
১_
নিমচাঁদ ও সানাই একে অপরকে ভালোবেসেছিলো খুব দ্রুত। যত দ্রুততায় ঘড়ির কাটা না ঘুরে, যত দ্রুততায় বুনো ঘোড়া না ছোটে, তারচেয়েও অধিক দ্রুততম দ্রুততায় প্রেম হয়েছিলো তাদের মাঝে। কত কথা, কত গান, কত ছবি এঁকেছিলো পথে-প্রান্তরে..সময়ের বাঁকে বাঁকে।
– সানাই, তোমাকে কেন এত ভালোবাসি জানো?
– নাহ! জানিনাতো কেন?
– তোমার মাঝে একটা সরলতা আছে। ঐ সরলতা আমাকে তোমায় অকৃত্রিম ভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে। এই জন্যে ভালোবাসি
– তাই? কিন্তু আমি তোমাকে বুঝতে পারিনা। যখনই বুঝতে পেরেছি বলে মনে হয়, তখনই তোমার কোনো না কোনো বদলে যাওয়া রূপ দেখতে পাই।
– সহজ ভাবে ভাবলেই আমাকে বুঝতে পারবে। কই আমিতো তোমাকে ঠিকই বুঝে ফেলেছি। কোনো সমস্যাই হয়নি।
– আমি হলাম এক পাতায় লেখা অল্প সংখ্যার ছোট কবিতা। তাই আমাকে বুঝতে তোমার কষ্ট হয়নি। কিন্তু তুমি! হাজার পাতায় লেখা এক মহাকাব্য। শত পড়লেও পুরোটা বোঝা যায়না। শেষ পৃষ্ঠায় গিয়ে আবার প্রথম পাতায় ফিরতে হয়।
২_
একদিন দুজনের হঠাৎ অকারণ মনোমালিন্য! সানাই নিমচাঁদ কে বুঝতে পারছেনা। নিমচাঁদ অভিমান ভরা মনে সানাই কে চিঠি দিলো..
সানাই..
তুমি কি জানো কতটুকু ভালোবাসি তোমাকে? জানতে চাইলে আমাদের একান্তে কাটানো সময়গুলোর কথা ভেবে দেখো। তোমাকে বলা সমস্ত কথাগুলো মনের কানে বারবার শোনো। এতো বোঝাই তবুও বুঝো না? অনেক ভালোবাসি।
তুমি যদি কখনো আমাকে ছেড়ে যেতে চাও, তাহলে চলে যেও। বাঁধা দিবো না। আমি তোমার হাত কখনো ছাড়বো না। তবে তুমি যদি নিজের ইচ্ছেয় আমার সাথে ব্রেকআপ করো, তাহলে চাইলেই ফিরিতে পারবে না। আমার শর্ত মেনে ফিরতে হবে।
শর্তটা বেশ সোজা। হিল্লা প্রেম করতে হবে তোমাকে। হিল্লা প্রেমটা হলো হিল্লা বিয়ের মতো। হাজব্যান্ড ওয়াইফ যখন একে অন্যকে তালাক দেয়ার পর আবার একত্রিত হতে চায়, তখন ওয়াইফ কে অন্য এক লোকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়। পরে ২য় হাজব্যান্ড তালাক দেয়ার পর প্রথম হাজব্যান্ডকে পুনরায় বিয়ে করাকে হিল্লা বিয়ে বলে। আমাদের মাঝেও আমি ঐ নিয়ম চালু করলাম। তুমি যদি আমাকে একবার ছেড়া যাও তাহলে আমার কাছে ফেরার আগে তোমায় অন্যকারো সাথে প্রেম করে, ব্রেকআপ নিয়ে তারপর ফিরতে হবে।
ইতি
নিমচাঁদ
৩_
সানাই এই চিঠি পড়ে হাসবে না কাঁদবে বুঝে উঠতে পারছে না। এটাও কি সম্ভব! এমন শর্ত দিয়ে প্রেম হয়? এরপর থেকে নিমচাঁদ ধীরে ধীরে আরও অচেনা হয়ে যেতে লাগলো। সানাই আগে তাকে যাওবা বুঝতো এখন একেবারেই হতাশা জনক ভাবে ব্যর্থ! কারণ নিমচাঁদের কথায় আর কাজে সে কোনো মিল খুঁজে পায় না।
তারপর, একদিন সকল কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিমচাঁদ সানাইয়ের জীবন থেকে বিদায় নিলো। প্রেম যেমন দ্রুততায় হয়েছিলো, ব্রেকআপ টা অবশ্য অত দ্রুততায় হয়নি। সানাইটা বড্ডো সরল ছিলো। পরিচ্ছন্ন পানিতে জীবাণু খুঁজে দেখার মতো একজোড়া চোখ তার কোনো কালেই ছিলো না। সে তার সরল চোখজোড়া দিয়ে নিমচাঁদের খুব সহজে চলে যাওয়া দেখতে লাগলো…
৪_
নিমচাঁদ আজ ভীষন আনন্দিত। সে তার অপরাজিতার কাছে ফিরে যাচ্ছে। একদিন ছোট ভুল বোঝাবুঝির কারণে অপরাজিতার সাথে খুব ঝগড়া হয়েছিলো। তারপর কতবার তার কাছে ক্ষমা চেয়েছে। কিন্তু ওর কোনো কথাই শুনেনি অপরাজিতা। শর্ত দিয়েছে, তার কাছে ফিরতে হলে আগে অন্যকোনো মেয়ের সাথে রিলেশন করতে হবে। অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে সেই রিলেশন চালিয়ে যেতে হবে। এরপর যদি সেই মেয়ে স্বেচ্ছায় ব্রেকআপ নেয়, তাহলেই নিমচাঁদ অপরাজিতার কাছে ফিরতে পারবে।
আজ শর্ত পালন শেষ। সানাইয়ের উপর ব্রেকআপ এর অপবাদটা দারুন ভাবে চাপানো গেছে। মেয়েটা একদম বোরিং ছিলো। খুব কষ্ট হয়েছে ওর সাথে এতদিন মিথ্যে প্রেমের অভিনয় করতে। মনে মনে সানাইয়ের ধৈর্যের প্রশংসা করতে ভুলে না। আর হ্যা, অনেক সরল ছিলো। তাইতো ওর সাথে রিলেশনে জড়াতে সাহস পেয়েছে। সততার প্রশংসাও না করলেই নয়। ওর সাথে যত কিছুই করেছে কখনো কারো কাছে মুখ খুলবে না। বিশ্বাস করা যায়।
৫_
সানাই এতদিনে তার নামটা নিয়ে খুশি হয়েছে। মানুষ সানাই বাজায় আনন্দের সময়, খুশির সময়। যদিও সানাইয়ের সুর তখন অত্যন্ত করুণ শোনায়। তাতে কী? কজনই করুণ সুরে কানপাতে! আজ সানাই নিমচাঁদ নামক কাব্যগ্রন্থটা বুঝে নিয়েছে। বুঝেছে, সব কিছু পড়তে হয়না। কিছু বুঝ-বোধ সময়ের সাথেই আসে।
★ সানাই ফিরে যেতে পারেনা। যে সুর আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে যায়, তাকে কেমন করে স্বরতন্ত্রীতে ফেরত নেবে? কিছু জানেনা। সানাইটা খুব সরল, বড্ডো বোকা…
২৭টি মন্তব্য
নাজমুল হুদা
এক পরিকল্পনাতীত প্রেমিকের কাছে অবশেষে হেরে গেলো সানাই, হারে নাই সানাইয়ের করুণ সুর। পরিকল্পনাহীন সানাই, আর পরিকল্পনায় সিদ্ধ নিমচাঁদের বুঝার অধ্যায়টা আগে থেকেই শেষ পৃষ্ঠায় চলে গিয়েছিলো । সানাই শুধু বুঝতে না পারা পৃষ্ঠাটির সুর তুলতে পারে নাই সানাইয়ের সুরে।
”মুতাহ প্রেম” শব্দটি ভালো লেগেছে যদিও তার প্রভাবে গল্পে ইতিবাচক ভূমিকায় ছিলো না।
আপু,, গল্পটি অসাধারণ কারুকার্যে নির্মিত। এটাই লেখকের শৈল্পিক গুণ ।
শুভ কামনা সব সময় 😍
সাবিনা ইয়াসমিন
সানাইরা হারেনা। হেরে যায় তাদের সরলতা। এক সময় তারা কঠিন মোড়কের অন্তরালে চলে যায়। সুর তো সুরই হয়। কঠিন খোলসের ভেতর থেকে করুন সুর এলো কিনা তা শুনে দেখার সময় আনন্দিত শ্রোতার থাকেনা।
অনেক ধন্যবাদ নাজমুল। ভালো থেকো, শুভ কামনা 🌹🌹
শাহরিন
মানুষের মন বোঝা বড় দায়। একজনকে ভালোবেসে না পেয়ে অন্য জনকে মন দেয়া স্বাভাবিক। কিন্তু ধোকা মেনে নেয়া যায় না। অনেক সুন্দর গল্প আর নায়ক একটি হারামজাদা।
সাবিনা ইয়াসমিন
ধোকা আসলেই মেনে নেয়ার নয়। যারা ধোকা মেনে নেয় তারা মুলত ভণ্ডামি করে। নিজেকে নিজের সাথে প্রতারিত করার মতো।
নিমচাঁদ কিন্তু যা করেছে নিজের জন্যেই করেছে। নিজের ভালোবাসা ফিরে পেতে এতটুকু কস্ট করাই যায়। কথায় বলে যুদ্ধে আর প্রেমে সব কিছু বৈধ। তাই সানাইয়ের মন ভাঙা তার কাছে কোনো ব্যপার মনে হয়নি।
শুভ কামনা, ভালোবাসা ❤❤
প্রদীপ চক্রবর্তী
ভালোবাসায় রাগ,অভিমান,ভুল বোঝাবুঝি থাকবে কিন্তু কাউকে ধোকা দেওয়া ঠিক না।
সানাই নিমচাদের ভালোবাসা থেকে হেরেছে ঠিক কিন্তু সানাই করুণ স্মৃতিতে আমরণ সেই এই স্মৃতি থেকে হারে নি।
কেউ ধোকা দেওয়ার জন্য ভালোবাসে আবার কেউ ধোকা খেয়েও ভালোবাসে। তাই ভালোবাসার কখনো কখনো এমনি হয়!
.
গল্পটি অনবদ্যভাবে নির্মিত দিদি।
যেখানে হস্তছোঁয়া শৈল্পিক গুণ দ্বারা লেখনী।
সাবিনা ইয়াসমিন
” কেউ ধোকা দেওয়ার জন্য ভালোবাসে আবার কেউ ধোকা খেয়েও ভালোবাসে। তাই ভালোবাসার কখনো কখনো এমনি হয়! ”
অসাধারণ একটি উক্তি করলে প্রদীপ। এরপর আসলে কিছুই বলার থাকেনা। প্রেম-ভালোবাসার মুলমন্ত্র হয়তো এটাই।
অনেক ভালো থাকো। শুভ কামনা অবিরত 🌹🌹
.
ছাইরাছ হেলাল
যাক আপনার লেখা পড়ে-টড়ে প্রেম-ট্রেম সম্পর্কে হাল্কা ধারণা করতে পারছি!
প্রেমের গতি রকেটকেও হার মানিয়ে চলে। ঐ যেমন চোখের পলক ফেলতে দেরি প্রেমে পড়তে দেরি নেই।
অবুঝ মন শুধুই প্রেম বোঝে, হিল্লা হলেও।
তবে এটা ঠিক, হিল্লা প্রেম চালু হলে প্রেমিকের বাজার খুবই রমরমা হবে।
কী আর করা প্রেমের ও প্রেম থাকে, এটাই সমস্যা!!
সাবিনা ইয়াসমিন
প্রেমেরও প্রেম থাকে বৈকি! আবার প্রেম অবুঝ /সবুজ যেমনই হোক প্রথম প্রথম সবটাই বোঝা যায়। কি আর করা ! প্রেমের হাটে প্রচলিত মুদ্রা সব সময়েই অচল। হিল্লাতে যদি জেল্লা ফিরে আসে তাহলে প্রেম বাজারের রমরমা ভাব টিউব লাইটের মতোই ফকফকা।
জিসান শা ইকরাম
চমৎকার বর্ননায় গল্পে সানাই এর সরলতা, করুন গাথা ফুটিয়ে তুলেছেন। আপনি অবশ্যই সফল একজন গল্পকার।
এত ঝড়ের বেগের প্রেম ভালো নয়, যা আপনার লেখায় ফুটে উঠেছে।
নিমচাঁদ এমন সহজ, সরল , অকৃত্রিম সানাইয়ের ভালোবাসা ত্যাগ করে অন্যকারো কাছে ফিরে গেলে চরম ভুল করবে। এমন বেঈমান নিমচাঁদ সানাইর জীবন থেকে চলে যাওয়ায় সানাই রাহুমুক্ত হয়েছে।
* গল্পে একটি বড় ধরনের ত্রুটি আছে। হিল্লা বিয়ে কেবল মাত্র মেয়েদের অর্থাৎ স্ত্রীদের উপর বর্তায়, পুরুষ বা স্বামীর জন্য এটি প্রযোজ্য নয়। কিন্তু গল্পে এটি উলটে গিয়েছে।
আরো গল্প চাই,
শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
হয়তো নিমচাঁদরা এমন হয় বলেই সানাইদের ভুল হয়। অথবা নিমচাঁদরা আসেই সানাইদের সরলতার মোহে। মোহ কেটে গেলে নিমচাঁদের ফিরে যাওয়া আবশ্যক হয়ে পড়ে।
* যেহেতু এটা প্রেম-বিরহের গল্প তাই এখানে উলটা নিয়মই প্রযোজ্য। প্রেম জিনিসটাইতো উলটা। এখানে সঠিক নিয়মের দরকার কি?
জিসান শা ইকরাম
হিল্লা বিয়ে নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছে ছিল অনেক আগে। ভুলে গিয়েছিলাম।
আপনার গল্প পড়ে মনে এলো আবার।
সাবিনা ইয়াসমিন
লিখুন।
রেহানা বীথি
কিছু বোধ-বুঝ সময়ের সাথেই আসে…. চমৎকার কথা।
গল্পটিও চমৎকার, একছুটে পড়ে ফেলার মতো।
ভালো থাকবেন, ভালোবাসা দিলাম।
সাবিনা ইয়াসমিন
অনেক ধন্যবাদ বিথী আপু। ভালো থাকুন সারাক্ষন। ভালোবাসা ❤❤
রাফি আরাফাত
অনেকদিন পর আসলাম। কিন্তু আসে অনেক ভালো লাগছে। গল্পটা মন কেরেছে আপু। সময়ের সাথে আমাদের অনেক কিছুই হারিয়ে যায়, আবার অনেক কিছু শিখে নিতে হয়। অসাধারণ ছিলো আপু। ধন্যবাদ
রাফি আরাফাত
আপু আমি কিন্তু আগে থেকে বলে রেখেছি, আপনি আমার লেখা বই বা যে কোন একটা গল্পের নাম দিবেন। হুম🖤
সাবিনা ইয়াসমিন
তুমি খুব ভালো লেখো,, এই কথাটি কি এখনো বলিনি!! মনে হয় বলিনি তাই এমন বলছো। তবে গল্পের নাম দিব। একদিন হঠাৎ করে দেখবে তোমার কোন এক গল্পের নাম বদলে দেয়া হয়েছে। সেদিন কিন্তু মন খারাপ করা চলবেনা। 😊😏
রাফি আরাফাত
অপেক্ষায় থাকলাম। যদিও অপেক্ষা করা আমার খুবই পছন্দের।
ধন্যবাদ আপু
সাবিনা ইয়াসমিন
অনেক কিছু সময়ের সাথে সাথেই শেখা হয়। সময় আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক।
ধন্যবাদ রাফি। শুভ কামনা 🌹🌹
শিরিন হক
এক দৌড়ে পড়লাম। আপনার লেখায় মন্তব্যের প্রয়োজন পড়রেনা। পাঠকের মন মনেমনে বলে উনি তো ভালোই লেখেন। আরো লেখা পড়তে চাই ওনার।
শুভকামনা আপু।
সাবিনা ইয়াসমিন
অনেক ধন্যবাদ শিরিন। ভালো থাকবেন। শুভ কামনা 🌹🌹
তৌহিদ
নিমাইয়ের মধ্যে এত্ত প্যাজগি? কিছু মানুষ আসলে ভালোবাসার মুল্য দিতে জানেনা। সহজেই যে জিনিস পায় তার গুরুত্ব জীবনে কমে যায়। অথচ আমাদের মনে রাখা উচিত, যাকে ছেড়ে অন্যজনের কাছে যাচ্ছি সেও আমাকে ছেড়ে অন্যের কাছে চলে যেতে পারে।
শিক্ষামূলক লেখা গল্পের জন্য ধন্যবাদ আপনার প্রাপ্য আপু।
সাবিনা ইয়াসমিন
সহজে পাওয়া জিনিসের কদর কেউ করেনা। বিনিময় হীন বস্তুর মুল্য কে দেয়!!
ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই। শুভ কামনা 🌹🌹
ইঞ্জা
নিমচাঁদ ফিরে গেলো অপরাজিতার কাছেঃ টাস্কিত হলাম আপু, এ কেমন শর্ত ছিলো অপরাজিতার?
অপর দিকে সানাই, সত্যিই কি বোকা ছিলো?
না না না, সানাই সরল ছিলো কিন্তু বোকা সে ছিলোনা।
অসাধারণ গল্পগাথা লিখে গেলেন আপু, বিমুগ্ধতার আবেশে রয়ে গেলাম। ☺
সাবিনা ইয়াসমিন
সানাই সরল ছিলো, কিন্তু বোকা ছিলো না। ঠিক ধরেছেন ভাইজান। তাইতো সে নিমচাঁদের চলে যাওয়া বুঝতে পেরেও বাধা দেয়নি। জোর করে ভালোবাসা হয়না। জোর দিয়ে কারো মনে প্রবেশ করা যায়না।
শুভ কামনা ভাইজান। ভালো থাকবেন সব সময়। 🌹🌹
ইঞ্জা
সুন্দর বললেন আপু, ধন্যবাদ।
খুরশীদা খুশী
সুন্দর গল্প,ভালো লেগেছে।