রমজান মাস মানে সংযমের মাস। দীর্ঘ ত্রিশদিন পানাহার এবং যাবতীয় অপবিত্রতা-মিথ্যাচার-অনৈতিকতা থেকে নিজেকে বিরত রাখার মাস। এর সাথে যুক্ত হয় শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা, যা বরকতময় হিসেবে পরিজ্ঞাত। এখন এগুলোর মানে মোটামুটি জানলে/বুঝলেও খুব ছোটো বেলায় এসবের মানে তেমন একটা বুঝতাম না। তখন রোজার মানে যেটা বুঝতাম তা হলো ফজর আজানের আগে সেহেরি খেয়ে রোজার নিয়ত করে সারাদিন খাওয়া-দাওয়া বন্ধ রাখা, আর সন্ধ্যায় ইফতারের আগে নিয়ত পড়ে ইফতারি খাওয়া। এছাড়া সারাদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, তারাবীহ নামাজ আদায় করা। নামাজ কালাম ব্যাতিত রোজার পূর্ণ ফজিলত পাওয়া হয়না। কেমন করে পালণ করতাম সেইসব রোজার দিনগুলো তাই লিখবো…
* ছোট বেলায়: ছোট বেলায় প্রথম রোজা রেখেছিলাম যখন আমার বয়স ৯/১০। এর আগেও রেখেছি, দিনে তিনবার খেয়ে। প্রথম সব কিছুই স্মরণীয় হয়, তাই আমি প্রথম রাখা পূর্ণ রোজাটিকেই গোনায় ধরি। আমাদের ছিলো যৌথ পরিবার। আমার দাদা-দাদী মারা গিয়েছিলেন আব্বার ছোট বেলাতেই। একটা ফুফু ছিলেন, বিয়ের পর সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে তিনিও মারা গিয়েছিলেন। তাই আব্বা আমাদের নিয়ে নানা-নানির সাথে এক পরিবারে থাকতেন। আমরা আমাদের নানা-নানি, মামা-খালাদের আদর যত্নে বড়ো হয়েছি।
প্রথম রোজা রাখার দিনে অন্যান্য রোজার মাসের মতোই পরিবারের সবার সাথে আমি, আমার ছোট ভাইবোন, মামাতো-খালাতো ভাইবোনেরা সবাই মিলে সেহেরি খেয়েছিলাম। আমাদের পরিবারে ওটাই নিয়ম ছিলো। সেহেরি এবং ইফতারে ছোটদের অবশ্যই সাথে রাখা। সেদিন রোজার নিয়ত করে সেহেরি খেলাম, মার সাথে ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে গেলাম। ভোর ছয়টায় ঘুম থেকে উঠার পরই দেখি আমার প্রচন্ড ক্ষিধে পেয়ে গেছে। মার কাছে গিয়ে বললাম ক্ষিধে লাগার কথা, মা বললেন
– এটাতো হবেই। রোজার মানেই হলো ক্ষিধে আর তৃষ্ণার কষ্টকে অনুভব করা। তুমি চাইলে খাবার খেয়ে রোজা ভাঙতে পারো।… আমি বললাম ওওও এই কথা! আচ্ছা দেখি তাহলে, কতক্ষণ থাকতে পারি। এটা বলে আমপারা হাতে নিয়ে মসজিদে চলে গেলাম।
আমি ছোটবেলায় আমাদের এলাকার মসজিদে আরবী পড়া শিখতে যেতাম। আমার মা আমার জন্যে বাড়িতে একজন হুজুর রেখেছিলেন, কিন্তু একা একা তার কাছে বসে পড়তে আমার ভালো লাগতো না। তাই এলাকার আমার বয়সি আরও ছেলেমেয়েদের সাথে আমি মসজিদে গিয়ে আরবী পড়া শিখতে যেতাম। এমনিতে প্রতিদিন বিকেলে পড়ানো হতো, কিন্তু রোজার মাসে সকাল-বিকেল দুইবেলা পড়াতো।
মসজিদে যাওয়ার পর হুজুর আমাদের পড়া দিলেন। পড়ার ফাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আমরা কে কে রোজা রেখেছি। অনেকের সাথে আমিও হাত তুলে জানালাম, আমি রোজাদার। শুনে হুজুর হেসেছিলেন, আর বললেন রোজাদাররা অল্প হিসেবেই বেহেশতে যায়। তাদের পাপ গুলো রোজার মাধ্যমে কাটাকাটি হয়। আমিতো শুনে মহা খুশি! ভাগ্যিস ক্ষিধের ঠ্যালায় তখন রোজা ভাঙিনি।
বাড়িতে ফিরে খেলাধুলা, এটাসেটা করে দুপুর হলো। তারপর এলো গোছলের টাইম। আমার থেকে একটু বড়ো এক দূর সম্পর্কের খালা থাকতো আমাদের পাশের বাড়িতে। কি মনে করে সেও এলো আমার সাথে গোছল করতে। দুজনেই ঢুকলাম। আমি অজু করে মগ ভরে পানি নিয়ে ঝুপঝাপ করে গায়ে ঢালছি, হটাৎ সে গেলো রেগে। আমার দিকে কড়া চোখে তাকিয়ে বললো, তুই কি একটু থামবি? আমি থতমত খেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে? তোমার গোছল করা শেষ? বললো, না। তারপর সে পানির কলে মুখ লাগিয়ে ঢকঢক করে পানি খেতে শুরু করলো! আমি বললাম, তোমার তো রোজা ভেঙে গেছে! সে বললো, না ভাঙেনি। গোছলের সময় পানি খেলে রোজা ভাঙে না! চাইলে তুইও খেতে পারিস।
সত্যি বলতে আমার তখন খুব ইচ্ছে করছিলো, আমিও একটু পানি খাই। কিন্তু বাথরুমের কল থেকে পানি খাওয়ার ব্যাপারটা আমার খুব ঘিনঘিনে লাগছিলো। বললাম, থাক খাবো না।
বিকেলে গেলাম আবার মসজিদে। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে দেখি, হুজুর আমাদের দিকে তাকাচ্ছেন, আর মিটিমিটি হাসছেন। এক সময় জিজ্ঞেস করলেন, এখন কে কে রোজা আছো? আমি শিগগির হাত উঁচু করলাম। আশেপাশে তাকিয়ে দেখি সকালের চেয়ে এখন হাত কমে গেছে! আমার ঐ খালা অবশ্য হাত তুলে ছিলেন।
আমি হুজুরকে জিজ্ঞেস করলাম, হুজুর গোছল করার সময় পানি খেলে কি রোজা থাকে? সে আমার দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন, না থাকেনা। আমি তখন বেদম খুশিতে লাফিয়ে উঠলাম, ওয়াও! আমার রোজা ভাঙেনি। এই বলে খালার দিকে তাকিয়ে হাহাহা করে হাসি দিলাম, সাথে বাকিরাও। হুজুর যা বোঝার বুঝে সেও হাসতে লাগলেন। তিনি কখনো শব্দ করে হাসতেন না। অল্প হাসিতেই তার মুখটা উজ্জ্বল হয়ে যেত। আমি মাঝে মাঝে তাকে জিজ্ঞেস করতাম :
– হুজুর, বেহেশতে গিয়ে কি আপনিই আমাদের পড়াবেন?
তিনি হাসিমুখে জবাব দিতেন, আল্লাহ পাক চাইলে সেখানে আমাদের দেখা হবে। তোরা আমার জন্য দোয়া কর, আমিও করি।
আমাদের মসজিদের ঐ হুজুর তখনকার সময় কি জানি একটা চাকরী করতেন। পাশাপাশি মসজিদে আজান দেয়া, ইমামতি করার সাথে সাথে আমাদের পড়াতেন। অত্যন্ত সৎ এবং ইমানদার ব্যাক্তি ছিলেন তিনি। আমাদের মানে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের খুব ভালোবাসতেন। প্রতি ঈদের দিন আমরা নতুন জামাকাপড় পরে তার বাসায় যেতাম। তিনি আমাদেরকে সেমাই খাওয়াতেন, সাথে সবাইকে নতুন দুই টাকার নোট সালামি দিতেন। এখনকার হুজুরদের আমরা যেমন বিলাসবহুল জীবন যাপন করতে দেখি, তিনি মোটেও তেমন ছিলেন না। বরঞ্চ তাকে আমরা দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে দেখেছি। তিনি কতটা ধার্মিক ছিলেন তার উদাহরণ তিনি তার কর্ম এবং পারিবারিক জীবনে দিয়েছেন।
তিনি আজ বেঁচে নেই। বর্তমান সময়ে অনেকেই আমরা বুঝে নিই হুজুর মানেই লোভী, লম্পট, সুবিশাল অ্যাপার্টমেন্ট-ফ্লাটের মালিক বা এলাকার প্রভাবশালী সুদখোর আর মাতালদের দোসর,, তখন এসব হুজুরদের নামে চাইলেও কেউ কুৎসা রটাতে পারতো না। কারণ তাদের সততা, ধর্মভীরুতা আর ঈমানের বলেই তারা সাধারণ সমাজে মাথা উঁচু করে চলতেন। আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করি রাব্বুল আলামীন যেন আমার শিক্ষাদাতাকে বেহেশতের সম্মানিত আসনে জায়গা করে দেন।
যা বলছিলাম, বিকেল চারটায় বাড়ি ফেরার পর আমি ক্ষুধা পিপাসায় একেবারেই আধমরা হয়ে গিয়েছিলাম। সামনে যা পাবো সব খেয়ে ফেলবো, এমন দশা হয়ে গিয়েছিলো। আসর নামাজের পর অবস্থা হলো আরও ভয়াবহ। ঐ সময়ে আমাদের বাড়ি সহ আশেপাশের সব বাড়ি থেকে নানারকম ইফতার তৈরীর সুঘ্রাণ আসা শুরু হলো। আমি চুপচাপ আমাদের বাড়ির উঠোনের পেয়ারা গাছের ডাল ধরে ঝুলছিলাম। গাছ ভরা পেয়ারা কিন্তু খেতে পারিনি। সারাদিন না খেয়ে রাখা রোজাটা ভাঙতে খুব মায়া লাগছিলো।
মা ইফতার বানাচ্ছিলো, আমায় একটি টাকা হাতে দিয়ে বললেন, সময় হয়ে আসছে শিগগির গিয়ে বরফ কিনে আনো। নয়তো শরবত বানাতে দেরি হয়ে যাবে। যদিও ঐ কাজটা বেশিরভাগ দিনে আমার আব্বা করতেন। কিন্তু যেদিন তার অফিস থেকে ফিরতে দেরি হতো, তখন আমি করতাম।
তখন সবার বাড়িতে টিভি কমবেশি থাকলেও ফ্রিজ ছিলো হাতেগোনা কয়েকজনের বাসায়। এছাড়া ধনী-গরীব সবার ভরসা ছিলো কেনা বরফের উপর। এলাকার দারোগা থেকে শুরু করে পান বিক্রেতা, সবাই ইফতারের শরবত তৈরীর জন্যে মোড়ের মাথা থেকে প্রয়োজনীয় বরফ কিনে নিতো। এতে লজ্জার কিছু ছিলো না। যারা বিক্রি করতেন তারাও অবস্থাসম্পন্ন ঘরের ছিলেন। বিভিন্ন ক্রেতাদের চাহিদা মতন বরফের বিশাল খন্ড টাকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে ধানের তূস আর কঁচু পাতায় মুড়ে বিক্রি করা হতো। ঐসব বিশাল আকারের বরফ খন্ড গুলোর নাম ছিলো পাহাড়ি বরফ। আমি তখন ভাবতাম, ঐ বরফ গুলো বরফের পাহাড় কেটে আনা হয়!
টুকরো বরফ এনে পরিস্কার পানিতে ধুয়ে লেবু, চিনি, ইসুবগুল, কখনো বা বেল গুলানো পানিতে ডুবিয়ে রাখা হতো। ইফতারের ঠিক আগে আগে সেটা গলে গিয়ে শরবত হয়ে যেত শীতল অমৃতের মতো।
বরফ এনে দেয়ার পর মা আমাকে পাঠালেন পাশের বাড়িতে ইফতার দিয়ে আসতে। তখন আশেপাশের বাড়িতে ইফতার পাঠানো অত্যন্ত সামাজিক আনন্দের বিষয় ছিলো। আমার পা যেন আর চলছিলো না, তবুও গিয়ে দিয়ে এলাম। এর মাঝে কতবার যে দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে ছিলাম! এমনিতে ঘড়ির কাঁটা যেন ঘুরতোই না। কিন্তু একেকটা কাজ শেষ করে ঘরে ফিরে এলেই দেখতাম ঘড়ির কাঁটা অনেক দূর এগিয়েছে!
এক সময় চলে এলো সেই কাঙ্ক্ষিত মূহুর্ত। মেঝেতে পাটি বিছিয়ে সবাই গোল হয়ে বসে আজানের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ কানে এলো মাগরিবের আজানের সুমধুর ধ্বনি! আকাঙ্ক্ষার আজানের সুর কতো যে মধুর হয় তা সেইদিন উপলব্ধি করেছিলাম। অবশেষে ইফতারের দোয়া পড়ে ইফতার খেয়ে আমার জীবনের প্রথম রোজাটি সম্পূর্ণ হয়েছিলো।
** রোজা রাখা অবস্থায় মা আমাকে এত কাজ কেন দিয়েছিলেন পরে জিজ্ঞেস করেছিলাম। মা বলেছিলেন রোজার সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হয়। তাহলে রোজার কষ্ট কমে যায়, আর সময়ও দ্রুত পার হয়। আমি এই বড়ো বেলাতে এসে এখন মায়ের কথার প্রকৃত অর্থ বুঝেছি 🙂
★ ছোটবেলার স্মৃতিময় রোজার লেখাটা একটু বেশি বড়ো হয়ে গেলো। তাই রোজা-বর্তমানে,লিখবো পরবর্তী পর্বে 🙂
* ছবি – নেট থেকে।
২৯টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
বেশ ভালো লাগলো ।
সাবিনা ইয়াসমিন
অনেক ধন্যবাদ মহী ভাই। পবিত্র মাসের শুভেচ্ছা রইলো। ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
নিতাই বাবু
আপনার ছোটবেলার রোজা রাখার গল্পটা বেশ ভালো লেগেছে, দিদি। আমাদের ধর্মীয় মতে রোজা হলো উপবাস থাকা। মানে ভোররাতে খেয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার না। পূজো বা অনেকরকম ধর্মীয় উৎসবে এইরকম উপবাস থাকার নিয়ম আমাদের মধ্যেও আছে। কিন্তু ইসলাম ধর্মের মতো এমন লাগাতার একমাস পর্যন্ত রোজা বা উপবাস আমাদের মধ্যে নেই বা কেউ রাখেও না। যা আছে, তা কেবল কয়েকটি উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই নিয়ে সোনেলায় কিছু লেখার ইচ্ছে আছে। যদি সময় এবং সূযোগ পাই, তবে হুট করে লিখে পেলবো, দিদি।
আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ। আশা করি এই সময়ে সপরিবারে ভালো থাকবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
যে ধর্মের যেই নীতি, ধর্ম পালন করতে হলে রীতিনীতি পালন করতে হয়। আপনি লিখবেন শুনে খুশি হলাম দাদা। সময় করে লিখুন, আপনার জীবন ঘনিষ্ঠ লেখা সমূহ পড়তে বরাবরই আমার ভালো লাগে।
ভালো থাকুন, সুস্থ্য এবং নিরাপদে থাকুন।
শুভ কামনা 🌹🌹
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপু খুব ভালো লেগেছে। আপনি যে রোজাটা রাখতে পেরেছিলেন ঐ বয়সে সেটা সত্যি ভালো লাগলো। হুম কাজের মধ্যে থাকলে ক্ষুধার কষ্টটা অতটা টের পাওয়া যায় না। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা রইলো। শুভ সকাল
সাবিনা ইয়াসমিন
হ্যা দিদি সেদিন পেরেছিলাম বলেই আজ সেদিন নিয়ে লিখতে পারলাম 🙂
শুভ কামনা অবিরত 🌹🌹
ছাইরাছ হেলাল
যাদুকর না হলে এত্তগুলো শব্দ কী করে জড়ো করে! এক মাত্র আল্লাহ-ই তা ভাল জানেন।
বুঝছি, রোজায় ধরে নাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
রোজা আমাকে ধরেনি, কিন্তু বুঝতে পেরেছি আপনাকে ভালো করেই চেপে ধরেছে।
ফাঁকিবাজি কমেন্ট 😡😡
সুপায়ন বড়ুয়া
প্রথম রোজার অভিজ্ঞতাটা বড়ই আনন্দদায়ক
মনে থাকবে সারাজীবন। প্রতিবেশীদের ইফতার দেয়া
বাঙালী সংস্কৃতিরই অংশ।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
ঠিক বলেছেন দাদা। জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতার সব কিছুই স্মরণীয় হয়, হোক আনন্দের বা কষ্টের।
প্রতিবেশীদের সাথে আনন্দ ভাগ করার মাঝেই উৎসবের পূর্ণ সার্থকতা থাকে। আমাদের দেশের এই সংস্কৃতি সব ধর্মাবলম্বীদের মাঝে দেখতে পাওয়া যায়।
সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ দাদা।
শুভ কামনা জানবেন 🌹🌹
রেহানা বীথি
আহারে, একে রোজা, তাই এত কাজ, ছোট্ট মেয়েটা সইবে কেমন করে! তবে শেষ পর্যন্ত রোজাটা পূর্ণ হয়েছিল জেনে ভালো লাগলো খুব।
খুব সুন্দর লিখলেন আপনার স্মৃতিকথা।
ভালো থাকুন সবসময়।
সাবিনা ইয়াসমিন
সেদিনের ছোট্ট মেয়াটার প্রতি এত মায়া রাখার জন্যে অনেক ধন্যবাদ বীথি আপু।
আপনার জন্য রইলো ভালোবাসা ও শুভ কামনা
❤❤
ইঞ্জা
আপনার পাহাড়ি বরফের কথা শুনে আমার স্মৃতি জাগ্রত হয়ে গেলো, তলহম তুষের নিচেভ্রাখা বরফ গুলোকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম আর ভাবতাম এতো বড় বরফ তো আমাদের ফ্রিজে হয়না, তাহলে কোথায় হয়?
আমিরা অবস্থাপন্ন পরিবার থাকায় আমাদের ঘরে পেট মোটা সিঙ্গেল ডোরের সিঙ্গার ফ্রিজ ছিলো, আশেপাশের অনেকেই বাচ্চাদের পাঠাতো বরফের জন্য, আম্মাকে দেখতাম টিফিন ক্যারিয়ারের এক একটা টিফিনে করে বরফ জমাতেন শুধু মাত্র দেওয়ার জন্য।
অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেলো আপু।
আপনার লেখাটিও ছিলো সেইরাম স্মৃতি বহুল।
সাবিনা ইয়াসমিন
আপনি লেখার আহবান করেছেন, না লিখে পারি!
ভালোই হলো পাহাড়ি বরফের স্মৃতিকে আরেকবার ঝালাই করে নিলাম।
অনেক ধন্যবাদ ভাইজান,
শুভ কামনা 🌹🌹
ইঞ্জা
ধন্যবাদ আপু, শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা অশেষ।
প্রদীপ চক্রবর্তী
এতো অল্প বয়সে রোজা রাখতে পারা সে তো এক আনন্দদায়ক।
খুবি ভালো লাগলো সুন্দর স্মৃতি কথা।
শুভকামনা দিদি।
পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো কাটুক সিয়াম সাধনার মাস সংযমের মাস মাহে রমজান।
ভালো থাকুক সবাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
ধন্যবাদ প্রদীপ। তুমিও তোমার প্রথম উপবাসের স্মৃতিটা আমাদেরকে শোনাও। তোমার কথাগুলো আমরাও জানতে চাই।
খুব ভালো থেকো, শুভ কামনা 🌹🌹
আরজু মুক্তা
হুম বুঝলাম রোজা ভাঙ্গেননি। ইফতার করে নিশ্চয় কাহিল হয়েছিলেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
নাহ, ভাঙেনি। ইফতার করে কাহিল হয়েছিলাম কিনা মনে নেই,, আমি তো তখন কত ছোট ছিলাম। এত কথা কি মনে থাকে? 😐😐
আতা স্বপন
বাহ! অবেশেষে রোজাটা হল তাহলে। কত কাটখর না পোড়াতে হয়েছে। আসলে প্রথম রোজা রাখার বেপারটাতেই অন্যরকম থ্রিলিং। আমার অবশ্য প্রথম রোজা রাখার বিষয়টা তেমন মনে পড়ে না। একটু মনের উপর চাপ দিয়ে দেখতে হবে মনে পড়ে কিনা? এই লেখাটার সাইট এফেকট হিসেবে।
ধন্যবাদ সংগ্রামী রোজাদারকে।
সাবিনা ইয়াসমিন
বাহ! সুন্দর বলেছেন বুতা ভাই। এখন মনে হচ্ছে সেদিন সত্যিই সংগ্রামী রোজাদার হয়ে গিয়েছিলাম।
মনকে ভালো মতো চেপে ধরুন, সব মনে আসবেই। তারপর ঝটপট লিখে আমাদের পড়তে দিন আপনার প্রথম রোজার স্মৃতি কথা 🙂
ভালো থাকুন,
শুভ কামনা 🌹🌹
জিসান শা ইকরাম
এত চমৎকার ভাবে স্মৃতিকথা কিভাবে লেখে তাই ভাবছি। উপস্থাপনার গুনে তো ঘটনা সমুহ দেখতে পেলাম। ছোট বেলায়ই সংকল্পে৷দৃঢ় ছিলেন তা বুঝতে পেরে।
পাহাড়ি বরফ আমাদের এদিকে ছিলো না। টিউবওয়েল এর ঠান্ডা পানিই ছিলো ভরসা।
এমন হুজুর আসলেই বিরল আজকাল। তার প্রতি শ্রদ্ধা রইল।
ভালো থাকুন আপনি।
শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
হু, দৃঢ় সংকল্প করার অভ্যাসটা ছোটবেলা থেকেই হয়েছে। শুদ্ধ ইচ্ছেকে বাস্তবায়িত করা শিখতে পেরেছি।
সম্পূর্ণ লেখা পড়েছেন সেটা বুঝতে পেরেছি। ব্লগে খুব কম লেখকরাই অন্যের লেখা এভাবে বিস্তারিত পড়েন। এত সুন্দর উৎসাহ মুলক কমেন্ট দেয়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো থাকুন,
সুস্থ্য এবং নিরাপদে থাকুন,
শুভ কামনা 🌹🌹
তৌহিদ
লেখাটি পড়ছি আর হাসছি। এত সুন্দর করে স্মৃতিকথা লিখেছেন মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না আপু। ছোটবেলায় প্রথম রোজার স্মৃতি আমার মনে নেই। তবে গোসলের সময় টুক করে পানি খেতাম এটা মনে আছে।
হুজুর বেহেশতে গিয়েও আরবী শেখাবেন এই কথাটির মধ্যে একটা সারল্য আছে। নিষ্পাপ মনে কত কত কথা জন্মায়। আহারে আবার যদি ছোটবেলায় যেতে পারতাম!
দারুণ লিখেছেন আপু। ধন্যবাদ আপনার প্রাপ্য। শুভকামনা সবসময়।
সাবিনা ইয়াসমিন
ছোট বেলায় আমি মনে করতাম বেহেশতে গিয়েও পড়াশোনা করতে হবে। ভাবনা যেমনই হোক, আসলে ছোটকালেই মানুষ ভালো থাকে।
চমৎকার কমেন্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই।
শুভ কামনা রইলো 🌹🌹
শিরিন হক
বরফ, পানি,সব মিলে গেেলো কিছুটা হুজুরের ইমামতি ছাড়ার শিক্ষা আজকের হুজুরদের নেই এটাই প্রকৃৃত শিক্ষা।
হাসলাম বেশ চমৎকার লিখেছেন আপু
সাবিনা ইয়াসমিন
ওয়াও, আসলেই মিলে গেছে!! তাহলে আর দেরি কেন? আপনিও লিখুন আপনার রোজার স্মৃতিমালা।
আসলেই, এখন আর তেমন হুজুর খুঁজে পাইনা। এখনকার হুজুরের মধ্যে ন্যায়ের শিক্ষাটা ক্রমেই নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে।
মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ শিরিন।
শুভ কামনা রইলো 🌹🌹
হালিম নজরুল
চমৎকার উপস্থাপন, একরাশ মুগ্ধতা।
সাবিনা ইয়াসমিন
অনেক ধন্যবাদ নজরুল ভাই।
আপনিও আপনার প্রথম রোজার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করুন প্লিজ। আমরাতো আপনার আপনজন, আমাদের কেন জানাচ্ছেন না!!