মোবাইলের এলার্ম ৩ বার বন্ধ করে বিভোরে ঘুমাতেই লাগলাম, শয়তান পেয়ে বসেছে বলে নামাজটাও আজ গেল। কানের কাছে ওঠো নামক বিরক্তিকর শব্দটি এমনভাবে বাঁজছে যে রাগে ২ টো বালিশ একসাথে কানের উপর দিয়ে এক হাত বালিশের নিচে অন্যহাত বালিশের উপরে দিয়ে স্বপ্নে ভাসতে লাগলাম।
আমি প্রচন্ড কল্পনাবিলাসী মানুষ,দিনরাত ২৪ ঘন্টার মধ্যে শুধুমাত্র কলেজে ক্লাস নেয়ার সময়টা বাদ দিয়ে বাকি যত ঘন্টা হাতে থাকে জেগে থাকলে অবিশ্বাস্য অদ্ভুত কল্পনা করতেই থাকি বুঝি যে দূর!ছাই, এইসব কি ভাবছি কিন্তু কে শোনে কার কথা ! সেকেন্ডেই আবার শুরু হয় কল্পনা করা। আর যখন ঘুমাই তখন তো স্বপ্ন দেখতেই থাকি, এমনও হয় যে স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল তারপর আবার ঘুমালাম আবার শেষ থেকে শুরু হয় আমার স্বপ্ন দেখা। অথচ এই আমি ছিলাম কতটা বাস্তববাদী,কতটা নিজের সম্পর্কে সচেতন ! মাঝে মাঝে মনে হয় নিজে বেশি সচেতন ছিলাম বলেই হয়ত এখন হয়ে গেছি একেবারে অচেতন, অজ্ঞান। খুব বেশি রাগ হয় আব্বুর উপর কেন? তার কিছু গুন জ্বিনগতভাবে আমার ভিতর ঢুকিয়ে দিতেই হবে। আরে বাবা!!দুনিয়াটা আর আগের মত নেই এইটা যদি আব্বু বুঝত তবে হয়ত আমিও মানুষ চিনতাম।
জন্মের পর থেকে যখন থেকে বুঝি তখন থেকে দেখি বাবার মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা,নিজের সব দিয়ে হলেও তার অন্য কে ভালোবাসতেই হবে। এলাকার সবাই এই গুনের বহুত প্রশংসা করে কিন্তু কিসের কি? স্বার্থ শেষ, ভালোবাসাও জানালা দিয়ে ফুরুৎ করে উধাও। তারপরও সব ভুলে আবার ভালোবাসতে থাকে বাপধন আমার!
আর তার এইসব ফালতু মার্কা দোষ জ্বিনগতভাবে আমার ভিতর এমনভাবে গেঁথে গেছে যে আমার ও মানুষকে ভালোবাসতে হবে! এত দেখে আসছি বাবাকে বুঝায় আসছি অথচ আমিও বার বার একই ভুল করি। রাগে ফোঁপাতে ফোপাঁতে আব্বুকে বললাম আমি আর পারছি না প্লিজ তোমার জ্বিনগুলো নিয়ে যাও তুমি। এইসব জ্বিন -ফিন বিরক্তিকর! আমি না পারি নিঃশ্বাস নিতে, না পারি ঘুমাতে! না পারি চিৎকার করে কাঁদতে।
আব্বুর উত্তর ঃ মা শোন বি কন্ট্রোল, জীবনে কত কিছু হয়, সব মানুষ কি আর একরকম হয় বলো ! তারা অন্যায় করলেও তাদেরকে ভালোবাসো দেখবা শান্তি পাবা।
আমিঃ ও মোর আল্লাহ! কি বলো এইসব মানুষ কষ্ট দিবে, অপমান করবে আমার অন্যায় নেই তবুও মেনে নিবো সব?
আব্বুঃ হুম, ধৈর্য্য ধরলে ফল ভালো হয়, আর যারা অন্যায় করে তাদের বিচার করার অধিকার তোমার নেই তুমি যদি সব করো,আল্লাহ তো দেখছেন তিনি বুঝবে কোনটা ন্যায়, কোনটা অন্যায়। ক্ষমা করে দিলে দেখবা শান্তি!
আমিঃ রাগে চুপ হয়ে গেলাম, তবে মুখে যত লেকচারই দেই না কেন,তার জ্বিনগত বৈশিষ্ট্য আমার শরীরে প্রখরভাবে লেগে আছে তাই না চাইলেও ক্ষমা আমিও সবসময় করি, সবার সব মুখ বুঝে মেনে নেই আর খাই বার বার ধাক্কা তবুও শিক্ষা হয় না😭।
আমার মা আর ভাই আমাদের তুলনায় ব্যতিক্রম বিধায় তারা হয়ত আমার আর বাবার এইসব কথায় চরম বিরক্ত তাই তারা ভালোবাসাবাসির দুনিয়ায়ই কম থাকে তাদের জীবন কাজ, খাওয়া জীবনে আরও ভালো কিছু করা, কারো কথায় পাত্তা না দেয়া, সফল হওয়ার চেষ্টা, হয়ত তারাই আসলে বাস্তববাদী।
যাইহোক কি করার ! জীবন আসলে কারো নিয়ন্ত্রনেই থাকে না, জীবন চলে জীবনের নিয়মে, তাই না চাইলেও আমাদের জীবনে অনেক কিছু ঘটে যেটার জন্য আমরা আগে থেকে প্রিপ্রেয়ার্ড থাকি না। তাই অবলীলায় অনাকাক্ষিত ঘটনা ঘটে যায় আমাদের জীবনে। ঠিক তখনই আমরা মেনে নিতে না পেরে কেউ সুইসাইড এটেম্ট করি কেউ স্ট্রোক করি,কেউ চরম ডিপ্রেশনে ভুগি,অনেক ভুলভাল কাজ করি,নানা রোগের বাসা শরীরে বাঁধাই আরও কত কি! কেননা পরিস্থিতি কন্ট্রোল করতে পারি না, নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি বলেই হাঁতড়াতে থাকি এদিক সেদিক সবদিক।
আমার মনে হয় আমরা প্রত্যেকেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে একবার হলেও যাই আর হয়ে পড়ি দিশেহারা শুধুমাত্র মানুষ ভেদে পরিস্থিতির ধরন আলাদা হয় তবে ঘুরে ফিরে সেই বটতলা ছ্যাকার আগুনে পুড়ে যাওয়ার অস্বাভাবিক যন্ত্রনাটা ঠিক একইরকম থাকে কেউ প্রকাশ করে, কেউ করে না। যদি এই যন্ত্রনা থেকে উঠতে পারলাম তো ভালো আর না উঠতে পারলে কেল্লা ফতে🤣।
সেরকমই একটি পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম কিছুদিন আগে। কি করব বুঝে ওঠার আগেই আব্বুর কথা, মা তোর শরীফা আন্টির সাথে কথা বল।
শরীফা আন্টি আমার ফুপি তিনি একজন সাইক্রিয়াট্টিক। কথায় আছে নাই কিছুতেই ডাক্তার! আমাদেরও সেইম অবস্থা, একটু জ্বর মুনা আপু ডাঃ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ , হার ক্ষয়জাতীয় এখনো হারের কিছুই হয়ই নি তার আগেই হাজির ডাঃসুবর্ণ ভাইয়া (অর্থোপ্যাডিক্স),কিডনী প্রব্লেম ডাঃ তুহিন মামা, ( কিডনী স্পেশালিস্ট এন্ড সার্জারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ ), ডায়াবেটিস, ফুপা ডাঃ এনামুল হক,চাইল্ড রিলেটেড প্রব্লেম দাদা চাইল্ড স্পেশালিষ্ট সুদূর লন্ডনে কল দিতে হবে, দাঁতে সমস্যা ডেন্টিস্ট ডাঃ সুচি ফুপি, ক্যান্সার স্পেশালিষ্ট মামী ডাঃ রোদেলা, সার্জারী ডাঃ আলমগীর মামা, এতকিছুর পরে যখন মনে হয় না হোমিও দেখাই তখন ফুপা ডাঃ শাহিন বাসার উফফফ!! বাঁচা গেল ডাঃ দের লিস্ট এবার শেষ, আর বাকি যদি অন্য কোন ডাঃ এর প্রয়োজন হয় তাহারাও হয় দাদার স্টুডেন্ট না হয় আব্বুর স্টুডেন্ট। মাঝে মাঝে মনে হয় পরিবারটা ডাঃ, ইঞ্জিনিয়ার, আর মাষ্টারে ভর্তি। তবে এতে সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি। কিছু হোক আর নাহোক যেতে হবে তাদের কাছে,অল্পতেই লস্কর অবস্থা।
আমার ক্ষেত্রেও তাই হলো, আব্বু সাথে করে সাইক্রিয়াট্রিক ডাঃ শরীফা আন্টির কাছে নিয়ে যাবে আমি লংকা কান্ড বাঁধিয়ে তুললাম আমি তার কাছে যাবো না। আব্বু নিয়ে যাবেই রাগে দুঃখে বললাম যেতে যদি হয় তবে অন্য ডাঃ এর কাছে যাবো। অগত্যা বাবা বিরক্ত হয়ে নিয়ে গেল সাইক্রিয়াট্টিক ডাঃ জোতিস্ময় চন্দ্রের কাছে।
তিনি দেখেই, রেজওয়ানা তুমি এত বড় হয়ে গেছো! মনে মনে বললাম জ্বি আমি এখন লেকচারার, কিন্তু মুখে কিছুই বলতে পারলাম না শুধু একটা আর্টিফিসিয়ালি হাসি দিলাম। আব্বু বাইরে গেলে ডাঃ আর আমার কথোপোকথন চলল প্রায় ৪৫ মিনিট,তবুও সব কিছু বলতে পারলাম না ডাক্তারকে। বরাবরই খুব চাপা স্বভাবের আমি। আমার আত্নীয়রা বলে দুঃখ পোষা নাকি আমার! স্বভাব কাউকে কিছু বুঝতে দেই না কখনো,ভাঙ্গবো তবুও মচকাবো না, তবে তাহারা এক্ষেত্রে সত্যি বলে। পুরনো স্বভাব থেকে ডাক্তার দাদুকে সব বলতে পারলাম না
যাইহোক তিনি খানিক আমার দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বহুত ঔষধ দিয়ে আবার ১ মাস পর যেতে বললেন, আরও বললেন আমরা সবাই ৯৯% মানুষ মানসিক রোগী,নো টেনশন সব ঠিক হয়ে যাবে।বুঝলাম না আমাকে কি মানসিক রোগী বলল!🙄সে যাই বলুক,বের হয়ে বাবা একগাদা টাকা দিয়ে ঔষধ কিনে বাসা পাঠায় দিলো,দু একটা ঔষধের নাম বলি, পারকেলিন,সিজোপিন,মিরতাজ সহ হাবিজাবি। শুরু করলাম ঔষধ খাওয়া, প্রথমদিনের সকালে উঠে রিয়্যাকশন মনে হচ্ছে শূন্যে হাঁটছি, এক পা দিচ্ছি আরেক পা এমনি এগিয়ে যাচ্ছে,ভিতরে কি অনুভূতি কিছুই বুঝতেছি না শুধু নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছি, বিছানায় সারাদিন কুপোকাত! কিভাবে দিনটি গেল কিচ্ছু টের পেলাম না, প্রিন্সিপাল স্যারকে কল দিয়ে ছুটি নিলাম। সারাদিনরাত ঘুম খাওয়া আমার জীবন হয়ে গেল,আর কোন চিন্তা,দুঃখ কষ্ট, ভালোবাসা, কিচ্ছু ভড় করছে না শুধু নেশার মত কি যেন টানছে আমায় শূন্যে।মনে হচ্ছে নেশার রাজ্যে আমার বসবাস।
কিন্তু এভাবে ছুটি নিয়ে কতদিন ! ৭ দিন গেলে কলেজ যাওয়া স্টার্ট করলাম। এতদুর রাস্তা শূন্যে ওড়ার মত করেই যাওয়া শুরু করলাম,নিজের জায়গায় সাইন করার বদলে অন্যের জায়গায় সাইন করা শুরু করলাম,এরপর একের পর এক ভুলের অঘটন শুরু হতে লাগল,তারিখ না দেখে আগাম সাইন করে আসতে থাকলাম। টের ও পেলাম না আমি ভুল করছি একের পর এক,, রাস্তায় চেনা মানুষ দেখলে কথা বলতে চাইতাম কিন্তু মুখ দিয়ে বলতে পারতাম না, সকাল হলে বুঝতাম রাত এসে গেছে ঘুমাই এখন,বিকেলে মনে হত সকাল হয়েছে খেয়ে নেই, দিন্ রাত তফাৎ বুঝতাম না,অনেক কিছু বলতে চাইতাম ভিতরে কে যেন শব্দগুলোকে আটকাতো, রুমের ভিতর লাইটের আলোয় নিজেকে অচেনা মনে হত ! নিজের নামটা মনে করতে অনেক্ষন চিন্তা করতে হত,বাইরে উল্টো করে জামা পড়ে যেতাম ! মোবাইলের চার্জার ওভেনে রেখে দিতাম,রুকু আপুর সাথে ঘুরতে যেতাম ও যা বলত সব এত মনোযোগ দিয়ে শুনতাম অথচ মনে হত কিচ্ছু শুনতাম না ! কাপড় ভিজিয়ে রাখতাম এক সপ্তাহ আগে আজাদের চিৎকারে টের পেতাম ! রান্নায় লবনের জায়গায় চিনি দিতাম ! কোনদিন ঝাল বেশি কোনদিন তরকারি পুঁড়ে ছাই !ফ্রিজ থেকে মাংস বের করে ভিজায় রান্নার সময় দেখি সেটা মাছ, বেঁচারা আজাদ এইসব দেখে রান্নার দায়িত্ব নিজেই নিলো,ডিম ভাজি, গরুর মাংস আর আলু ভর্তা প্রতিদিন তার একই রেসিপি। এইসব ঘটনা রুকু আপুকে বললাম আপু ঔষধের রিয়াকশনে আমার সাথে এমন ঘটনা ঘটছে, আপু শুনে বলল খেতে থাক প্রথম কিছুদিন এরকম হবে পরে ঠিক এডযাস্ট হয়ে যাবে শরীরের সাথে । ঔষধ খেতে খেতে শরীরে এমনভাবে এডযাস্ট হয়ে গেল যে এরপর আরও অনেক অঘটন ঘটাতেই থাকলাম যেগুলো আরেকদিন বলব।
এবার আসি কানে বালিশ দিয়ে ঘুমানোর সেই ঐতিহাসিক সকালের মুহূর্তে। খুব সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম আজ। আহ কি শান্তি!!হঠাৎ দুচোখে পানি পড়ায় বুঝতে পারলাম আজাদ গ্লাসের পানি আমার চোখে ফেলেছে তাৎক্ষনিক বুঝলাম ও গড ১২ঃ৫০ এ ক্লাস।
তড়িঘড়ি করে এক চিলতে পরিমান পাউরুটি আর জেলী খেয়ে কলেজের দিকে দিলাম দৌড়। রাস্তায় বাসে উঠার পর মনে হল টিফিন ছেড়ে গেছি! আচ্ছা হোক কি আর করার! কানে হেডফোন গুজে গান শুনতে শুনতে পৌছে গেলাম ভুরুঙ্গামারী। বাস থামায় সব তারাহুরো করে ব্যাগে ভরে নেমে পড়লাম,বাসে ফেলে গেলাম আমার স্বাধের হেডফোন আর আমার প্রিয় ছাতা । এরপর ক্লাস শেষ করে দৌড়ে অটো ধরে টিকেট কেটে বাসে উঠে আরামে ক্ষুধার জ্বালায় স্টুডেন্টের দেয়া পেয়ারায় কাঁমড় দিয়ে ব্যাগে হাত দিলাম ফোন বের করব! ও আল্লাহ! ফোন কই!! ধুর কি হচ্ছে আমার সাথে এইসব! নেমে কয়েকজনের নাম্বার থেকে কল দিলাম,কিন্তু কল বেঁজেই যাচ্ছে কেউ ধরছে না। নিজের প্রতি রাগ লাগছে কি করব না ভেবেই বুবুর বাসায় গেলাম। বুবুর নাম্বার থেকে প্রায় সব কলিগ কে কল দিলাম যারা কলেজে আছে ভেবেছিলাম কিন্তু কেউ নেই তখন। কথায় বলে প্রয়োজনে কাউকেই পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে শেষ ভরসা জালাল ভাইকে কল দিলাম বেঁচারা জালাল ভাই বাসা থেকে কলেজ গিয়েও ফোন খুঁজে পেল না। হঠাৎ মনে হল চক ডাস্টার রাখার ড্রয়ারে দেখতে বলি! কি অদ্ভুত আমি সেইজায়গায় ফোন রেখেছিলাম যেখানে কেউ খুব প্রয়োজন ছাড়া হাত ই দেয় না। বেঁচারা জালাল ভাই হয়রান হয়ে ফোন পেয়ে এক্স স্টুডেন্টের দ্বারা ফোনটি পাঠিয়ে দিল। (এখানে একটা কথা না বললেই নয় বুবু খুব খশি প্রতিদিন ওর বাসায় যেতে বলে আমি অজুহাত দিয়ে যাই না আর আজ বাধ্য হয়ে আমি গেলাম এবার বুবু আমাকে সেইরকম ধুয়ে দিলো। )
যাইহোক বিসমিল্লাহ হোটেলে বুবু আর এক্স স্টুডেন্ট দের খাওয়ানোর পর তাদের বিদায় দিয়ে ব্যাগ থেকে পার্স বের করতেই দেখি পার্স নাই😭😭😭ততক্ষনে বুবুর ফোন তার বাসায় পার্স ফেলে আসছি। স্টাচু অব লিবার্টি হয়ে গেলাম। বিসমিল্লায় বিল দেয়ার বদলে আরও ১০০ টাকা নিয়ে বাসে করে সেইরকম বাজে পরিস্থিতেও ক্লান্ত,পরিশ্রান্ত এই আমি আবারও অকল্পনীয় বিষয় কল্পনা করতে করতে অবশেষে বিকেল ৫ঃ৫০ ফিরলাম কুড়িগ্রাম। বাসায় এসে পারকেলিন খেয়ে দিলাম এক চোট ঘুম।
এই হল কল্পনাপ্রবন এখনকার আমি আর আমার এই দুরাবস্থা 😭😭😭এতকিছুর পরেও যা জীবনে ঘটবেই না সেইসব নিয়ে এখনো স্বপ্ন দেখি,ভালোবাসি,কল্পনা করি।
প্রয়োজনীয় কাজ,ঘুম, স্বপ্ন দেখা, আর কল্পনা করা নিয়েই চলছে আমার আজকালকার নিত্যদিনের ছন্নছাড়া জীবনের গতি ,যাকে আমি বলি কিনা দ্যাট ইজ রিয়ালিটি।
তাই এখন খনার বচন শুনে প্রতিদিন ঘুমাতে যাই,
“আছি ভালো যাচে দিন,( ভালো আছি যাচ্ছে দিন)
চিন্তায় চিন্তায় ধরে না নিন”।(চিন্তায় চিন্তায় ধরছে না ঘুম)
তবুও আমি স্বপ্ন দেখি, কল্পনা করি আর এভাবেই স্বপ্ন-কল্পনার হাত ধরে নেশাপ্রবন হয়ে হেঁটে যাই দুর-বহুদুর।।।।
বিঃ দ্রঃ নেক্সট মাসে আবার যাবো ডাক্তারের কাছে😃। আমার এই লেখাটি রম্যে দেয়ার একটাই কারন নিজের কাজে বিরক্ত হলেও আনমনে হেসে উঠি,আর কারো হাসি পাবে কিনা জানি না তবে আমার হাসি পায় তাই ভাবি কি অদ্ভুত আমি!!!!
ছবিঃ নিজের ।
১৩টি মন্তব্য
রোকসানা খন্দকার রুকু
আচ্ছা, একসময় আমি তাকায় ছিলাম। আপনি ভাবতেন মনোযোগ দিয়ে শুনছি। তাই তার শোধ নিলেন। আমি লেকচার শেষ করে ভাবি বিরাট কাম করে ফালাইছি।
কোনদিন যে শুনবো ছাত্রদের সাথে ইমাজিনে চলে গিয়ে ফ্যাশান শো করছেন???😀😀
খুব তারাতারী সব কাটিয়ে উঠুন ম্যাডাম। ইদানিং শিক্ষকদের অসময় চলছে। এসব আউলা ঝাউলামী ঠিক না। অনেকগুলো সজীব প্রাণের দায়িত্ব আপনার উপর। তবে আমার বিরাট সম্দেহ আপনার নিজের যে হাল, মেয়েদেরও এভাবেই গৃহব্যবস্থাপনা শেখাচ্ছেন কিনা কে জানে!
শুভ কামনা।।।
রেজওয়ানা কবির
আবার মাথা আউলায় গেছে কমেন্ট করলাম এখানে চলে গেল একদম নীচে, যাক কষ্ট করে নিচের কমেন্ট টা পড়ে নিও।ওটা তোমাকেই লিখেছি আপু।
হালিম নজরুল
একসময় আমি স্বপ্ন দেখতাম খুব। স্বপ্নের মধ্যে দেখতাম আমি কাউকে বলছি, জানিস আজ না আমি একটা স্বপ্ন দেখেছি। স্বপ্নে দেখি তোকে নিয়ে যে স্বপ্নটা এতদিন দেখে এসেছি, সেটা আজ বাস্তব হয়েছে। তুওতো শুনে হাসতে হাসতে খুন।
রেজওয়ানা কবির
স্বপ্ন দেখা ভালো ভাইয়া, অন্তত নিজের স্বপ্ন নিজেরই কেউ কেড়ে নিতে পারে না। শুভকামনা।
নার্গিস রশিদ
ভালো লাগলো । শুভ কামনা।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ আপু, শুভকামনা সবসময়।
আলমগীর সরকার লিটন
রম্যকথাগুলো বড় হয়েছে তবু কিছু কিছু জায়গায় ভাল লেগেছে আপু ভাল থাকবেন——
হালিমা আক্তার
আমিও খুব স্বপ্ন দেখি। ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্ন গুলো ভুলে যাই। জেগে দেখা স্বপ্ন গুলো বাঁচার প্রেরনা যোগায়। ভালো লাগলো। শুভ কামনা।
রেজওয়ানা কবির
স্বপ্ন আছে বলেই আমরা বেঁচে আছি। এইসবই আমাদের প্রেরনা আপু।ধন্যবাদ আর শুভকামনা সবসময় আপু।
রেজওয়ানা কবির
ধন্যবাদ ভাইয়া, তবে রম্য লেখার তো ছোট বড় কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই যে এতগুলো শব্দেই লিখতে হবে! একেকজন একেকভাবে লেখে আর কি!আমারও তাই অবস্থা দুই পর্বে চাইলেই লিখতে পারতাম! তবে একেবারে শেষ করেছি বিধায় আপনার কাছে হয়ত বড় লেগেছে। ভালো থাকবেন।
মনির হোসেন মমি
এমনটি হয়।বাসা থেকে বের হলে শত চেস্টাতেও মনে করতে পারি না রেখে গেলাম।বাস্তব যখন সামনে আসে তখন মনে পড়ে।আমার মনে আছে এক পরীক্ষায় স্কুলের নামের বানাটিও ভুলে গিয়েছিলাম মনে আসছিলো না পরে এসেছিলো একজনের কাছে শুনে যাই হোক এটাকে রম্য বলা যায় তবে জীবনঘনিষ্ট।
হেসেছি এই ভেবে যে আপনি – মনভোলা।এটার কোন ঔষধ নাই।
রেজওয়ানা কবির
আপনার ঘটনা জেনেও ভালো লাগল মমি ভাই। যাক এই লেখার বদলে তো আপনার কিছু স্মৃতি মনে পড়ল তাও কম কিসে??? আমি মাঝে মাঝে এমন মন ভোলা হয়ে পড়ি। শুভকামনা, ধন্যবাদ।
রেজওয়ানা কবির
হা হা হা🥰🥰🥰যা বলেছো আপু ঠিক আমি না চাইলেও প্রকৃতি শোধ নিয়ে নিলো। হুম এই অসময়ে আর কোন অঘটন ইমাজিনেশনে যেতে চাই না। ভালো থাকো সবসময়, শুভকামনা, ❤️