শিরোনামটি অনেক আগের একখানা কাব্যগ্রন্থের। যার পঙক্তিমালা এখনও যৌক্তিক, সমসাময়িক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে যথেষ্ট মেলে বলেই আজ এখানে শেয়ার করার জন্য মনস্থ করলাম।
উতসর্গ পঙক্তি-
আজকাল কুয়াশার চোরাগন্ধে ঘুম আসেনা অলিন্দেরও!
তবু কিন্তু স্বপ্নপোড়া ছায়ারা প্রস্তুতি নিচ্ছে নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করেও!
দমবদ্ধ জগতগুহায় ঝাঁপ দিয়ে শুনে নিতে চায় অমল ধুমতানানা!
আহ ফুসফুসে এক চিলতে আকাশরেখা মেলে কি না!
বাতাসের জন্য এলিজি- ১
এইতো খানিক আগেও অনর্থ ছিলো, ছিলো ক্ষোভ।
যথারীতি ছিলো রাজ্যের জ্বলন্ত লোভ।
অন্যদিকে ছিলো গান, হৃদিভর্তি হাতছানিমালা –
ধূলিকাব্য, মেঘের গন্ডোলা।
অথচ মুহূর্তে অন্ধ-কানা
হিংসাযজ্ঞে বাতাসেরও পুড়লো ডানা।
এখনতো প্রিয় ঘরভর্তি খাদ –
এবঙ পথেবিপথে রিরংসামাখা হাত।
হায় কোথায় হারালো সেই এশীয় সম্প্রীতি!
চারপাশে চিলথাবা, বিশ্রী খেয়োখেয়ি যথারীতি!
বাতাসের জন্য এলিজি-২
যথারীতি আলো আর কুটিল কবন্ধ
যত অন্ধকারের অসম যুদ্ধ।
বলো বন্ধু, এখন কি এত কালো
হদ্দ-ধর্মান্ধ রাজত্ব নিয়ে দম্ভ করা ভালো!
এখন কি এত মিথ্যুক দাঁতালো
অধর্মের কুঠারবিদ্ধ হওয়া ভালো!
বাতাসের জন্য এলিজি-৩
বলি, ভালো না, ভালো না এত রক্তখাকি চাপগুলি।
সন্ধে হতে না হতেই ঝপ করে নামা বিকট রঙের পর্দাগুলি।
নক্ষত্র না ক্ষত ধন্দে কাঁপে হৃদয়ের ঘুড়ি।
কাঁপে না কেবল খুনে ধড়িবাজ আদমের ছুরি।
কেবল ছুরি না, ছেনি, দা-কুড়ালে ফালাফালা বুক।
কত যে দিয়েছি বুক থেকে কন্ঠনালিচেরা সুখ।
মুখ ও কপাল ভেদ করেছে ধাতব গুলি অবাঙ অবাধ।
তথাপি রক্তের সাধ!
আর কত রক্তপাতে শান্ত হবে পিশাচের হাত!
আর কত পাপাচারে ক্ষান্ত হবে নির্লজ্জের ঘাতপ্রতিঘাত!
বাতাসের জন্য এলিজি-৪
হাড়বজ্জাত বেড়েছে বড় বাড়।
তাদের নখরে কেউ এমন কি শিশুও পায় না ছাড়।
সকালে টেবিলে শোয়া অন্তহীন
রক্তাক্ত সংবাদ, লজ্জাহীন।
অথচ হেডলাইনে কেন যে হৃদয় মথিত, লজ্জিত ঝরে!
চোখ ভেসে যায় জলের অধিক রক্তজলের অক্ষরে!
আজ এ পর্যন্তই। বাকিগুলো অন্য কোনও দিনে যখন আবারও পড়বে মনে …
আশ্বিন ১৪২০ বঙ্গাব্দ।।
২৭টি মন্তব্য
আদিব আদ্নান
এলিজিগুলো আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে ।
তবে বেশি ভালো লাগল প্রথমটি ।
আবহমান সম্প্রীতির ঐতিহ্য আমাদের হারিয়েছে অবশ্যই ।
আর তা হারিয়েছি বলেই আমাদের এই সামাজিক অধ:পতন ।
আপনার লেখা আমার অনেক পছন্দের ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
আদিব, ভাই, আমার লেখা তোমার পছন্দের কথাটা জেনে আনন্দনের মাত্রা সীমানাছাড়া হলো … অনেক শুভাশিষ তোমার জন্য। 🙂
জিসান শা ইকরাম
অনেক অনেক ভালো লাগা জানালাম আপু ।
শুভ কামনা ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
জিসান, তোমার প্রণোদনায় এইখানে আমার লেখা … তাইনা? ভুলবোনা … শুভেচ্ছা সততঃ তোমার জন্য। 🙂
জিসান শা ইকরাম
আপনি এখানে লিখছেন , এটা আমাদের জন্য গৌরবের আপু ।
ভালো থাকুন সব সময় ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
জিসান, তোমার মন্তব্যধন্য হয়ে সত্যিই গৌরবান্বিত বিষম। 🙂 🙂
এই মেঘ এই রোদ্দুর
খুব সুন্দর অনেক ভাল লাগা রইল
নুরুন্ননাহার শিরীন
এই মেঘ এই রোদ্দুর, এইতো জীবন … কত যে ভালোলাগার কথাজাল জড়ানো … 🙂
প্রজন্ম ৭১
এমন কবিতা সব কালের জন্য নুতন । আরো কবিতা চাই আপা ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
প্রজন্ম ৭১, তোমরা আমাদের অহংকার, সুযোগ্য উত্তরসুরী হও … চাওয়া এই। কবিতা নিশ্চয় আরও দিবো … 🙂
ছাইরাছ হেলাল
কাব্যগ্রন্থ পুরোন আপনি বলছেন , আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত এটি মোটেই কোন পুরোন লেখা নয় ।
কিছু লেখা আছে যা সময়োত্তীর্ণ আমার কাছে তেমনই মনে হয় ।
কষ্ট করে এখানে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
হেলাল, ভাই, সময়োত্তীর্ণ লেখা লিখতে পারা অনেক কাল অনেক সময়ের ভিতর দিয়ে যেতেযেতেই হয় হয়তো … তবু মনের মতোন কি হয়! প্রণোদনাময় মন্তব্য দিয়ে উতসাহিত করার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা।
নীলকন্ঠ জয়
বিডি -তে পড়েছিলাম। আবারও পড়লাম। আমার প্রিয়তে যায়গা করে আছে “বাতাসের জন্য এলিজি”।
কিন্তু আপুনি বাকি অংশতো দিলেন না? অপেক্ষায় রইলাম।
প্রিয় আপুনির জন্য শুভকামনা। -{@
নুরুন্ননাহার শিরীন
জয়, বিডি-র অভাবটা কিঞ্চিত পূরণ যে হচ্ছেই তার নমুনা আমরাই, তাইনা? বাকি অংশ আবার সময় করে লিখবো। একবারে অনেক লিখতাম একদা, এখনতো অসুখে ধরেছে এমন বেশিক্ষণ লিখতে পারছিনা। শুভেচ্ছা।
নীলকন্ঠ জয়
শতভাগ আন্তরিকতা পেয়েছি এখানেও। বছরখানিক বিশ্রামের পর তাই আবারো কী-বোর্ড চালাচ্ছি ভালোই।
আপুনির সুস্থতার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে সর্বদা প্রার্থনা।
নুরুন্ননাহার শিরীন
জয়, জীবনজয়ী হও … প্রার্থনা …
মা মাটি দেশ
বাতাসে এলিজি,
শিরোনামেই ত্যাজ,
লিখনিতে আরো হৃদয়ছোয়া।
সুন্দর পোষ্ট ।আরো চাই।
নুরুন্ননাহার শিরীন
মা মাটি দেশ মানেই হৃদিভর্তি জয়ের প্রণোদনা … বলি যে “প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে মোরে আরও-আরও-আরও দাও প্রাণ” … 🙂 🙂
প্রিন্স মাহমুদ
ভাল লেগেছে খুব
নুরুন্ননাহার শিরীন
ভালোলাগার অধিক চাওয়া নাই ভাই, শুভেচ্ছা।
খসড়া
সুন্দর, এক কথায় অসাধারন ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
খসড়া, এক কথায় অসাধারণ!!! আমিতো অবাঙ!!! আশ্চর্য!!! এবঙ কৃতজ্ঞতায় খসে পড়ার পঙক্তিমালায় ধরে রাখতে চাইছি প্রাপ্তির ক্ষণ … 🙂
বনলতা সেন
আপনার লেখা পড়ার অপেক্ষায় থাকি ।
আমার লেখায় ও আপনার মন্তব্য চাই ।
না একটুও পুরনো না ।
এটাই আপনার শক্তিমত্তা ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
বনলতা, তোমার চাওয়া পূরণ করতেই আমার জবাবের আগে তোমার ব্লগে গেলাম, মন্তব্য দিলাম … দেখো … শক্তিমত্তার দেখেছো কি … পড়তে যদি বিখ্যাত শক্তি চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতা – “সুন্দরের হাত দুটি বেঁধে দাও / সময় হয়েছে” এমন পঙক্তি ক’জন কবি লিখতে পারে এমন!!!
বনলতা সেন
না , আমার সর্বশেষ তিনটি লেখায় আপনার কোন মন্তব্য নেই ।
আমার প্রতীক্ষা সিরিজে আপনার মুল্যবান মন্তব্য চাই ই ।
নুরুন্ননাহার শিরীন
চাই-ই!! তবেতো আমায় পড়তেই হয় … অতঃপর মন্তব্যও দিতেই হয় … 🙂 🙂 🙂 🙂
পাগলা জাঈদ
এলিজি-১ টা দারুণ লাগল