ধূলির প্রসার-নিমজ্জনেও হৃদয়ে পুঁতে রাখা বিপুল আনন্দ-উচ্ছ্বাসের প্রাণ-উদ্দীপক ঘোরতে ভালোলাগার উত্তেজিত-আলোড়ন নিয়ে
এলোমেলো ঘুরে বেড়ানো বই মেলা জুড়ে; গৃহগামীতার শজারু-শূলবিদ্ধতার পিছুটান মোটেই ছিল না।
ধূলি-গুঞ্জনে ভেসে ভেসে লাস্যময়ীদের ঝাঁক এড়িয়ে এক স্টল থেকে অন্য স্টলের চৌহদ্দি পেরিয়ে পুস্তক মাখামাখি
ধীর-ধীরতার সাথে, দ্রুততায় ও;
নই ল্যাখক, পাঠক-ও!নই, নেই ধনাত্মক ঋণাত্মকের সঙ্কট, নেই তেঁতুল বৃক্ষের জমাট হাতছানি, জাস্ট ঘোরতে ভাল্লাগা;
হেঁটে হেঁটে পাশ দিয়ে যেতে যেতে হঠাৎ ইকোবানার! ভীড়ে বাহারি-বসন্তকে দেখতে পেলাম মহা-ব্যস্ত পাঠক হিশেবে, আজিব-তো!!
ভিড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে হাল্কা কনুই চালিয়ে উপস্থিতির জানান দিলাম। একটুও অবাক হওয়ার ভান-ভণিতা না করেই গুনে গুনে
নব্বুই ডিগ্রি ঘাড় বেঁকিয়ে ছত্রিশ পাটি পোকা-দাঁতে মুখব্যদন করে থাকল, ধুলোর আটা-ময়দা মাখা মুখ নিয়ে।
শুরু হলো ঘুরান্তিস, স্টল থেকে স্টলে, প্যাভেলিয়ন থেকে প্যাভেলিয়নে, লিটল ম্যাগ চত্বর-ও বাদ রইল না,
লক্ষ্য করলাম শুধু কবিতার বই পড়ছে/দেখছে/কিনছে!! তা পড়ুক/দেখুক/কিনুক না, যা যেমন খুশি।
ডান-বাম আশ-পাশ করে শেষ অব্দি চেপে না রেখে জিজ্ঞেস করেই বসলাম, ব্যাপার খানা কী!!
শক্তিশালী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের যুগলবন্দী মূর্ছনার কারিশমা-প্রজ্ঞায় বাঁকা-বাঁকা হয়ে রিনি-রিনি কিনি-কিনি করে বলেই ফেলল…..
“কবিতা লেইখ্যা কবি হমুই”!!
নিরুপায়-জলে ভিজে-গলে না গিয়ে জল-বিয়োগ বিরতি নিলাম, কিচ্ছুটি বুঝিনি ভাব ধরে;
সুস্থির নির্ভাবনায় এবার আর কে কাকে পায়!! জগদ্দল ভীড়ে মিশে গিয়ে লুকিয়ে-চুড়িয়ে
ঘুরে-ফিরে ঘুরে-ফিরে ম্রিয়মাণ-নম্র-ভীরু-নিরীহ মুখ-ভাব নিয়ে টুপ করে মেলার গেটের বাইরে বেড়িয়ে
বিরল-বৃষ্টি-স্নাত-নিঃশ্বাস ফেললাম।
ঝাঁ-চকচকে বিদ্যুৎ-সুন্দর একখানি হাতে ঝালমুড়ি বাগিয়ে!!
হায়ঢ়ে মাণোশ………………………………
১৮টি মন্তব্য
মাহমুদ আল মেহেদী
বার বার যেতে ইচ্ছে করছে কবিতার এই বই মেলায়।
ছাইরাছ হেলাল
আপনাদের সাথে আমিও যেতে চাই এই জমাট মেলায়।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
যাক ঘুরে গেলেন কবিতার আসর,মলটের কবিতা ।আমরারো আসব একদিন আপনার কবিতার উঠোনে সেই আশাই ব্যাক্ত করি।
ছাইরাছ হেলাল
অপেক্ষায় থাকব, এমন ভ্রমণানন্দের মেলায়।
ইঞ্জা
আপনার কবিতা এতো মুগ্ধ করলো যে এখন বই মেলায় যেতে ইচ্ছে করছে ভাইজান।
ছাইরাছ হেলাল
কবিতা পাইলেন কৈ!!
আপনার মত আমারও মেলায় যেতে ইচ্ছে করে।
মেলায় যাইরে………………
ইঞ্জা
😀😃
ছাইরাছ হেলাল
খাইছে!!
জিসান শা ইকরাম
এই সব ঘটলো কবে?
কিছুই তো জানলামনা, তলে তলে এতকিছু!
সত্যি করে বলেনতো, বই মেলায় রিনি রিনি কিনি কিনি সংগীত শুনতে গেছিলেন নাকি?
ছাইরাছ হেলাল
ঘটনা ঘটমান থাকে, চলমান ও থাকে, আমরা আর কতটুকুই বা
জানতে/বুঝতে পারি।
সব কথা বলা যাবে না, বলা ঠিক ও না।
মন-পবনের-নাও কখন কোথায় পাল উড়ায় কে তা জানে!!
সাবিনা ইয়াসমিন
“ কবিতা লেইখ্যা কবি হমুই ” কত সুন্দর করে বলে দিলো, কবিতার বই দেখলো, পড়লো কিনলো। তারপরও আপনার আপত্তি গেলো না ! কবি / কবিতার উপর এতো নাখোশ কেন মহারাজ ? ভাবছি এবার বেশি করে গোয়েন্দা গল্প দেখবো, পড়বো, কিনবো তারপর গোয়েন্দাগিরি শুরু করবো। মহারাজের তেতুল তলায় কোনো রহস্য আছে কিনা জানতে চাই।
বই মেলায় বই ছাড়াও দেখার এতো কিছু আছে তাতো আমি আগে খেয়াল করিনি ! লাস্যময়ীরাই আসে না লাস্যময়োরাও আসে সেদিকে নজর দেয়ার সময়ই পেলাম না আজ অব্দি। আমার যে কি হবে ! চোখ থাকার পরেও অন্ধ হয়ে রইলাম। ( দুঃখের ইমো একটা হবে )
এবার মেলায় গিয়ে একটা চকচকে ঝাল-ঝালা ঝালমুড়ি আমার হাতে রাখবো, যদি আপনি আবার খুশির ঠ্যালায় মেলায় ঘোরতে যান তাহলে আমাকে চিনে নিতে সমস্যা হবে না। গপ্পো লেখার কায়দাও ঐ ফুরসতে শিখে নিবো।
স্মৃতিতো স্মৃতিই, ওটার আর ভালো-মন্দ দেখে কি হবে। সুখ-দুঃখের মিশেলে জড়িয়ে থাকে।
লেখা ভালো হচ্ছে, আরো বেশি বেশি করে লিখুন 😜
শুভকামনা।
ছাইরাছ হেলাল
একটুও নাখোশ না, বহুত দিল-খোশ, শুধু পেট-ভর্তি হিংসা, অন্য কিচ্ছু না।
আপনি শার্লক হোমস, কিরিটি বা মিসির আলী সব কিছুই হতে পারবেন চাইলেই, হলে মন্দ হয় না, তবে যেখানে রহস্য নেই সেখানে কিছুই পাবেন না। বস্তা বস্তা হিংসা পাবেন!!
দেখুন মেলায় অনেক কিছুই থাকে, কেউ দেখে, কেউ দেখে না, কেউ না দেখার ভান করে সবটুকুই দেখে নেয়, কেউ কেউ সবিস্তারে বোলে ফেলে, কেউ স্পিকটি নট হয়ে ও থাকে। বলছি না আপনি শেষ দলে!
গল্পের কায়দা শেখার ফুসরত আপনি পাবেন না, ভক্ত পরিবেষ্টিত হয়ে।
অবশ্য কে কাকে কী শেখাবে সেটিও ভাববার বিষয়।
স্মৃতিই একমাত্র সত্য, যা আমদের হাতের কাছেই থাকে, তাতে ভর করেই
আমরা হাসি/কাঁদি।
যাক, অবশেষে লেখক হওয়ার সমূহ উজ্জ্বলতম সম্ভবনা দেখতে পাচ্ছেন জেনে
আমরা আনন্দিত বোধ করতেই পারি, আপনার উপর অগাধ বিশ্বাস রেখে।
মোঃ মজিবর রহমান
আপনি বেড়ড়াইতে ঘুরতে ফিরতে গেছেনই মুই তো যাইবার পারলাম্নই না। যাবার পারলাম্নই না। হায়! কপাল । হায়! ভাগ্য। আপনার কল্যানেই ঘুরা হইলো , আপনার বর্ণনায় গেলাম,দেখলাম, ঘুরলাম, ফিরলাম। তই ঝাল্মুড়ি জোটেনি দুরভাগা কপালখানায়।
ছাইরাছ হেলাল
খালি ঝাল্মুড়ি!! আপনার জন্য মিডা-মুড়ির ব্যবস্থা আছে!
বন্যা লিপি
ভাল্লাগলো ঘুরা ফিরা ঝালমুড়ি বাগিয়ে দেয়া দৃশ্যপট মনোমুগ্ধকর! এমন ধারায় গল্পবলা ধরন তো দিনে দিনে ভাবনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এভাবেও বলে যাওয়া যায় কোনো ছন্দময় গল্পকাব্য। শুভ কামনা
ছাইরাছ হেলাল
ভাবা-ভাবির কিচ্ছু নেই,
যে যেমন করে বলে সাচ্ছন্দ্য বোধ করে সেটিই আসল কথা।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
শুন্য শুন্যালয়
আহারে স্মৃতি! সেই কবে কোনবার বইমেলায় গেছিলেন, চশমা কিনতে যান এই ছুতায় তা দেখি এখনো মনে মনে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ দিচ্ছে। ভালোই তো।
নেক্সট টাইম কনুইয়ের গুতা সাবধানে দিয়েন, কারে দিতে কারে দিয়া ফেলেন ঠিক আছে নাকি?
কবি কিন্তু হইছেই ময়দাওয়ালী, নাকি!!
ছাইরাছ হেলাল
ভয় তো সেখানেই!! ভয়ের বাঘেরা কাছে-পিঠেই দাঁড়ায়। কবে সে হবেই, হয়েছেও!!
কনুই-সাবধানতা খুব-ই প্রয়োজন, হাড়- মাংশ আলাদা হওয়ার চান্স থেকেই যায়।
দেখুন ভাইয়া, ছুতাই জীবন!! জীবন তো ছুতার সমাহার!
দেখি কোথার চশমা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়!!