বাড়িতে দেবর বিল্টু এসেই চাচার খোঁজ করে জানলো সে খুব কষ্ট পেয়েছে ছন্দার আচরণে। বিল্টু বাড়ি ভরা মানুষ দেখে চুপিচুপি ছন্দাকে জিজ্ঞাসা করলো — কি হয়েছে চাচার? ছন্দা বেশ ঝাঁজের সাথেই বললো– ওকে রাখা যাবে না আর, বেয়াদব একটা। বিল্টু বেশ ভারিক্কি চালে বললো — আগে দেখতে হবে কি হয়েছে ব্যাপারটা। নিজেকে আর সামলাতে না পেরে ছন্দা উচ্চস্বরে জবাব দিল– কি আর দেখবে? আমি আর চাচী একই লেবেলের। এই তো!!
ছন্দা তার কাজগুলি করে গেল। একটু পরেই আড়াইশো লোকের ইফতার রাতের খাবার দিতে হবে। তাছাড়া একশ লোক থাকবে যারা সেহরিতে খাবে। কোন কাজে মন নেই আজ ছন্দার। প্রতিবার এই অনুষ্ঠান ছন্দাই করে। কত লোক ওর মুখ চেয়ে থাকে। সত্য কথা যে এই অনুষ্ঠানের প্রচলন ছন্দাই চালু করেছে। যাতে সব ভাইবোন একত্রিত হতে পারে। সবার মাঝে আনন্দ বিলিয়ে দেয়াই ওর উদ্দেশ্য। এতদিন কোন সমস্যা হয়নি, একা হাতেই সব সামলিয়েছে। ননদ দেবর জা ভাশুর ছেলেমেয়ে সবাই সহযোগী। কিন্তু আজ এই সমস্যায় সবাই চুপ, এমন চুপ যেন মনে হচ্ছে ছন্দাই আসামী। ছন্দার মাঝে কাজ করছে যে ও এবাড়ির বউ বলেই ওরা এমন করছে? মেয়ে হলে কি এমন করতো? আমি হলে কি মেনে নিতাম? কাজের লোককে শাসন করার অধিকার আমার আছে। এদের উচিৎ ছিল আমার প্রতি অন্ধ সাপোর্ট দেয়া শত অপরাধ আমার থাকলেও। পরে ভাবা যেতো ভাল মন্দ। আমার সম্মান কি ওদের বাড়ির সম্মান নয়।
এবারে বাড়িতে ঢুকলো ছন্দার স্বামী মিন্টু ও ভাসুর। ছন্দার মুখ দেখেই মিন্টু প্রশ্ন করলো — এই কি হয়েছে?
ছন্দা বেশ ঝাঁজের সাথেই — কি হয়েছে? চাচা আমাকে যা খুশি তাই বলে গালাগালি করেছে! বাড়ি ভর্তি এত মানুষ একজনও ওকে চুপ করতে বললো না। এত্তসাহস ওকে কে দিল, এত লাই ও কিভাবে পায়? ভাসুরকে সবাই দাদা ডাকে। দাদা শান্ত ভাবে বললো — ছন্দা আস্তে আস্তে, ঘরে আসো মানুষ জন আছে। আমি দেখছি। এতটুকু স্নেহের ছোঁয়ায় ছন্দার চোখে জল এসে গেল। আর মিণ্টু উঠানের অন্যদিকে কাজে ব্যাস্ত চাচাকে রাগতো স্বরে বলে উঠলো — এই বেয়াদব বেড় হয়ে যাও এই মুহূর্তে এই বাড়ি থেকে —
/ চলবে
৬টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
যত ধরনের অসম্মান, অপমান, নির্যাতন সব কিছুই নারীদের জন্য বরাদ্দ।
নিস্তার নেই নারীর।
অপেক্ষা পরবর্তী পর্বের জন্য।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
নিজের সাজানো সংসারে নিজেই অপরাধী!এটা এ দেশের নারীদের বেলায় ঘটে বেশী।চলুক -{@
ছাইরাছ হেলাল
গ্যাঁড়াকল হয়ত একেই বলে!
মৌনতা রিতু
পড়ছি। পরিবারের সব ভাইবোনকে একত্রিত করে হৈ হুল্লোড় করা ছন্দার এ চরিত্রটা বড় পরিচিত। ছন্দা পারে সবাইকে বেঁধে রাখতে।
নীলাঞ্জনা নীলা
এমনই তো হবার কথা আপু! ছন্দা’দের গলা নীচু করেই রাখার নিয়ম।
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
তৌহিদ ইসলাম
নারী যেন সব জায়গাতেই অবহেলিত। এই মনোভাব কবে যে বিলীন হবে!