তাজমহল
সময়টা যথাসম্ভব ২০০৫ সালের, দিল্লিতে অটো রিক্সা পার্টস ইম্পোর্টের ব্যাবসার কারণে যাওয়া হয়েছিলো প্রথমবার, সেইখান থেকেই এক বন্ধুকে নিয়ে আগ্রাতে যাওয়া হয় তাজমহল দেখার জন্য, দিল্লি থেকেই লোকাল ট্রাভেল এজেন্সি থেকে গাড়ী, হোটেল, গাইড সব বুকিং দিলাম, পরদিন ভোর তিনটায় গাড়ী এলে দুজনেই রওনা হয়ে গেলাম, সকাল সাতটায় পথেই এক রেস্টুরেন্টে ছোলে ভাটুরে (বড় মাপের ছোলার মজাদার রান্না) দিয়ে পরটা,লাচ্চি আর কফি খেয়ে আবার রওনা হলাম, পথিমধ্যে টোল প্লাজা পড়লো, এই প্লাজাতে গাড়ী সহ বিদেশিদের বড় এমাউন্টের টাকা দিতে হয় যা সরকারেরই নিয়ম, গাড়ীর ড্রাইভার আমাদের কলকাতার পরিচয় দিলে ছেড়ে দিলো।
বিকালে আমরা আগ্রাতে পোঁছে গেলাম, ড্রাইভার ফোন করে দিলো গাইডকে, হোটেলে পোঁছুলে এক ইয়াং ছেলে আমাদের রিসিভ করলো, ড্রাইভার আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো গাইড হিসাবে৷ গাইড আমাদেরকে নিয়ে গিয়ে হোটেলের রুম নিয়ে দিলো, রুম দেখে বেশ পছন্দ হলো আমার, থ্রি স্টার হোটেল, রুম, টয়লেট সব রুচি সম্পন্ন।
আমি এক কাপ চে খেয়ে শুয়ে পড়লাম, ঘুম ভাঙ্গলো সন্ধ্যা সাতটায়।
দুই বন্ধু মিলে বের হলাম রাতের আগ্রা দেখার জন্য, আশে পাশে ইতিউতি ঘুরে ফিরে এলাম হোটেলে।
রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার জিজ্ঞেস করলো ডিনার করেছি কিনা?
না বালাতে বললো, ওদের হোটেলের টপ ফ্লোরে ঘুরন্ত রেস্টুরেন্ট আছে যা আগ্রার আর কোথাও নেই, ওখানেই খেতে পারি চাইলে।
আমরা সানন্দে রাজি হয়ে গেলাম।
লিফটে করে টপ ফ্লোরের রেস্টুরেন্টে এসে বাইরে দেখা যায় এমন এক টেবিলের সামনে গিয়ে অবাক হলাম বাইরের দিকে তাকিয়ে, আমাদের সামনেই তাজমহল দেখা যাচ্ছে তার অপরূপ সাজে, আরও অবাক হলাম সবুজ তাজমহলকে দেখে।
ওয়েটার এসে দাঁড়ালে জিজ্ঞেস করলাম, কি ব্যাপার, তাজমহল সবুজ কেন?
ওয়েটার যা বললো তার সারমর্ম হলো, পূর্ণিমার চাঁদের আলোতে তাজমহল বিভিন্ন সময়ে এক এক ধরণের রঙে রঙ্গিন হয়, যখন চাঁদ উঠে তখন এক রঙ, চাঁদ যখন মধ্য গগনে তখন এক রঙ, একটু ডলে এলে এক রঙ, আবার অস্তাচলে অন্য রঙ, কখনো সবুজ, কখনো গোলাপি, কখনো ধবধবে সাদা।
আমরা তাজমহলের রূপ আস্বাদন করতে করতে ডিনারের অর্ডার দিলাম, সাথে বিয়ার।
কিছুক্ষণ পর আমাদেরকে নিয়ে রেস্টুরেন্ট ফ্লোর ঘুরতে শুরু করলো।
পরদিন সকাল দশটায় ব্রেকফাস্ট করে রিসেপশনে এসে দেখলাম গাইড অপেক্ষা করছে, ওকে জিজ্ঞেস করলাম আমরা কখন তাজমহলে যেতে পারবো?
ও বললো, তাজমহলের গেইট খোলা হয় তিনটার দিকে, তখন যাওয়া যাবে কিন্তু গাড়ী নিয়ে যাওয়া যাবেনা, এইখান থেকে বেবি টেক্সি (তখন সিএনজি আসেনি) করে যেতে হবে।
দুপুরে আমরা লাঞ্চ করে রওনা হলাম তাজমহলের উদ্দেশ্যে।
চলবে।
ছবিঃ গুগল।
৩৮টি মন্তব্য
নাজমুল হুদা
ভ্রমণ কাহিনী পড়তে ভালো লাগে। সময়ের অভাবে আপনার প্রতিটি লেখার পাঠক হতে পারি না তারজন্য দুঃখবোধ করছি।
তবে তাজমহলের শেষ দেখবো আপনার লেখায় ,,আছি অপেক্ষায়।
ইঞ্জা
কোন সমস্যা নেই ভাই, চেষ্টা করুন নিয়মিত হতে, ধন্যবাদ অশেষ। 😊
মোঃ মজিবর রহমান
ভ্রমন দারুন আবার আগ্রার তাজমহল। যা জগত বিখ্যাত সম্রাট শাজাহানে তার প্রিয়তম স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা নিদরশন স্বরুপ করেছিলেন।
যার সৌন্দয্য প্রিথিবী জুড়ে।
খুব ভাল লাগ্ল রেস্টুরেন্টের উপির থেকে দেখা তাজমহলের বর্ণনা।
শুভেচ্ছা অবিরত।
ইঞ্জা
ধন্যবাদ নিরন্তর ভাই, এ সৌন্দর্য্য বর্ণনা করা বড়ই কঠিন, কারণ শুধু যে দেখেছে সেই শুধু বুঝে এর অপার সৌন্দর্য্য। 😊
মোঃ মজিবর রহমান
☝। ভাল থাকুন।
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা ভাই
রেহানা বীথি
বাহ্, বেশ সুন্দর শুরু। আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া
ইঞ্জা
অজস্র ধন্যবাদ প্রিয় আপু। 😊
প্রদীপ চক্রবর্তী
বাহ্
দারুণ উপস্থাপন দাদা।
যদিও যাওয়া হয়নি তাজমহল। লেখা পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
পরের পর্বের অপেক্ষায়য়..
ইঞ্জা
ধন্যবাদ দাদা, দ্রতই পাবেন পরের পর্ব। 😊
আরজু মুক্তা
তাজমহলের রং পাল্টানোর ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগলো।
শুভকামনা।
ইঞ্জা
আপু শুধু কি এইটি, আরও আছে, একে একে সব বলবো পরের পর্বে। 😊
সাবিনা ইয়াসমিন
ছোলে-ভাটুরে খাবারটা এখন ঢাকাতে পাওয়া যায় বিধায় খেয়েছি। ভালো লেগেছে আমার কাছে।
তাজমহল এর রঙ বদলায় শুনেছি। কিন্তু শোনা আর দেখায় অনেক পার্থক্য থাকে তাইনা ভাইজান? সেই সুন্দর তাজমহল আর তার রঙ বদল আপনি নিজের চোখের সামনে যখন দেখেছেন, তখন কতটা অভিভুত হয়েছিলেন তাই ভাবছি। আমার কাছে তাজমহল যতটা রহস্যময় লাগে, তার চাইতে বেশি অবাক লাগে এর ইতিহাস পড়লে। ঐতিহাসিকরা এখনো কনফার্ম করতে পারছেন না এর ভিত্তি আসলে কিসের উপর গড়া হয়েছিলো!! কেউ বলে মসজিদ ভেঙে এটা তৈরি, কেউ বলে মন্দির। কেউ বলে সমাধি তৈরি করাই মুল উদ্যেশ্য ছিলো, আবার কেউ বলে অর্থ আর ক্ষমতার অপব্যবহার।
যাইহোক তাজমহল এক অমর সৃষ্টি। এর প্রতি মানুষ আকৃষ্ট যুগে যুগে হয়েছে/ হবে। আপনার ধারাবাহিক লেখায় এবার তাজমহল এনেছেন এতেই আমি মহা খুশি। সব মনে করে করে লিখবেন। একটা অংশও যেনো বাদ না থাকে। আমি মনোযোগ দিয়ে পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। 🙂
শুভ কামনা 🌹🌹
ইঞ্জা
আপু অভিভূত হওয়ার আরও অনেক বাকি ছিলো, শুনলেই আশ্চর্য হয়ে যাবেন, একে একে সবই বলবো, কোনটা মিস যাবেনা ইনশা আল্লাহ্।
এর কিছু ইতিহাস আমিও গাইডের মুখে শুনে এসেছি, যা আমি মনে করি সত্য৷ অপেক্ষা করুন, শিগ্রই আসছে। 😊
নিতাই বাবু
যাক! এবার তাজমহল নিয়ে অনেককিছু জানা হবে। এই পোস্টেই অনেক জানা হয়ে গেল।
ইঞ্জা
একদম ঠিক বলেছেন দাদা, আরও আসছে অপেক্ষা করুন। 😊
তৌহিদ
আপনার ভ্রমণকাহিনী লেখাগুলোর দারুণ ভক্ত আমি দাদা। আর তাজমহল নিয়ে লিখছেন মানে আরও ইন্টারেস্টিং গল্প হতে যাচ্ছে এটি। আজকের লেখা দারুণ হয়েছে। পরের পর্ব তাড়াতাড়ি দিন।
তাজমহলের ক্ষনে ক্ষনে রঙ বদলানোরর কথা শুনেছি, লেখায় আপনার উপলব্ধি জানতে পারবো নিশ্চই?
ইঞ্জা
ধন্যবাদ ভাই, তাজমহল যে কত রহস্য লুকিয়ে রেখেছে তা জানলে অবাকই হতে হয়, আমি সৌভাগ্যবান সেই প্রেমের প্রতীক তাজমহলকে নিজ স্বচোক্ষে দেখে এসেছি, পরের পর্ব দিয়েছি পড়ে দেখুন। 😊
বন্যা লিপি
তাজমহল!! এমন এক স্থাপনা, যার সম্পর্কে জানার বা দেখার ইচ্ছা প্রতিটি মানুষের আছে। আর আপনি তা নিজ চোখে দেখে এসেছেন।
এ সৌভাগের ব্যাপার।ভ্রমন কাহিনী পড়তে দারুন ভালো লাগে। তাজমহলের রঙ বদলের ব্যাপারটা আসলেই জানা ছিলোনা। কি অদ্ভূদ সুন্দর না জানি দেখতে!! খুটিনাটি সব ব্যাপার গুলো নিয়ে এসে লিখুন ভাই। আপনার লেখার সাথে সাথে দেখব তাজমহল।
শুভ কামনা আপনার জন্য।
ইঞ্জা
সত্যই বলেছেন প্রিয় আপু, আমার সৌভাগ্য আমি সেই রহস্যঘন তাজমহল নিজ চোখে দেখেছি, এর আদ্যোপান্ত জেনেছি, এই জন্যই আমার এবারের আয়োজন, পরের পর্ব দিয়েছি আজ পড়ে দেখবেন প্লিজ।
রেজওয়ান
চালিয়ে যান ভাইজান!👍আপনার ভ্রমন কাহিনীগুলো পড়তে ভালই লাগে তবে ব্যক্তিগতভাবে তাজমহলের পেছনের কাহিনী মন ভেঙে দেয় বলে ইচ্ছা হয়নি দেখার। তবে তাহার ইচ্ছাতে হয় দেখতে, তাই বলেছিলাম প্রায় ৭ বছর আগে- সময় করে যাবোনে একদিন। সেই সময় এখনো হয়নি😂
ইঞ্জা
তোমাকে বলে রাখি, তাজমহল দেখাটা এক সৌভাগ্যের ব্যাপার, পারলে দেখে এসো কিন্তু গাইড ছাড়া তাজমহলকে দেখা মানেই সময় নষ্ট করা, সুতরাং একজন গাইডের সাহায্য নেবে। 😊
রেজওয়ান
জি ভাই সময় করে যাবো। প্রবাসী হওয়ার আগে দার্জিলিং ও কোলকাতার কিছু শহর ঘুরেছি! যাবো হয়তো এই বছরের শেষের দিকে বা সামনের বছর😎✌
ইঞ্জা
বলো ইনশা আল্লাহ। 😊
মনির হোসেন মমি
ভাল লাগল ভ্রমণ কাহিনী। চলবে যেহেতু তাই তাজঁ মহল সৃষ্টির রহস্য আর ভ্রমণে আন্দনের আড়ালে গড়ে উঠা তাজমহলের করুণ কাহিনী শুনব।
ইঞ্জা
অবশ্যই শুনে ক্ষণে অবাক হবেন, কখনো অভিভূত হবেন, পরের পর্ব দিয়েছি দ্রুত পড়া শুরু করুন। 😊
অশোকা মাহবুবা
আমি হলাম এক অস্থির মানবী, অপেক্ষা করতে বললেই মাথা নষ্ট হয়ে যায়। তবে তাজমহল ভ্রমণ পড়তে গিয়ে একটু অপেক্ষায় মনে হচ্ছে না কোনো কষ্ট হবে বরং আগ্রহ বাড়ছে। তাজমহল সম্পর্কে অনেক গল্প শুনেছি, আজ প্রথম জানলাম চাঁদের আলোয় তার রঙ বদলের কথা। দারুণ লাগল। আরো নতুন কিছু জানার অপেক্ষায়।
ইঞ্জা
আপু অপেক্ষা করতে হবেনা, পরের পর্ব দিয়েছি, দ্রুত পড়া শুরু করুন। 😊
ছাইরাছ হেলাল
এত দিতে পেলাম মনপছন্দ ভ্রমণ কাহিনী। যেতে পারিনি তাই আফসোস থেকেই যাবে।
আপনার বর্ণনায় যদি প্রাণ ভিজে যায়, সেই অপেক্ষায়।
ইঞ্জা
ভাইজান এ বড়ই মিস করলেন, এমন স্থাপত্য না দেখে বসে আছেন তা অতি দুঃখজনকই, কিন্তু বলে রাখি, আমার লেখাতে যতটুকু না তার রস আস্বাদন করবেন তার চেয়ে বেশি আনন্দ পাবেন নিজ চর্মচোখে দেখা। 😊
চাটিগাঁ থেকে বাহার
সুন্দর বর্ণনা! ভালো লেগেছে।
তাজ মহলের রং বদলটি কী মারবেল পাথরের কারণে?
ইঞ্জা
জ্বি ভাই, মার্বেল পাথরের কারণেই চেইঞ্জটা হয়। 😊
শাহরিন
ভাইয়া অনেকদিন ধরে লেখাটি পড়তে চাচ্ছিলাম। আজ থেকে শুরু করলাম।
ইঞ্জা
আলহামদুলিল্লাহ, খুব খুশি হলাম আপু।
কামাল উদ্দিন
তাজমহলকে এখনো দেখা হয়নি, আপনার সাথে থেকে দেখে নেই।
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা ভাই
কামাল উদ্দিন
আপনাকেও শুভেচ্ছা।
ইঞ্জা
😊😍