মনুসংহিতায় নারীর অধিকার :
————————-
বিশীলঃ কামবৃত্তো বা গুণৈর্বা পরিবর্জিতঃ
উপচর্যঃ স্ত্রিয়া সাধ্ব্যা সততং দেববৎ পতিঃ ||
অর্থ : স্বামী দুশ্চরিত্র, কামুক বা নির্গুণ হলেও তিনি সাধ্বী স্ত্রী কর্তৃক দেবতার ন্যায় সেব্য ।। ( ৫-১৫৪)
স্বামীর মৃত্যু হলে তার স্ত্রীর জন্য বিধান :
” কামন্তু ক্ষপয়েদ্দেহং পুস্পমূলফলৈঃ শুভঃ
ন তু নামাপি গৃহ্নীয়াৎ পতৌ প্রেতে পরস্য তু ||
অর্থ : বিধবা স্ত্রী সারাজীবন ফলমূলাদি খেয়ে দেহ ক্ষয় করবেন কিন্তু অন্য পুরুষের নামোচ্চারণ করবেন না ।।
এবারে দেখি স্ত্রী মারা গেলে স্বামীর জন্য কি বিধান —
” ভার্যায়ে পূর্বমরিণৈ দত্ত্বাগ্নীনন্ত্যকর্মণি
পুনর্দার ক্রিয়াং কুর্যাৎ পুনরাধানমেব চ ||
অর্থ : দাহ ও অন্তেষ্টিক্রিয়া শেষ করে স্বামী আবার বিয়ে ও অগ্নাধ্যান করবেন ।।
তবে নারীকে পতিতারও নীচে নামিয়ে এনেছেন স্বায়ম্ভুব মুনি নীচের শ্লোকটিতে । কোন স্ত্রী যদি সন্তান, বিশেষত পুত্রসন্তান জন্ম দিতে না পারেন অথবা স্বামীর যদি সন্তান জন্মানোর ক্ষমতা না থাকে সেটার বিধান ——
দেবরাদ্বা সপিন্ডাদ্বা স্ত্রিয়া সম্যং নিযুক্তয়া
প্রজেপ্সিতাধি গন্তব্যা সন্তানস্য পরিক্ষয়ে ||
অর্থ : সন্তান পরিক্ষয়ে অর্থাৎ সন্তান উৎপাদন না হওয়ায় বা সন্তান জন্মানোর পর তার মৃত্যু হলে অথবা শুধু কন্যাসন্তান জন্মালে এবং উক্ত নারী তার গুরুজন ( শ্বশুর, শ্বাশুরী, পতি) দের দ্বারা সম্যক ভাবে নিযুক্ত হয়ে – দেবর ( স্বামীর বড় বা ছোট ভাই) অথবা স্বপিন্ডের ( স্বামীর বংশের কোন পুরুষের সাহায্যে অভিলাষিত সন্তান লাভ করবে । ( ৯-৫৯ )
এর পরের শ্লোকে উক্ত সংগমের নিয়মও বলা আছে —
৯-৬০ : এক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি শরীরে ঘৃত মর্দন পূর্বক মৌন অবস্থায় অন্ধকার কক্ষে একটি মাত্র পুত্র সন্তান উৎপাদন করবে — দ্বিতীয় পুত্র উৎপাদন করবে না।
অবশ্য সন্তান উৎপাদন না হওয়া পর্যন্ত এ ক্রিয়া চলবে ।।
——————————————–
আশার কথা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই জঘন্যতম নিয়মাদি এমনিতেই পরিত্যাগ করেছে ।।
তবে এই নিয়মটি বেশ ভালভাবেই পালন করেছিলেন মহাভারতের শ্রেষ্ঠ চরিত্র পান্ডু — যিনি ছিলেন নপুংসক । তাই সন্তান লাভের জন্য নিজের দুই স্ত্রী — কুন্তী ও মাদ্রী কে তিনি পরপুরুষদের সাথে যৌনমিলনের অনুমতি দেন।
** কুন্তী – ধর্ম, বায়ু ও ইন্দ্রের সাথে মিলিত হয়ে জন্ম দেন — যুথিষ্ঠির, ভীম ও অর্জুন কে।
** মাদ্রী – অশ্বিনী কুমার এর সাথে মিলিত হয়ে জন্ম দেন নকুল ও সহদেব কে।
—– এরাই সেই পঞ্চপাণ্ডব —–
***★***★***★***★***★***
১৬টি মন্তব্য
মিথুন
ধর্ম সেজন্যই আজ প্রশ্নবিদ্ধ। সেদিন বেশি দূরে নয়, ধর্মের এই খোলস থেকে বেরিয়ে আসার।
আপনাকে আগের একটি পোস্টে মন্তব্য দিয়েছিলাম, যা লিখেছিলাম তার জন্য দুঃখিত ।
এই পোষ্টে অশেষ ধন্যবাদ।
শুন্য শুন্যালয়
ধর্ম বলে কিছুই নেই। প্রত্যেক ধর্মগ্রন্থ ঘাটলেই এসব খুঁজে পাওয়া যাবে।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
সঞ্জয় কুমার
আপনি কি ইসলাম ধর্ম কে ও অস্বীকার করেন?
শুন্য শুন্যালয়
ধর্ম নিয়ে যুক্তিতর্কে যাওয়া আমার পছন্দ নয়। আমি ধনী পরিবারে জন্ম নিলে সেভাবেই বড় হতাম, নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্ম নিলে সেভাবেই। একে অস্বিকার করার কিছু নেই, গর্ব করারও কিছু নেই। আমি মানুষ কিনা সেটাই বড় ব্যাপার।
সঞ্জয় কুমার
একদম মনের কথা বলেছেন একমত
মা মাটি দেশ
ধর্ম বলতে কিছুই নেই ধর্ম একটি সামাজিক বন্দন মাত্র।সবার আগে পরিচয় আমরা মানুষ এর পর এর বিভক্তি।সুন্দর লিখেছেন। -{@ (y)
জিসান শা ইকরাম
কত জঘন্যতম নিয়মাদি ছিলো আগে ।
যদিও বর্তমানে এভাবে লিখিত নেই , তারপরেও নারীর প্রতি মর্যাদা খুব একটি বৃদ্ধি পায়নি ।
তাঁরা এখনো উপেক্ষিত এবং নিষ্পেষিত ।
অনেক ভালো পোষ্ট দিয়েছেন দাদা ।
আমরা আরো জানতে চাই ।
শুভ কামনা ।
স্বপন দাস
ধন্যবাদ মিথুন
স্বপন দাস
সঞ্জয় কুমার# আশ্চর্য হলাম! এখানে আমার ইসলাম ধর্ম স্বীকার বা অস্বীকার এর প্রশ্ন এলো কিভাবে ? — আমি দুনিয়ার সকল ধর্মীয় কুসংস্কার ও গোঁড়ামির বিপক্ষে।
সঞ্জয় কুমার
কই আপনাকে তো কিছুই বলিনি
স্বপন দাস
ধন্যবাদ জিসান ভাই।
স্বপন দাস
প্রিয় মডারেটর ভাই, কমেন্টস এ প্রতিটা নামের নীচে কমেন্টস করলেও চলে যাচ্ছে সবার নীচে — একটু দেখবেন কি ??
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
ছি ছি , লিখিত ভাবে এমন ছিলো মনুসংহিতায় ? পড়ে বমি আসছে । ধন্যবাদ আপনাকে ।
সিহাব
প্রতিটি ধর্মই পুরুষের সৃষ্ট ! তাই সব সুযোগ সুবিধা সৃষ্টীকর্তারই বেশি দাবীর !! ;? (9)
লীলাবতী
সময় পাল্টেছে , মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে , কিন্তু নারীর অবস্থান তেমন একটি পাল্টায়নি । ভালো পোষ্ট ।
মিসু
নারী হচ্ছে একটি জন্তু , তাঁর নিজস্ব ইচ্ছে নেই , পুরুষের ইচ্ছেতে সে বাঁচবে বা বলি হবে । (y)