চল, যাবি না ? তাড়াতাড়ি কর তোর তো আবার সাজতেই একঘন্টা লাগেরে। রেডি হয়ে নে, মা প্রায় রেডি। আমি কি পরবো বলতো ? পাঞ্জাবীই পরি নাকি ? কি বলিস কোনটা পরবো বলনা কালোটা না নীলটা ? নীলটাই পরি ওর প্রিয় রঙ কি বলিস ? কিরে কথা বলছিস না কেন ?
ভাইয়া তুমি কি একটু চুপ করবা ? আমি যাব না, তোমরাই যাও।
চুপ করে থাকতে পারছি নারে। চুপ করে থাকলে দম বন্ধ হয়ে আসছে। এর থেকে কথা বলি এই ভাল। চল চল তুই খুব ভাল করেই জানিস তুই না গেলে ও অনেক কষ্ট পাবে।
ওর কষ্ট পাওয়া নিয়ে তোমার আর চিন্তা না করলেও চলবে, তোমার কষ্টের কথা তো সে একবারও ভাবেনি, তুমি কেন ?
ধুর পাগলি কাঁদিস না। আমার কোন কষ্ট হচ্ছে নারে। নে রেডি হয়ে নে তাড়াতাড়ি…
….. এত বিশদ বর্ণনায় না যেয়ে আসল কথায় আসি কি বলেন? রুনুর বিয়েটা শেষ পর্যন্ত হয়েই যাচ্ছে আজ। ভাবছেন রুনু কে ? আরে রুনু রুনু আমাদের সাদেকের রুনু। সেই রুনু যে সাদেক ছাড়া কিছুই বুঝত না, সেই রুনু যে বলতো সাদেকে ছাড়া বাঁচবে না, সেই রুনু যে সাদেকের দেখা করার জন্য কলেজ ছুটির দিনে সাদেকের বাসায় হাজির হয়ে ওর মাকে বলতো খালা তোমাকে দেখতে চলে আসলাম, সেই রুনুর বিয়ে আজকে। আর সাদেক ও রেডি হচ্ছে বিয়েতে যাবে বলে। অবাক হবেন না। সাদেক আসলে এমনই। অনেকটা পাথরের মত, নিজেকে অনুভূতিগুলো নষ্ট করে পাথর হওয়া সহজ কাজ নয়। ওর বাবা মারা যাবার পর থেকেই সাদেকের নতুন জীবন শুরু হয়। দুঃখ- কষ্টের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই সবার জীবনেই আসে, সাদেকের দুঃখ সাদেকেরই থাক। আমরা বরং রুনুর সুখের কথা বলি।
পাড়ার মধ্যে সব থেকে বড় বাড়ি যেটা বিশাল বাগান দিয়ে ঘেরা ওই বাড়িটা আজকে নতুন রূপে সেজেছে। বাড়ির একমাএ কন্যার বিয়ে বলে কথা, মেয়েটা অনেক লক্ষ্মী। পাড়ার সবাই তাকে অনেক পছন্দ করে। বিয়ে করছে বাবার ইচ্ছাই। বিয়েও হচ্ছে অনেক বড় বংশে, ছেলে আমেরিকাতে থাকে, গাড়ি বাড়ি হেন তেন আরও কত কি। বড়োলোকদের বড় বড় কতা লিখতে গেলে অনেক বড় হয়ে যাবে কাহিনী। আসুন সংক্ষেপে শেষ করি।
রুনুর বিয়েটা হয়ে গেল। বিয়ের কিছু দিন পরই ওর বর ওকে নিয়ে উড়াল দেয়…
সাদেক ও বিয়ে করল কয়েক বছর পর… বউ তার অনেক খেয়াল রাখে… বউ বাচ্চা আর মাকে নিয়ে সে অনেকটা সুখী। বেশ ভাল একটা চাকরিও করছে এখন। বোনের বিয়েটা বোনের পছন্দের ছেলের সাথেই দিয়েছে। সব কিছুই ভালই চলছে তবুও কি যেন নেই। পাড়ার বড় বাড়িটা পুরটাই খালি, শুধু কিছু সৃতির বসবাস সেখানে…
রুনু সুখী হয়েছিল কিনা জানা যায়নি।
হয়তো হয়েছিল, সময় সব ক্ষত পূরণ করে দেয় …
১৩টি মন্তব্য
শিশির কনা
কিছুটা শুন্যতা থেকেই যায়
কিছু হাহাকার থেকেই যায়
ভালো লেগেছে ।
সুখী মানুষ
শুন্যতা না থালে পূর্ণতার মূল্যায়ন থাকে না………।
ধন্যবাদ
আদিব আদ্নান
আপনি অনেক সহজে বাস্তবতা তুলে ধরেন ।
হয়ত ক্ষত পুরন হয় বা না ,
আমাদের জানা হয় না বা জানিও না ।
সুখী মানুষ
চষ্টা করি সবসময় ……
ধন্যবাদ 🙂
প্রজন্ম ৭১
(y) (y)
সুখী মানুষ
🙂 🙂
রাইসুল জজ্
🙂 🙂 🙂
সুখী মানুষ
😀 😀 😀
বনলতা সেন
কিছু ক্ষত কোন সময়ই পুরন হয় না ।
সুন্দর লিখছেন ।
জিসান শা ইকরাম
সবাই হয়ত সুখি হয়েছিল
অথবা বলা যায় , মানুষ এদের সুখি দেখেছিল
হয়ত কষ্টটা কাউকে বুঝতেই দেয়নি রুনু আর সাদেক
তারপরেও জীবন বহতা নদী
চলছে —
ভালো লেগেছে ।
বড় গল্পটি কিন্তু এখনো পড়তে পারনি 🙂
লীলাবতী
কত কষ্টের আগুন ছাই ছাপা পরে থাকে , ভালো লিখেছেন ভাই । মনে হয় যেন বাস্তব ।
ছাইরাছ হেলাল
বেশ অল্প কথায় সুন্দর করেই কষ্ট কষ্ট ভাবটি ধরে রাখতে
সক্ষম হয়েছেন ।
ভাল হয়েছে লেখা ।
মিসু
মিতা নুরকে কতই না সুখি ভাবতাম , তার হাসি মাখা মুখ দেখে । এভাবেই সুখি থাকি আমরা ।