এই কাহিনী নয় মাস পূর্বের,তাই একে রূপকথা বলা যাবে না।রূপকথা হলে শুরুটা হত এমন- এক যে ছিল রাজা আর এক যে ছিল সুন্দরী। নিকট অতীত বলেই শুরুটা ভিন্ন রকম।
রাজা আর সুন্দরীকে নিয়েই লেখাটা শুরু করি। এরা এলো আমার সংসারে নতুন সদস্য হয়ে।সারাক্ষণ কথা বলা আর ভালোবাসা বাসি করা। কিছুক্ষণ পর পর ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে থাকা।পাখিদের ভালোবাসাবাসি এত কাছ হতে প্রথম দেখা। ভোরে ভোর হত এদের সুমধুর কথায়। ঘুম থেকে জেগেই এদের নিয়ে রাখি বারান্দায়।
মাস দুই এভাবেই চলেছে,দুজন দুজনার হয়ে।হাসি আনন্দে ভালোবাসায়।আগ্রহে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছি এদের নিত্য কথা।রাজা আর সুন্দরীর মাঝে সুন্দরী ভালোবাসা প্রকাশে এগ্রেসিভ খুব।কিছুটা আড়াল এবং ডিম পাড়ার জন্য মাটির একটি আলাদা বাসা করে দিয়েছি। ক্যামেরা দিয়ে ফটো তুলতে গেলেই তাদের জন্য রাখা মাটির পাত্রের মাঝে লুকিয়ে পড়তো সুন্দরী। ছবি গুলো সব গোপনে ধারণ করেছি।
সুন্দরী আর রাজা আমাদের বাসাতেই ছিল। পাখির দোকানের সামনে দিয়ে যাবার সময় একটি রঙ্গিন পাখি দেখে ভাল লেগে যায়। নিয়ে আসি তাকেও। সুন্দরী আর রাজার সাথেই রাখি তাকে যার নাম ডন। একলা পাখি ডন প্রথমদিন দূরে বসে একা একা কাটিয়েছে। দ্বিতীয় দিন রাজা আর সুন্দরীর সাথে ভালোই ভাব জমিয়েছে।তৃতীয় দিন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে রাজা আর সুন্দরীর ভালবাসাবাসী,মাঝে মাঝে অন্য দিকে তাকিয়ে থেকেছে রাজা আর সুন্দরীর ভালবাসার মুহূর্তে।
চতুর্থ দিন ভোরে পাখিদের প্রচন্ড চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙ্গে যায়। ডানা ঝাপটানোর শব্দে দ্রুত তাদের কাছে এসে দেখি রাজা আর সুন্দরী ঝগড়া করছে।ভালোবাসার পরিবর্তে দুজনে একে অন্যকে আঘাত করছে। ডন দূরে বসে তাকিয়ে দেখছে দুজনকে।কিছুই বুঝতে পারলাম না আসলে। বারান্দায় রেখে আসার সময় খেয়াল করলাম রাজা তাকিয়ে আছে আমার দিকে।এমনটা হয়না কখনো।কাছে গিয়ে হাত রাখলম খাঁচার গায়ে,রাজা এসে ঠোঁট দিয়ে আমার আঙ্গুলে কয়েকটা ঠোকর দিল। কি বুঝাতে চেয়েছে বুঝিনি আমি।কিভাবে বুঝবো পাখির ভাষা।
ছোট এই তিন জনের সমাজে পরিবর্তন লক্ষ করলাম।রাজা আর সুন্দরীর ভালোবাসাবাসি কমে গিয়েছে।দুজনে একসাথে মাটির ঘরে থাকে সামান্য সময়।রাতে রাজা আর সুন্দরী মাটির ঘরে থাকে। ডন থাকে বাইরে একটি লাঠির উপর। আবার ঝগড়া একদিন প্রচণ্ড রাজা আর সুন্দরীর।কি যে হলো এদের কে জানে! ঐ ঝগড়ার দিনের অবসানে রাতে দেখি তিনজনই মাটির ঘরে।তবে কি ডন কোথায় রাত কাটাবে, এ নিয়ে ঝগড়া, অবশেষে রাজা মেনে নিয়েছে এই রঙ্গিন পাখিকে? যে কারনে একই রুমে রাত্রি যাপন? আগ্রহী হই খুব। পর্যবেক্ষন করতে থাকি যখনই সময় পাই।
হঠাৎ একদিন দেখি। ডন আর সুন্দরী ভালোবাসাবাসি করছে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে। রাজা তখন মাটির ঘরে।মাটির ঘরের দরজা দিয়ে রাজা শুধু মাত্র মাথা বেড় করে দেখছে তা।অনেকক্ষণ ছিল এভাবে।বুঝে গেলাম সব কিছু।রঙ্গিন পাখির প্রেমে পড়ে গিয়েছে সুন্দরী।আর রাজা তা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। রাজার হৃদয় টি কেমন ছিল তখন?স্থির অনড় রাজার মনে কি বলছিল ” জান এসব কি দেখছি আমি? আমার ভালোবাসার মুল্য কি এভাবেই দিলি তুই? আমার বুকের মাঝে অসীম শূন্যতা,হাহাকার,বিরান ভূমি, শুষ্ক মরুভূমি” ।কেজানে কি ছিল ওইটুকু রাজার হৃদয়ে। একসময় রাজা ঘড় হতে বেড় হলো। রাজাকে দেখে সুন্দরী আর ডন ছিটকে দুজনে দুদিকে। অভিমানী রাজা আবার চলে যায় একা মাটির ঘড়ে।তার আনন্দ চলে যায়। চিৎকার শুনি তার। একসময় সুন্দরী যায় মাটির ঘরে। একা রাজার কণ্ঠ শুনি …… ‘ জান জান কই তুই? কই কই কই…………আমাকে রেখে একা কোথায় যাও?’
সুন্দরী হয়ত বলেছে, ‘এই তো জান, এসেছি আমি,তোমারই কাছে।’ ‘ চোখ আমার খোলা, দেখিনা তো তোমাকে,আমার মাঝে নেই তুমি,খুজে পাইনা আমার রিদয়ে,এখানে শুধুই শূন্যতা’ – রাজা কি এমনটা বলেছিল?
সাতটি দিন এমনই ছিল। রাজার চোখের আড়ালে চলেছে চলেছে সুন্দরী আর ডনের প্রেম। রাজার কোন আবেদন,কান্না,হতাশা,অভিমান সুন্দরীকে ফেরাতে পারেনি। কেমন নিস্তব্দ হয়ে ছিল পাখিদের বাসা। তিন জন যখন বাইরে থাকে। কোন কথা নেই,কোন ভালোবাসা নেই।রাজা বসে থাকে একাকী নিঃসঙ্গ হয়ে। সব কিছু আছে তার কিন্তু কিছুই নেই তার। তিনজনের মাঝে একা সে,সুন্দরী রাতে মাটির ঘরে যায়।একসাথে রাত কাটায়। আমি নিশ্চিত যে দুজনের মাঝে পাহাড়ের বাঁধা, যোজন যোজন দূরত্ব।
কেমন অপরাধী মনে হচ্ছিল নিজকে। রঙ্গিন পাখিটিকে এনেই সর্বনাশ করে দিলেম।সুন্দরের দিকে আকৃষ্ট হয়েছে সুন্দরী।রাজা কিছু করতে পারছে না। ফেরাতে পারছেনা সুন্দরীকে। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম, আলাদা করে দেবো। একদিন রাজা আর সুন্দরীকে আমার খামারে পাঠিয়ে দিলাম আর ডন এর জন্য নিয়ে এলাম রূপবানকে। কিন্তু ডন? তার স্মৃতিতে যে সুন্দরী।প্রথম দুইদিন একা বসে কাটায় উদাস হয়ে। রূপবানের দিকে ফিরেও তাকায় না। পাশাপাশি বসে থাকে দুজনে দুদিকে তাকিয়ে। কয়েকদিন তারা একে অপরকে দেখেছে।
রাজা আর সুন্দরী?
নতুন স্থানে যাবার সাথে সাথেই তারা ফিরে গিয়েছে পূর্বের ভালোবাসার জীবনে। কলকাকলী, ভালোবাসায় পুর্ন জীবনের আবার শুরু।দুই মাসের মধ্যে সুন্দরী ডিম পেরেছে।তবে সে ডিম থেকে বাচ্চা আসেনি কোন অজানা কারনে।রাজাকে দেখতাম আমাকে দেখলেই আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো।সুন্দরী আমাকে দেখে ভয় পেলেও রাজা পেতো না।রাজা কি অভিশাপ দিত আমায়? নাকি দুঃখের কথা বলতো যা আমি বুঝিনি কখনো।
এভাবেই দিন কাটলে ভালো ছিল……… কিন্তু একদিন হঠাৎরাজা চলে গেলো এ জগৎ থেকে? কেন মরে গেলো রাজা? পাখিদের কি স্ট্রোক করে? রাজা কি হৃদয়ের গহীনে থাকা চিনচিনে ব্যাথা নিয়ে চলে গেলো? তার কি ভিতরটা শুষ্ক হয়ে গিয়েছিলো যা আর জলে পরিপুর্ন হয়নি?
রাজারা এভাবেই মরে যায়,বা বেঁচে থেকেও মরে থাকে।
একলা সুন্দরীর একাকীত্ব কাটাতে এবার কিনে দেই একটি রঙ্গিন সাথী, খেয়ালের বসেই,যার নাম সবুজ।এমন রঙ দেখেই তো সুন্দরী আকৃষ্ট হয়েছিলো।সবুজকে পেয়ে মুহুর্তের মাঝেই ভাব করে ফেলে সুন্দরী। সুন্দরীর ক্ষণে ক্ষণে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতায় অবাক হই আমি।
#রাজা,সুন্দরী,ডন আর সবুজ নামগুলো দিয়েছে স্নেহাস্পদ মেহেরী তাজ।লেখার জন্য এত সুন্দর নাম আমি দিতে পারতাম না।ধন্যবাদ তাজ -{@
৫২টি মন্তব্য
মেহেরী তাজ
আপনার পাখিও আছে নাকি?? আচ্ছা আগে পড়ে নেই।
জিসান শা ইকরাম
হ্যাঁ আছে তো
চারটে পাখি আমার
লাভ বার্ড সব গুলো………
অরুনি মায়া
হয়ত রাজা আর সুন্দরির ভালবাসায় কোথাও কোন ঘাটতি ছিল। প্রকৃত ভালবাসায়য় কেউ কাউকে ছেড়ে চলে যায় না। একতরফা ভালবাসা টেকেনা। সুন্দরির মনের মত হয়ত রাজা ছিলনা। তাই সে তাকে সহজেই ভুলতে পেরেছে। নইলে সংগি মরে গেলে অপর টিও বাঁচেনা।
জিসান শা ইকরাম
কি যে হয়েছে তা তো আর বুঝতে পারিনা
আমরা বুঝি মানুষের মত করে।
ভাবছি আর একটি পোষ্ট দেবো……… সুন্দরীর কথা থাকবে
একই ঘটনার ভিন্ন উপস্থাপনা হবে তা।
অরুনি মায়া
আসলে মানুষ তো মানুষ ই| মানুষের সাথে অন্য প্রানীর তুলনা হয়না | তাদের জগৎ ই আলাদা | একা কেউ ই থাকতে পারেনা | তাই রাজার মৃত্যুর পর সুন্দরী আরেকজন কে বেছে নিয়েছে | এটাকে আমরা স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখি,,, সেই ভাল |
জিসান শা ইকরাম
সব কিছুই আসলে স্বাভাবিক ভাবে নেয়া উচিৎ
প্রকৃতির অংশ আমরা
এখানের সবকিছুই স্বাভাবিক।
মেহেরী তাজ
কি বলা যায় ভাবছি। ;? পাখি পর্যবেক্ষণ করে গল্প লেখা? আপনাকে দিয়েই সসম্ভব। নাম গুলো মানিয়েছে বেশ।
রাজার হাহাকার চোখে পড়েনি সুন্দরীর। সে তো দেখি মহা পাজি পাখি। পাখি পরিবার ভালো থাকুক সাথে তাদের মালিকও। 🙂
জিসান শা ইকরাম
পাঁচটি নামের চারটি দিয়েছে আমার অত্যন্ত স্নেহের মেহেরী তাজ নামের একজন ব্লঘার 🙂
নাম গুলো তো সুন্দর হবেই ………
হায় হায় সুন্দরীকে দেখি ভুল বুঝতে পারে অনেকেই
সুন্দরীর কথা লিখতে হবে আর একটি পোষ্টে ……
আবু খায়ের আনিছ
প্রেমের গল্প, পর্যবেক্ষন করে পাখিকে রুপক করে উপস্থাপন। ঘটনা যদিও সত্য হয় তবু উপস্থাপন রুপক গল্প বানিয়েছে।
পাখিদের ভাষা আমরা বুঝতে পারি না, আবার মানুষের মনের ভাষাগুলোও আমরা বুঝতে পারি না মাঝে মাঝেই।
তৃতীয় ব্যাক্তির উপস্থিতি তার সংসারেই আগুন জ্বালায় যার সংসারে ভালোবাসার অভাব আছে, অথবা লোভ যাদের অন্তরে।
জিসান শা ইকরাম
ঘটনা সত্য।
দরজা,জানালার ফোকর দিয়ে অনেক দিন ধরে দেখেছি এই ঘটনা
নেশা হয়ে গিয়েছিল দেখার
কয়েকশত ফটো তুলেছি।
ভাবিয়েছে আমাকে……… ভালোবাসা রাগ অনুরাগে মানুষের সাথে পাখির কোন পার্থক্য নেই।
আবু খায়ের আনিছ
ঠিক বলেছেন ভাই, ভালোবাসায় সবাই এক।
জিসান শা ইকরাম
হ্যাঁ,এটিই সত্যি।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি দেখছি পাখি বিশেষজ্ঞ!!
ভাব ভালুবাসা সবই বুঝতে পারেন,
দু’একটি পাখি আমাদের ও দেন, আমারাও পেলে-পুষে রাখি,
ভালুবাসা করি, দিনের রাতে, রাতের দিনে।
পাখাল হতে মুন চায়!!
জিসান শা ইকরাম
আপনারও পাখি আছে
জানি আমি
পেলে পুশে রাখেন, ভালুবাসা করেন দিনের রাতে, রাতের দিনে
আপনার চেয়ে বড় পাখাল কে আছে 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
ভালবাসার লীলা বোঝা হয়ে যায় যখন হয়ে ওঠে দায় :p
জিসান শা ইকরাম
হ্যাঁ ঠিক ঠিক 🙂
নীতেশ বড়ুয়া
😀 -{@
জিসান শা ইকরাম
-{@ 😀
নীতেশ বড়ুয়া
:D)
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা আমি সুন্দরীকে সাপোর্ট করি। দু’/একজন রাজা মরে গেলে ব্যাপার না। 😀 :p
রাজাগুলো কয়টা রানী নিয়ে রাজত্ত্ব করতো? আর বৌ মরলে কবরও শুকাতে বসে স্বামীরা। প্রেমিকগুলো প্রেমিকার পাশে থাকে আড় চোখে চায় অন্যের দিকে। মেয়েরাও করে, সংখ্যায় এতোই কম। কথায় আছে Exception is not example. আর কোনো মেয়ে যদি এসব করে উদাহরণ দিতে দিতে চৌদ্দ গুষ্ঠি শেষ। যাক সিরিয়াস কিছু বলতে চাইনা।
তবে এটা ঠিক না। ভালোবাসা শুধু একজনের জন্য! হায়রে আস্তা জীবন পড়ে রইলো, আমি একখানা ভালুবাসা করতে চাই। কিন্তু আমারে সবাই ডরায়, প্রুপুজ করার আগেই পালায়। :D) :D) :D) :D) :D) :D) :D) :D) :D) :D)
নানা পাখীর লেখা আর ছবি কিন্তুক ভালো হয়েছে। এজন্য তোমাকে -{@ (3
মেহেরী তাজ
হায়রে আস্তা জীবন পড়ে রইলো, আমি একখানা ভালুবাসা করতে চাই। কিন্তু আমারে সবাই ডরায়, প্রুপুজ করার আগেই পালায়। :D) :D) :D) :D)
নীলাঞ্জনা নীলা
পিচ্চি আপু হাসছো আমার জীবনের ট্র্যাজেডি এটা। বড়োই দুক্ষের গো। ভাবো তো! ;( ;( ;( ;( ;( ;( ;( ;( ;( ;(
জিসান শা ইকরাম
@ নীলা
সিরিয়াস আমিও না তাই মন্তব্যের প্রথম অংশে গেলাম না।
‘তবে এটা ঠিক না। ভালোবাসা শুধু একজনের জন্য!’…… না না এটা হবে কেন?
ভালবাসা হচ্ছে একটা মহাসাগরের পানির মত
পাঁচ দশ একশ হাজার কলসি পানি নিলে মহাসাগরের পানি কমবে না
এমন ভালোবাসায় ভিজিয়ে দেয়াই যায় অনেককে
ব্যাপার না 🙂
মেহেরী তাজ
বেপার হচ্ছে নাম গুলা আমার দেওয়া সে না হয় বুঝলাম। কিন্তু সে সব্বাই কে না জানালে হতো না?? :@
আমায় যখন চারটা পাখির ছবি পাঠিয়ে বললেন চারটা নাম দিতে তখন কিন্তু মোটেই বুঝিনি এমন ভালোবাসা ময় একটা পোষ্ট আপনি দিতে যাচ্ছেন। জানলে ভুত পেত্নী টাইপ কিছু রেখে দিতাম। :p
জিসান শা ইকরাম
চারটে পাখির নাম চেয়েছি দিয়েছো তুমি
এটা কেন বলবো না?
এত সুন্দর নাম আমি পেতাম নাকি?
অন্য একটা সম্ভাবনা দেখো……
তোমার দেয়া নাম ব্যবহার করলাম
কিন্তু তোমার কথা লিখলাম না।
এটি দেখে তুমি ভাবতেও পারো… ‘ দাদা আমার দেয়া নাম নিয়ে দিব্যি গল্প লিখে ফেললেন
আমার নামটা পর্যন্ত নিলেন না !!! ‘
ভুত পেত্নী টাইপ নাম দিলেও, তাই লেখায় দিতাম 🙂
শুন্য শুন্যালয়
আপনার সাথে পাখিপ্রেম নিয়ে একবার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলাম, মনে আছে? আজ স্বীকার করতেই হচ্ছে, আপনি জিতেছেন। এতো কাছ থেকে তাদের পর্যবেক্ষন করা দিনের পর দিন, এটা মনের টানেই সম্ভব। শুধু যে চমৎকার লিখেছেন তাই-ই না, লেখার সাথে দু একটা ছবির কম্বিনেশন দেখে আমি অবাক হয়েছি।
৩ নাম্বারটা তেমনি একটা ছবি। পাখিকে রূপক হিসাবে দেখালে ব্যাপক মন্তব্য হইতে মন্তব্য হইবে, উহা টানিয়া লম্বা করিবো কিনা বুঝতে পারছিনা। তাই আপাতত তাদের পাখি হিসাবেই রাখলাম। আমরা মানুষরা যখন থেকে নিজেদের মস্তিস্ক আর আবেগ বুঝতে শিখলাম, তখন থেকেই নানা সমস্যার উৎপত্তি। মানুষরা পাখির থেকেও ভয়াবহ, ক্ষনে ক্ষনে মানিয়ে নেবার ক্ষমতা আরো বেশি।
শুধু রাজা কেন, এরপর সুন্দরী আর ডনকে নিয়ে লিখুন তাও চাই। পাখিগুলো ছেড়ে দিন, যাক না উড়ে, যাক না উড়ে, আপনার মনের পাখির কথা বলছিনা, ও আপনার দ্বারা হবেনা। পাখির ভাষা বুঝতে পারতেন, আর এ যে রীতিমত পাখির মন বিশ্লেষন। আপনি কিন্তু মানুষ ডেঞ্জারাজ।
নামগুলো অনেক সুইট হইছে, এইটা আমাদের পিচ্চি ভূতের পক্ষেই সম্ভব।
আর পোস্ট? আপনার জানা কি বলবো। 🙂
জিসান শা ইকরাম
মনে থাকবেনা কেন?পাখি নিয়ে টানাটানি।আসলেই কি জিতেছি আমি? আমার তো মনে হচ্ছে আপনিই জিতেছেন।
এটি লিখবো তা কয়েকমাস পুর্বেই ঠিক করেছিলাম,আসল লেখাটা অনেক সংশোধন করে দিয়ে এই অবস্থায় এনেছি।
আর ছবির বিষয়ে আপনি যখন প্রশংসা করেন, শুনতে ভালোই লাগে।ছবি তোলকের প্রশংসা পাওয়া ভাগ্যের।
রূপক না ভেবে পাখি হিসেবেই দেখুন
‘ মানুষরা পাখির থেকেও ভয়াবহ, ক্ষনে ক্ষনে মানিয়ে নেবার ক্ষমতা আরো বেশি।’ একমত আপনার সাথে।
ক্ষণে ক্ষণে মানিয়ে নেয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা আছে মানুষের।
যাক না উরে গান সাথে সাথে পাখি ছেড়ে দেবো?
আর একবার বলুন…… ছেড়ে দেই তাহলে।পাখি পাক তার আসল ঠিকানা 🙂
তাজের দেয়া নাম গুলো আসলেই সুন্দর হয়েছে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
শুন্য শুন্যালয়
পাখিকে পাখি ভেবেই ছেড়ে দিতে বলা, তবে আপনি বোধহয় এক ভাবনাতেই থিতু হয়ে আছেন তাই আরেকবার শুনতে চাচ্ছেন। আসল ঠিকানা টা মনেহয় আপনার জানা?
জিসান শা ইকরাম
পাখির জন্য একটাই ঠিকানা
যা সে জানে, আমি না।
খাঁচার দরজা খুলে দিলেই সে চলে যাবে তার ঠিকানায়।
শুন্য শুন্যালয়
আপনার পাখিগুলোর প্রতি একটা মমতা এসে গেলো, হতে পারে লেখার গুনে কিংবা অন্য কোন কারনে।
অনেকদিন আগে পেলিক্যান পাখির ছবি তুলেছিলাম, কএকটা দিয়েছিও সোনেলাতে। সেদিন এরকম একটা দৃশ্যের সিরিয়াল উপভোগ করেছিলাম, সেখানে তৃতীয় কেউ ছিলোনা অবশ্য। তৃতীয় আসবেই, পাখি হোক কিংবা মানুষ। জীবন কিন্তু এইটাই। অইযে শিমূল ভাইয়ের লেখার মতো, নিহিলার বিষ পান আমরা করেই ফেলেছি।
জিসান শা ইকরাম
হ্যাঁ,পেলিক্যান এর ছবি গুলো অসাধারণ লেগেছিল আমার কাছে
ভালোই লেগেছিল দুজনের ছবিগুলো দেখতে
মনে পড়ে সেদিনের সে ছবি তোলায় আপনার উচ্ছ্বাস
তখন হয়ত আপনার তৃতীয় আর একটি পাখি এর মাঝে আসুক
এটি ভালো লাগতো না
এখন যেমনটা জোড় দিয়ে বললেন…… তৃতীয় আসবেই
জীবন একটাই
যতটা পারা যায় রঙিন করে নেয়া যায়
ভালোবাসায় সব কিছুই বৈধ
শুভ কামনা।
শুন্য শুন্যালয়
আমার বলা আর আপনার বোঝায় বিস্তর ফাঁরাক। আমরা সবাই যে যার নিজের মতো করে ভাবি। অন্যের ভাবনা বোঝার দায় মুক্তি ঘটেছে যেন। আপনার জন্যেও শুভকামনা ঢের, আমার সাদা কালো জীবন হলেই যথেষ্ট।
জিসান শা ইকরাম
তা অবশ্য ঠিক,
আমরা সবাই যে যার নিজের মতো করে ভাবি
অরুণিমা
আপনি এত ধৈর্য্য কোথায় পান দা?রাজার নিশ্চয়ই কোন সমস্যা ছিল।নাহলে এমন হবার কথা নয়।মানুষ হিসেবে কথাটি বললাম দা।সুন্দরীর নিশ্চয়ই কোন যুক্তি আছে,যা আপনার চোখ দেখেনি।মন্তব্যে পড়লাম সুন্দরীকে নিয়ে লিখবেন।ঐ লেখাটি পড়ার পরে বুঝতে পারবো আশাকরি।আপনি চমৎকার লিখতে পারেন…………… 🙂 -{@
জিসান শা ইকরাম
পাখির বিষয়ে আমার আসলে আগ্রহ খুব
লিখবো অবশ্যই সুন্দরীর কথা
ধন্যবাদ আপনাকে।
রিমি রুম্মান
এমন পাখি আমাদেরও ছিল। মনে পড়ে গেল তাঁদের। পাখিজাতিও পরকীয়া করে ! 🙂 রাজা মারা যাবার পর নতুন প্রেমিকের সাথেও আবার মানিয়ে নিয়েছে 😀 । বেশ বেশ। যে গেছে সে তো গেছেই। তারে নিয়ে পড়ে থাকলে ক্যামনে কি !!
জিসান শা ইকরাম
দেখলাম তো পরকীয়া করে 🙂 যে গেছে সে তো গেছেই। তারে নিয়ে পড়ে থাকলে ক্যামনে কি !! (y) (y)
পরিবর্তনকে স্বাগত জানানো উচিৎ আমাদের।
আগুন রঙের শিমুল
এমনই হয় 🙂
জিসান শা ইকরাম
এটিই স্বাভাবিক জীবনের ধর্ম।
লীলাবতী
প্রেম ভালবাসায় দেখছি পাখি আর মানুষে কোনই পার্থক্য নেই।
জিসান শা ইকরাম
পাখিদের মাঝে এটি খুব বেশী, কখনো লাভ বার্ড বাসায় রাখলে বুঝতে পারবেন।
মোঃ মজিবর রহমান
পাখির ভালোবাসাইয় মুগ্ধ হলাম।
খুব সুন্দর ভাইয়া,
আপনার পাখি আপনার মতই ভালবাসায় সিদ্ধহস্তো!
জিসান শা ইকরাম
আমি ভালোবাসায় সিদ্ধ হস্ত? !!!!
ওরে বাপ্রে ,এইটা পাইলেন কৈ ? 🙂
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আপনার এই পাখি কাহিনী একবার নয়, দুবার পড়লাম। শেষে রাজার মরে যাওয়াটা রহস্য। মানবজীবনে হলে বলতাম রাজা সহ্য করতে পারেনি, তাই সে চলে গেছে।
তবে প্রাণী জগতের সকলেই দুটু চাহিদা নিয়ে জন্ম নেয়। ক্ষুধার চাহিদা এবং জৈবিক চাহিদা। তারমধ্যে একমাত্র মানুষই ভিন্ন। বোধ, বিবেক বিবেচনা এগুলোর কারনে মানুষ আলাদা।
পাখি দুটির (রাজা এবং ডন) মাঝে সুন্দরী একজন। খুব স্বাভাবিকভাবেই সুন্দরী একজনকে সঙ্গ দিলে আরেকজনের মন খারাপ থাকে। একমাত্র মানুষ ছাড়া অন্যপ্রাণীদের প্রিয়জনের জন্য মন খারাপ হয় কি না জানি না। হয়তো হয় না আর সেজন্যেই সুন্দরী সবুজকে পেয়েই সাথেসাথে মিশে গেছে।
সবমিলিয়ে লিখাটা ভীষণ উপভোগ্য।
সুন্দরীকে নিয়ে পরের লিখাটির অপেক্ষায় রইলাম।
জিসান শা ইকরাম
এমন সুন্দর বিশ্লেষণ আর প্রেরণামূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সোনেলা আপনাকে মিস করে।
ব্লগার সজীব
সহজ কথা হচ্ছে রাজার আকৃষ্ট করার মত কোন গুন নেই।সুন্দরীর উপায় নেই,তাই থেকেছে রাজার সাথে।যখনই অনেক গুন নিয়ে ডন আসলো,তার প্রতি সুন্দরী আকৃষ্ট হল।একজন ব্যার্থ পাখি রাজা,তার মরে যাওয়াই ভালো।
জিসান শা ইকরাম
খাঁচার মাঝে আটকে থাকা সুন্দরীর সামনে আর কোন অপশন ছিল না
তাই মেনে নেয়া
মানুষের মাঝেও এমন আছে ,
অপশন নেই, সমাজের চিন্তায় থেকে যায় একের সাথে অন্য মৃত্যু পর্যন্ত।
নাসির সারওয়ার
পাখি বিশারদ সাহেব, ছেলে এবং মেয়ে পাখির মাঝের সাঁকোটাকে আরো একটু পোক্ত করেন। আপনি যেহেতূ ওদের ভাষা নিয়ে গবেষণা করছেন, দেখুননা ছেলে পাখীও ওরকম কিছু করে নাকি।
জিসান শা ইকরাম
চেষ্টায় আছি, কিছু একটা করার
সুন্দরী পাখির হয়ে একটি পোষ্ট দেয়া হবে
কিছুটা পাখবিক মনোভাব বিশ্লেষণ করা হবে তাতে 🙂
ইমন
পাখি নিয়ে ভালো লিখেছেন জিশান ভাইয়া 🙂
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ ইমন।
নীরা সাদীয়া
পাখিদের আমি বড্ড ভালবাসি। মুগ্ধ হয়ে পড়লাম পাখিদের সংসারের ভাঙা গড়ার গল্প। আহা, কী দারুন এদের জীবন কাহিনী। এরকম লেখা আরো চাই।