২০৩০ সাল!
শীতকাল। গায়ে সোয়েটার, তার উপর শাল জড়িয়ে সে বসে আছে দোতলার ব্যালকনিতে! একটু পর পর তীব্র কাশির দমকে সে কাবু হয়ে যাচ্ছে! মাত্র ৬০ বছর বয়সেই সে বৃদ্ধ হয়ে গেছে। অথচ তার অনেক বন্ধু এখনও কত শক্ত সমর্থ! তার স্ত্রী এসে মধু, লেবু আর লবঙ্গ মেশানো গরম পানি দিয়ে গেল তাকে। সেটায় কয়েক চুমুক দেয়ার পর কাশির দমক একটু কমে এলে সে একটু সুস্থির হয়ে এল। শুনতে পেল ভেতরের ঘরে তার ছেলেটা মাকে তাড়াতাড়ি চা দিতে বলছে, সে বাইরে যাবে! ছেলের বয়স ১৮। বয়সের বিশাল ব্যাবধান সত্ত্বেও তার আর ছেলের সম্পর্ক বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ! এটা ভেবে সে বেশ পুলকিত বোধ করলো! একটু পরই ছেলে এসে তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল “বাবা, খুব কাশছিলে শুনতে পেলাম! তুমি তো সিগারেট ছেড়েই দিয়েছ বলতে গেলে! তবে কাল রাতে কেন আবার একটা খেতে গেলে!” তার জন্য ছেলের এত চিন্তা দেখে সে প্রবল আবেগ অনুভব করলো! প্রানপণে সে চোখের জল ধরে রাখার চেষ্টা করা সত্ত্বেও টুপ করে এক ফোঁটা জল তার গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়লো! হাতের তালু দিয়ে সে জল মুছিয়ে দিতে দিতে ছেলে নরম গলায় বললো “বাবা, তুমি না থাকলে আমার কি হবে বল তো!” ছেলের এ কথা তার অস্তিত্বে যেন চাবুকের মত আঘাত করলো! বেঁচে থাকার একটা প্রবল, সর্বগ্রাসী ইচ্ছে তার ভেতর থেকে উথলে, উপচে পড়তে লাগলো! কিন্তু সময় যে বড় সীমিত তার! ভেতরে বাসা বেঁধেছে মরনব্যাধি ক্যান্সার! কাউকে বলেনি সে, কেউ জানেনা! ভয়ঙ্কর সে গোপন সত্য বুকে নিয়ে এই তীব্র শীতেও সে ঘামতে থাকলো কুল কুল করে…!
৬টি মন্তব্য
ওয়ালিনা চৌধুরী অভি
সত্যের নির্মমতা চোখের জলে।
জিসান শা ইকরাম
জীবনটা এমন অসহ্য সত্যের সম্মিলন আসলে।
মোঃ মজিবর রহমান
বরতমানেই নাই ২০৩০ দূর বহুদুর
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
জীবনের এ যন্ত্রনা বয়ে যেতে হবে।
সঞ্জয় কুমার
নির্মম বাস্তবতা ।
অপু তানভীর
🙁
বাবা বিহীন জীবন কল্পনাও করতেও পারি না !