রচনাঃ ছাগু

সিনথিয়া খোন্দকার ৮ জুলাই ২০১৪, মঙ্গলবার, ০১:৩১:৫৮পূর্বাহ্ন বিবিধ ২৮ মন্তব্য

ভূমিকাঃ ছাগু একটি বিনুদুনমুলক প্রানী। তাদের দুটি হাত দুটি পা ও একটী বিচি আছে। তাদের গলা থেকে উপরের যে অংশটী দেখা যায় তা দৃশ্যত তারা বহন করলেও এগুলোর নিয়ন্ত্রন থাকে অন্য কোনও বুড়া ছাগুর কাছে। ছাগু মোটামুটি সোজা হয়ে হাঁটতে পারে এবং মাঝে মধ্যে ম্যা ম্যা রবে মুখরিত হয়ে শুন্যে লাফালাফিও করে থাকে।

প্রকারভেদঃ ছাগুর প্রকারভেদ নির্ভর করে শুধুমাত্র তাদের রঙের উপর। মুলত স্বভাব চরিত্র ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্যে তারা অভিন্ন। নিম্নে বিভিন্ন প্রকারের ছাগুর বর্ণনা দেয়া হলঃ

১- ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট বা জামাতি ছাগুঃ এদের নাম ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট হলেও এদের উৎপত্তিস্থল পাকিস্তান। ছোটবেলা থেকেই তাদেরকে মওদুদীবাদ নামক এক ছাগধর্মে দীক্ষিত করা হয়। চুইদি হুগুরের পুরীষ এদের প্রিয় খাদ্য। এদের চোখের জ্যোতি অতি উজ্জ্বল। কোনরকম টেলিস্কোপ বা সহায়ক যন্ত্র ছাড়াই এরা বাংলাদেশ থেকে চাঁদের বুড়ীকে টেবিলের উপর ম্যাশিন থেরাপি প্রদানরত চুইদি হুগুরকে খালি চোখে স্পষ্ট দেখতে পায়। তবে এদের হজমশক্তি খুব নির্দিষ্ট। কাঠালপাতা ছাড়া এরা কিছুই হজম করতে পারে না। এমনকি পোলিও টীকা বা ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেয়েও তাদের শিশুদের পাকস্থলী বিস্ফোরিত হয়ে শতাধিক ছাগু নিহত ও কুটী কুটী ছাগু আহত হয়।

২- গোলাপী ছাগুঃ বিনোদনের জগতে এরা অতুলনীয়। কালো ছাগু ও গোলাপী ছাগু খুব কাছাকাছি বাস করে এবং এদের মধ্যে সংকর উৎপাদনের হার অত্যাধিক। গোলাপী তাদের প্রিয় রঙ। মুলতঃ শুধু গোলাপী রঙ প্রীতির কারনেই তারা গোলাপীছাগু হয়ে উঠে। এরা কালো ছাগুর চেয়ে বোকা ধরনের হয়। অবসরে খালকেটে কুমির আনা তাদের প্রিয় কাজ। তাদের কোনও মতবাদ নাই, তবে তারা সম্প্রতি যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ইতিহাস রচনা করার কাজে মনোনিবেশ করেছে। কালো ছাগুরা প্রায়ই তাদের মাথায় রেখে কাঠালপাতা খেয়ে শুকনা ডালগুলো ফেলে যায়। গোলাপী ছাগুরা তাই চিবিয়ে দূর্বার আন্দোলন করে থাকে। এইসব কাঁঠালের ডাল ও বাকলের লোভে গোলাপী ছাগুরা কখনই কালো ছাগুদের সঙ্গ ছেড়ে যায় না। গোলাপী ছাগুদের অভিধানে সবচে বেশি সংখ্যক অর্থবোধক শব্দের নাম “অবৈধ”।

৩- লাল ছাগুঃ এদেরকে প্রচলিত ভাষায় “খাসী” বলা হয়। কারন ম্যা ম্যা শব্দ করতে শেখার সাথে সাথে তাদের সাকুল্যে একটী বিচিও কেটে নেওয়া হয়। এবং তারা কালো ছাগুকে এই বিচির কারনে হিংসা করে থাকে। তবে একই গোত্রের হওয়ায় তাদেরকে বিভিন্ন উপলক্ষে প্রায়ই একত্রে হাস্যোজ্জল অবস্থায় দেখা যায়। এই প্রজাতির একটি সাধারন বৈশিষ্ট্য হল এরা প্রচলিত নিয়ম ও আইনের ধার ধারে না বলে শীতকার করতে পছন্দ করে। তারা প্রকাশ্যে কালো ছাগুকে নাশতায় খেয়ে নেবার কথা বলে কিন্তু এদের ঘরে গেলে ঠিকই কাউকে না কাউকে চুইদি হুগুরের বয়ান দিতে দেখা যাবে। যৌনতা এবং মাদক কে ফ্যাশনের প্রতীক হিসেবে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ায় লাল ছাগুদের অবদান অনস্বীকার্য।

৪- মাল্টীকালার ছাগুঃ এই প্রজাতির ছাগু সবচে বেশি শুদ্ধ ভাষায় কথা বলে থাকে। এরা একইসাথে কলা ছোলকা সহ খাওয়া এবং ছোলকা খুলে খাওয়ার পক্ষে যুক্তি দিতে পারেন। এদেরকে বদমাশ ছেলেরা “সুশীল” বলে গালি দিয়ে মজা পেয়ে থাকে। পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা এই প্রজাতির ছাগুদের প্রথম পছন্দ।

উপকারিতাঃ ছাগু অত্যন্ত উপকারী প্রানী। এরা বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষকে বিনোদন দিয়ে থাকে। মানুষের বেলায় তারা পরমতসহিষ্ণূতা বিষয়ক জ্ঞান প্রদান করে থাকে এবং নিজেরা নিজেদের পুটূতে অমানবিক অত্যাচার মোকাবেলা করে চরম সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে পারে।

অপকারিতাঃ ছাগুর অপকারিতা অসীম। ছাগুর ল্যাদা ইউনিক ধরনের গন্ধযুক্ত হয়। ছাগু ল্যাদাক বা না ল্যাদাক, আশেপাশে ছাগু অবস্থান করলেই পরিবেশ দূষিত হয়। এবং ল্যাদাইলে অসহ্য দুর্গন্ধে মানুষের মুখ থেকে গালি ও থুথু বের হয়ে আসে। কোনও কোনও ছাগু মানুষকে কামড়ে দেয়, তখন কামড় খাওয়া মানুষ ও ছাগুর মত আচরন করতে থাকে। একে প্র্যোপাগান্ডাফিলিয়া সিনড্রোম বলা হয়। মহামারী আকারে এই রোগ সমাজের অনেক ক্ষতি করে এবং এথেকেই “লাখ ট্যাকার বাগান খায় দুই ট্যাকার ছাগলে” প্রবাদটির উৎপত্তি হয়।

উপসংহারঃ দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান যুগে ছাগু শুধু অপকারই করে যাচ্ছে। পাকিস্তানী রুপি এইদেশে অচল এবং মূল্যমান টাকার চে কম হওয়ায় তাদের বিদেশে রপ্তানী করে লাভবান হবার আশাও করা যায় না। এদিকে ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে ছাগুর ল্যাদার কারনে দুষন ও অস্বাস্থ্যকর মাত্রায় দেখা দিচ্ছে। ছাগুর বংশবিস্তার রোধ একদিকে যেমন জরুরী, তেমনি বিনোদনমুলক অনুষংগ হিসেবে তাদের ব্যাপক চাহিদা মেটাতে চিড়িয়াখানা বা জাদুঘরে এদের সংরক্ষণের ব্যাবস্থাও গ্রহণ করা উচিত। এ ব্যাপারে বাকশালী সরকারের উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা আজ একান্ত জরুরী।

৬০৫জন ৬০৫জন
0 Shares

২৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ