হিন্দু ধর্মের আদি ধর্মগ্রন্থ বেদ ।
বিদ অর্থ জ্ঞান — বিদ থেকে বেদ ।
হিন্দু ধর্মমতে ঈশ্বর ব্রক্ষ্মার মুখনিঃসৃত বাণী । বিভিন্ন মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষিরা ধ্যানযোগ এর মাধ্যমে মন্ত্র বা শ্লোক গুলি দর্শন করতেন এবং স্বর যোগে তা উচ্চারণ করতেন ।। তাঁদের শিষ্যরা শুনে শুনে শ্লোক গুলি স্মরনে রাখতেন এবং গুরু পরম্পরায় এভাবে বেদের মন্ত্রগুলি অবিকৃত থাকতো ।তাইতো বেদের আরেক নাম শ্রুতি ।।
কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদের শ্রুতি গুলিকে চারভাগে ভাগ করেন এবং “বেদ “নামে অভিহিত করেন
— এজন্য তাকে বলা হয় বেদব্যাস ।।
বেদ রচনার সঠিক সময় নিয়ে বিতর্ক আছে ।।
তবে প্রচন্ড যুক্তিবাদীরাও মেনে নিয়েছেন খ্রীস্ট পূর্ব ১৫০০ -১০০০ অব্দের মধ্যে প্রথম বেদ রচিত হয় ।
বেদ এর আদেশ,উপদেশ ও শিক্ষা :
********************
খুবই অবাক করা ব্যাপার, মানব সভ্যতার এমন কোন শাখা নেই যা বেদে নেই — সবচেয়ে আশ্চর্য হচ্ছে বেদের নীতিবাক্য গুলি যা আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর আগে বলা হয়েছে —
তৈত্তিরীয় উপনিষদ থেকে কিছু উদাহরণ তুলে দিলাম —- পড়ুন এবং ভাবুন ।।
★ সত্যং বদ — (সত্য বলো)
★ ধর্মং চর — (ধর্ম পালন কর)
★ স্বাধ্যাযামা প্রমদ:– (প্রতিদিনেরশিক্ষা কার্যে অবহেলা করবে না)
★ আচার্যায় প্রিয়ং ধনমাহৃতা — (শিক্ষাগুরুকে সন্তুষ্ট করো)
★ ধর্মা ন্ন প্রমদিতব্যম — (সততাকে অবহেলা কোর না)
★ কুশলান্ন প্রমদিতব্যম — (পরোপকারকে অবহেলা কোর না)
★ স্বাধ্যাযপ্রবচনাভ্যাং ন প্রমদিতব্যম — (শিক্ষা ও জ্ঞানদানকে অবহেলা কোরনা)
★ মাতৃদেব ভব — ( মা কে ঈশ্বর জ্ঞানে সেবা করো) ★ পিতৃদেবো ব ভব — ( পিতাকে ঈশ্বর জ্ঞানে সেবা করো)
★ অতিথিদেবো ভব :– (অতিথিকে ঈশ্বর জ্ঞানে সেবা করো)
★ যান্যনবদানি কর্মানি তানি সেবিতব্যানি — (নিস্কলুষ চুক্তি অবশ্যই পালন করো)
★ যান্যস্মাক সুচরিতানি,তানি ত্বয়োপাস্যানি,ন ইতরানী — (অন্যের সদগুনগুলি গ্রহণ করো, মন্দগুলি নয়)
★ যথাতে তত্র বর্তেরন,তথা তত্র বর্তেথা — (জ্ঞানী গুনিরা যেভাবে চলেন তেমন ভাবে চলো)
৩টি মন্তব্য
মৌনতা রিতু
আমি বেদ পড়েছি। কিন্তু এখনকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বেদটাকে মূলত মানে না। যেমন মুসলমানরা অনেকেই কোরআন শরীফ এখনো ভালমতো বুঝতে পারলো না। একেকজন একেকভাবে তার ভুল ব্যাখ্যা আসছে। পৃথিবীতে যতো ধর্ম আছে সব ধর্মের কিন্তু কথা একটাই, মানবে প্রেম করো। মানে মানুষকে ভালবাসো। পাপ পূণ্যে বিশ্বাস করো।
মোঃ মজিবর রহমান
আমরা এখন ধর্ম ব্যাবহার করি কিন্তু ধর্ম নোট চলিনা।
নীলাঞ্জনা নীলা
‘বেদ’ আমার পড়া হয়নি। যথেষ্ট গভীরভাবে পড়ার মতো পরিবেশ, সময় হয়েই ওঠেনি। তাছাড়া এই বেদ অনেক বেদজ্ঞরা পড়েও সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। আমার দাদু বেদ পড়েছিলেন। তিনিও বলেছিলেন, “বেদ বড়ো কঠিন। হাজারবার পড়েও অল্পই বোঝা যায় রে।” আরোও বলেছিলেন “শুধু ঋগবেদেই ১০,০০০ মন্ত্র, কতোজন সম্পূর্ণ বুঝতে পেরেছে?” দাদু সংস্কৃতে পড়েছিলেন।
ধন্যবাদ আপনাকে। আরোও জানতে চাই। লিখুন।