ নিষ্ঠুর অপচয়ে! দাউ দাউ করে উঠল আগুন জ্বলে; ছিটকে দূরে চলে এলাম কনুইয়ে হ্যাঁচকা টানে,
এসে বসে আছি শ্মশানের ঘাটে বোবা মুখে, গরবর হয়েছে কোথাও কোন, কী তা?
ধাক্কা ও ঝুপশব্দ যুগপৎ ঘটে গেলে, নিজেকে আবিষ্কার করলাম বরফশীতল জলের নীচে, তলিয়ে যাচ্ছি মৃত্যুর অতলস্পর্শে; নিষ্ক্রিয় ত্রাহিস্বরে। দেখতে পেলাম সম্বিৎ ফিরলে, শ্মাশানকর্মিরা অর্ধনিঃশেষিত জ্বলন্ত চিতার পাশে ফেলে, বাঁচানোর প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাচ্ছে মরণঠাণ্ডা থেকে,
ডাইনির হি হি হাসি রিন রিন করে ভেসে বেড়াচ্ছে দূরবাতাসে,
হিমশীতলঅন্ধকারলেপা পথের ধোঁকা এড়িয়ে এক পা দু’পা করে সংক্ষিপ্ততম ফেরার পথে ফিরি,
নিভাঁজ অন্ধকারে ডাইনিচোখের আলোয় পা ফেলি, পা ফেলায়;
২০টি মন্তব্য
মিষ্টি জিন
কবিতা মন ছুয়ে গেল।
মনে হয় দুস্বপ্ন দেখেছেন।
ডাইনিরা যেহেতু ভয় দেখায় তো সাবধান তাদের থেকে। 🙂
ছাইরাছ হেলাল
ডাইনিরা ভয় দেখায়, পথও দেখায়।
সাবধান বললেই তো সাবধান থাকা যায় না, হয়ও না।
দুঃস্বপ্নকে জিজ্ঞেস করে দেখতে হবে,
নীলাঞ্জনা নীলা
এ কি ভয়ঙ্কর!!! আজকাল দেখি শুধু ডাইনী আর অশরীরি সুন্দরী প্রেতাত্মাদের নিয়ে লেখেন! মানবী প্রেয়সী মাহজাবিন, রাত্রি আরোও কে কে জানি, উনারা কোথায়?
খালি ভয় দেখান।
যান আজকের কুবিতা বয়কট করিলাম।
মন্তব্য করমুই না। \|/
ছাইরাছ হেলাল
সবাই আছে যথাস্থানে, নব নব রূপে সংযুক্তি ভাবতে পারেন,
আপনাকে ভয় দেখানো যায় নাকি!! শাঁকচুন্নী না কি আপনি!!
আপনার মন্তব্য না পেলে আমাদের চলেই না।
নীলাঞ্জনা নীলা
শাঁকচুণ্ণী ভয় পায়না কে বললো!
ছাইরাছ হেলাল
ডাইনিদের রাণীর সাথে আমার কিন্তু একটু যোগাযোগ আছে,
টের পাবেন অচিরেই।
আবু খায়ের আনিছ
ভয় পাইছি।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি তো এদের নিয়েই লেখেন,
ভ্য়-ফয় পেলে হবে কি করে!
মৌনতা রিতু
গতকাল বাসে আসার সময় পড়তে পড়তে আসতে ছিলাম। কাকতলীয়ভাবে পথেই দেখি বিলের কাছে এক বড় গাছের নীচে শ্মশান।
তা এই লাশ দেখার এতো শখ হইছে কেন শুনি!
নাহ! কুবিরাজ বাড়ি যাইতে হইবে দেখছি।
ছাইরাছ হেলাল
শ্মশানে কী কিছু ছিল!! ধু ধু শ্মশান দেখলে হবে না।
আমার তো শখের কিছু নেই, সবই ডাইনিনিয়ন্ত্রণ হয়ে যাচ্ছে,
স্বাগত আপনি।
শুন্য শুন্যালয়
শেষ দেখা দেখানোর জন্য এত্তো কিছু? আর ধাক্কাটাই বা দিলো ক্যান? মনেহয় সতদাহ (সতীদাহের পুরুষ লিংগ) করার খায়েস ছিলো!
ডাইনী আবার বিশ্ব সুন্দরী? বুঝেছি এইটা ডাইনীর বিশ্ব হবে। ডাইনীদের বয়স অষ্টাদশ এ আইসা আঁটকে থাকে ক্যান, এইটা রহস্যজনক।
ডাইনীর ছলাকলা কিঞ্চিত বুঝতে পারলেও লেখকের ছলাকলার কিচ্ছু বুঝলাম না। আহারে এমন ডাইনী থাকলে অন্ধকার কোন ব্যাপারই ছিলোনা। চোখের আলোয় পথ দেখানো!
এই লেখায় লেখক সুরা পান করিয়াছেন।
ছাইরাছ হেলাল
হিংসে আর হিংসে, শুনেছি নারীরা হিংসের প্রতিচ্ছবি (সত্য-মিথ্যে জানিনা),
এ-রাজ্যে চরম হিংসে বিরাজমান। যে সুন্দরী পুড়ছে সে ডাইনি না, অপরাধ হলো সুন্দরী সে পোড়া বা জ্যান্ত হোক
কিছুতেই তাকাতাকি করা যাবে না, ডাইনিদের ছলার কলা এখনো দেখার সুযোগ হয়নি (দেখাইনি হয়ত)।
প্রাণ যায় যায়, সুরা পেলে ভালই হতো, তা আর দিল কৈ!!
শুন্য শুন্যালয়
শ্মশানে নিয়ে এলো কেন তবে? জগতের জাগতিক সুন্দরীরা কবির লেখায় ধরা পড়ে। নারীদের হিংসা নিরাপদ, পুরুষের ভয়ংকর (সত্য -মিথ্যা জানি)
ছাইরাছ হেলাল
সুন্দরের প্রতি টান অমোঘ, কিন্তু যেই না সেখানে পৌঁছাল চিরাচরিত হিংসা জেগে উঠে
মৃত্যুর দ্বারে পৌঁছে দিল, আবার অন্ধকারে বাড়ী ফেরার ব্যবস্থাও করেছে, দ্বৈততা চিরায়ত,
হতে পারে তাদের হিংসা নিরাপদ, এ-ক্ষেত্রে ওষ্ঠাগত প্রাণে তা ধরা পড়ে না।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ডাইনী বিশ্ব সুন্দরী আজবই বটে।লেখাগুলো পড়ে ভয় পাওয়ার মতোই পরে ভাবলাম এতো লেখা।সুন্দর অনুভুতি -{@
ছাইরাছ হেলাল
উহ্, ভয়ের কিচ্ছু নেই, অনেক মজার,
পড়তে থাকুন,
নিহারীকা জান্নাত
শ্মশান আর ডাইনির কথা শুনে ভয়েই শেষ।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি জ্ঞানী মানুষ, ভয় আপনাকে পেতেই পারেনা।
নিহারীকা জান্নাত
আমি জ্ঞানী মানুষ জীবনে এই পর্থম শুনলাম। জীবন ধন্য হয়ে গেলো ভাই 🙂
ছাইরাছ হেলাল
জ্ঞানীরা এমন ই বলে বুঝি!