একটা গল্প দিয়ে শুরু করি……
লিপি আর আবিদ, স্বামী-স্ত্রী। ভোরবেলায় উঠে আবিদ যায় মর্নিংওয়াকে আর লিপি রান্নাঘরে। সকালের নাস্তা আর দুপুরের রান্নার আয়োজন করতে করতে আবিদ ফিরে আসে মর্নিংওয়াক থেকে। যেদিন বাজার করার প্রয়োজন থাকে সেদিন ফেরার পথে বাজারটাও নিয়ে আসে। লিপি চা বানায়, মিয়া-বিবিতে বসে চা খায়। চা খাওয়া শেষে লিপি আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ে রান্নাঘর আর বাচ্চাদের ঘুম থেকে তুলতে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ডাকাডাকি করতে করতে বাচ্চারা উঠেও যায়। তারা স্কুল, প্রাইভেটের জন্য তৈরি হতে হতে নাস্তা রেডি। আবিদও এ সময়ের মধ্যে গোসল সেরে অফিসের জন্য তৈরি হয়ে চলে আসে ডাইনিং টেবিলে। স্বামী সন্তানেরা নাস্তা খেয়ে যে যার মতো বেরিয়ে যায়। লিপি রান্না, সংসারের অন্যান্য কাজ, গোসল সেরে কোনওরকমে নাস্তা খেয়ে ছুট লাগায় অফিসে।
আমাদের সমাজের অতি পরিচিত দৃশ্য এটি। বর্তমানে আমাদের দেশে কর্মজীবী মহিলার সংখ্যা নেহাৎ কম নয়। তবে আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি। সংসার, স্বামী, সন্তানের সব দায়িত্ব নারীকেই পালন করতে হয়। আর এসবের সাথে যখন পেশাগত দায়িত্বও পালন করতে হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই নারীদের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। কিন্তু যেহেতু যুগ যুগ ধরে আমাদের সমাজ একটা নির্দিষ্ট ধারণা বহন করে চলেছে, স্বামী-সন্তান-সংসার শুধুমাত্র মেয়েদেরই দায়িত্ব, এখন নারীরা যখন পুরুষের মতো বাইরের কাজেরও দায়িত্ব পালন করছে, তবুও সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। যুগ যুগ ধরে বহন করা ধারণাটিতেই আটকে আছি আমরা। একারণে স্বামীটি নির্দ্বিধায় ভোরে উঠে চলে যায় মর্নিংওয়াকে, স্ত্রীর তৈরি করা নাস্তা খেয়ে ফিটফাট হয়ে চলে যায় অফিসে, যদিও তার স্ত্রীটি কর্মজীবী। আমাদের দাদী-নানীরা যেভাবে সংসার করেছেন কিংবা আমাদের মায়েরাও, সেটাও অনেক কষ্টকর ছিল। তার সাথে বাড়তি যোগ হয়েছে চাকরি। একারণে পরিশ্রমও বেড়েছে। এ অবস্থায় যদি সাংসারিক কাজে স্বামী কিছুটা সহযোগিতা করে তাহলে স্ত্রীও একটু দম ফেলবার ফুরসৎ পায়। কিন্তু এমন মনোভাব এখনও আমাদের সমাজে বিস্তার লাভ করেনি। বিস্তার লাভ করেনি নারীর মর্যাদা বিষয়ক ধারণাও। সংসারের মাথা পুরুষ, সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত পুরুষ নেবে, এমনকি অধিকাংশ চাকরিজীবী নারীর উপার্জনের ওপরও কর্তৃত্ব পুরুষটির অর্থাৎ স্বামীর। অনেক উচ্চশিক্ষিত নারীও বাধ্য হয় স্বামীর হাতে তার উপার্জিত অর্থের পুরোটাই তুলে দিতে। তা না হলে শিকার হতে হয় নির্যাতনের।
তবে এর বিপরীত চিত্রও যে দেখা যাচ্ছে না আজকাল তা নয়, তবে তার পরিমাণ খুবই নগণ্য। ২০২০ সালে এসেও আমাদের সমাজের এই পশ্চাৎপদতা দেখে ব্যথিত হওয়া ছাড়া আর উপায় কী! আমরা প্রতিবছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করি, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ সকল ধরণের বৈষম্য দূর করার জন্য দিবসটিতে নানা আয়োজন, আলোচনা করি। কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গি বদলাই না। বদলাই তো না-ই, উপরন্তু দিন দিন যেন নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য বেড়েই চলেছে আমাদের সমাজে। নারী বৈষম্যের শিকার হচ্ছে পারিবারিক, সামাজিক এবং কর্মক্ষেত্রেও। নারীদের অধিকার নিয়ে আলোচনা যেন শুধুমাত্র দিবসটিতেই আবদ্ধ রেখে আমরা করে ফেলছি দায়িত্বের ইতি। অথচ তেমনটি কাম্য নয়। যে মহান উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সূচনা হয়েছিল একটি আন্দোলনের, এবং আন্দোলনটির অর্জনের অংশ হিসেবেই পালিত হয়ে আসছে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস, আজ এত বছর পরেও যেন সেসময়ের সেই অর্জন অনেকখানিই ম্রিয়মান। যা স্বাভাবিকভাবেই হতাশা বয়ে আনে। আজও প্রতি মুহূর্তে একজন নারীকে টিকে থাকার সংগ্রাম করতে হয়। দিনের আলো নিভলেই নারী অনিরাপদ। শুধু দিনের আলো নিভলেই কেন, খোদ দিনের আলোতেই কি নারী থাকছে সুরক্ষিত? পরিবার, পথ-ঘাট, যানবাহন কিংবা অফিস-আদালত, সবখানেই নারী আজ অনিরাপদ এবং বৈষম্যের শিকার।
পেছন ফিরে দেখাঃ
আন্তর্জাতিক নারী দিবস( আদি নাম- আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস) , প্রতিবছর ৮ মার্চ তারিখে দিবসটি পালিত হয়। সারা বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবস উদযাপন করে থাকেন। বিশ্বের এক এক প্রান্তে নারীদিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য এক এক প্রকার হয়। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা উদযাপনের মুখ্য বিষয় হয়, আবার কোথাও মহিলাদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠাটি বেশি গুরুত্ব পায়।
এই দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ সালে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকারি লেঠেল বাহিনীর দমন পীড়ন। ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ; জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭ টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে অংশ নিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালন হবে। এরপর দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে শুরু করলো। বাংলাদেশেও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পূর্ব থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। অতঃপর ১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। বিভিন্ন রাষ্ট্রকে দিবসটি পালনের আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকেই সারা বিশ্বজুড়ে দিনটি পালিত হচ্ছে নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুর্ণব্যক্ত করার অভীপ্সা হিসেবে।
এ যুগের হালচালঃ
সম অধিকার, অর্থাৎ সমান অধিকার। পুরুষের সমান অধিকার। নারীর এ দাবি। কিন্তু কেন? কার কাছেই বা এ দাবি? বৈষম্যই বা তৈরি হল কেন এবং কখন থেকে? সেই আদিম যুগে যদি আমরা দৃষ্টিপাত করি, কি দেখি? খাদ্য-বস্ত্রহীন, বাসস্থানহীন মনুষ্যজাতি। পৃথিবীর ইতিহাস তাই বলে। ধীরে ধীরে প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে মানুষ পশু শিকারসহ অন্যান্য কার্যকলাপে অভ্যস্ত হয়, একসাথে। সেখানে নারী-পুরুষ ভেদাভেদটা ছিল না। সম্মিলিতভাবে সব কাজ করতেই তারা অভ্যস্ত ছিল। এই অবস্থার পরিবর্তন হয় ধীরে ধীরে। যত দিন গড়িয়েছে, মানুষ সমাজবদ্ধ হয়েছে, তৈরি হয়েছে সমাজের নানান নিয়ম-কানুন। যেহেতু প্রকৃতিগতভাবেই পুরুষের শারিরীক সক্ষমতা নারীদের তুলনায় একটু বেশি, তাই পুরুষ কর্তৃত্বের জায়গাটি দখল করে নিয়েছে প্রথমে গোষ্ঠী, তারপর সমাজ তারও পরে রাষ্ট্রের। নারীদেরকে খুব কৌশলে ধীরে ধীরে করে ফেলা হয় একরকম গৃহবন্দি। কর্তৃত্ব যেহেতু পুরুষের, সবরকম সুযোগ-সুবিধাও তাদের, অধিকারও তাদের। এমনকি নারী কখন কি করবে, কিভাবে করবে, কেন করবে, এসব অধিকারও যেন পুরুষের। কিন্তু পুরুষকে এই অধিকার কে দিল?
কেউ না, বলা যায় তারা গায়ের জোরেই এ অধিকার কুক্ষিগত করেছে। শারীরিক সক্ষমতার দোহাই দিয়ে, কখনও বা ধর্মের দোহাই দিয়ে। কিন্তু কোনও ধর্মেই কখনও নারীর প্রতি অসম্মান বা অবহেলা কিংবা বৈষম্যের পক্ষপাতী নয়। তবুও নারীকে সমাজের নামে, সংসারের নামে পরানো হয় শেকল। বাস্তবতা এটাই, নারীর অধিকার এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও পদে পদে বাধার সম্মুখীন হয়। সংসারে, সমাজে, কর্মক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নারীকে হতে হচ্ছে পরীক্ষার সম্মুখীন।
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া তাঁর সময়ে যতটা বলিষ্ঠতার পরিচয় দিয়ে গেছেন, তাঁর সেই বলে বলিয়ান হয়ে আমাদের নারীরা তাদের ভাগ্যোন্নয়ন করতে পারেননি। যে কঠিন পরিস্থিতির ভেতর থেকেও তিনি জ্ঞানার্জন করে গেছেন, বিলিয়ে গেছেন আলো নারীদের জন্য, তা কতটুকু এগিয়েছে? হ্যাঁ, যুগ বদলেছে, দেশও এগিয়ে গেছে অনেকটাই। শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদেও তারা অধিষ্ঠিত। স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোয় নারী প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে। কিন্তু আমরা কি ঘরে বাইরে নারীদের নিরাপত্তা দিতে পেরেছি? নারীদের সুরক্ষায় আইনও হয়েছে, তবে সেই আইন বাস্তবায়িত হচ্ছে কতটুকু? আমরা কি বন্ধ করতে পেরেছি বাল্যবিয়ে, ধর্ষণসহ নারীর প্রতি ভয়াবহ সহিংসতাগুলো? কিংবা পরিস্থিতি অনুযায়ী আইন আধুনিকীকরণ হচ্ছে কী? প্রতিদিনের সংবাদপত্রে চোখ বোলালেই দেখতে পাই, নারীদের প্রতি ভয়াবহ সহিংসতা। নারী যেন শুধুমাত্র ভোগের বস্তু। হোক সে শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত, ধনী কিংবা দরিদ্র, একটাই পরিচয় নারী। তাকে যা খুশি বলা যায়, যেমন খুশি ব্যবহার করা যায়। আর আমাদের সমাজের সার্বিক মনোভাবেরও কোনও পরিবর্তন নেই। একজন মেয়ে ধর্ষিতা হলে ধর্ষক পার পেয়ে যায়, কিন্তু ধর্ষিতা পার পায় না। আমাদের সমাজ তাকে ক্ষতবিক্ষত করে নানাভাবে। যেন প্রধান অপরাধী ধর্ষিতাই।
যাইহোক, এ সবকিছুর জন্য আমাদের অ-শিক্ষাই মূলত দায়ী। অ-শিক্ষা দূর হলে যে আমাদের দেশে নারীদের প্রতি বৈষম্য দূর হবে, সেটা অনেকাংশে ঠিক। অনেকাংশে বলছি একারণে যে, শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষালাভও যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন আত্মোন্নয়ন, বিবেক-বোধ-মনুষ্যত্বের উন্নয়ন। তা না হলে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে তো শতকরা একশোভাগ শিক্ষিত, তবু কেন সেসব দেশেও নারীদের প্রতি বৈষম্যের খবর পাই আমরা? তাদের আইন এবং আইনের প্রয়োগ আমাদের চেয়ে অনেক অনেক কঠোর, তবুও তো অল্প হলেও শোনা যায় এমন খবর! আর আমাদের সমাজে তো আমরা নারীকেই দাঁড় করিয়ে দিয়েছি নারীর বিরুদ্ধে।
নারী পুরুষ উভয়ই সমান। জন্মগতভাবে উভয়ের অধিকারও সমান। এখানে অধিকার দেয়া নেয়ার প্রশ্নটি নিতান্তই হাস্যকর, যদিও কালের বিবর্তনে এখন সেটাই বাস্তবতা। আর সেই বাস্তবতার চাকায় নিষ্পেষিত হয়ে আজ নারীরা তাদের হৃত অধিকার পুণরুদ্ধারে সচেষ্ট। লেখাপড়ার অধিকার, খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের অধিকার, আইনী অধিকার, রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার, এসবের সাথে আরও একটি অধিকার অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত, তা হল, উত্তরাধিকার আইনে নারীদের সমতা। পিতার সম্পত্তিতে পুত্র-কন্যা যদি সমান অংশ পায়, তাহলে তাদের প্রতি বৈষম্যের মনোভাবের কিছুটা পরিবর্তন অবশ্যই হবে। বর্তমানে পিতার সম্পত্তিতে কন্যা পায় পুত্রের অর্ধেক। কিন্তু তারপরেও নানা অজুহাতে ভাইয়েরা বোনদেরকে বঞ্চিত করে থাকে। স্নেহ-ভালোবাসার দোহাই দিয়েও বোনকে সম্পত্তির অংশ নিতে বিরত রাখে ভাই, এমন উদাহরণ আমাদের সামনে ভুরি ভুরি। অশিক্ষিত বা অল্পশিক্ষিত বোনেরা তাদের অধিকার সম্পর্কে অসচেতনতার কারণেই এমনটি হয়। আর যেহেতু পিতার সম্পত্তিতে বোনের দ্বিগুণ পরিমাণ অংশ পায় ভাই, তাই তারা ধরেই নেয়, তাদের গুরুত্ব বোনদের চেয়ে বেশি। বৈষম্যমূলক মনোভাব তো আমরা নিজের পরিবার থেকেই শুরু করছি। সেখানে কেমন করে পাড়া-প্রতিবেশী থেকে শুরু করে সমাজের অন্যান্য পুরুষ নারীকে সমকক্ষ ভাববে?
তাই শুধু সভা সমাবেশ নয়, নারীদের অধিকার আদায়ে পুরো জাতিকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। উপযুক্ত শিক্ষাই পারে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে যাওয়া বৈষম্যের মূলোৎপাটন করতে। জোর দিতে হবে নারী শিক্ষার প্রতি, যেন নারীরা নিজেরাই নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। যেন পুরুষেরা মানবিক গুণসম্পন্ন হয়ে গড়ে ওঠে এবং নারীদেরকে নিজেদের তুলনায় নিকৃষ্ট কিংবা দুর্বল না ভেবে তাদের সমান ভাবতে শেখে। বঞ্চিত করার, অত্যাচারে জর্জরিত করার মনোভাব দূর হবে তাহলেই।
নারী পুরুষ সমান অধিকার সবক্ষেত্রেই, পুরুষের মতো নারীও মানুষ, এবং সব অধিকার পরিপূর্ণভাবে ভোগ করে বেঁচে থাকাটা মানুষ হিসেবেই তার প্রাপ্য, এই মনোভাব তৈরি হোক সবার মাঝে। নিরাপদ হোক নারীর পথচলা। পরিবারে, সমাজে, পথে-ঘাটে, দিনে কিংবা রাতে নারী থাক সুরক্ষিত, এমনটাই প্রত্যাশা করি। সফল হোক ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল উদ্দেশ্য।
১৯টি মন্তব্য
ইঞ্জা
সম্পূর্ণ একমত আপনার প্রতিটি কথার সাথে, নারীদের প্রতি আমরা এখনো উদাসীন, যদি নারী পুরুষে সমাধিকার হয় তাহলেই নিশ্চিত হতে পারে নারীর প্রতি যথার্থ সম্মান।
সুন্দর লেখাটির জন্য ধন্যবাদ আপু।
রেহানা বীথি
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভালো থাকবেন সবসময়।
ইঞ্জা
শুভকামনা আপু।
ছাইরাছ হেলাল
আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি না পাল্টালে কিছুতেই কিছু হবে না। নারী যেমন অবহেলিত ছিল তেমন-ই থাকবে।
যে সামান্য পরিবর্তনটুকু দৃশ্যমান তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য-ই।
এমন বিস্তারিত সুন্দর গোছানো ভাবনার জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ।
রেহানা বীথি
সুন্দর মন্তব্যে খুব খুশি হলাম ভাইয়া।
ভালো থাকুন সবসময়।
আলমগীর সরকার লিটন
নারী দিবসের অনেক শুভেচ্ছা রইল কবি আপু
রেহানা বীথি
ভালো থাকুন সবসময়।
সুপায়ন বড়ুয়া
নারী দিবসে সবাইকে শুভেচ্ছা
আপনাকে ধন্যবাদ বিশদ ভাবে তুলে ধরার জন্য।
দেশের অর্ধেক জনশক্তিকে বাইরে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়।
সেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বুঝেন বলেই নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রনী ভুমিকা নিচ্ছেন।
আজ স্কুল, কলেজ , প্রাইভেট প্রতিষ্টান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সচিবালয় সব জায়গায় নারী বিরাজমান।
জয় হোক নারী জাগরনের।
জবাব
রেহানা বীথি
ভালো লাগলো দাদা আপনার মন্তব্য। ভালো থাকুন সবসময়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপু আপনার লেখার মধ্য দিয়ে বিশদভাবে নারীদের অতীত, বর্তমান র্খুঁটিনাটি সব তুলে ধরলেন। যত যাই বলি না কেন নারীর প্রতি সহিংসতা, লালসা , দমিয়ে রাখা সব বেড়েই চলেছে। কোনো পরিবর্তন অন্তত আমি পাচ্ছি না। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা রইলো
রেহানা বীথি
পরিবর্তন নেই বললেই চলে আপু। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন সবসময়।
ফয়জুল মহী
সুচিন্তিত মনোভাবের প্রকাশ, ভালোই ।
রেহানা বীথি
ধন্যবাদ।
ত্রিস্তান
অনেক তথ্যবহুল একটা লেখা। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শুভেচ্ছা।
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময়।
তৌহিদ
নারীদের নিয়ে নারী দিবসে চমৎকার বিশ্লেষণধর্মী লেখা টি পড়ে আনন্দিত হলাম। আপনার পক্ষেই এমন লেখা সম্ভব।
আসলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হওয়া জরুরি। একজন নারী সে মা জননী বোন সহধর্মিনী বন্ধু এভাবে যদি সবাই চিন্তা করতাম তাহলে সমাজে নারীরা অরক্ষিত থাকতোনা। প্রত্যেক নারী তার প্রাপ্য সম্মান পাক একজন পুরুষ হিসেবে এটাই আমার কাম্য।
আপনাকেও বিশ্ব নারী দিবসে অনেক শুভেচ্ছা রইল। ভালো থাকবেন আপু।
রেহানা বীথি
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
ভালো থাকবেন সবসময়।
হালিম নজরুল
যদি সাংসারিক কাজে স্বামী কিছুটা সহযোগিতা করে তাহলে স্ত্রীও একটু দম ফেলবার ফুরসৎ পায়। কিন্তু এমন মনোভাব এখনও আমাদের সমাজে বিস্তার লাভ করেনি।
রেহানা বীথি
ভালো থাকবেন। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।