হঠাৎ তন্বীর মধ্যে এক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেলো। তন্বী যেন উঠতে, বসতে, ঘুমাতে তমাল কে অনুভব করতে লাগলো। একদিন স্বপ্নে তমালকে আপন করে পেলো। তন্বী নিজেকে ভ্রম বলে সান্তনা দিলো। তন্বী যেন ঘোরের মধ্যে চলে গেলো। ভাবলো হয়তো কথা বলতে বলতে , ওর সবকিছু নিয়ে ভাবার কারণেই এমন হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়বার যেদিন স্বপ্নে দেখলো সেদিন কেমন জানি তন্বী চঞ্চল হয়ে উঠল । কিন্তু তমালকে সে এ কথা কিভাবে বলবে? না কোনোভাবেই বলা যাবেনা তাহলে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ছেদ ঘটতে পারে, হয়তো তমাল ভাববে তন্বী এসব ভাবে বলেই এমনটি হয়েছে। তন্বী এটাও ভাবছিলো যে, ‘তমাল সব জেনে যদি তাকে বাজে ভাবে বা তন্বীকে ব্যবহার করতে চায়।’
কিন্তু হঠাৎ করে একদিন ওরা কথা বলতে বলতে একটু আবেগী হয়ে গেছিলো সেদিন তমালের কৌতুহল মেটাতে গিয়ে ,স্বপ্ন দেখার কথা বলে ফেললো। তমাল বললো,’তুমি এটা আগে বলোনি কেন? তুমি নিশ্চয়ই আমাকে নিয়ে এসব ভেবেছো?’ তন্বী বললো,’না। আমি নিজেও বুঝতে পারলাম না যে কেন এমনটা দেখলাম!’ তমাল বললো, ‘বাদ দাও। এসব ভেবে মন খারাপের মানে হয় না। তারচেয়ে আমরা বন্ধুত্ব নিয়েই থাকি। দু’জনের জন্যই সেটা ভালো হবে।’ তন্বী ও সেটাই মেনে নিলো। এভাবেই আবারো কিছুদিন ভালোভাবে সময়টা পার করলো কথায় কথায় ।
কিন্তু তন্বী এবার বুঝতে পারলো , সে তমালের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছে। কারণ তমাল যখনই তার বৌয়ের কথা, ভালোবাসার কথা বলে তন্বী ভিতরে ভিতরে একটা জ্বলন, ঈর্ষা অনুভব করে। এটা সে বেশ বুঝতে পারে, এটা তার ভারী অন্যায় হয়েছে। কিন্তু সে কি করবে ভালোবাসা কি বয়স, সময়, ন্যায়-অন্যায় বুঝতে পারে না বুঝতে চায়? তন্বী কখনো তমালকে পাবেনা, সে চায় ও না তমাল তার জীবনে আসুক,তার পরিবার নষ্ট হোক তার জন্য। সে শুধু তমালের হৃদয়ে তার জন্য একটু ভালোবাসা চায়, তমালের বন্ধুত্ব, কথার ফুলঝুরিতে জড়িয়ে থাকতে চায়। তার একাকীত্বের ঘরে তমালের অস্তিত্ব পেতে চায়। সে পবিত্র এ ভালোবাসার মৃত্যু চায় না ।
কিন্তু তমাল তো পুরুষ মানুষ, তার উপর পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন-সে কিভাবে তন্বীকে দূরে ঠেলে দিবে? সে ওতো একাকীত্বের দাবানলে পুড়ছে। সামনাসামনি কেউ কাউকে দেখিনি তবুও যেন কত চেনা, আপন দু’জন দু’জনার। ভিডিও কলে দু’জন দু’জনকে কিস করলো। তন্বীর মনে হলো ‘এইতো সেই প্রেম, ভালোবাসা যার জন্য এতোদিন সে অপেক্ষা করেছে। দু’জনেই ব্যাকুল হয়ে উঠলো। কিন্তু কোথায় যেন একটা দেয়াল তন্বীর সামনে বাঁধা দিচ্ছে। তন্বী নিজেকে বোঝালো , না সে কিচ্ছু চায় না । সে শুধু তমালের পাশে থাকতে চায় সারাজীবন । শারীরিক সম্পর্কের বাঁধনে নয় – মনের বাঁধনে, আত্নার বাঁধনে সে তমালকে বেঁধে রাখতে চায়।
২৪টি মন্তব্য
হালিম নজরুল
শারিরীক সম্পর্ক নয়। আত্মার বন্ধনই চিরন্তন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সহমত। ধন্যবাদ ভাইয়া শুভ সন্ধ্যা
মহানন্দ
চমৎকার ভাবে কঠিন বিষয়টি সহজ ভাবে উপস্থাপন করেছেন। ভাল লেগেছে..।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ দাদা। ভালো লাগলো সুন্দর মন্তব্য পেয়ে। শুভ কামনা রইলো
ফয়জুল মহী
সাবলীল সুন্দর উপস্থাপন । ভালো থাকুন l
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। ভালো থাকবেন
রেহানা বীথি
ভার্চুয়াল সম্পর্ক অনেক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ফেলে মেয়েদের। চাই না তন্বীর তেমন কিছু হোক।
লেখা বেশ লাগছে আপু।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
একদম ঠিক । ধন্যবাদ আপু । ভালো লাগলো
ছাইরাছ হেলাল
এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক ও গতানুগতিক, গল্পে চমকের অপেক্ষা করছি।
দেখবেন দুম করে যেন আবার শেষ বলে ফেলবেন না যেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
সুপায়ন বড়ুয়া
সম্পর্কের টানাপোড়ন জেগে উটুক আত্নার বন্ধনে।
চালিয়ে যান দিদি।
শুভ কামনায়।
সুপায়ন বড়ুয়া
জেগে উঠুক
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকুন সবসময় শুভ কামনা রইলো
সাবিনা ইয়াসমিন
তন্বীর জন্যে কিছুটা চিন্তিত হচ্ছি। বয়স কোনো ব্যাপার না, ব্যাপার হলো ওর প্রথম প্রেম। প্রথম প্রেমে যেমন শুদ্ধতা-পবিত্রতা থাকে, পরবর্তী গুলোতে তেমন না-ও থাকতে পারে। তমালের প্রতি অকৃত্রিম আবেগ ওকে কোথায় নিয়ে যায় দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
শুভ কামনা 🌹🌹
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ আপু। দেখি কোথায় শেষ হয় এই অকৃত্রিম আবেগের। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা
আলমগীর সরকার লিটন
ভাল লাগতেছে সুপর্ণা দিদি
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা। ভালো থাকুন
কামাল উদ্দিন
ক্রমান্বয়ে ওরা নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে মনে হয়, দেখা যাক পরবর্তি পর্বগুলোতে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ ভাইয়া। অপেক্ষা করবেন জেনে খুশি হলাম। ভালো থাকুন
কামাল উদ্দিন
আপনিও ভালো থাকুন সব সময়।
প্রদীপ চক্রবর্তী
ধারাবাহিকভাবে বেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রথম প্রেমে অবগাহন তন্বী আবেগপ্রবণ তমাল।
দুজনের জন্য শুভকামনা রইলো।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকবেন শুভ কামনা রইলো
জিসান শা ইকরাম
তন্বী ভিতরে জ্বলন, ঈর্ষা এসে গিয়েছে!
তাহলে তো মরেছে তন্বী,
দুজন পরিনত মানব মানবীর মাঝে বন্ধুত্বটা একসময় আর থাকে না, তা প্রেমে রুপ নেয়।
দেখা যাক পরের পর্বে কি আছে।
গল্প আকর্ষনীয় হচ্ছে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ধন্যবাদ দাদা ভাই। এভাবেই পাশে থাকুন সবসময়। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য