যে জামায়াতে ইসলাম নামক দলের জন্ম ফাকিস্তানে, সেই দলটি ( ১৯৪৭ থেকে ২০১৩) ৬৬ বছরের মধ্যে একবারের জন্যও ক্ষমতায় যাওয়া তো দূরের কথা পার্লামেন্ট এ ২/৩টা আসনেও জয় লাভ করতে পারে নাই । এমনকি কোন প্রাদেশিক সরকার গঠনেও বড় ভূমিকা রাখতে পারে নাই ।
ভারতেও জামাতে ইসলাম নামে একটা দল আছে কিন্তু সেও কেবল কাগজে কলমে এবং ইসলাম ধর্ম ও মুসলিম সম্প্রদায়ের নামে দাঙ্গা করা ছাড়া আর কোন ভূমিকাই রাখে নাই, রাখেও না।
সেই ফাকিস্তানি জামাতে ইসলাম এর বাংলাদেশ এর শাখাকে ফাকিস্তানের কিছু তল্পিবাহক এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধিতাকারিদের দ্বারা সুসংগঠিত করা হল স্বাধীন বাংলার মাটিতে !
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পরে তাদেরকে সর্বপ্রথম রাজনীতি করার ঢালাও সুযোগ করে দেয় মুক্তযোদ্ধা থেকে কিলার প্রেসিডেন্টে পরিনত হওয়া ক্ষমতালিপ্সু ধুর্ত ফাকিস্তানি এজেন্ট মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ।
পরবর্তিতে জিয়ার পদাংক অনুসরন করে ‘জিয়া এবং মঞ্জুরের’ পরোক্ষ হত্যাকারি জেনারেল এরশাদ ধর্মের নামে স্বাধীনতা বিরোধীদের পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করে । ধর্মকে ব্যাবহার করে রাজনীতিতে ফায়দা লোটার উদ্দেশ্যে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্মের প্রবর্তন করে । জিয়ার বুনে যাওয়া বিজ এ পানি দিয়ে দিয়ে এই কুলাঙ্গারই বাংলাদেশে ‘’ধর্ম ব্যাবসা’’ বৃক্ষের চারাটাকে পরিপুর্ণ বৃক্ষে রূপান্তরিত করে।
পরের ইতিহাস করুন এবং লজ্জাজনক ।
যে স্বৈরশাষক এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে জিয়ার বিধবা স্ত্রী বেগম জিয়া নাম কিনেছিলেন ‘আপোষহীন নেত্রী’, সেই নেত্রীই ক্ষমতায় আসার পরে (১৯৭১ সাল থেকে ISI এর পে-রোল থেকে ফাকিস্তানের ISI এর বিডি ব্যুরোচিফ হিসেবে প্রোমোশন পান।) স্বামীর বুনে যাওয়া বিষবৃক্ষটিকে পরিনত করলেন মহিরুহে ।
সেই ৭১ এর শকুনদের দ্বারা গঠিত জামায়াতে ইসলামকে স্বাধীন বাংলাদেশের সংসদে বসালেন । তাদের কয়েকজনকে মন্ত্রী বানালেন, রাজাকার মন্ত্রীর গাড়িতে ওড়ালেন জাতির শ্রেষ্ঠতম অর্জন জাতিয় পতাকাকে এবং ফাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষায় প্রাণমন নিয়োজিত করলেন।
চূড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন ‘জামায়াতে ইসলাম’ নামক ঘৃন্য দানব দলটিকে ।
নির্মম হলেও সত্যি যে,
আজকে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার আলবদর দ্বারা গঠিত সেই বাহিনীর দলটির হাতেই দেশ এক রকম লাঞ্ছিত হচ্ছে । সরলমনা ধর্মভিরু জনগোষ্টির সরল বিশ্বাসকে ব্যাবহার করে ঘটিয়ে চলেছে ইতিহাসের জঘন্যতম ঘটনাগুলোর পূনরাবৃত্তি।
এই সাহস তারা কোথায় পাচ্ছে?
বাংলাদেশের জন্মের বিরোধিতা করা স্বঘোষিত বিশ্বমোড়ল আমেরিকার প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ ইন্ধনেই ।
সাথে জুড়েছে জাতীসংঘ নামক একটি ‘ঢাল তলোয়ালহীন নিধিরাম সর্দার’ ধরনের বিশ্বসংস্থা ।
কিন্তু তাদের কি অধিকার কোন রাষ্ট্রের একান্ত আভ্যন্তরিন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা বা নাক গলানো ?
যদি না সেই রাষ্ট্রটি আন্তর্জাতিক বিধি লংঘন করে?
বাংলাদেশ সেই ‘আন্তর্জাতিক দায়িত্ব’ বিধিমোতাবেক ভাবে পূরন তো করছেই উপরন্তু অনেকের চেয়ে এমনকি বিশ্ব মোড়ল সেজে বসা দেশটির চেয়েও অনেক বেশিই পালন করছে ।
যারা নিজেদেরকে বিশ্বের মোড়ল মনে করেন এবং কথায় কথায় আন্তর্জাতিক সংস্থার দোহাই দিয়ে অন্যদের শান্তি ও গনতন্ত্রের সবক দিতে আসেন শুনতে পাই, বিশ্ব সংস্থাটির সবচেয়ে বড় চাঁদাখেলাপি (কয়েক’শো মিলিওন ডলার) তারাই ।
এবং
যাদের নিজের দেশের বিরাট একটি অংশ এখনো বর্ণবাদের শিকার হয়, চিরকাল তারাই তাদের পছন্দের শাষকদের রাজতন্ত্র এমনকি স্বৈরতন্ত্রকেও নিজ স্বার্থেই পৃষ্ঠপোষকতা করেছে / করছে ( ফিলিপাইনএর মার্কোস, হাইতির পাপাডক, ইরানের শাহ, মিশরের হুসনে মোবারক, আফিকা / মধ্যপ্রাচ্যের খনিজসমৃদ্ধ দেশগুলো … শেষ হবেনা )
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যারা মানবতাবিরোধিদের বিরুদ্ধে এবং ক’বছর আগে ৯/১১ এর ঘটনার পরে যারা ‘মৌলবাদের বিরুদ্ধে বা ধর্মিয় উগ্রতাবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার এবং এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছেন’ বলে বেড়ান তারাই অন্য দেশের দেশের সবচেয়ে বড় জঙ্গি দলটিকে পৃষ্ঠপোষকতা করেন এবং ততদিন করেন যতদিন তারা ‘তাদের’ স্বার্থ রক্ষা করে বা তাদের কথামতন চলে ( লাদেনকে সৃষ্টিও করেছে আমেরিকা । ধ্বংশও করেছে তারা)
একদিকে আমাদের দেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে তারা গ্রহন করতে পারছেন না ।
অন্যদিকে, সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে (আজ পর্যন্ত) জার্মানের যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত নাৎসি বাহিনী “নিধনে” সবচাইতে বড় ভূমিকা রেখেছে/রাখছে এই আমেরিকারই !
যে আমারিকা বলেছিল, ‘যতদিন পর্যন্ত একটি নাৎসিও জীবিত থাকবে ততদিন তাদের যুদ্ধ শেষ হবেনা। শেষ নাৎসিটিকেও খুঁজে বের করে তাকে বিচারের সম্মুখিন করা হবে (পরোক্ষে হত্যা করা হবে)
সেই আমেরিকা আরেকটি দেশের যুদ্ধাপরাধিদের বিচারের বিষয়ে কি করে নমনিয় আচরন করার কথা বলে !?
কি দারুন দ্বিচারিতা !
এই সব এই জন্যই বলা যে,
যে ইসলাম ধর্মিয়রা সবচাইতে বেশি অরক্ষিত যে আমেরিকায় সেই আমেরিকাই ইসলামিস্ট হত্যা বন্ধ করতে, শান্তির নাম করে তারা জাতিসংঘকে (ফাকিস্তানকেও) সংগে নিয়ে ‘আমাদের দেশের যুদ্ধাপরাধীদের’ রক্ষায় কোমর বেঁধে নেমেছে । বিশ্বের কাছে আমাদের দেশকে সংঘাতপূর্ণ দেশ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে, যেখানে উন্নয়নে বাংলাদেশ অনেক উন্নত দেশকেও পেছনে ফেলে অগ্রগামি প্রায় ।
৩০ লক্ষ তাজা প্রাণ আড়াই লক্ষ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছি আমরা । নয় মাসের নির্মম ত্যাগের পুরষ্কার হিসেবে
পেয়েছি লাল-সবুজের পতাকা – ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এক মানচিত্র । এগুলো আমরা অর্জন করেছি, কারোর দয়ার দানে পাওয়া নয় । এই পতাকার সম্মান আমরাই সমুন্নত রাখবার জন্য যথেষ্ট, অন্য কারোর সাহায্যের প্রয়োজন নেই আমাদের এটি রক্ষার জন্য । এই পতাকাকে যারা কলংকিত করেছিল তাদের একটিকে আমরা ইতঃমধ্যেই মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছি। বাকি গুলোকেও পারবো । পারবোই ।
আজকের বিজয় দিবসে আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক, ‘শত ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে হলেও আমরা দেশদ্রোহিদের বিচার সম্পন্ন করবো । এতে যদি কেউ বাঁধা দিতে আসে তবে তার দাঁত ভাঙ্গা জবাবও দেবো’
আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচাইতে বড় মানব পতাকা তৈরী করার বিশ্ব রেকর্ড করেছে,
অভিনন্দন বাংলাদেশ
সালাম আমার পতাকা ।
সকলকে বিজয় দিবসের প্রাণ ঢালা শুভেচ্ছা
জয় বাংলা
১৫টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
অনেক অনেক দিন পর কিন্তু লিখলেন ।
বন্দনা কবীর
আমি বড্ড আলসে সাইরাস ভাই
ক্ষমা করবেন
মনের কাছে নিতান্ত বাধ্য না হয়ে পড়ার আগে লিখতে ইচ্ছে করে না।
সাথে থাকবেন
ভালো থাকুন
ভোরের শিশির নীতেশ
আলসেমি ছাড়েন।
প্রতিদিন লেখা চাই
হোক না হোক
তবু উড়াবো ছাই… -_-
জিসান শা ইকরাম
দারুন তথ্যপুর্ন এক পোস্ট ।
জামাতের জন্মস্থানে তাদের কেউ পাত্তা দেয়না , অথচ আমাদের দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জামাত ছারা চলতে পারেনা । একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেশবিরোধীদের বন্ধু ভাবেন , এটা খুব লজ্জার।
অনেক বিশ্লেশন ধর্মী লেখায় অনেক ভালোলাগা।
জয় বাংলা ।
বন্দনা কবীর
হা হা, রাইট। কাদেরকে ফাসি দেওয়ায় ফাকি জামাতেস্লাম যখন মাতম করে আবেদন করলো, বাংলাদেশ আক্রমন করার’ তখন ঐ দেশের মাথারা তাও পাত্তা না দিয়ে বলেছে, ‘ওটা ওদের ইন্টার্নাল প্রবলেম’
তারপরেও তারা কিন্তু বসে নেই । ইসলামের শত্রুই বলা যায় যে আমেরিকা তাদেরই পায়ে পড়ে তেল মেরে টাকা খাইয়ে বাংলাদেশের রাজাকারদের বাচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে ( অবশ্য সন্তানের জন্য পিতার তো কষ্ট হবেই, হোক তা অবৈধই 😉 )
তবে পোস্ট মোটেই খুব বিশ্লেশনধর্মি নয় 😛
জিসান শা ইকরাম
” অবশ্য সন্তানের জন্য পিতার তো কষ্ট হবেই, হোক তা অবৈধই ” (y) (y) আপনার এই মন্তব্যটা অবশ্যই বিশ্লেষন ধর্মী 😀
লীলাবতী
জামাতে ইসলাম পাকিস্থানে তেমন শক্তিশালী নয় ? এটি আগে জানতাম না আপু। অনেক কিছু জানলাম আপনার লেখার মাধ্যমে। এখন বুঝতে পারলাম আমেরিকা , জাতিসংঘ কেন এমন করছে । ধন্যবাদ আপু। আপনাকে নিয়মিত দেখতে চাই এখানে 🙂
বন্দনা কবীর
চেষ্টা করবো নিয়মিত লেখর ও মন্তব্য করবার।
আমি কিন্তু না লিখলেও মন্তব্য না করলেও সবই পড়ি প্রায়
সকলের লেখাই 😛
অনেক ধন্যবাদ লীলাবতিকে সাথে থাকবার জন্য ।
ভালো থাকুন
যাযাবর
আমেরিকা হচ্ছে বদের হাড্ডি । এরা লাদেনকে বানায় আবার মেরে ফেলে । একটি স্থিতিশীল সরকারকে চাপের মাঝে রাখার জন্য জামাতকে কাজে লাগাচ্ছে । এরা কোনদিন বাংলাদেশের বন্ধু ছিল না । ৭১ এ এরা পাকিস্থানকে সমর্থন করেছে , ৭ম নৌবহর পাঠিয়েছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে । ভাগ্যিস তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন আর ভারত ছিল আমাদের সাথে । আসলে জিয়াউর রহমান দেশটিকে পিছনে নিয়ে গিয়েছে।
খুব ভালো লিখেছেন আপু। জয় বাংলা (y)
নীলকন্ঠ জয়
শকুন আর প্রেতাত্মাদের জন্য স্বাধীনতা আজ কলঙ্কিত। শুয়োরের জাতগুলোকে জ্যান্ত পুড়ানো/কবর দেওয়া হোক। ইতিহাসকে যোগ করে দারুন একটি লেখা। শেখ মুজিবুর রহমান একটা সোনার দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, আর কালে কালে মীর জাফররা দেশটাকে ভক্ষণ করেই গেলো।
জাতির পতাকা খামছে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন। ধিক নির্লজ্জ্বদের।
মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানবেন প্রিয় আপু। -{@
স্বপ্ন
অনেক সত্যকে এক পোস্টে লিপিবদ্ধ করলেন আপু। আপনার এক লেখা পড়েই তো আপনার ভক্ত হয়ে গেলাম।
শুন্য শুন্যালয়
অসাধারণ পোস্ট আপু..বহির্বিশ্বের এই নাকগুলো যতোদিন আমাদের দেশে গলাবে, ওদের নাক ভোতা করার ইচ্ছে ততবেশী জন্মাবে আমাদের মধ্যে ..একটাকেও ছাড়া হবেনা.
আপনার এমন পোস্টের জন্য অনেক দিন অপেক্ষা করতে রাজি আছি আপু..
স্বপ্ন নীলা
তথ্য বহুল একটি পোস্ট ,,,ভীষণ ভাল লেগেছে
তন্দ্রা
জাতির এক ক্লান্তি লগ্নে আপনার এই পোস্টও অনেক অনেক প্রয়োজন।
আপা হিউম্যান রাইটস অর্থখোর দালাল আর এমন্যাসটি ইন্টারন্যাশনাল তাই, তাপরও তার মহা সচিব ছিলেন তারেক রহমানের বউয়ের আপন চাচাত বোন তার জন্য ২০০১ থেকে ২০০৬ বিএনপি জোট আমলে ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলা, কিবরিয়া সাহেব হত্যা, আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা, নাটোরের এম্পি মমতাজ হত্যা, চট্টগ্রামে ব্যাসায়ী জামাল উদ্দিন ও গপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যা, সারা দেশে শিরিষ বোমা হামলার, যশোররে সাংবাদিক বালু হত্যা, খুলনার আওয়ামিলীগ নেতা ইমাম সাহেব হত্যা, রাজশাহী ভার্সিটিতে দুই জন শিক্ষক হত্যা আরও অনেক হত্যা কাণ্ড ঘতেছে কিন্তু একটি ও কথাও বলেনি তাঁরা।
কিন্তু কি নিরমম একটি কথা বাংলা ভাই ও আব্দুর রহমানকে শেষ বেলায় বিচার করে হত্যা করতে চাইল কেন?
আমেরিকা সব সময় স্বারথবাদী দেশ।
ভালো লিখেছেন।
মা মাটি দেশ
দিদির সাথে ফেইসবুকে তর্ক বির্তক হলেও সোনেলায় প্রথম ।ছোট ভাইদের কিছু শিখতে না দিয়ে সোনেলায় না লিখা ঠিক নয় দিদি আসা করি সবসময় থাকবেন।অনেক কিছু জানলাম তথ্যপূর্ণ পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।সুস্হ থাকুন,ভাল থাকুন। (y) -{@