* হায় আল্লাহ,আমি কিভাবে এই সিড়ি বেয়ে উপরে উঠবো?
= ম্যডাম ম্যাডাম এই যে রেলিং, একহাত দিয়ে ধরুন শক্ত করে। এরপর উপরের ধাপে পা দিন। এরপর একটার পর একটা।
* না না আমি পারবে না, পিছলে যদি পরে যাই?
= কোন ভয় নেই। আপনি পারবেন ম্যডাম। দেখুন এই যে আমি কিভাবে উঠি।
অত:পর ম্যডাম সিড়ির হাতল ধরলেন। এক পা রাখলেন প্রথম ধাপে। পাইক বরকন্দাজ গন সমস্বরে বলিয়া উঠিল ‘ ম্যাডাম ম্যাডাম এই তো পেরেছেন, এই তো পেরেছেন। ‘
এক এক ধাপ উঠছেন ম্যাডাম, সামনে পিছনের মুগ্ধ পাইক পেয়াদার মুখে উল্লাস ধ্বনি এইত এইত আর একটু। যেন প্রতিটি ধাপ উঠছেন আর প্রতিবার হিমালয় জয় করছেন।
১৬ টি ধাপের মাঝামাঝি দৃশ্যপটের সাথে বেমানান দুজন অতি সাধারন গ্রাম্য নারী তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন ঝলমলে সোনালি, সবুজ সাড়িতে মোড়ানো নারীর সিড়ির ধাপ বিজয়ের দৃশ্য। ম্যাডামের বিরক্ত দৃস্টি দুই নারীর প্রতি। পাইক পেয়াদাদের ‘ ওই সর সর ‘ হুংকারে দুই নারী তড়তড়িয়ে ধাপ গুলোতে পা ফেল উঠে গেল দোতলায়। অবশেষে ম্যাডাম প্রায় ১৫ মিনিটের কঠিন চেস্টায় পৌছে গেলেন অভিস্ট লক্ষ্যে। পাইক পেয়াদা বরকন্দাজদের সোরগোল ‘ ম্যাডাম ম্যাডাম পেরেছেন পেরেছেন। ‘
ইচ্ছে থাকলেও ম্যাডামের সিড়ির ধাপ বিজয়ের সামনের ছবি তোলা হলোনা। তিরস্কার, রক্ত চোখে ভস্মিভুত হবার ভয় কার না হয়? তাই নামার সময়ে দূর থেকে অন্ধকারে চিপা চাপায় দাঁড়িয়ে ইচ্ছা পুরন করেছি।
কে এই ম্যাডাম? কে তাকে এমন ননির পুতুল বানিয়েছেন? তিনি এমন একজন বাংলাদেশের নাগরিক যাকে পু পা সাইরেন বাজিয়ে ফেরীতে বিদায় জানাতে এসেছে গোটা বিশেক গাড়ি। সাথে থাকেন জনা দশেক পোষাক পরিহিত পাইক পেয়াদা। তার অবস্থানের কারনে তার গাড়ি ফেরীতে ওঠার সাথে সাথে ৭৫% খালি ফেরীটি ছেরে দিল।
আমার লাভ হচ্ছে তার কল্যানে ফেরীটি কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগেই ছেরে দিয়েছে। আমার লাভ! অন্যদিকে প্রায় ২০ টি গাড়ি যে ফেরী মিস করলো? প্রায় ৭০০ জন যাত্রী কতক্ষন পরে আবার ফেরী পাবে?
একই দেশ,একই জনগন। কতটা অসহায় সবাই। অথচ ইউরোপের কোন এক দেশের প্রেসিডেন্ট দাঁড়িয়ে থাকেন পাবলিক বাসের লাইনে।
যার কল্যানে ম্যাডামের সিড়ির ধাপ বিজয় প্রত্যক্ষ করার সৌভাগ্য হলো আজ। তিনি দেশের একজন ভি আই পি, একজন ভেরী ইমপর্টেন্ট পাঠাঁ।
৩৪টি মন্তব্য
নীরা সাদীয়া
হা হা হা খুব ব্যাঙ্গ রসাত্নক ভঙ্গিমায় বাস্তব সত্যকে উপস্থাপন করলেন। সত্যিই, এদের জন্য অনেক সময় এম্বুলেন্সে রোগী, রিকশায় পরীক্ষারর্থী আটকে বসে থাকে। তাতেও তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। সাঁতার না জানা বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই এর মত অবস্হা।
জিসান শা ইকরাম
১৬ মার্চ রাত ৯ টায় মাওয়া ফেরীতে নিজের দেখা ঘটনা এটি। এরা এই সমাজের কেউ না।
মিষ্টি জিন
এনারা দেশের কলংক। ক্ষমতার অপব্যাবহার কেমনে করতে হয় তা এইসব ননীর পুতুলরা ভালই জানে।
দিতেন ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে।
ফটু তুলার জন্য বহুত কসরত করেছেন বোঝা যাচছে।
আপনি যে অনেক ভাল লেখেন তা কি আপনি জানেন? 😀
জিসান শা ইকরাম
ধাক্কা তো দিতেই চাই, পারি কি? তবে একদিন জনতা ঠিকই এদের ধাক্কা দিয়ে মাটিতে মিসায়ে দেবে।
ভাল লেখি বুঝিনা তো। তবে প্রসংশা ভালই লাগে।
নীলাঞ্জনা নীলা
দুর্গা পূজার সময় প্রেসিডেন্ট ট্রুডো এলেন মন্দিরে। নাহ বিশাল বড়ো বহর নিয়ে নয়। মন্দিরে যে একজন ভিআইপি এসেছেন, সেটা আমরা বুঝলাম তখন, যখন তিনি স্টেজে উঠে সবাইকে শুভেচ্ছা দিলেন। আমি যে ফিজিওতে যাই, সেখানে প্রতি সপ্তাহে আমাদের হ্যামিল্টন মাউন্টেনের এম.পি আসেন। আমি জানতামই না, জেনেছি ট্যাক্সি ড্রাইভার যিনি আমাকে আনা-নেয়া করেন তার থেকে। তাও কিভাবে জানো নানা? এম.পি ওই ড্রাইভারকে দেখে বলে উঠলেন হ্যালো! পরে জানলাম। সিটিজেনশিপ পাবার পর Oath অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট মন্ত্রী, এমপিবৃন্দ আরোও অনেক ভিআইপি ছিলেন। আমি ওয়াকার নিয়ে আস্তে আস্তে হাঁটছি, দুজন এমপি আমার কাছে এসে দাঁড়ালেন।
এবারে বলি দেশে থাকতে একজন সাধারণ এমপিকে কখনো দেখিনি সাজবহর ছাড়া। আমাদের বাসায় হুইপ শহীদ আসতেন, ওরে বাবারে কি বিশাল লটবহর! কথায় আছে না, খালি কলসী বাজে বেশী? আসলে আমাদের বাঙ্গালী চরিত্র হলো যার যতো তেল আছে, তাকে আরোও তেল দেয়া। সাধারণ মানুষদের জন্য রাস্তা আটকে রেখে প্রধানমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী এমনকি মন্ত্রীর কেরানীর জন্যও পথ খালি করে দেয়া। এজন্য আমি বলি জীবনেও আমাদের দেশের সমস্যা যাবেনা। যাদের কাছে বিচার চাইতে যাবো, তারা নিজেরাই তো অপরাধী।
দারুণ লিখেছো নানা।
ভালো থেকো।
জিসান শা ইকরাম
খুব সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিলি। একমত তোর সাথে যে আমাদের দেশের সমস্যা জীবনেও যাবে না।
নীলাঞ্জনা নীলা
হুম নানা। 😀
প্রহেলিকা
সারা দেশবাসীর জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলতে এমন ননীর পুতুল দু একটিই যথেষ্ট। তারা যে পথে যায় নেমে আসে ভয়াবহ দুর্যোগ। তবে তারা হয়তো কখনো বোধকরতে পারবে না যে তারা বিষাক্ত আগাছার মতোই ভিআইপি ব্যানারে সমাজে টিকে আছে। ভি,আই পি এর ফুলফর্ম যথার্থই হয়েছে।
উপস্থাপনা বেশ হয়েছে।
জিসান শা ইকরাম
দেশটা মনে হয় এদের বাপ দাদার সম্পত্তি। এদের যে জনতা ঘৃনা করে তা এই পাঠাঁরা বুঝে না।
ছাইরাছ হেলাল
এ ভাবে শরমিন্দা করা ঠিক না,
আমরা তো আমরাই,
অন্য যাত্রীরা একটু পরে গেলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না।
জিসান শা ইকরাম
ইচ্ছে হচ্ছিল ধাক্কা দিয়ে এই ছাগীটারে সিড়ি দিয়ে ফেলে দেই।
ছাইরাছ হেলাল
আজকাল কিন্তু ছাগ-ছাগিদেরই !!
ইঞ্জা
খুব মজা পেয়েছি লেখাটাই, আমি তো প্রথমে হাসতে হাসতে শেষ এরপর ধরলো মেজাজ, উঠলো চরমে, এ কোন দেশে আছি আমরা যেখানে এইসব ন্যাংটাদের পুংটামি সহ্য করছি, কেন তারা আমাদের কাছে মহামানব হিসাবে আসতে চাই, ইশ আমি যদি একদিনের প্রধানমন্ত্রীত্ব পেতাম তাহলে বেতিয়ে ওদের পাছা লাল করে দিতাম। :@
জিসান শা ইকরাম
একদিন ঠিকই আমরা এদের বেতিয়ে পাছা লাল করে দেবো।
ইঞ্জা
অপেক্ষায় রইলাম।
আগুন রঙের শিমুল
ভেরী ইম্পর্টেন্ট পাঠাঁ…. চন্দ্রবিন্দু মিসিং দাদা :D)
জিসান শা ইকরাম
চন্দ্র বিন্দু যুক্ত করে একে পুর্নাংগ পাঠাঁ বানানো হইল 🙂
আগুন রঙের শিমুল
😀
মোঃ মজিবর রহমান
এতে কি বুঝবে ঐ ম্যাডামের সাংগপাংগরা তাঁরা দেশের জনগনের খহতি করছে ম্যাডাম তো বুঝবেই না।
জিসান শা ইকরাম
এরা যদি বুঝতোই তবে আর পাঁঠা হইত না।
মোঃ মজিবর রহমান
কিছু কিছু পাঠার জন্ম ধামাধরা, দালালী আর এইরকম কাজ্বে জন্য।
জিসান শা ইকরাম
হ্যাঁ একমত আপনার সাথে।
নীহারিকা
ভি আই পি শব্দটির গুরুত্ব বুঝাতেই উনারা এমন আচরণ করেন। নাহলে যে ভি আই পি আর আম জনতা মিলে মিশে একাকার হয়ে যাবে।
জিসান শা ইকরাম
তাই হবে।
তবে এই পাঁঠারা বোঝে না যে সাধারণ জনতা এদের কত ঘৃণা করেন।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
এটা বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের বাস্তব চিত্র। সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
জিসান শা ইকরাম
হ্যাঁ এটিই বাস্তবচিত্র।
ক্ষমতার পালাবদল হয়, সিস্টেমের পালা বদল হয় না।
আবু খায়ের আনিছ
কত কিছু বদলাইলো মনু, এরা আর বদলাইলো না।
জিসান শা ইকরাম
বদলানোর সামান্য পরিমান সম্ভাবনা নেই।
শুন্য শুন্যালয়
ছবি তুলেছেন দেখতে পেলে আপনার ঘাড়েই ভর দিয়ে উঠতো।
এরকম মাখনওয়ালার সিঁড়ি দিয়ে ওঠা কষ্টকরই, পিছলে পড়বেনা?
যেইভাবে গোপণ ক্যামেরায় রেয়ার ছবি ধারণ করে সব ফাঁশ করছেন, আপনার বিরুদ্ধে হুলিয়ানামা এলো বলে!
এতো মজা করে ক্যামনে লেখে এতো তিতা টপিক্স?
জিসান শা ইকরাম
যে স্থানে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছি, তা আগেই দেখে নিয়েছে সিড়ির উপর, আশেপাশের সব স্থানে দাঁড়িয়ে। নিশ্চিত হয়েছে যে দেখা যাবেনা। এরপর ক্লিক।
এই মাখমওয়ালী রোদে মোমের মত গলেও যেতে পারে।
ভয় পাই তাই সামনের ছবি তুলিনি।
লেখা গুরু আপনি, কিছুটা শিখছি আপনার কাছ থেকেই।
শুভ কামনা।
শুন্য শুন্যালয়
gg মানে হচ্ছে জ্বি জ্বি। hg তে কী? বুঝেছি কেন এতো মগা পান মুখবইয়ে।
জিসান শা ইকরাম
মন্তব্যের জবাব ভুল করে এখানে দিলেন?
শুন্য শুন্যালয়
না ভুল করিনি, এডিট বাটন যখন অদৃশ্যের হাতে। 🙂
জিসান শা ইকরাম
ও আচ্ছা, বুঝেছি এবার 🙂 মোবাইলে লিখতে গিয়ে অনেক সময় আগে ইংরেজি অক্ষর দিতে হয়, নইলে একটি শব্দের পরে আর বাংলা লেখা যায় না। অনেক সময়ই ইংরেজি অক্ষর মুছে ফেলতে ভুলে যাই। মন্তব্য করার পরে দেখি যে ইংরেজি অক্ষর আছে। এডিট করতে গিয়ে ফিরে এসে দেখি আপনার এই মন্তব্য।
এমন ভাবে লেখার বুদ্ধিটা আপনার কাছ থেকেই নিয়েছি 🙂