বিশ্বের প্রথম ছবি:
এ পর্যন্ত পাওয়া বিশ্বের সব চেয়ে পুরনো ছবি এটি।অনেকে বিশ্বের প্রথম তোলা ছবি হিসেবেও আখ্যা দেন।‘লা গ্রাসের জানালা দিয়ে তাকিয়ে’‘ভিউ ফ্রম দ্য উইন্ডো অ্যাট লি গ্রাস’ শিরো নামের এ ছবিটি ১৮২৬ সালে তোলা হয়েছিল।ফ্রান্সের উদ্ভাবক ও ফটো গ্রাফার নিসেফঁরি নাইপি ফ্রান্সের সেইন্ট লুপ ডি ভেরেনাসের লা গ্রাস কাউন্টি স্টেটে বসে ছবিটি তুলেছিলেন।ছবিটি তোলার জন্য ফটোগ্রাফার নাইপি নিজের হাতে বানানো অবসকিউর ফোকাস ক্যামেরা ব্যবহার করেছিলেন। সে আট বাই দশ ইঞ্চির একটা প্লেটে ছবিটা ধারণ করেছিলেন।প্রথম যুগে এখনকার মতো সুইচ চাপলেই ছবি উঠে যেত না।একটি ছবি তোলার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগত।‘লা গ্রাসের জানালা দিয়ে তাকিয়ে’ ছবিটি তোলার জন্য সময় লেগেছিল আট ঘন্টা।
বিশ্বের প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরা:
১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ফটো গ্রাফিক পণ্য নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কোডাকের ইঞ্জিনিয়ার স্টিভ স্যাসন আবিষ্কার করেন ডিজিটাল ক্যামেরা।আকারে টোস্টার মেশিনের মতো এ যন্ত্রটি ১০০ X ১০০ রেজ্যুলেশন বা ০.০১ মেগা পিক্সেল আকারের সাদা কালো ছবি তৈরি করতে পারত।ছবি তোলার পর সেটি সংরক্ষণ করা হত ক্যাসেটে।অডিও ক্যাসেট আকারের সেই ক্যাসেটে একটি ছবি সংরক্ষণ করতে সময় লাগত ২৩ সেকেন্ড।ছবি দেখার জন্য এর সঙ্গে একটি স্পেশাল কম্পিউটার ও টেপ রিডার ক্যামেরার সঙ্গে বিল্ট ইন ছিল।টেপ থেকে এটি দেখতেও ২৩ সেকেন্ড সময় লাগত।
বিশ্বের প্রথম মোটর সাইকেল:
বিশ্বের প্রথম মোটর সাইকেলটি নির্মাণ করেছিলেন জার্মানির ব্যাড ক্যান্সটাট শহরের বিজ্ঞানী গটলিব ডিমলার ও উইলহেলম মেব্যাচ।১৮৮৫ সালে নির্মিত এ বাহনটিকে মোটর সাইকেল না বলে ইঞ্জিন চালিত বাই সাইকেল বললেই যেন ঠিক হবে।যদিও উদ্ভাবকরা এটিকে‘পরিভ্রমণের গাড়ি’নামে ডাকতেই পছন্দ করতেন।
প্রথম এক্স রে প্লেট:
জার্মান পদার্থ বিজ্ঞানী ভিল হেলম কন রাড রন্টগেন ১৮৯৫ সালের ২২ ডিসেম্বর ফটো গ্রাফিক প্লেটে সদ্য উদ্ভাবিত অজানা আলো,এক্স-রের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছিলেন।এমন সময় তাঁর স্ত্রী আনা বার্থা সেখানে উপস্থিত হন।রন্ট গেনও মনে মনে কাউকে আশা করছিলেন।তিনি চাইছিলেন যে নতুন এ অজানা আলো (এক্স-রে)যার ভেদন ক্ষমতা আছে,সেটি মানব দেহের ভেতর দিয়ে গিয়ে ফটো গ্রাফিক প্লেটে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় তা পর্যবেক্ষণ করা।রন্ট গেন তাঁর স্ত্রীকে ফটো গ্রাফিক প্লেটের উপরে তাঁর হাত রাখতে বলেন।তার পর তিনি তড়িৎ ক্ষরণ নল থেকে ক্যাথোড রশ্মি নিক্ষেপ করেন।সেই রশ্মি বার্থার হাত ভেদ করে ফটো গ্রাফিক প্লেটে প্রতিক্রিয়া রেখে যায়।সেটাই ছিল বিশ্বের প্রথম এক্স-রে।
প্রথম অয়েব সাইট:
দা ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ,সংক্ষেপে সার্ন (CERN) এর ব্রিটিশ বিজ্ঞানী টিম বার্নার্স লি ১৯৮৯ সালে ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড ওয়েব তথা ইন্টারনেট উদ্ভাবন করেন।
প্রথম এম পি থ্রি:
১৯৯৭ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান সিহান ইনফরমেশন সিস্টেমস প্রথম এমপি থ্রি মিউজিক প্লেয়ার উদ্ভাবন করে।১৯৯৮ সালের শেষের দিকে ‘এমপি ম্যান’ নামে এটাকে দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারে বিক্রি শুরু করেন।অভ্যন্তরীণ মেমোরি ছিল ৩২ মেগাবাইট।ছয়টি গান রাখা যেত সেখানে।তবে ৬৪ মেগা বাইটের অন্য একটি মডেলও বাজারে এনেছিল তারা।
প্রথম অ্যালবাম কভার:
আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে যখন মিউজিক অ্যালবাম বের হত,তখন সে গুলো ব্রাউন পেপার দিয়ে বানানো প্যাকেটে মুড়িয়ে বাজার জাত করা হত। ১৯৩৮ সালে আসে এর পরিবর্তন।সেই বছর মার্কিন গ্রাফিক ডিজাইনার অ্যালেক্স স্টেইন উইজ কলম্বিয়া রেকর্ড থেকে বের হওয়া রজার ও হার্টস নামের দুই শিল্পীর যৌথ মিউজিক রেকর্ডটির কভার বানান তিনি।সেটাই ছিল মোন মিউজিক রেকর্ডের প্রথম কভার।
প্রথম ম্যাগাজিন:
‘দ্য জেন্টল ম্যান’ হচ্ছে বিশ্বের প্রথম ম্যাগাজিন যা লন্ডন থেকে প্রকাশ হয়েছিল।১৭৩১ সালে প্রকাশিত হয় একটি অ্যালবাম যাতে ‘ম্যাগাজিন’ শব্দটি প্রথম আলোচনায় আসে।অ্যাডওয়ার্ড কেভ নামের এক ভদ্র লোক ‘সিল ভেনাস আর্বান’ ছদ্ম নামে এটার সম্পাদনা করতেন।১৯০৭ সালের সেপ্টেম্বরে দ্য জেন্টেল ম্যানের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।
প্রথম মাউস:
১৯৬৪ সালের শেষ ভাগে স্ট্যান ফোর্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক ডগলাস অ্যাঞ্জেল বার্ট সর্ব প্রথম মাউস আবিষ্কার করেন।তারা এমন একটি ডিভাইস উদ্ভাবনের চেষ্টায় ছিলেন যাকে ট্রাকিং বল,লাইট প্যানেল বা জয় স্টিকের মাধ্যমে কাজ করতে সক্ষম হবে।তা করতে গিয়েই বিজ্ঞানীরা মাউস উদ্ভাবন করে ফেলেন।প্রথম মাউসটি তৈরি করা হয়েছিল কাঠের চার কোনা ফ্রেমের মধ্যে।তার ভেতরে ছিল ধাতুর চাকা।এর উপর একটি লাল রংয়ের বাটনও ছিল।
প্রথম গেইম:
বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার গেইম প্রাথমিক ফর মেট ছিল ভিডিও গেইম,সে হিসেবে ক্যাথড রে টিউব অমিউজ মেন্ট ছিল ১৯৪৭ সালের ২৫ জানুয়ারী প্রথম পেটেন্ট কাইন্ড কম্পিউটার গেইম।তবে কম্পিউটারে নয় একটি এনালগ ডিভাইসের স্কিনে বিভিন্ন টার্গেট পয়েন্টে মিসাইল নিক্ষেপ করা নিয়েই প্লট করা হয়েছিল গেইমটির।
প্রথম গগণ চুম্বি ভবন:
১৮৮৫ সালে আমেরিকার ইলিনয় প্রদেশের শিকাগো শহরে নির্মাণ করা হয় ‘হোস ইন স্যুরেন্স ভবন’ কে বিশ্বের প্রথম গগণ চুম্বী ভবন বলে মনে করা হয়।১০ তলা বিশিষ্ট ১৩৮ ফুট উচ্চতার এই ভবনটি ইস্পাত ও সিমেন্টের সমন্বয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল।যা পরে দুটি তলা বাড়ানো হলে এর উচ্চতা দাঁড়ায় ১৮০ ফুট। ১৯৩১ সালে এটি ভেঙে ফেলা হয়।
বিশ্বের প্রথম প্রোগ্রামার:
বিশ্বের সর্ব প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার ছিলেন একজন নারী।তিনি কাল জয়ী ইংলিশ কবি বায়রনের কন্যা অগাস্টা এডা লাভলেস (১৮১৫-১৮৫২)।তার সম্মানার্থে ১৯৮০ সালে মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের প্রতি রক্ষা মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটারের একটি ভাষাকে এডা নামকরণ করা হয়।
প্রথম মাইক্রোপ্রোসেসর:
১৯৭১ সালের নভেম্বরে ইন্টেল নামের একটি কম্পানি মার্কেটে নিয়ে আসে সিঙ্গেল চিপের মাইক্রো প্রসেসর ‘দ্য ইন্টেল ৪০০৪’।এটা তৈরির পেছনে যাঁদের সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল,তারা হলেন ইন্টেল ইঞ্জিনিয়ার ফেডেরিকো ফগিন,টেড হফ ও স্ট্যান মেজর।এটা আবিষ্কারে ফলেই ছোট হতে থাকে ইলেকট্রনিক পণ্য,বিশেষ করে কম্পিউটারের আকার।কারণ এই ইন্ট্রিগেট চিপের ফলে ছোট হতে থাকে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বা সিপিইউ,মেমোরি ও ইনপুট-আউটপুট কন্ট্রোল।
বিঃ দ্রঃ
ছবি ও তথ্য অন লাইন কলেক্টসনস
১৪টি মন্তব্য
ইঞ্জা
বাহ, দারুণ সব ইনফরমেশন, কালেকশনে রাখার মতো, ধন্যবাদ এমন একটা পোষ্ট দেওয়ার জন্য।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ আপনাকেও -{@ সাথেই থাকুন আসছে আরো কিছু।
ইঞ্জা
অপেক্ষায়…..
সঞ্জয় কুমার
তথ্যবহুল পোস্ট
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
এখানে বেশিরভাগই জানা ছিলোনা। ধন্যবাদ মনির ভাই অনেক জ্ঞান অর্জন করছি আপনার পোষ্ট থেকে।
সৈয়দ আলী উল আমিন
তথ্যবহুল পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
নাজমুস সাকিব রহমান
এম্পিথ্রির ব্যাপারটা জানতাম না। ধন্যবাদ আপনাকে।
-{@
শুন্য শুন্যালয়
আগের দিনের মানুষগুলার ছবি দেখলে মনেহয় সবার চেহারা একরকম ছিলো 🙂
কিছুই জানা ছিলোনা এগুলো। ভাইয়া আমার মনেহয় উইকিপিডিয়ার এই তথ্যগুলোর সাথে নিজের কথা জুড়ে দেয়া ভালো। যেমন পৃথিবীর প্রথম ছবির সাথে আপনার তোলা প্রথম ছবির স্মৃতি কিংবা আপনার প্রথম পছন্দের গেমসের কথা। এতে করে পোস্টগুলো পুরোপুরি ইন্টারনেটভিত্তিক হয় না। এবং তাতে করে অন্য ব্লগারদের অংশগ্রহন করানো যায়। যেমন ধরুন আমি এতে করে আমার প্রথম অবসেশন গেমস হারকিউলিস কে এনে ফেলতে পারতাম।
আপনার শিরোনাম অনুযায়ী পোস্ট একদম সঠিক হয়েছে যদিও।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এখানে শিরোনাম অনুযায়ী লিখেছি।কপি পেষ্ট সেটা যেটা এক স্থান থেকে নেয়া আর যা কয়েকটি সাইটের কালেক্টসন এবং রাফ লিখে কপি করে ব্লগে পেষ্ট করা হয় সেটাকে কপি েষ্ট বলা হয় না।বলা হয় মেধার বিকাশ।সব চেয়ে মজার বিষয় আমার এ ধরনের লেখাগুলো সব গুলো সাইটে আমার মতো প্রায় একই রকম তাহলে ঐ সকল সাইটও ক্ষতির সম্মুখিন? অল্প জ্ঞান অত জানি না এ ব্যাপারে পোষ্ট আকারে জানিয়ে দিলেন ভালই হলো নতুন কিছু জানলাম।নিজেও সতর্ক হলাম।আবার আমার মৌলিক লেখায় মনোনিবেশ করব।
নতুন জীবন সোনেলাকে শুভ কামনা। -{@
আপত্তিকর পোষ্টগুলো এক সময় ডিলেট করে দেবো অথবা সোনেলা কর্তৃপক্ষ তা এখনিই করতে পারবেন।তাতে আমার কোন আপত্তি নেই।
শুন্য শুন্যালয়
বুঝতে পারলাম না ভাইয়া, আপনি কী এক মন্তব্যের উত্তর আরেক জায়গায় দিয়েছেন? মানে আমার মন্তব্যে এই উত্তর কিভাবে হয় বুঝতেছিনা। সম্ভবত সাজেশন টাইপের মন্তব্য পছন্দ নয় আপনার, এনিওয়ে গুড পোস্ট।
জিসান শা ইকরাম
বিশ্বের প্রথম মোটর সাইকেলটি তো আমার পছন্দ হয়ে গিয়েছে,
এটি এখন আছে কোথায় বলতে পারেন?
জানলে একবার দেখে প্রাণ ঠান্ডা করতাম 🙂
রায়হান সেলিম
বিশ্বের অনেক প্রথম কিছুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য আন্তরিকতা সমৃদ্ধ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
শিপু ভাই
দারুন পোস্ট!
ভালোলাগা ভাই