আমার একটি বাসা আছে,যে বাসায় আছে ভালোবাসা পুর্ন একটি মজুদালয়।গোডাউন বা ষ্টোর রুম ও বলা যায় একে।মজুদালয়ে পরিপুর্ন আমার একান্ত নির্ভরযোগ্য অফুরান ভালোবাসা।ইচ্ছেমত ভালোবাসা নেই আমি সেখান থেকে।কিভাবে কোথা থেকে এই ভালোবাসা অফুরান হল তা না হয় না বলি।কেমন ভালোবাসা আছে সেখানে এ প্রশ্ন না করে,প্রশ্ন করা যেতে পারে-কি নেই সেখানে? মন পছন্দ রঙের বাহারি ভালোবাসা থেকে শুরু করে রঙ হীন সাদা ভালোবাসাও আছে সেখানে।ইচ্ছেকে যদি কোন পাত্র হিসেবে কল্পনা করা যায়,আমি যখন যে মাপ,আকারের পাত্র নিয়ে যাই ভালোবাসা নিতে,একদম সঠিক মাপ এবং আকারেই পাই। এই কক্ষটির নাম দিয়েছি আমি ‘ অফুরান নির্ভরতা ভালোবাসা কক্ষ’।
শয়ন কক্ষের ড্রেসিং টেবিলের উপরের ড্রয়ারে একটি চেক বই রাখা আমার।যার পৃষ্ঠা কখনো শেষ হয়না। ব্যংকে আমার একটি চলতি হিসেব আছে।যে ব্যংকের একমাত্র গ্রাহক আমি। আমার ভালোবাসা ব্যাংকের মালিক।যখন ইচ্ছে চেক বইতে রংধনু রঙয়ের কালি দিয়ে স্বাক্ষর দিয়ে ভালোবাসা তুলে নিয়ে আসি আমি।কিভাবে যে এত ভালোবাসা আমার একাউন্টে জমা হয় আমি জানি না। ব্যাংকের নামকরণ করেছি ‘ভালোবাসা ব্যংক।’
শয়ন কক্ষের লাগোয়া আমার দখিনা প্রশস্ত বারান্দা।এটি একান্তই আমার।অন্য কারো প্রবেশ নিষেধ। এখানে বসে বা দাঁড়িয়ে আমি কথা বলি আমার পাখির সাথে।জীবনের প্রথম ভয় পাওয়া স্মৃতি’একটি বিশালাকৃতির মোরগের কক কক করে মাথার উপর থেকে উড়ে যাওয়া অথবা প্রথম ভালো লাগার স্মৃতি’ শারমিন এর হাতে মিছেমিছি রান্না করা ভাত,মাছ খাওয়া’……সব কিছুই বলি পাখিকে।এক জীবনে এত স্মৃতি এত মানুষ থাকে সবার! এর কতটা জানে অন্য মানুষ? পাখির সাথে হ্যান-ত্যান,নান্ডি-ফাস্টি আলাপের এই বারান্দার নাম দিয়েছি আমি…… আমার একান্ত ভালোবাসা বারান্দা।
একটি বাসায় ড্রইং রুম থাকবেনা এটি হয়? আমারো আছে একটি অত্যন্ত গুছানো ড্রইং রুম।আছে একটি শো-কেচ। যখন যা ভালোলাগে এমন সব কিছু দিয়ে সাজানো শো-কেচ।কিউট কিউট ভল্লুক, কুকুর, মেয়ে,ছেলের পুতুল এ বোঝাই।চোখ মুখ যেন জীবন্ত।হাটা চলার মাঝে চোখের ইশারা করি,পুতুল গুলো খুসি হয়,হাসে চোখ দিয়ে সারাও দেয় 🙂 একটি তোতা পাখিও ছিল।যা বলি,সেও তাই বলে। আই লাভ ইউ বললে,সাথে সাথে সেও বলে আই লাভ ইউ। ‘ তুমি আমার জীবনের স্বপ্ন ‘ গান গাই, সেও একই গান গায়।কত্ত আনন্দ।তবে একদিন ধমক দিয়েছি তাকে,দেখি সেও ধমক দেয়।মেজাজ মুজাজ খারাপ করে ব্যাটারী রেখেছি খুলে। এখন নির্বাক সে।
পছন্দের শো-পিচ এখন শো-কেচ বোঝাই।নতুন কোন শো-পিচ আনলেই পুড়ানো সবচেয়ে কম পছন্দের একটি বাদ দিতে হয়।আচ্ছা এতে কি শো-পিচের মন খারাপ হয়?মন খারাপ হলে অবশ্য আমার কিছু করার নেই।তবে চোখের সামনে থাকায়,এবং নিত্যদিন ধুলো পরিস্কার করে ঝকঝকে রাখায় কিছুটা মায়াও এসে যায় এদের প্রতি। শো-কেচের নাম দিয়েছি আমি ‘ভালো লাগার শো-কেচ’। শো-কেচের বাসিন্দারা এটিকে ভালোবাসার শো-কেচ না ভেবে বসে আবার।
চেয়ার টেবিল খাট সোফা,আলমিরা,জানালার পর্দা,ওয়ালের রং,ফ্যান,কিচেন সব কিছুই আমার অত্যন্ত প্রিয় এখন।তবে এসব আসবাব পত্র পছন্দের সাথে পরিবর্তিত হতে থাকে।
আজকে এই মুহুর্তে সব কিছু নিয়েই আমার এই ভালোবাসার ভালো বাসা। কোন কিছুর ঘাটতি হলে তা আর ভালো বাসা হবেনা। অফুরান নির্ভরতা ভালোবাসা কক্ষ,ভালোবাসা ব্যংকের চেক বই,আমার একান্ত ভালোবাসা বারান্দা…এই তিনটি অপরিবর্তনশীল হলেও অন্য সব কিছু পরিবর্তনশীল।
৩৯টি মন্তব্য
প্রহেলিকা
বাহ! এই না হলো একান্ত অনুভুতি! অজানাকে জানা হলো, প্রশান্তির আরেক নাম আপনার এই ভালবাসার ভালো বাসা। স্বর্গ দুয়ার কেমন হয় জানি তবে মনে হচ্ছে সেই দুয়ারের পর এমন কিছুই থাকে। দারুন।
নির্ভরতার যে অভাব চারপাশে সেখানে এই ভালবাসার ভালো বাসা সত্যি যেন এক বিরাট প্রাপ্তি। ব্যাংকের চেক বইটিতে সাইন করে দিন আমরাও কিছু ভালবাসা নেই যদিও তা একান্তই আপনার।
খামখেয়ালিতে নামগুলোও রেখেছেন বেশ ভালো। থাকুন, অনেক সুন্দর থাকুন এই স্বর্গের মাঝে। পাখিটাকে সচল করে দিন, কথা বলুক সেও।
জিসান শা ইকরাম
খামখেয়ালী কথা বার্তা সব এখানে।যার কোন অর্থ আছে কিনা কে জানে।
চেক দিয়ে কোন লাভ নেই, এটি তো কেবল আমার
ব্যংক থেকে একমাত্র আমিই তুলতে পারবো।
পাখি তো সচলই,সারাক্ষণ থাকে আমার সাথে।
প্রহেলিকা
সব কিছুরে অর্থ খুঁজতে যাবো এমন বোকা আমরা না, সুখ যেখানে সেখানে আর অর্থ খুজে কি হবে! থাক আপনারই থাক আমরা শুনে শুনেই পথ পাড়ি দিবো। আরো শুনিতে চাই এ বেশি কম হয়ে গেলো।
জিসান শা ইকরাম
বলা হবে আরো
জগত জানুক 🙂
লীলাবতী
আপনার স্বাক্ষর দেয়া চেক বইটা দরকার আমার,আপনি একটি নতুন চেক বই উঠিয়ে নিয়েন :p
জিসান শা ইকরাম
আমি স্বাক্ষর দিলেও লাভ হবে না, ব্যংক থেকে আমি ছাড়া অন্য কেউ কিছু তুলতে পারবেনা।
আবু জাকারিয়া
ভাল লাগল ভাল বাসার ব্যাংকটি।
” মন পছন্দ রঙের
বাহারি ভালোবাসা
থেকে শুরু করে রঙ হীন
সাদা ভালোবাসাও
আছে সেখানে।”
জিসান শা ইকরাম
যত ধরনের রঙ আছে সব,এমনকি কল্পনা এবং কল্পনার বাইরের রঙ এর ভালোবাসাও আছে।
নওশিন মিশু
চেক বই এবং আপনাকে সহ ভালোবাসার ব্যংকে যেতে চাই। কবে সময় হবে জানাবেন Please …..
জিসান শা ইকরাম
আপনি তো অনেক বুদ্ধিমতি,আমাকে নিয়ে ব্যংকে যেতে চাচ্ছেন……… সময় সংকটে ভুগছি আমি।
নওশিন মিশু
অপেক্ষা থাকতে রাজি নই,
এমন কথা তো বলিনি আমি …..
জিসান শা ইকরাম
এমন একটি ব্যংক বানিয়ে ফেলুন আপনি।
মেহেরী তাজ
আপনার ভালো বাসাঈ ভালোবাসা বারান্দটার প্রতি খুব লোভ হচ্ছে। পাখিকে খাঁচায় রেখেছেন???
চেক বই এর একটা স্বাক্ষর করা পাতা ও আপনাকে নিয়ে একবার ভালোবাসা ব্যাংক ঘুরে আসলে মন্দ হয় কি? :p
জিসান শা ইকরাম
পাখি মুক্ত,তাঁকে খাঁচায় রাখিনা আমি।
ব্যংকে যাবার সময় সংকটে ভুগছি 🙂
মারজানা ফেরদৌস রুবা
বাহ! অনেক সুন্দর, একান্ত অনুভুতির কাল্পনিক প্রকাশ!!
ভালোবাসার ভালো বাসায় ভালো থাকুন সারাক্ষন।
ব্যাংকটি মজুত থাকুক অফুরান বাহারী রঙের ভালোবাসায়।
জিসান শা ইকরাম
খুব সুন্দর উইশ করলেন
ধন্যবাদ আপনাকে।
ছাইরাছ হেলাল
আপনার অনেককিছু অপরিবর্তনশীল হলেও অনেক কিছুর পরিবর্তনশীলতা চালু আছে, থাকবে।
জিসান শা ইকরাম
পরিবর্তনশীলতা চালু থাকিবেক।
স্বপ্ন নীলা
সুন্দর অনুভূতির বহিপ্রকাশ–অতি সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন— ভালবাসার ব্যাংক কানায় কানায় পূর্ণ থাকুক
শুভকামনা রইল
জিসান শা ইকরাম
শুভেচ্ছা সহ ধন্যবাদ স্বপ্ন নীলা।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
কিছুই আর বাকী রাখলেন না সবইতো প্রকাশ করলেন।এখন আপনি অন্তসার -{@
জিসান শা ইকরাম
সাদা কাগজ আসলে,ইচ্ছে মত লিখে ফেলা যায়।
ব্লগার সজীব
পাখির সাথে কথাবার্তা আজকাল আর দেখিনা তেমন।পাখিকে বন্দী করে ফেলেছেন নাকি?ভালোবাসার ষ্টোর রুম, ভালোবাসা ব্যাংক,দক্ষিনা বারান্দা…… ভালো লাগলো খুব।
জিসান শা ইকরাম
পাখিকে নিজের মাঝে রাখি সারাক্ষন
নিজের মাঝে রাখা যদি বন্দী হয় তো রেখেছি বন্দী করে।
পাখির সাথে কথা হয়,তবে প্রকাশ করিনা।
স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো...
ভালোবাসার নেশায় ভালো বাসা খুজিতে গিয়ে দেখি, গোপন ফোল্ডারে জমানো সব এসএমএস গিলে নিয়েছে ভাইরাস, দাগ পড়ে বিশ্রী হয়েছে বৈশাখে পাওয়া তাতের পাঞ্জাবী। ফাকে তালে তবু ভাল্যঅ্যতাই বাসা হয়ে উঠলনা।
জিসান শা ইকরাম
ভাইরাস গিলে নিলে কিভাবে ভালোবাসা থাকে?
ভালোবাসায় অলটাইম এন্টিভাইরাস আপডেট থাকবে।
আক্ষেপ থাকলে শুরু করা যায় 🙂
আমি অথবা অন্য কেউ
মানুষের মনের এন্টি ভাইরাসের ফর্মটা কি হবে ভাবতেছি। পুরাই মানব মানবীর আদলের কিছু, নাকি ভাসা ভাসা ভালোবাসা নামের কোন বোধ? একটা বস্তুগত, আরেকটা অবস্তুগত, আপার্থিব। পার্থিব ভালো থাকায় অপার্থিব ভালোবাসা ক্যামনে জানি শিকল দিয়া বান্ধা।
জিসান শা ইকরাম
ভালোবাসা বোধটাই এক অর্থে এক ধরনের শিকল
তা মনের শিকল হোক বা বাধ্যবাধকতা হোক
মুক্ত নয়।
শুন্য শুন্যালয়
এরকম একটা একান্ত ভালোবাসা বারান্দা আমার চাই, কিন্তু আমি কার সাথে কথা বলবো ভাবছি। আমার তো আপনার মতো কপাল না, আমার পাখি নাই।
আবার যাদুর হাড়ির মতো একটা মজুদালয়ও আছে বলছেন, যেখানে ভালোবাসাই আর কেউ খুঁজে পাচ্ছেনা, সেখানে আপনার ভালোবাসা অফুরান, এত্তোগুলা হিংসা রইলো।
তিনটি জিনিস অপরিবর্তনশীল হলেও, জিসান ভাই কিন্তু পরিবর্তন হয়েছে। এ এক ভিন্ন ধারার লেখা।
নামগুলো চমৎকার, সাথে শিরোনাম… আমার ভালোবাসার ভালো বাসা 🙂 (y)
জিসান শা ইকরাম
সবারই এমন একটি খোলা বারান্দা আসলে চাই
যেখানে সে সম্পুর্ন একা থাকবে
কারো প্রবেশাধিকার থাকবেনা,এমনকি স্বামী/স্ত্রীরও
যেটি তার একান্ত নিজস্ব জগৎ।
প্রচুর পাখির ফটো তোলেন আপনি,এতে প্রমানিত পাখি প্রেম আপনার মাঝে প্রবল।
পাখি তো প্রতীক,এটি নিজেরই একটি সত্তা।
হিংসা করা ভালো না
বানিয়ে নিন দ্রুত এমন একটি ভালোবাসার ভালো বাসা
যেখানে এই তিনটি অপরিবর্তনীয় থাকবে।
শুন্য শুন্যালয়
আমার তো শুধু বারান্দা কিংবা বাসা নয়, পুরো একটা দুনিয়া আছে, শুন্যালয় 🙂
পাখি আমার খুব প্রিয়। কোন অসুন্দর নেই এদের মাঝে।তবে আপনার মতো তাদের ভাষা বুঝিনা।
শোকেসের ভালো লাগাগুলো আমরা ভালবাসা ভেবে ভুল করি এটা কিন্তু ভালো বলেছেন।
জিসান শা ইকরাম
পুরো একটা দুনিয়া আছে আপনার,
আপনার চেয়ে বড় ভাগ্য আরে কারো নেই এই দুনিয়ায়।
খেয়ালী মেয়ে
এমন পোস্ট পড়ে একটাই কথা আছে বলার, আপনি বড় ভাগ্যবান একজন -{@
জিসান শা ইকরাম
আপনিও অনেক অনেক ভাগ্যবান একজন।
শুভ কামনা -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আমার বারান্দাটা চাই,একটি নিজের বারান্দা,একটি খোলা আকাশ।ভালো লেগেছে লেখা।
জিসান শা ইকরাম
এমন একটা বারান্দা তৈরী করে নিন।
অরুনি মায়া
এখন সবাই ভাল বাসা চায় ভালবাসার মূল্য কোথায়,,,,,,
জিসান শা ইকরাম
মূল্য এসে দাঁড়িয়েছে লেখা,সাহিত্যে আর মুখের কথায়।
অরুনি মায়া
🙂