সেদিন সারারাত মানস ঘুমাতে পারলোনা। সে ভাবছে আগামীকাল মানে ৮ ফেব্রুয়ারি কী যে করবে! যদি চৈতির মুখে হাসি থাকে, তাহলে প্রপোজ করবে। কিন্তু কিভাবে? পরেরদিন অনেক সকালে উঠলো মানস, তার বন্ধু দেখে তো অবাক এতো ভোরে কি ব্যাপার? বন্ধু বললো ‘কাল গোলাপ তো দিয়েছিস, আজ আবার কিসের প্রপোজ?’ মানস বললো, ‘তুই কোন যুগে আছিস? জানিস না রোজ ডে’র পরে প্রপোজ ডে আছে?’ বন্ধু মাথা নেড়ে না বললো। যাক তারপর চৈতির সাথে দেখা হলো মানসের, ‘এক্সকিউজ মি প্লিজ! একটা কথা ছিলো।’ কিন্তু চৈতি কিছুই না বলে চলে গেলো। ওদিকে চৈতির এক বান্ধবী বললো, ‘কথা বললি না কেন? জানিস একটা গল্প শুনেছিলাম, যে মেয়ে জীবনে কোনো প্রেমপত্র পায়নি বা কেউ প্রপোজ করেনি, তার মানে সেই মেয়ের সমস্যা আছে।’ চৈতি তখন জিজ্ঞাসা করলো, ‘আর ছেলেদের ব্যাপারে বল শুনি!’ বান্ধবী তখন বললো ‘কয়জন মেয়ে ছেলেদের এক ডাকে পাত্তা দেয় তুই বল! তুই নিজেকে দিয়েই দেখ না!’ যাক সেইদিনও গেলো।
আজ ৯ ফেব্রুয়ারি চকোলেট ডে। মানস সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো চকোলেট দিয়ে যে করেই হোক চৈতির মন গলাতে হবে। গতকাল সবার মধ্যে প্রপোজ করাটা ঠিক হয়নি আসলে। ওয়ালেটের অবস্থা সুবিধার না, এর মধ্যে দামী চকোলেট কেনা…’ধ্যত যা হয় হবে! ভালোবাসায় এতো ভাবতে নেই (স্বগতোক্তি)।’ Godiva ব্র্যান্ডের চকোলেট কিনে নিয়ে কলেজের সামনে দাঁড়ালো, ঠিক ওই সময়েই চৈতিকে দেখতে পেলো মানস, কিন্তু সাথে কেউ নেই।’ একছুটে গিয়েই চৈতির হাতে র্যাপিং-এ মোড়া চকোলেটটা দিয়ে বললো, ‘গতকালের জন্য আমি স্যরি’ বলেই আবার ছুট! রাগে গজগজ করছে চৈতি, আর গিফট প্যাকেট ফেলে দিয়েই ক্লাশে ঢুকলো। মানস বুঝলো না আগামীকাল কি হতে যাচ্ছে। তবে ঠিক করে নিয়েছে খুব সুন্দর দেখে একটা টেডি বিয়ার গিফট করবে। সেদিনই বিকেলে নিউমার্কেটে গিয়ে টেডি কিনতে গিয়ে মাথায় হাত, এতো এতো সাইজের টেডি! ছোটটারই দাম পাঁচশ টাকা আর অন্যগুলো তো…! মাসের দুই সপ্তাহও যায়নি, পুরো মাস চলবে কি করে? 🙁 সবচেয়ে ছোটটাই কিনলো। মানস চললো তার ব্যাকপ্যাকে টেডিকে নিয়ে। কিন্তু চৈতি কোথায়? দশটা, এগারোটা, বারোটা…রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে মানস। অনেক দূর থেকে দেখলো চৈতিকে আসতে, সাথে আর একজন মানুষ। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলো একেবারে কলেজ গেটের সামনে। চৈতি দেখলো মানস টেডিবিয়ারটাকে গেটের সামনে রেখে চলে যাচ্ছে।
চলবে
হ্যামিল্টন, কানাডা
৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ইং।
ফেব্রুয়ারির যতো দিবস (দ্বিতীয় পর্ব) : গোলাপের গল্প
**ভেবেছিলাম আজই শেষ করে দেয়ার। কিন্তু মনে হলো চ্যুইংগামের মতো টানার কি দরকার! আপনাদের সকলের ভালো না লাগলে বলে দেবেন, থামিয়ে দেবো। আশা করছি আগামী পর্বে শেষ করতে পারবো। অবশ্য লেখাটি শেষ হয়ে গেছে, আমি শুধু ধারাবাহিকভাবে দিয়ে যাচ্ছি। সবাইকে পহেলা ফাল্গুণের শুভেচ্ছা। অবশেষে পথভোলা পথিক চলেই এলো। আর এই পথিককে কে না চেনে! -{@
২৬টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
আপনি তো নাছোরবান্দা টাইপের বিশেষজ্ঞ!!
সাহসী নায়ক,
আগামী পর্ব আসুক।
নীলাঞ্জনা নীলা
সে যা বলেছেন! সহজে ছাড়িবো না লেখা, না পড়িয়া যাইবেন কই কুবিরাজ ভাই? 😀
ছাইরাছ হেলাল
জায়গা নেই যাওয়ার, পেলাম-ই না,
নীলাঞ্জনা নীলা
যাক শান্তি পেলাম। 😀
বায়রনিক শুভ্র
আগামী পর্ব আসুক।
নীলাঞ্জনা নীলা
আশা করি আগামীকাল আসবে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ওহ আপনার পোষ্ট ‘ফেরা’কে আবার ফিরিয়ে আনুন প্লিজ।
নিহারীকা জান্নাত
প্রতিটি দিবসের ছোট ছোট ঘটনা। বেশ হচ্ছে কিন্ত।
চলুক চলুক। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
নিহারীকা আপা মনের মতো পারছি না লিখতে।
তবু চেষ্টা থাকবে এই ধারাবাহিক অন্তত শেষ করার।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ফাল্গুনী শুভেচ্ছা। -{@
নিহারীকা জান্নাত
আপনাকেও ফাল্গুনী শুভেচ্ছা আপা -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
ধন্যবাদ আপা। ভালো থাকুন।
ইঞ্জা
ধ্যাত, চৈতি আর মানসকে এইখানেই লটকিয়ে দিলেন, আহারে কখন পড়বো আবার, অপেক্ষায় রইলাম প্রিয় আপু, ভ্যালেন্টাইন দিবসের শুভেচ্ছা।
নীলাঞ্জনা নীলা
হ্যান্ডপাম্প ভাই কি আর করা! ভাইয়ের কাছ থেকে বোনও শিখছে। 😀
আমি কিন্তু ফাল্গুনী শুভেচ্ছা দিয়ে যাচ্ছি। -{@
ইঞ্জা
ওহ খোদা (মাথা ঠুকার ইমো হপে)।
বাসন্তী শুভেচ্ছা আপু।
নীলাঞ্জনা নীলা
হায়রে কপাল! ^:^
আবু খায়ের আনিছ
আরো দিবস বাকী আছে?
শুনেছিলাম পৃথিবীতে প্রায় ১৩শ রকমের দিবস আছে।
নীলাঞ্জনা নীলা
পাগলামী পোষ্ট লেখার চেষ্টা করছি আনিছ ভাইয়া।
তাই নাকি! ১৩০০!! বাপরে!!! 😮
রিমি রুম্মান
এপর্যন্ত তো ভালোই ছিল। চলুক… আসল দিবস তো পরবর্তী ধাপে। 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
রিমি আপু যদি তোমার মতো লিখতে পারতাম!
ভালো রেখো। -{@
মোঃ মজিবর রহমান
সুন্দর সুন্দর গল্পের উদ্যোক্তা কেমনে হি জানিনা না। ভাল লাগা রেখে গেলাম।
আর থাকলাম ও পে ক্ষা য় পরের পরবের
নীলাঞ্জনা নীলা
মজিবর ভাই অনেক অনেক ধন্যবাদ।
পরের পর্ব দেয়া হয়েছে।
আমির ইশতিয়াক
ভালোলাগা রেখে গেলাম।
নীলাঞ্জনা নীলা
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
শুন্য শুন্যালয়
অনেস্টলি স্পিকিং তোমার এই সিকুয়্যাল টা ভালো লাগছেনা। 🙁 মন দিয়ে পড়ছিনা কী! কি জানি। উড়াধুরা কিছু দিবস বানিয়ে বিজনেস স্ট্যাটেজি বাড়াচ্ছে আর কিছুনা। তোমার লেখাও এটা নয় 🙁 রাগ করলা?
আমারে সাতদিনে প্রেম কিভাবে করতে হয় শিখায় দাওনা!! এই চকলেট ট্রিক্সে কাজ হবেনা। আজকালকার প্রেমিক গুলো বহুত ধুরন্ধর 🙂
লেবু কবিতার নূপুর। রাগ করলে কইয়া ফালাও, আমি জানি আরো কিভাবে রাগাইতে হয় 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
বিশ্বাস করবা না গো তিলোত্তমা তোমার এই মন্তব্য পেয়ে আমার একটা পরীক্ষা একেবারে স্বার্থক। মামনি বলতো, যে কাজটা তোর মন সায় দিচ্ছেনা, অথচ তুই করছিস, কিছুতেই সেটা ভালো হবেই না। তবে তুমিও দেখো কতোটা স্বাধীন আমার এই ঘর, এভাবে এই মন্তব্য করতে পেরেছো। :p 😀
এমনই থেকো। বিশ্বাস করো সত্যি নিতে আমি খুব ভালোবাসি।
রিয়্যালি আই লাভ ইয়্যু। -{@ (3
ইকরাম মাহমুদ
আগে ফেব্রুয়ারির যতো দিবস শেষ করুন তো!! এখনই থামালে চৈতী মানসের পরিণতি জানব কিভাবে!?.
নীলাঞ্জনা নীলা
চৈতি-মানসের বর্তমান অবস্থা কি, সেই পর্ব দিয়েছি। মানে শেষ পর্ব।
ধন্যবাদ আপনাকে আগ্রহ দেখানোর জন্য।