পলিবাহিত এই ব-দ্বীপটি খুবই নতুন একটি ভূখন্ড। এখানে অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, নিগ্রো, মঙ্গল ও ককেশিয়ো রক্তের মিশ্রণ হয়েছে ব্যাপক হারে। এই নানান রক্ত, জাতি ও গোত্রের সহাবস্থানের মাধ্যমে গড়ে উঠে এই জাতি। যার নাম বাঙ্গালী জাতি।
আচ্ছা, একটি জাতিকে কখন সমৃদ্ধ জাতি বলা যায়? উত্তরটা সবার জানা তবুও বলছি, যখন তার নিজস্ব কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ভাষা-বর্ণমালা, রীতি-ঐতিহ্য,শিল্প, বেশভূষা, আচরন, সুর ও সভ্যতা থাকে তখন। এইসব কয়টি বৈশিষ্ট বাঙ্গালী জাতির ছিল। আর বাংলাদেশ যার জন্ম হয়েছিল গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও ধর্ম নিরপেক্ষতাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। অথচ নিজের ঐতিহ্য ভুলে আজ এই জাতি মেতে উঠেছে শুধুমাত্র “ধর্মীয় অনুভুতি” নিয়ে। আজ এই দেশের জনগন বাঙালী না আজ তারা মুসলমান বাঙালী।
পৃথিবীর ইতিহাসে ধর্মীয় অনুভুতি এ যাবৎ মৃত্যু ও ধ্বংস ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি এবং ভবিষ্যতে পারবেও না। বাংলার মাটি থেকে এখনো ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের দাগ শুকিয়ে যায়নি। দুই লক্ষ নারীর আর্তনাদ এই দেশের বাতাসে আজও প্রতিধ্বনি তোলে। অথচ এরই মধ্যে এই জাতি তার পরিচয় ভুলতে বসেছে …..!!!!!!!
১৯৪৭ ধর্মীয় বিভাজন দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিলো দুটো দেশ। ধর্মীয় বিভাজনের পক্ষ শক্তি পরাজিত হয়েছে ১৯৭১ সনে। আর এরাই নয়মাস ব্যাপী যুদ্ধে হত্যা করেছে ৩০ লক্ষ স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালীকে, লাঞ্চিতা/ ধর্ষিতা হয়েছে দুই লক্ষ বাঙ্গালী নারী।
আমরা কি পরাজিত শক্তির অধীনস্ত হবো, যে চেতনা পরাজিত হয়েছে সে চেতনা আমাদের শাসন করবে?
১৯৭১ এ এরা বাংলাদেশকে শত্রু দেশ ভেবেছে। এখনো তারা এই দেশকে নিজের দেশ ভাবেনা। এখনো তারা তান্ডব চালায় সেই ১৯৭১ এর মতই।
৩৪টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
পরিচয় ভোলানো সহজ কাজ নয়,সাময়িক বিপত্তি মাত্র।
নওশিন মিশু
আমার মনে হয়না এটা সাময়িক বিপত্তি বরং বলতে পারেন Slow Poisoning । যা খুব সুক্ষ ভাবে গ্রাস করছে আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে। ধন্যবাদ ভাই ……
কৃন্তনিকা
সম্পূর্ণ সহমত…
(y)
নওশিন মিশু
ধন্যবাদ আপু ….
সাইদ মিলটন
মিশ্র রক্তের দোষ
নওশিন মিশু
মিশ্র রক্তের সহাবস্থা এই ব-দ্বীপের হাজার বছরের ঐতিহ্য। আজ কেন নিজের পরিচয় ভুলে বিপরীত পথে চলছে সেটা ভেবে দেখার সময় এসেছে । ধন্যবাদ ভাই ….
মেঘাচ্ছন্ন মেঘকুমারী
এথেকে কবে যে মুক্তি পাবো? এদের দিয়ে কোন ভালোকাজ হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
নওশিন মিশু
আমরা যারা ওদের মুখশের আড়ালে থাকা কুৎসিত রুপটা দেখতে পাই, এই আমাদেরই দায়িত্ব মুক্তির পথ খুঁজে বের করা। হ্যাঁ, ধর্মীয় উন্মাদনা যে ভালকিছু দেয়নি তার সাক্ষী পৃথিবীর ইতিহাস। ধন্যবাদ আপু ….
সাতকাহন
আমরা ক্রমান্বয়েই ধর্ম নিরপেক্ষতা থেকে সরে যাচ্ছি, ক্রমান্বয়েই আমরা হয় ধর্মান্ধ নয়তো ধর্মবিদ্বেষী হয়ে উঠছি। এই দেশে এখন নাস্তিকতা এবং ধর্ম নিরপেক্ষতার বড়ই অভাব।
নওশিন মিশু
অথচ ধর্ম নিরপেক্ষতা আমাদের স্বাধীনতার মূল স্তম্ভের একটি। নাস্তিকতা এবং আস্তিকতা হচ্ছে একেবারেই নিজেস্ব বিশ্বাসের ব্যাপার যা নিয়ে বাড়াবারি করার কিছু নাই। ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।
শুন্য শুন্যালয়
৪৩ বছর তো কেটে গেলো আপু, এভাবে আরো দিন গেলে ক্ষতি কি? আমরা অনেক ধৈর্যশীল জাতি।
নওশিন মিশু
আমি আমার এই দেশকে আফগানস্থান/পাকিস্থানের রুপে দেখতে চাইনা, ক্ষতিটা এখানেই…রে ভাই
মামুন
ভালো লাগা রেখে গেলাম।
শুভেচ্ছা রইলো…
নওশিন মিশু
ধন্যবাদ ভাইয়া …. 🙂
মরুভূমির জলদস্যু
মানুষেরমানুষীকতা পরিবর্তন হওয়াটা খুব কষ্টের।
নওশিন মিশু
খুব কঠিন কি…??? মাত্র ৪৩ বছর আগে এই ভূখন্ডের মানুষ ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের জন্য জীবন দিয়েছে। এখন মূল কাজ হচ্ছে নতুন প্রজন্মকে তাদের দেশের জন্মের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। মৌলবাদের কুফল বুঝাতে হবে। হাল ছেড়ে দেওয়া চলবেনা।ভাল থাকবেন…..
জিসান শা ইকরাম
খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করলেন বক্তব্য
একমত আপনার সাথে।
‘ জাতীয় পতাকা খামছে ধরেছে পুরনো শকুন’
এদের রুখতেই হবে।
আলো আসবেই- হয়ত কিছুটা সময় নিবে।
শুভ কামনা।
নওশিন মিশু
আলো আমাদেরই আনতে হবে। ভাল থাকবেন ধন্যবাদ….
অরণ্য
আমি পড়াশোনা করেছি খুবই কম। কাজেই কিছু ভারি ইস্যুতে মন্তব্য করতে একটু সংকোচও কাজ করে। আমরা যে আসলে কি বা কারা তা আমরা অনেক আগে থেকেই লুকিয়ে চলেছি। চলেছে আমাদের নেতা নেত্রীরা। প্রয়োজনে আমরা সত্য গোপন করেছি, মিথ্যা বলেছি অহরহ শ্রেফ কিছু ব্যক্তি স্বার্থ বা গোষ্ঠী স্বার্থের কথা ভেবে। এভাবে চলতে চলতে আমরা এখন আর বলতেই পারছিনা আসলে আমরা কারা। মিথ্যা দিয়ে কিংবা সত্য গোপন করে একটা ব্র্যান্ড আইডেনটিটি (ন্যাশনাল আইডেনটিটি) তেরি করা যায়না – সাময়িক কিছু একটা মনে হলেও পরে তা আর টেকেনা। শিক্ষা, মোলিক গবেষণা আর দূরদর্শি পরিকল্পনা ছাড়া কোন জাতি বেশি দূর আগাতে পারে না।
তারপরেও এখনও অনেকে আছেন যারা আমাদের আত্মপরিচয় নিয়ে গর্বিত এবং তা প্রকাশ করে চলেছেন অকপটে। অনেকে আবার চেতনা বিক্রি করে জীবন যাপনও করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে আমরা চেতনার ব্যাজ পরে চলছি আমাদের ভিতরের প্রগাঢ় অনুভুতিকে মিছে ঘুম পাড়িয়ে। তারপরেও আপনাকেই আশাবাদী হতে হবে সবার আগে।
নওশিন মিশু
আচ্ছা, আপনি কি আমার এই Post-কে ভারি ইস্যু বললেন?
ধন্যবাদ তথ্যবহুল মন্তব্যের জন্য …. 🙂
অরণ্য
লেখাটির টাইটেল আপনিই দিয়েছেন। আপনার লেখাটাকে আমি হালকা করে ভাবিনি – আমি ভাবতে চাইও না। এর উত্তর খুঁজতে গেলে এমনিতেই টের পাই।
নওশিন মিশু
হালকা না ভারি তা জানিনা। আমি শুধু জানি এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। ধন্যবাদ ভাই…
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
পৃথিবীর ইতিহাসে ধর্মীয় অনুভুতি এ যাবৎ মৃত্যু ও ধ্বংস ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি এবং ভবিষ্যতে পারবেও না।
সুন্দর অনুভূতি এটাই সত্য…..
ধর্ম যার যার
রাষ্ট্র সবার।
নওশিন মিশু
হ্যাঁ ভাই,
ধর্ম যার যার
রাষ্ট্র সবার। আমাদের এই দেশে মৌলবাদের কোন স্থান হবে না। ভাল থাকবেন, ধন্যাবাদ….
খেয়ালী মেয়ে
স্বাধীন হয়েও স্বাধীনতার জন্য হাহাকার–
ত্রিশ লক্ষ প্রাণ,দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জত, এতো এতো রক্ত তারা কিসের জন্য/কাদের জন্য দিয়ে গেল?…..
নওশিন মিশু
আপনার প্রশ্নটার মধ্যে যেন কি একটা আছে, মন খারাপ হয়ে গেল। কারন ঐ প্রশ্নের উত্তর যে আমিও খুঁজি….. ধন্যাবাদ আপু।
মেহেরী তাজ
ধর্মান্ধদের উত্থান রুখতেই হবে আপু।
নওশিন মিশু
নিশ্চই আমরা রুখে দেব। আমাদের দেশকে আমরা শকুনের হাতে ছেড়ে দেবোনা, তাই না আপু…. :-)???
সোনিয়া হক
আমরা পরাভব মানবোনা। আমরা বীরের জাতি।
নওশিন মিশু
ধন্যাবাদ আপু…..
ব্লগার সজীব
এরা উম্মাদ, এরাই নরকের কীট। দেশটাকে এরাই নরক বানিয়ে ফেললো।কঠিন ভাবে এদের দমন করা উচিৎ।
নওশিন মিশু
সঠিক ধর্মীয় জ্ঞান ও সচেতনতাই পারে ঐ নরকের কীটগুলো কে দমন করতে।
ধন্যবাদ ভাই …..
নীলাঞ্জনা নীলা
এসব থেকে বের হয়ে আসতেই হবে আমাদের।
নওশিন মিশু
হ্যাঁ আপু,
উলটো পথে হাঁটার আর কোন সুজোগ নাই আমাদের। ধন্যবাদ…. 🙂