আমেরিকার ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের চলমান জঙ্গি কার্যক্রমকে নিন্দা জানানো হয়েছে । এটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও দেশের চলমান রাজনৈতিক ধারায় এটি গুরুত্ব বহন করে। বিদেশী কুটনীতিক,রাষ্ট্র প্রধানদের সনদ, মতামত পক্ষে নেয়ার জন্য রাজনৈতিক দলসমূহ লবিং পর্যন্ত করেন। যা একটি স্বাধীন দেশের জন্য লজ্জার বিষয়।
যারা ওবামার ভারত সফরে কিছু একটা হবে,কিছু একটা হবে বলে আশাবাদি ছিলেন,আমেরিকার বর্তমান বিবৃতিতে তারা হতাশ হবেন নির্ঘাত।
কিছুদিন পূর্বে মার্কিন ছয় কংগ্রেস ম্যানের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বিবৃতি প্রকাশ এবং ভারতের বিজেবি পার্টি প্রধানের সাথে টেলিফোনের মিথ্যে দাবী আমাদের দেশের মান সম্মানকে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে।

সম্প্রতি আন্দোলনের নামে জঙ্গি তৎপরতার এক মাস পূর্তি আজঃ
এই একমাসে-
মৃত্যু- ৬০ জন ( যার অধিকাংশই আগুনে পোড়া )
গাড়ি পোড়ানো- ৫৭৯ টি
গাড়ি ভাংচুর – ৩৬৪ টি
পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে – ১৩৪৭ টি
রেলপথে নাশকতা – ৯ টি
লঞ্চ/ষ্টিমারে নাশকতা – ২ টি
পুলিশের সাথে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত- ২২

এমন আন্দোলন বাংলাদেশ দেখেছে কখনো? আন্দোলনে দলীয় কর্মীরা মিটিং মিছিল করে। জনসমর্থন পক্ষে নেয়। আন্দোলনের চুড়ান্ত পর্যায় জনতা রাস্তায় নেমে আসে। যেমন নেমে এসেছে, ১৯৫২, ১৯৬৯,
১৯৭১,১৯৯০ এ। জনতা রাস্তায় নেমে এলে পুলিশ সেনা বাহিনী কিছুই করতে পারেনা। তারাও একসময় মানসিক ভাবে আন্দোলনকে সমর্থন দিয়ে বসে। তারা তো এদেশেরই সন্তান।কারো বাবা মা ভাই বোন।

বর্তমানে যা হচ্ছে শ্রেফ জঙ্গি তৎপরতা। জেমবির জঙ্গি তৎপরতার সাথে এর কোন অমিল নেই। কোন অমিল নেই পাকিস্থানের এবং সিরিয়ার চলমান জঙ্গি তৎপরতার। চোরা গোপ্তা হামলা, রাতে নৈশ কোচে পেট্রল বোমা মেরে আগুন ধরিয়ে দেয়,বা মহাসড়কে হঠাৎ কোন গাড়িতে পেট্রল বোমা নিক্ষেপ, যার অসহায় শিকার হচ্ছে সাধারণ জনতা। যেমন হামলা করেছে সায়েখ রহমান,বাংলা ভাইয়ের জেএমবি। জেমবির বাংলা ভাই বা সায়েখ রহমানের সাথে বিএনপি প্রধানের বর্তমান ভূমিকার কোন পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছি না।

অথচ অপার সম্ভাবনাময় একটি দল হতে পারতো বিএনপিঃ
এই দলটির জঙ্গি দল রুপে আবিভূর্ত হওয়াতে শক্তিশালী একটা সমান্তরাল শক্তির অভাব দেখা দেবে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে। জামায়াত হয়ে যেতে পারে অত্যন্ত শক্তিশালী। লীগ বিরোধীরা একটি দল তো বেছে নেবে।সে দলটি হয় যদি জামায়াত তবে দেশের জন্য বিশাল অশুভ একটি বার্তা নিয়ে আসবে। আমেরিকায় যেমন ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিক, বৃটেনেই দুই দলের একদল ক্ষমতায় থাকে। বাংলাদেশেও বহুদল থাকলেও দেশের রাজনীতিতে আছে দুটি ধারা, একটি আওয়ামী লীগ অন্যটি আওয়ামী লীগ বিরোধী দল। লীগ বিরোধী বিএনপি দুর্বল হয়ে পরলে, জামাত হয়ে উঠবে লীগ বিরোধী দল। কারণ তাদের মত নিবেদিত প্রাণ কর্মী বাহিনী অন্য কোন দলে নেই।
এমনও হতে পারে,জামায়াত নিষিদ্ধ হলে জামায়াত দখল করে নেবে বিএনপিকে। লেভেল থাকবে বিএনপির, মধ্যে জামায়াত।

ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে সম্ভাবনা ও আশঙ্কা
অস্বীকার করার উপায় নেই, বিএনপির ব্যাপক জনসমর্থন আছে। সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে উপজেলা নির্বাচনে তারা অংশ নিয়েছিল।প্রথম পর্যায়ের অধিকাংশ উপজেলা নির্বাচনে তারা জয়ীও হয়েছিলো। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার টেলিফোনিক আলাপে সারা দিয়ে স্বরাষ্ট্র সহ অর্ধেক মন্ত্রী বিএনপির নিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি চরম ভুল করেছে বলেই আমার মনে হয়। বর্তমান মিডিয়ার যুগে নির্বাচনে কারচুপি করাটা অসম্ভবই ছিল। আর কারচুপি যদি হয়েই যেতো,তাহলে জনতা রাস্তায় নেমে আসতো বলেই আমার ধারনা।

মনে পরে সাত্তার সাহেব প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন। জামায়াতের কোন নেতা জানি মুজিব নগর সরকারকে অবৈধ বলায় ফুসে উঠেছিলো অন্যান্য দল সহ বিএনপি এবং ছাত্রদলও। একসাথে ছাত্রদলের সাথে শিবির তাড়িয়েছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

জনতাকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করার চিন্তা করা উচিৎ বিএনপি প্রধানের,জঙ্গিদের সাথে নিয়ে নয়। জনতার উপর আস্থা রাখতে হবে, যে জনতার উপর আস্থা রেখেছিলেন বংগবন্ধু, ভাষানী,শের-ই-বাংলা।
নইলে ?
বিএনপি প্রধান জেএমবির নেতা হতে পারবেন হয়ত,জাতীয়তাবাদী কোন দলের নয়।

১জন ১জন
0 Shares

৩৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ