আমি যখন ছোট তখন, আমার নানাদের ও দাদুদের বড় বড় কাঠের নৌকা ছিল। এই নৌকাগুলো আসলে কাজে লাগত, দূরের জমির ধান বয়ে আনার জন্য। আমার দাদু ও নানা বাড়ি সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায়। ঐ দিকের বেশীর ভাগ এলাকাই নিচু। তবে সেসব জায়গাতে মানুষের তখন বসতি ছিল না। মানুষ জঙ্গল কেটে আবাদ শুরু করেছিল অনেক আগে থেকেই। এই বড় কাঠের নৌকা বর্তমানে ছোট খাট বার্জ এর সমান। এই নৌকাতে চার পাঁচজন মানুষের থাকার ব্যবস্থাও থাকত। থাকত রান্নার ব্যবস্থা। এই নৌকা শুধু বৌঠার সাহায্যেই চলত না। নৌকার দুইজন মাঝি থাকত। একজন বৈঠা ধরে নৌকার দিক ঠিক রাখত, অন্যজন নৌকার মাথায় বাঁধা বড় মোটা পাটের দড়ি ধরে টেনে টেনে হাঁটত। এই পাটের দড়ি বানাতেও দেখেছি আমি। কয়েকজন মিলে পাট পাকিয়ে এই মজবুত দড়ি বানাত। এই নৌকা টানার মাঝিদের গুণ টানা মাঝি বলে। আমার নানাদের দুইটা নৌকা ছিল এমন। একজন ছিল *কিয়াম মামা* আর একজন ছিল *ভাইটে*। যাই হোক এই নৌকা টেনে নেওয়া কম কষ্টের নয়। একদিন আলাদা করে কিয়াম মামার গল্প লিখব। আমার অত্যন্ত প্রিয় মামা। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নানা বাড়িতে থেকেছে। আমার সেই ছোটবেলায় ছুটে বেড়ানোর একমাত্র সহযোগী এই মামা। অনেক বড় হয়েও তাঁর ঘাড়ে চড়ছি। মামা আমার চলে গেছে অনেক দূরে। আমার ছোটবেলায় সব ভুল দুষ্টমি গুলো নানির ভয়ে সে তাঁর দিকেই নিত। আমাকে বাঁচাত। কখনো কোনো খেলায় হারতে দিত না। গাছের প্রথম কাটার টাটকা খেজুর গাছের রস, পরিষ্কার ঠিলেতে করে আনত। ও হ্যাঁ, ঠিলে মানে, মাটির যে পাতিলটা গাছে বাঁধা হয়। আমি দেখেছি মামার ঘাড়ে ঐ কালসিটে দাগ।
একবার আমার মামাত বোনের বিয়েতে নানা বাড়িতে ডাকাত পড়েছিল। এটা ১৯৯৬ এর কথা। আমি তখন ক্লাস টেনে। তো বাড়ি ভর্তি মেহমান। এটা রামপাল থানা এলাকায় চাঁনপুর গ্রাম। আমার মায়ের এই একটাই ভাই। তো তার একমাত্র মেয়ের বিয়েতে বাড়ি ভর্তি অনেক আত্নীয় স্বজন। আমার বড় আপা তখন সাত মাস বাবু পেটে। আর বড় আপা নানির বংশে প্রথম মেয়ে। ওর আল্লাদও বেশী সবার কাছে। আর ও খুব লক্ষ্মী পক্ষি টাইপ। আর আমি গেছো ভুত, যতো নালিশ সবার আমার বিরুদ্ধে।
যাইহোক, রাতের বেলা কেন জানি মামি সবার গয়নাগাটি খুলে নিয়ে একটা মাটির মটকিতে রেখে দিল। আমরা আবার সব ভাইবোনেরা নানি বাড়িতে বড় একটা ঘরো লাইন দিয়ে শুই। এই ভিড়েও তার ব্যতিক্রম হল না। তো কিছু রাত পর গুঞ্জন শুরু হয়েছে কি যেন। একজন এসে খবর দিল, আমার মামার অতি সুন্দরী মেয়েকে পাশের সরকার বাড়ির ছেলে খুলনা থেকে লোক এনে তুলে নিবে। আমার মা ছিল খুব সাহসিনী, তিনি ঐ রাতেই আমার দাদা বাড়ি খবর দিলেন। বলে রাখি, আমার দাদার বাড়ির লোকেরা আবার খুব শান্ত না, রাগ তাদের মুখের থেকে হাতে থাকে।
আমার কিয়াম মামা, আমাকে ও আমার আর এক বোনকে ঐ রাতে আর নানা বাড়িতে রাখার সাহস রাখলেন না। তিনি আমাদের দুজনকে বাড়ির পিছন দিক থেকে, যেখানে পারিবারিক কবরস্থান, ঐদিক থেকে নিয়ে যেতে লাগলেন। আমি ব্যপার গুলো হঠাৎ বুঝে উঠতে পারছিলাম না, ঘুমের মধ্যে থেকে উঠেই কি কেউ হাঁটতে পারে ! ব্যস ধপাস করে একটা ভাঙ্গা কবরে পড়ে গেলাম। আমি তো কবরে পড়ে মুখের ভাষাই ভুলে গেছি। আ আ আ করে চিল্লাব, সেই শব্দও গলা থেকে বের হচ্ছিল না। মামা হঠাৎ পিছন ফিরে দেখে আমি নেই। মামা ফিরে এসে খুঁজে দেখে কবরের মধ্যে আমি। তাড়া তাড়ি দোয়া পড়তে লাগল, কোলে তুলে নিল এই মটু টাকে। মামার তখন বয়স হইছে, মামা ভেবেছে সেই ছোটই আছি আমি,হাঁপাতে লাগল। তারপর তিনজনে দৌড়াতে লাগলাম। ঐ রাতে মামির বাপের বাড়ির পাশে এক বাড়িতে ছিলাম। মামা আমাদের রেখেই আবার ছুটল। এসে দেখে ডাকাত দল ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছে বাড়িতে। মামা খুঁজছিল বড় আপা কোথায়। ডাকাতরা মেরে মামার চোখের নিচে ফাটিয়ে দিয়েছিল। সেলাই দিতে হয়েছিল পরে। কিন্তু ততক্ষনে রক্ত পড়েছিল অনেক। ওরা বড় আপার সাত মাসের পেটের উপর বড় একটা দা রেখে, মামাতো বোনকে চাচ্ছিল। আমার সাহসিনী মা বললেন,” আমি জানি তোমরা কারা, আদাঘাট খবর দেওয়া হইছে, কেউ বাঁচবানা নে। ছেড়ে দাও ঐ বাড়ির মেয়েকে”। ওরা আমার বড় আপাকে ছেড়ে দিছিল ঠিকই, কিন্তু বড় আপা ভয় পেয়ে দশ দিনের মাথায় মিম্মিকে উপহার দিল।
যাই হোক, ঐ রাতে ওরা কিয়াম মামা ও আমার নানাকে ধরে নিয়ে গেল। নানা আমার সেই যে অসুস্থ হল আর সুস্থ হল না। চলে গেল। কিয়াম মামা তারও অনেক পরে গেল।
কিয়াম মামাকে নিয়ে অনেক গল্প। অল্পতে শেষ হবে না। ঝিনুক দিয়ে চুন বানাত মামা, নানির সাথে। আমি মামার সাথে পানির ভিতর থেকে ঝিনুক শামুক আনতাম। না আর লিখব না।
এই গুণ টানা নিয়ে কিছু শব্দ সাজাব,,,,,,, জানি শব্দ আমার অসাড়, বসে না ঠিকমতো, তবু মামা তোমার জন্য,।
*গুণ টানা মাঝি, নৌকার দিশা দিতে টেনে গেছে তার নাও।
মাঝির ঘাড়ের ঐ যে কালসিটে কালো দাগ, আজও ইতিহাসের স্বাক্ষী।
নির্বাক যন্ত্রের মতো এগিয়ে গেছে সে,
খাড়া ঐ বিস্তৃত নদীর কিনার দিয়ে।
ঝড় আসে, বৃষ্টি আসে, মেঘ গর্জায় জোরেশোরে,
তবু তাঁর এ হাঁটা থামে না।
ভরা পূর্ণিমার চাঁদের সাথে হাঁটে সে,
নিশীথ রাতে চাঁদ বিহীন ঘোর অন্ধকারে,
নদীর পানির ছলাৎ শব্দ ও তাকে বলে দেয় এই পথে চলতে।
আকাশের ঐ তারার দল ও পিছু নেয় তাঁর
হিসেব রাখে মাঝির শরীর থেকে খসে পড়া, হাজার ফোটা পানির
তারার দল কাৎরায় তাকে দেখে
সূর্যের ঐ তপ্ত, আগুন ঝরা রোদে ও হেঁটে চলে সে
এ নৌকা ভিড়াতে হবে তরীর ঘাটে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
মামা তুমি যেখানেই থাক ভাল থাকো। আজ তোমার এই দুষ্টু বুড়ি দেখ বড় হয়েছে, মা হয়েছে।
৩৯টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
সত্যি সত্যি গ্রাম্য আদি অকৃত্রিম সম্পর্কগুলো এমনি ছিল, যা আজ বিরল,
আপনার এই মামা যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন,
মৌনতা রিতু
আমার নিজের মামার কাছ থেকে এত আদর স্নেহ পাইনি, যতোটা কিয়াম মামার কাছ থেকে পাইছি।
সকালে নাস্তা থাকত তাদের জন্য গরম জাউ, নারকেল ও খেজুর গুড়। আমরা শহরে থাকতাম, তাই আমাদের জন্য মামি, ডিম ভাজি ভাত করত। কিন্তু আমি মামার সাথে ঐ জাউ খেতাম। যখন বড় হলাম, কিছুটা সব গুটিয়ে গেল, তখন নানাবাড়ি যাওয়ার সময় হাতে একটা বই থাকত। মামা হয়ত অনেক কিছু বুঝতেন আমার অনুভূতি, বাড়ির একপাশে ছিল জোড়া পুকুর, পুকুরে মাছ ধরার জন্য নৌকা থাকত। আমি নৌকাতে যেতাম বই পড়তে। মামা তাই নৌকায় ছই লাগায়ে দিছিল। শরীরে মামার কিছু ছিল না, লম্বা ঠ্যাংঠ্যাং করত। বয়সের ভারে শরীর ভেঙেছিল, কিন্তু মনের জোর ছিল অনেক। নানা অসুস্থ থকাতে তখন প্রায়ই নানাবাড়ি গিয়ে থাকতে হত। মা খুব ভালবাসতেন তার বাবাকে। আসলে সেইসব দিন ও মানুষগুলো আর ফিরে আসবে না।
এতো স্নেহ, এতো মায়া দেখানোর মানুষের বড় অভাব আজ।
ভাল থাকুন, কবি।
মোঃ মজিবর রহমান
মানুষের সকল জীবন ধারন টিকে আছে গ্রাম গঞ্জে।
ওখন তাও লোপ পাচ্ছে আপু।
মৌনতা রিতু
মানুষের গায়ে আজ মাটির গন্ধ নেই, তাই সে হয়ত এতো রুক্ষ হয়ে গেছে। সত্যি, সেই অকৃতিম ভালবাসাগুলো হয়ত আর পাব না।
ভালথাকুন ভাই।
ইলিয়াস মাসুদ
ামার নানা বাড়ি পদ্মার পাড়,আর দাদা বাড়ি গরাই এর পাড়, নদী আমার রন্ধ্যে রন্ধ্যে মশে আছে, আপনার লেখা পড়ে চোখের উপড় গুন টেনে যেতে দেখলাম সেই সব মামাদের
খুব আবেগ দিয়ে লিখেছেন লেখাটা টা, পড়তে পড়তে বার বার খেই হারাচ্ছিল , শুধুই মনে হয়েছে এই সব আমার জানা দৃশ্য, রাম্পাল গিয়েছিলাম ৯৮ সালে, দুই দিন ছিলাম, কি যে মজা করছিলাম বলে বুঝানো যাবে না, বৃষ্টির দিন, মোটর সাইকেল কাঁদাতে ডুবে গেল, বন্ধুরা মিলে সেই রাতে সেই গ্রামেই থেকে গেলাম, গ্রামের মানুষ গুলো কি যে ভাল তার বর্ননা নেই
মৌনতা রিতু
রামপাল কোথায় গেছিলেন ? মানে কোন গ্রামে ? আমার নানা বাড়ি ফয়লা গ্রামে। হুমম, ওখানে অনেক কাঁদা ছিল।
পেড়িখালি গেছিলেন ?
যাইহোক, আমার গ্রামের প্রশংসা শুনে খুব ভাল লাগছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এবার দেশে আসলে আবারো দাওয়াত রইল। 🙂
ইলিয়াস মাসুদ
বহুদিন আগের কথা,আমি আর আমার বন্ধু মিল্লু ঠিক করেছিলাম ইন্টার এর পরে মোটর সাইকেলে বাংলাদেশ ঘুরবো, ঘুরেও ছিলাম,রাম্পালে আমার একবন্ধু ছিল ওদের ওখানে ছিলাম ৩ দিন সেই তিন দিন
রাজনগর,পেড়িখালি,ভোজপাতিয়া,মল্লিকেরবের আরো কিছু জায়গা ঘুরেছিলাম ঠিক নাম মনে পরছে না,তখন বর্ষার সময় ছিল কি যে কাদা বাব্বা,জীবনেও ভুল্বো না,তবে অসাধারন সেই সব গ্রাম,আমার সেই ডাইরী টা কাছে নাই, থাকলে তখন লিখা কিছু দিতে পারতাম।
দাওয়াত মঞ্জুর, তবে সেটা বুড়ো কাল হয়ে যাবে,বুড়োকাল ছাড়া বোধ হয় আর দেশেই যেতে পারবো না!
মনে পরেছে গৌরাস্তা ও ঊজলকুর ও গিয়েছি হাহাহাহ
মৌনতা রিতু
গৌরস্তা না ভাই, গৌরম্বা।
এসব যায়গা আমার আত্নীয়স্বজন ভরা।
চলে আসুন দেশে, ঘুরে যান একবার।
মিষ্টি জিন
ছোটবেলা আমি ও আমাদের গ্রামে গুনটানা নৌকা দেখেছি।
এসব এখন হারিয়ে গিয়েছে।আমি গ্রামে যাইনা ২৫ বছরের উপরে।
মা তো দেখি অনেক সাহসী , ডাকাতদের ভয় দেখিয়ে দিয়েছেন।
মামার জন্য অনেক দোয়া।
ভাল লাগার পোষ্ট
মৌনতা রিতু
হুমম, অনেক সাহসী। তিনি তার চাচার মতো হইছে। নানা আমার মাটির মানুষ। একোরেই ভীতু।
আমি কখনোই শহরে থাকতে চাইতাম না।
সুযোগ পেলেই বাড়ি যেতাম। সবাই খুবই ভালবাসত।
তাই তো বুড় বয়সে গ্রামেই থাকব।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
মাঝ পথে থেমে গেলেন।মামার বাড়ীর গল্প মজাই আলাদা।এ সব প্রিয় লোকগুলো যে যেখানেই থাকুক ভাল থাকুক এই কামনা।আপনি যে দুষ্টু ছিলেন তা বুঝাই যাচ্ছে নতুবা কবরে পড়ে কেউ জিন্দা থাকতে পারে। -{@
মৌনতা রিতু
আর বলেন না, সেই কবর ছিল বৃষ্টির পানিতে ভরা। আমি জীবনে ভুলব না সেই দিনের স্মৃতি।
কিয়াম মামার গল্প লিখব একদিন।
আসলে মামা বাড়ির মজাই আলাদা।
ভাল থাকবেন ভাই।
লীলাবতী
যত দিন যাচ্ছে আপনার লেখার ধার বৃদ্ধি পাচ্ছে আপু। স্মৃতিকথা মুলক লেখায়ও তো আপনি মেধার পরিচয় দিচ্ছেন। কিয়াম মামা ভাল থাকুক।
মৌনতা রিতু
আগে বলুন, খালাম্মা কেমন আছে ?
অনেকদিন পর দেখা দিলেন। কারনটা খালাম্মার জন্য তাই মাফ করে দিলাম।
আমার এই কিয়াম মামাটার ভালবাসার ঋন শোধ হবে না।
একদিন আমার আর মামার দুষ্টমিগুলো লিখব।
ভাল থেকো, কাঁকন কন্যা।
লীলাবতী
আম্মা বর্তমানে ভাল আছেন। নিয়মিত দেখবেন আপু, আমি আবার কাঁকন কন্যা হলাম! 🙂 (3 কিয়াম মামার কথা লেখুন। এমন মানুষ আজকাল বিরল। অপেক্ষায় থাকলাম আপু।
শুন্য শুন্যালয়
৯৬ এ তুমি ক্লাস টেনে পড়তা ভাবীজান? তুমিতো আমারো পিচ্চি :p
কবরের মধ্যে হুমড়ি খেয়ে পড়ে শুধু কথা বন্ধ হইছিলো, আমি হইলে তো অইখানেই কাইত হইতাম। আহারে কিয়াম মামার ঘাড়ের জন্য মায়া লাগতেছে, তোমার ওজন কতো ছিলো?
গুন টানা নিয়ে আমার এক ভয়ংকর আর মজার অভিজ্ঞতা আছে, তোমার লেখা পড়ে মনে পড়লো। লেখায় সহজ স্বাভাবিকতা এ সবাইকে দিয়ে হয়না, আমার ভাবীজান কে দিয়ে সম্ভব। খুব ভালো হয়েছে লেখা রিতু আপু।
ঝিনুক, শামুক তুলবার সেই গল্প শুনতে চাইইইইইইইইই।
মৌনতা রিতু
৯৭ তে পাস করছিলাম। তয় সোনা, মুই ছোট না, সম্পর্কে কিন্তু ভাবী। তাই সাবধান। নখ ও বড়। চুল কাটছি। ওজন ছিল বেশ।
ঝিনুক ও শামুক নিয়ে লিখেছি। এর পরে দিব।
আমার ননদের আবদার বলে কথা !
তোমার সেই মজার অভিজ্ঞতার কথা লিখে ফেল। হ্যাঁ, নওগাঁ আত্রাই নদীতেও এই নৌকা ছিল। আমার দাদা শশুর বাড়ি চাপড়া গ্রামে। আত্রাই নদীর কাছেই।
ভালবাসা নিও।
শুন্য শুন্যালয়
ছোট? না না আপনি আমার ভাবীজান, আর ভাবী হইলো মায়ের সমান। (3
এমন নখের ভয় দেখাইলে তো আরো ডর লাগে। আর চুলও কাইটা ফালাইছেন, তাইলে লড়মু ক্যাম্নে?
ছোটবেলার এই স্মৃতিকথার চাইতে কোন লেখাই আসলে ফোটেনা যেন, এতে যে থাকে প্রাণ।
আত্রাই গিয়েছিলাম একবার খুব ছোটবেলায়, তার স্মৃতিটুকু মনে আছে যা, তা হলো রাতে আমি ঘুমে খাটের উপর থেকে পড়ে গিয়েছিলাম আর একটা কাঠমল্লিকার গাছ ছিলো, যাতে সারাদিন চড়ে বসে থাকতাম। 🙂
ঝিনুক আর শামুক এর জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাবীজান।
মৌনতা রিতু
তুমি তো দেখি আমার রিয়ানের মতো ! ও খুব পড়ে খাট থেকে। একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখি ছেলে আমার খাটে নেই। দিলাম এক চিৎকার। তোমার ভাই দেখে, খাটে থেকে পড়ে, কোলবালিশের উপরেই ঘুমাচ্ছে।
এখনো মশারি নিয়ে পড়ে।
হুম, ঝিনুকের লেখাটা শেষ হইছে। দু একদিনেই দিব।
ক্রিস্টাল শামীম
আমিও দেখেছি ওই নৌকা, মামা বাড়ির গল্প অনেক ভালোলাগে। আপনার লেখায় শুভেচ্ছা রেখে গেলাম।
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ ভাই। শুভকামনা জানবেন।
ইঞ্জা
আপু আজ সত্যিকারের গল্প শুনলাম মনে হচ্ছে যা বেশ ভয়ানক ও হৃদয়গ্রাহীও। মামার জন্য আল্লাহ্র কাছে দোয়া রইল।
মৌনতা রিতু
গ্রামের এই গল্পগুলো সত্যিই হৃদয়েরই অংশ।
ভাল থাকুন ভাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
কিয়াম মামাকে দেখতে ইচ্ছে করছে। এমন ভালো মানুষরা কেন যে জীবন থেকে হারিয়ে যায়!
ভালো থাকুন কিয়াম মামা।
ওহ কবরের গল্প শুনতে চাই।
মৌনতা আমি তুমি ১৯৯৬ সালে ক্লাশ টেনে!!! 😮
এ তো দেখি বাচ্চা একটা মেয়ে। 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
**মৌনতা আপু**
মৌনতা রিতু
৯৬ তে টেনে মানে পরীক্ষা দিব। ৯৭ এর ব্যাচ।
শোন, তয় মুই বাচ্চা মেয়ে না। আমার বিয়ে হয় ৯৮ তে। সে এক অন্য কাহিনী। দুই কাহিনী লিখুমনে একদিন।
ফেসবুকে সেদিন আমার এক সিনিয়ার দাদা যেই শুনেছে আমি ওনার বৌ এর ক্লাসমেট, দাদা সেই থেকে সাবধানতা অবলম্বন করে।
মুই কিন্তু বাচ্চা না। ;(
নীলাঞ্জনা নীলা
বাচ্চা মাইয়া আবার কয় বাচ্চা না। নাক টিপলে এখনও দুধ বাইর হয়।
ওই মাইয়া শোনো আজ থাইকা আমি তোমার স্বঘোষিত অভিভাবক কিন্তু। :p
মৌনতা রিতু
তোমাকে তো অভিভাবক সেই কবেই আমি বানাইছি। তুমি আজই টের পাইছো!
মুই বাচ্চা মাইয়া না। ;( ;( ;(
ব্লগার সজীব
স্মৃতি কথায় রিতু আপুকে দেখা যাচ্ছে। কবর তাহলে দেখে এসেছেন আপু? ভয়ানক অভিজ্ঞতা। মামার আত্মা শান্তি পাক। ভাল লিখেছেন প্রিয় আপু।
মৌনতা রিতু
সত্যি, সেই ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা জীবনেও ভুলিনি। তখন কেন যেন কোনো অনুভূতিই কাজ করছিল না।
হ্যাঁ, মামা আমার ভাল থাকুক।
লেখা কৈ?
ব্লগার সজীব
লেখা চলে আসবে যে কোন সময় 🙂
প্রহেলিকা
কবিতাটি পড়ার সাথে সাথে দৃশ্যকল্পগুলো অনায়াসে চোখে উঠে আসছিল। মামাকে দেয়া উপহার যেন পৌঁছে যায়, মামা মিশে থাক কবিতার চরণে চরণে।
মৌনতা রিতু
প্রচন্ড কষ্ট ছিল গুণ টানা। সেই তুলনায় তারা মুজুরি পেত পেটে ভাতে।
ভাবা যায় ! তবু তাদের কোনো ক্ষোভ ছিল না।
কতো সুখি ছিল তারা। আর আমরা কিছুতেই তুষ্ট নই।
ভাল থাকুন ভাই।
প্রহেলিকা
সময়ের সাথে সাথে ভাল থাকুন আপনিও। শুভকামনা সতত।
মৌনতা রিতু
শুভকামনা রইল।
অপার্থিব
এ তো দেখি ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, কপাল ভাল এই জাতীয় অভিজ্ঞতায় কখনো পড়তে হয়নি। ছোটবেলায় শরৎচন্দ্রের নুতুন দা গল্পে গুণটানার ব্যাপারটা পড়েছিলাম কিন্তু নৌকা সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা না থাকায় বুঝিনি। আজকে বুঝলাম। ধন্যবাদ অভিজ্ঞতা শেয়ারের জন্য।
মৌনতা রিতু
হুম, একদম ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালথাকবেন।
সকাল স্বপ্ন
লিখায় ভালো লাগা মনের চোখে জল আসছে—-
শেষের লাইন টা পুরো লিখাকে সেই ভালো লাগা ছুঁয়ে দিলো—–
মামা তুমি যেখানেই থাক ভাল থাকো। আজ তোমার এই দুষ্টু বুড়ি দেখ বড় হয়েছে, মা হয়েছে।
___________
ভালো থাকুক আপনার মন —- ভালো থাকুক সেই মামা—-
মৌনতা রিতু
অনেক ধন্যবাদ । সেই অকৃতিম ভালবাসাগুলো আর পাব না।
কিন্তু কিছুই হয়ত করতে পারিনি তাদের জন্য।
ভাল থাকুন।