
কার হাড়িতে ভাত বসালেন?
সাধারণ মানুষ নাকি ব্যবসায়ীদের?? দিনমজুরের তো একটা পথ আছে… সবদিক বন্ধ হলেও হাত পেতে চাইতে পারবে। আমাদের মতো মধ্যবিত্তের মুখে ভাত তুলতে তো পরের গোলামী করতে হয়।
হঠাৎ বেসরকারি শিল্পকারখানার মালিকদের বলে দিলেন, তারা যেনো কর্মচারীদের ৬০% বেতন পরিশোধ করে। তারচেয়ে এটা বলে দিতে পারতেন, মধ্যবিত্ত মানুষ এখন থেকে একবেলা ভাত, একবেলা সেদ্ধ আলু আর একবেলা না-খেয়ে থাকবে! বিষয়টি তো পক্ষান্তরে এমনি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের এমনিতেই নুন আনতে পানতা ফুরায়…..সেখান থেকে নুনটুকু রেখে পানতা কেড়ে নিলেন!
বয়ষ্ক লোকেরা নাহয় চোখ বুঝে সয়ে নেবে….কিন্তু এদের ঘরেও তো ছোট ছোট বাচ্চা আছে….তারা এই রাজনীতির কতোটুই বা বুঝবে অথবা কেনই বা বুঝতে যাবে?
সামনে ঈদুল ফিতর, এই বিষয়টিও তো একটু বিবেচনা করা যেতো!
জানি কলের চাকা বন্ধ মানে উৎপাদনও বন্ধ… মালিকপক্ষের মাথায় হাত। বেতন কেটে কিছুটা স্বস্তির বাণী মালিকপক্ষের জন্যে। এর বিকল্প কি কিছুই ছিলো না?
সঙ্কটকালীন সময়ে অন্তত ট্যাক্স মৌকুফ করা যেতো। ছোট শিল্পকারখানাগুলো নাহয় পথে বসবে কিন্তু বড় বড় প্রতিষ্ঠানে আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষদের বেতনের কিছু অংশ কেটে নিলেই কি সব সমস্যার সমাধান হবে?
বাড়ি ভাড়া, গ্যাস বিল,বিদ্যুৎ বিল, ডিস বিল দেবার পর কত থাকবে মধ্যবিত্তের হাতে সে কথা কি একবারো ভেবেছেন?
বাপের তালুক কজনের আছে, আমার জানা নেই!
তবে মাসের শেষ হিমসিম খায় অধিকাংশ পরিবার…. এটাই বাস্তবতা।
তাহলে কার স্বার্থ দেখলেন…. জনগণ নাকি প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের? একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একজন শ্রমিকের মাথা পিছু যে বেতন, তার বহু গুন ব্যবসা করে এক একটি প্রতিষ্ঠান। সেদিক থেকে দুমাস প্রতিষ্ঠান অচল থাকলেও একজন কর্মচারীর পূর্ণ বেতন দিতে অই প্রতিষ্ঠান সক্ষম।
এ দুঃসময়ে অনেক মধ্যবিত্ত চাকুরী হারাচ্ছে, সেদিকেও একটু নজর দিন। সবাই তো এদেশেরই নাগরিক….. আর নগরিকগনই নাকি দেশের প্রকৃত মালিক!!
যদি মধ্যবিত্ত সমাজ থেকে বিলুপ্ত হয়, তার চড়া মূল্য দিতে হবে আগামীতে। এখনো সময় আছে সকলের কথা ভাবুন, নাহলে মানবিক বিপর্যয় আসবে, অর্থনীতির চাকা অচল হবে, দেশের মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে…..যা কারো কাম্য হতে পারে না।
১৩টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
অভাব আমাদের তাড়া করছে, আমরা কেউ-ই জানি না সামনে দিন গুলো
কী করে পার হবে।
শিরিন হক
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে অনেকের
ফয়জুল মহী
সব কথা অতি সহজ সরল উপস্থাপন ।
শিরিন হক
ধন্যবাদ
তৌহিদ
না জানি সামনে আরো কি দিন অপেক্ষা করছে!! সবাই ভালো থাকুন
শিরিন হক
ভালো থাকুন
ত্রিস্তান
ভয়ঙ্কর খারাপ সময় আসছে, সময়োপযোগী লেখা।
শিরিন হক
ধন্যবাদ
কামাল উদ্দিন
গত কালকে আমার এক কাছের মানুষ অন্য এক জনের জন্য কিছু সাহায্য চেয়েছিলেন। আমি বললাম এমন ঘোরতর সংকট হবে জানলে সংকটের প্রথম দিকে যেটুকু দান করেছিলাম তা করতাম না, আর ঐ টাকাগুলো আমার কাছে থেকে গেলে এখন আমি উপকৃত হতাম। সামনের দিন গুলো কতোটা বিপদ জনক হবে এখনো তা ঠিক মতো বুঝে উঠতে পারছি না।
হালিম নজরুল
সময়ের চেয়ে সঠিক জবাব কেউ দিতে পারে না। দেখা যাক আমাদের জন্য কি অপেক্ষায় আছে।
আরজু মুক্তা
আপু সত্য বলেছেন। কি যে ভয়াবহ অবস্থা!
শামীম চৌধুরী
আপা,মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়াটাই আমাদের অভিশাপ। না পাড়ি হাত উপুড় করতে না পাড়ি হাত পেতে দিতে। নীরবে নিভৃতে সব কিছু সখিনাদের মতন মুখে আচলের কাপড় গুজে যে চাপা কান্নাটা হয় সেটাও কেউ দেখতে পায় না। আমরা শুধু নিজের পকেটের টাকায় সাবান কিনে হাত ধুয়েই গেলাম।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপু সহমত পোষণ করছি। এমন কঠিন সময় আসলো। মধ্যবিত্তরা আগেও মরেছে এখন তো আরো মরবে। কি-যে হবে ! ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন