বিশালাকার বাসের ভেতর যখন দেখলাম আমি একমাত্র যাত্রী, হুট করে শরীরের ভেতর একটা কালো পর্দার মতো পড়তে দেখলাম। সময়টা দিনের বেলা হলেও অবশ অনুভুতিটা সরছিল না।
ধর্ষনের খবর এখন আর আগ্রহ নিয়ে কেউ পড়েনা, কোনই নতুনত্ব নেই। মেমোরিতে এতো নাম জায়গা দেবার মতো আর কোন স্পেসও নেই। কয়টা মেয়ের নাম মনে রাখা যাবে? বাসের ভেতর এলকোহলিক মাতালদের থাবার ভেতর যন্ত্রণাকাতর সেই দূর্ভাগা মেয়েটার জন্য খুবই কষ্ট হচ্ছিলো। আচ্ছা মেয়েটা কী বলেছিল শেষ মূহুর্তে? তোমরা আমার সাথে যা ইচ্ছে করো, আমাকে ধর্ষন করেছ, ধর্ষনের ভিডিও করেছ, চাইলে সেই ভিডিও আপলোড করে দাও এখুনি, তবু আমাকে তোমরা খুন করোনা, এমনটা বলেছিল কী? বলেছিল কী? দেখো তোমাদের কথা আমি কাউকে জানাবো না, তোমাদের পুলিশে ধরিয়ে দেবোনা, তবুও তোমরা আমাকে মেরে ফেলোনা? তোমাদের এই কদর্য স্মৃতিটা আমি মেমোরি থেকে মুছে দেব, আমাকে এই পৃথিবীর সুন্দর থেকে সরিয়ে দিওনা। আমাকে হত্যা করোনা?
আমার পিচ্চি বুবুটা সেদিন বাড়ি থেকে ঢাকা ফিরলো একা বাসে। আমি ভয় পাচ্ছিলাম ঈদের এই সময়ে ঢাকা ফিরতে দেরী হবেনা তো? আমার ভয়টা হয়তো বুঝতে দেইনি ওকে। আমি জানি ওর মোবাইলে ডাটা নেই, তবুও বললাম ফিরেই যেন আমাকে মোবাইলে মেসেজ করে। বুবুর মতো এমনি করেই কী সেই মেয়েটার ফিরে অফিস করবার তাড়া ছিলো পরদিন? নাকি ঘরের একান্ত বিছানাটায় সারাদিন গড়িয়ে নেবার ইচ্ছে ছিলো?
রাত আর দিনের পার্থক্যে প্রকৃতি পাল্টায়, মানুষ পাল্টায়। তবু কিছুটা সাহস নিয়ে এখানে চলতে পারি। এখানে অন্যায়ের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড নয়। এখানে আমাদের দেশের মতো কয়েদীদেরকে অন্যায়ভাবে পেটানোর নিয়ম নেই, মারতে মারতে জেলখানায় হত্যার ঘটনা নেই, ক্রসফায়ার নেই। তবু আইন আছে। কী সেই আইন যার কারনে এখানে আমাদের দেশের মতো যথাচ্চার নেই? শিশু, তরুনি, বৃদ্ধা কেউ ধর্ষনের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা দেশে এতো এতো শাস্তির ধরন থাকতেও। সে দেশের ৮০% মানুষ যখন মানবতার জন্য কাঁদে, তখন আমি ভাবি একটি মৃত্যুর কথা। একটি মৃত্যু কিংবা হাজার মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য কী আসলে? সেই হতভাগী ঘৃণা আর যন্ত্রণা নিয়ে মৃত্যু বরণ করা ব্যক্তির কাছে!!
১৭টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
আইনের শাসনের চেয়েও জরুরী বেশি বিবেক, আমাদের দেশের মানুষ বিবেকহীন হয়ে গিয়েছে। যারা এসব করে তাদেরও বিবেক নেই, যারা এসবের বিচার করবে তাদেরও বিবেক বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
এবার অস্ট্রেলিয়া গিয়ে দেখে আসলাম, প্রায় সবাই কেনা কাটার পরে নিজেরাই পন্যের মূল্য স্ক্যান করে নিজেরাই দাম পরিশোধ করছে। অনেকেই বাসা থেকে ট্রলি নিয়ে যাচ্ছে কেনাকাটার সুবিধার জন্য। এটি আমাদের দেশে কল্পনা করা যায়? আমাদের দেশে ছোট হাত ব্যাগ পর্যন্ত কাউন্টারে জমা দিয়ে শপিং করতে ঢুকতে হয়, ট্রলি তো কল্পনাই করা যায় না।
অনুভুতি গুলো দিনকে দিন আসলে ভোতা হয়ে যাচ্ছে, একসময় আর কাজ করবেনা এটি।
শুভ কামনা।
শুন্য শুন্যালয়
ব্রিটেশদের থেকে কিছু সভ্যতা আর বিবেক নিতে পারলে বুঝতাম। বড় গলায় ব্রিটিশ বলে গালি দেই আবার।
তবে ডান্ডায় ঠান্ডা হয় সব। বিচারের শাসন জোরদার হলে বিবেক সোজা হয়ে যেতো। যেমন কুকুরের তেমন মুগুর।
ইঞ্জা
জিসান শা ইকরাম ভাইয়ের সাথে একমত পোষণ করেছি বলছি, জাতির বিবেক জাগো।
শুন্য শুন্যালয়
হুম। ধন্যবাদ ইঞ্জা ভাই।
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা প্রিয় আপু
মৌনতা রিতু
ক্রসফায়ারটা দরকার। সেদিন তোমার ভাইকে বল্লাম দুই একটা দেওনা কেন? কিন্তু তখন যে মানবাধিকার কর্মিরা মিছিল বের করবে।
ঠিক বলেছো ভয় পাবারই কথা। এসব সময় ফোনও তো কাজে আসে না।
যে যেখানে মোটামুটি সাবধানে থেকো। -{@ (3 (3
শুন্য শুন্যালয়
ক্রসফায়ার টা খুব সহজ সমাধান হয়ে যায় ভাবী। আফসোস হয় এটাকে স্বাধীন দেশ ভাবতে। তুমিও সাবধানে থেকো।
রেজওয়ান
জিসান ভাই এর সাথে আমিও একমত।
এদের মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিৎ পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে জনসম্মুখে।
শুন্য শুন্যালয়
ধর্ষনের শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদণ্ড তো আরো উঠিয়ে নেয়া হয়েছে ভাই :)উচিত কে বুঝবে আর
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
কুংফু শিখতে হবে আর সাথে রাখতে হবে ধারালো কিছু মনে থাকতে হবে সাহস।ভাবতে অপরাধীরা যত ভয়ংকর হউক তাদের ভয়ও বেশী।সুন্দর বাস্তবধ্মী লেখা। -{@
শুন্য শুন্যালয়
ভালোই তো সাথে সারাক্ষণ ধারালো কিছু রাখতে হবে। আর আমাদের বিচারব্যবস্থা ফিডার খাবে বাড়ি গিয়ে..
মোঃ মজিবর রহমান
আপুরে সব মেমরী ডিলিট না করে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ায় উত্তম। বামপন্থিদের মত। যেখানে অন্যায় সেখানে খুন।
শুন্য শুন্যালয়
আমাদের দেশের মানবাধিকার বামপন্থীদেরকে কে সামলাবে?
মোঃ মজিবর রহমান
কবর দিতে হবে।
নীলাঞ্জনা নীলা
আমার আর ভালো লাগেনা এসব বিষয়। লিখে পোষ্ট দেবার আগেই আরেক নতুন ঘটনা ঘটে যায়। এসব ধর্ষক পুরুষদের মনুষ্যত্ববোধ কী আদৌ জাগবে না? আমি মনে করি সব ধর্ষকদের নপুংসক করে দেয়া হোক। মৃত্যুদন্ড তো একেবারে মৃত্যু দেবে, নপুংসক করে দিলে তখন বুঝবে ধর্ষিতা নারীরা কীভাবে বেঁচে থাকে।
আপু শুভ বিজয়া। কেমন আছো?
ভালো রেখো। -{@
শুন্য শুন্যালয়
হ্যাঁ ভালো লাগেনা নীলাপু, এজন্যেই শিরোনাম অর্থহীন। এসব নিয়ে লেখাও আজাইরা।
প্রপার বিচার হলে নপুংসক করার দরকার পড়তো না, তাই পদ্ধতি বলেই বা কী হবে। যা খুশি হয় হউক।
মেয়েগুলোর জন্য শুধু সহানুভূতি।
আমি ভালো আছি নীলাপু। তুমিও ভালো থেকো।
নীলাঞ্জনা নীলা
শুন্য আপু তবুও “আড়ালে তার সূর্য হাসে।”—এই আশা।
ভালো রেখো।