তার সাথে আমার আলাপ হয় ফেইসবুক থেকে। আলাপের সুত্রটা ছিলো একটু অন্যরকম। কোন এক সময় সে আমার ফ্রেন্ডলিস্টে চলে আসে। ইনবক্সে প্রথম দু-এক কথার পর অকারন প্যাঁচাল পারা দেখে আমি আর রেসপন্স করছিলাম না। সে অবশ্য সমীহ নিয়েই কথা বলছিলো। একসময় বিরক্তি প্রকাশ করে সে আমাকে ‘ফেক আইডি’ ইউজ করি মন্তব্য করায় আমি রাগত ভাষায় তাকে নীচের কথাগুলো বলি :
“হাউ ডেয়ার ইউ!
তোমার সাহস তো কম নয় ছেলে! আমি কি করবো না করবো তা নিয়ে তোমার এতো মাথাব্যথা কেনো? লজ্জা তো আমি তোমাকে ফেবুলিস্টে এড করে এখন পাচ্ছি, এ কেমন ছেলেকে আমি ফ্রেন্ডলিস্টে নিলাম!
আমি এখন তোমাকে ব্লক করার সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছি, এখন তুমিই বলো কি করবো? আমি নিজে থেকে কাউকে ব্লক করতে চাইনা, কিন্তু বিরক্তিকর কোন কাজও সহ্য করতে পারিনা।
তোমরা বাচ্চা বাচ্চা ছেলে হয়ে কি করে এভাবে কথা বলো?
শুন ছেলে, কথা বলার মতো অরকম সময় আমার নেই, হয়ে উঠেনা। তাই জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ইনবক্স এড়িয়ে চলি। ভালো ছেলে হয়ে থাকতে চাইলে থাকো নইলে তুমি চলে যেতে পারো, তোমার ইচ্ছা।
কখনো সময় পেলে আমি নিজে থেকেই কথা বলে নেবো।
যাক, ভালো থেকো। খোদাহাফেজ।”
এভাবে কথা বলার দুদিন পর নিজেরই একটু খারাপ লাগতেছিলো, বাচ্চা ছেলে এভাবে বকা দিলাম। কোন এক শুক্রবারে ফ্রি হয়ে ভাবলাম একটু কথা বলি। বলতে গিয়ে দেখি, কি অবাক কান্ড ছেলেটি ফ্রেন্ডলিস্ট থেকেই চলে গেছে!
খারাপ লাগতেছিলো, মনে হচ্ছিলো এভাবে বলা হয়তো ঠিক হয়নি। জিজ্ঞেস করি….
–কি ব্যাপার ছেলে! তুমি চলে গিয়েছো যে! এতোটুকু বকাও সইতে পারলে না? তোমরা বাচ্চাবাচ্চা ছেলেরা ঠিকমতো কথাবার্তা না বললে তো বকা দিবোই, সত্যি সত্যি তো আর চলে যেতে বলিনি।
–আপনাকে খুব ভয় পেয়েছি, তাই…..মনে করেছিলাম আপনি ম্যাডামের মতো। আসলে এখন মনে হচ্ছে আপনি মা’য়ের মতো। এতো মায়া-মমতা আপনার, তবুও বকা দেন কেন?
ব্যস! এর পর থেকে ছেলেটির সাথে আমার মাঝেমধ্যেই কথা হতো, সে তার বাবার জীবনের করুন পরিনতির কথা, নিজের জীবন নিয়ে ভাবনার কথা, ক্ষোভের কথা ইত্যাদি শেয়ার করতো।
জিজ্ঞেস করি কি হয়েছিলো বাবার? আমাকে বলে.
–এটা অনকে লঙ স্টোরি। চিনা প্রবাদ আছে “টাকা যখন কথা বলে, সত্য তখন চুপ করে থাকে” আমাদের কষ্টের দিনগুলো অবশ্যই শেষ হবে। হয়তো সেদিন বেশি দুরে নয় যেদিন আমি তাদের শাসন করবো যারা অসহায় মানুষদের জুলুম করে। আমি আমাদের এলাকার মানুষদের কাছে খুব পপুলার। অনার্স কম্পলিট করে BCS ট্রাই করবো, যদি চান্স না পাই তাহলে ব্ল্যাকমেইলার হবো; দ্যাটস অল।
আমি অবাক হই তার এসব কথা শুনে, বুঝিয়ে বলি ভুল পথ কখনো শান্তি নিয়ে আসেনা। তোমার মতো মেধাবী ছেলে ভাবনাতে এমন নেগেটিভ চিন্তা কাজ করবে কেনো? তাকে বলি..
— তোমার কথাগুলো অনেক মনযোগ দিয়ে পড়লাম। উপলব্দি করছি মানবতার প্রতি তোমার অনেক গভীর অনুভুতি আছে, প্রেম আছে কিন্তু আবার বাবার বিড়ম্বনা তোমার বুকে অনেক কষ্ট ও প্রতিহিংসার জন্ম দিয়েছে।
তোমার লক্ষ্য অনেক আশাব্যঞ্জক কিন্তু যদির পরে যে ইচ্ছা ব্যক্ত করেছো আমি এর তীব্র বিরোধিতা করছি।
ভেবে দেখো তুমি ৪ ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। পরিবারে যে বড়, তার দায়িত্ব অনেক। তোমার ছোটরা তোমাকে অনুসরণ করবে। এদিকে তোমার বাবা দেশে নেই, তিনি ইচ্ছের বিরুদ্ধে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছেন। ওখানে পরিবারের আপনজনদের থেকে দুরে থেকে নিশ্চয় কষ্ট করে রোজগার করে টাকা পাঠান যাতে তাঁর সন্তানরা বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হয়, যা দেখে তাঁর বুক গরবে ভরে উঠবে।
কাজেই আমি তোমাকে পরামর্শ দেবো সবশেষ কথাটি (black meailar) মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও আর বাদবাকি যে চিন্তাধারা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছো সেভাবেই সামনে এগোতে থাকো। মনে রাখবে ‘সততাই সর্বোত্তম পন্থা’। অবশ্যই কষ্টের দিন শেষ হবে। আলো একদিন আসবেই! যদি সে আলো সুন্দর পথে আসে তোমার মনও আলোকিত থাকবে। দুনিয়াজোড়াও সে আলো ছড়িয়ে পড়বে।
এরপর একদিন সে আমাকে বলে বসে
–কেমন আছো মামনি? (3
–ভালো। তুমি কেমন আছো? জিজ্ঞেস করি, মামনি বললে যে!
–ভাল আছি! আমি হসপিটালে। তাই!!! তুমিতো সত্যিই মায়ের মতো! (3
আরও যেনো দুর্বলতা গ্রাস করে আমাকে। একদিন সে জানায়, কলেজের ম্যাগাজিনে সে একটি কবিতা লিখেছে। কবিতাটি আমাকে ইনবক্সে ইংরেজী বর্ণমালায় লিখে পড়তে দেয়।
”কাঙ্ক্ষিত রাজনীতি”
এসো সব স্লোগান, সব মিছিল এক হয়ে যাই
এসো বিপ্লব ঘটাই মিলন প্রত্যাশায়
শোধন করি কষ্টেসৃষ্টে সৃষ্ট হওয়া স্বপ্ন
দৃশ্যমান হোক আজীবন লালিত পিপাসা,
যা শুকনো মরুর তপ্ত বালুকারাশির মতো উত্তপ্ত!
শান্তির পারাবার দর্শনে যাই এসো
অঞ্জলি ভরে পান করে হই তৃপ্ত
সোনার বাঙলার প্রয়োজনে এসো সবাই সোনার মানুষ হয়ে যাই
যদি সব প্রাণ আত্মা এক হয়ে যাই
একই শিবিরে মুক্তি আকাঙ্ক্ষায়
পালাবে ‘লক্ষন’
কেঁপে উঠবে রাবনের আসন।
এরপর আরেকদিন তার একটি স্ট্যাটাস দেখে আমি রাগ হয়ে তাকে বলি..
— খামোকাই আমি ছেলেসম ভাবনা নিয়ে তোমাকে স্নেহ-ভালোবাসা দিয়েছি। মানুষকে ঠকিয়ে যে সুখী হওয়ার চিন্তা করে, আত্মসুখ খুঁজে বেড়ায় তার সাথে আমার আর কোন কথা হতে পারেনা। তোমার মননে সারাক্ষন খেলা করে ব্ল্যাক মেইলিং এর চিন্তা, মানুষ ঠকানোর চিন্তা।
কোথায় চিন্তা করবে কি করে সমাজের এই নষ্ট মানুষগুলোকে নিশ্চিহ্ন করা যায়, তা না উল্টা দেশের প্রতি প্রতিশোধপ্রবণতা দেখিয়ে যাচ্ছো!
আমার সংস্পর্শ তোমার মধ্যে একটুও পরিবর্তন আনতে পারেনি ভেবে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।
— যে দেশ, প্রশাসন, আর মানুষের প্রতি এতো ঘৃণা বুকের ভেতর জমা থাকে সেই দেশে ভাল মানুষ হওয়ার চিন্তা করতে খুব কষ্ট হয়।শুধু প্রশাসন নয় মানুষ গুলো তার চেয়েও বেশি খারাপ! তাই নিজের প্রতি চরম ঘৃণা হয় যখন ভাবি দেশ প্রেমিক হবো, মানুষের উপকার করবো!!!
কষ্ট, ক্ষোভ, অভিমান চেপে রাখতে না পেরে প্রকাশ করলাম! আপনি এতো রাগ করবেন,এতো কষ্ট পাবেন জানলে প্রকাশও করতাম না!!!
— কষ্ট আমি পেয়েছি তুমি সেই এক জায়গাতেই আছো দেখে। কতো করে বুঝালাম, যেভাবে জীবনকে চিন্তা করছো সেটা ঠিক রাস্তা নয়, তবুও ভাবনার কোন পরিবর্তন নেই।
তুমি যে পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছো, এমন অহরহই লোকজন হচ্ছে বরং বুদ্ধিমানের মতো টাকাটা অই ডাকাতটাকে দিয়ে এসেছো, তাই ভালো।
তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে পুরু দেশটা, আর তুমিই কিনা এরকম বাজে চিন্তা করছো। তোমার মধ্যে যে প্রতিভা আছে সেটাকে মানবতার উপকারে লাগানোর চেষ্টা করো, দেখবে দিনশেষে জীবন অনেক অর্থবহ হবে।
এভাবে মাঝেমধ্যেই কথা হতে থাকে। আমার উদ্দেশ্য ছিলো, ছেলেটি যেহেতু আমার প্রতি দুর্বল, আমাকে সমীহই করে, বাচ্চা ছেলে! ক্ষোভ থেকে অনেক সময় মানুষ বেপরোয়া হয়ে যায়, তাই তার সুখদুঃখের কথা এড়িয়ে না গিয়ে শুনতাম, হয়তো তাতে সে শান্তি পেতো।
কিন্তু.. অভিজিৎ রায়ের মারা যাওয়াকে কেন্দ্র করে ছেলেটির প্রতিক্রিয়া দেখে আমি একটু আহতই হই। একটু যেনো খটকাও লাগে। এরপর তার বন্ধুতালিকার বিভিন্ন জনের সাথে কথোপকথনের ধরন দেখে আমি তাকে রীতিমতো কট্টরপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল হিসাবেই আবিষ্কার করলাম। অনুমান করলাম, সে অনেকটাই ধর্মান্ধের ঘেরাটোপে আবদ্ধ।
উপলব্দিতে আসলো, যে অলরেডি ধর্মান্ধতার আফিমে আচ্ছন্ন, তার সে নেশা কাটানো কি আদৌ সম্ভব?
(-3 খুব খারাপ লাগছিলো (-3 , তবুও তাকে ফেবুলিস্ট থেকে সরিয়ে দিলাম (-3 ।
ভুল কি কিছু করেছি???
২৬টি মন্তব্য
সঞ্জয় কুমার
ফেসবুকের বন্ধু অপরিচিত বন্ধুদের আমি শুধু একজন ভার্চুয়াল রোবট মনে করি ।
আস্তে আস্তে অপরিচিত বন্ধু একেবারেই বাদ দিয়ে দিব । মন খারাপ করার কিছু নেই । আপনি যেটা করেছেন অবশ্যই ভাল করেছেন
মারজানা ফেরদৌস রুবা
মন খারাপ হচ্ছে এজন্য যে, একটা মেধাবী ছেলে ধর্মান্ধতার ঘেরাটোপে আটকা পড়ে গেলো! আমি অনেক আশা নিয়ে তাকে গাইড করতে চেয়েছিলাম, যেহেতু সে আমাকে সমীহ করতো।
কিছুই তো করতে পারছি না দেশ ও দশের জন্য। একজনকেও যদি আলোর পথে ধরে রাখতে পারতাম!!
কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি।
আবু জাকারিয়া
আপনি হয়ত তাকে অনেক বুঝিয়েছেন। কিন্তু তার ভীতর কোন পরিবর্তন হয়নি। তবে একটা জিনিস বুঝতে পারছিনা, ছেলেটা মেধাবী আর বিসিএস দিবে, সে কেন এবং কিভাবে মাদকে আসক্ত হল।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ঠিক করে দিয়েছি।
আমি এখানে ‘আফিম’ বলতে ধর্মান্ধতাকে বুঝিয়েছি।
প্রথমদিকে আমার মনে হয়েছে সে বাবার পরিনতির ক্ষোভ থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠছে, বয়স অনুপাতে এইসময়টাতে মানসিক সাপোর্ট খুব জরুরী। এইসময়টাই মানবজীবনের টারনিং পয়েন্ট।
কিন্তু একটা সময়ে এসে বুঝলাম, সে অলরেডি টার্ন নিয়ে নিয়েছে। মৌলবাদের দিকে ঝুকে পড়েছে, যেখান থেকে ফেরার আর সুযোগ নেই।
জিসান শা ইকরাম
নারীরা নরম হৃদয়ের হয়,আপনি না আবার প্রমান করলেন।
এই ছেলেকে ডিলেট করে আমার খারাপ লাগতো না,আবার নক করার তো প্রশ্নই ওঠেনা।
এরা খুব বিনয়ী হয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এরা সংশ্লিষ্ঠদের মটিভেট করে ফেলে।
ভাগ্য ভালো যে আপনার মানসিক দৃঢ়তায় আপনাকে মটিভেট করতে পারেনি সে।
এরা যে কত ভয়ংকর আপনার হয়ত তেমন ধারনা নেই
কিছুটা সাইকো স্বভাব থাকে এদের।
নারীদের ফটো নিয়ে নেবে এরা,মতের অমিল হলেই কুৎসা রটাবে বা নারীর ফটো দিয়ে আইডি খুলে আজে বাজে পোষ্ট দিবে। আমার এক পরিচিত নারীর ফটো দিয়ে ৪৬ টা আইডি বানিয়েছিল এরা,রিপোর্ট করতে করতে প্রান যায় যায় অবস্থা।
অত্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন,একটুও মন খারাপ করবেন না এ জন্য।
সবাই জানি সতর্ক হয় এ বিষয়ে।
ঘটনা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
অতোটা ভয়ংকর কিন্তু নয় সে। আমি তাকে সাপোর্ট দিতে চেয়েছি কারন বয়সটা তার অল্প, এসময়েই বেশিরভাগ মেধাবী তরুন বকে যায় নষ্ট পাল্লায় পড়ে। যেহেতু সে আমাকে সমীহই করে ধারনা করেছিলাম, ক্ষোভ থেকে না বিভ্রান্তিকর পথে পা বাড়ায়।
কিন্তু পরে বুঝলাম আমার সাথে আলাপ হওয়ার আগেই সে অই পথে পা বাড়িয়ে বসে আছে।
অনেকটা মনে হয়েছিলো, মুখোশের আড়ালে সে লুকিয়ে ছিলো।
নওশিন মিশু
ধর্মান্ধতা আসলেই ‘আফিম’ । আপনার মত আমারও মন খারাপ হয়েগেল আপু। মেধাবী শিক্ষিত ছেলে/মেয়েরাই যদি এই সর্বনাশা আফিমের নেশা কাটাতে না পারে সেখানে এই দেশের সহজ-সরল মানুষগুলোর কি হবে !!?? সর্বপরি আমার দেশের ভবিষ্যত কি হবে ….????
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হ্যাঁ মিশু, আফিমের মতোই ধর্মান্ধতার উম্মত্ততা।
এখন ওরা এরকম মেধাবী আর বেপরোয়া টাইপ ছেলেদের মাঝেই এই নেশা ধরিয়ে দেয়।
কিছুদিন আগে আমার বন্ধুর ছেলে রেসিডেন্সিয়ালে পড়ে, তাকেও প্রায় ধরতে বসেছিলো, আমিতো সমানে আমার কাছেপিঠে সব মা’কে এ ব্যাপারে সাবধান করি। কারন মায়েরা যখন দেখে উঠতি বয়সের ছেলে খুব নামাজী হয়ে পড়েছে তখন খুব খুশি হয়ে শুকরিয়া আদায় করে এবং এটিই আমাদের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক।
কিন্তু খেয়াল করে না হঠাতই এ পরিবর্তনের হেতু কি?
ভাগ্য ভালো খুব খুশি হয়ে আমাকে গল্প করছিলো। আমি তখন অনুসন্ধান করতে বলি। ঠিকই বাবা পিছুপিছু নিজেও নামাজ পড়তে যেতো আর তিনদিনের মাথায় নজরে পড়লো নামাজের পর বড়ো ভাইরা ৫/৭ মিনিট তালিম দেয়। এই হচ্ছে বর্তমান বাস্তবতা।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি আপনার সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করেছেন। সব সময় সব চেষ্টা ফলপ্রসূ না ও হতে পরে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
ঠিক। দরদ দিয়েই চেষ্টা করেছি কিন্তু বকে যাওয়া সন্তানকে বোধ হয় আপন মা’ও আর সঠিক পথে ফেরাতে পারেনা।
স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো...
ভুল করছেন। অবশ্যই করছেন।
আমার হিজবুত তাহরীরের একটা ফ্রেন্ড আছে, অনেক ট্যালেন্টেড। ওর চোখে ও ঠিক, আমার চোখে আমি। সৌদী নারীরা যেভাবে চলে, আপনি কি সেভাবে চলতে প্রস্তুত? কিন্তু ওদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে আর মুল্যবোধে ওরাই ঠিক। আমাদের দেশের হুজুরদের চোখেও সেটাই ঠিক। আবার ধর্ম মানতে গেলেও সেটাই হয়তো ঠিক।
ব্যাপারটা সহনশীলতার। ওই ছেলে কি বিশ্বাসে পার্থক্যের কারনে আপনাকে মেরেও ফেলতে পারে বলে আপনার মনে হইছে? যদি না হয়, তাহলে এভাবে আরো ব্যবধান বাড়ে। ঘৃনা বাড়ে।
সৌদিদের আমার পছন্দ না, আফগানদেরও না, নাস্তিকদেরও না। তাহলে কি সৌদি অথবা আফগান অথবা কম্যুনিস্ট চীনের সাথে সম্পর্ককে ছিন্ন করার জন্য আন্দোলন করবো? অবশ্যই না…
আমরা মানুষের সাথে সম্পর্ক করি। বিশ্বাস, ধর্ম অথবা বর্ণের সাথে না।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
লেখাটি যখন লিখছি তখনও সন্দিহান ছিলাম যে, ভুল করেছি কিনা।
কিন্তু ভুল আমি করিনি। কারন সে মুখোসের আড়ালে লুকিয়ে ছিলো। কপটতা, ভন্ডামী সহ্য করা যায় না।
আর মেরে ফেলার ভয় আমি কখনোই করি না, করলে অনলাইনে স্বনামে লিখতে সাহস করতাম না।
ব্লগার সজীব
আমাদের দেশের নারীদের মায়া খুব বেশি।আপনি এটা আবার প্রমান করলেন।কিছু রুক্ষ ব্যবহার করে,তার জন্য আবার খারাপ লাগা এটি মেয়েরাই করে। আপনার সিদ্ধান্ত সঠিক আছে আপু।একারনে মন খারাপ করবেন না।অন লাইনে বুঝিয়ে বলার মত অবস্থা নেই।এমন একটিও প্রমান নেই যে বুঝিয়ে কাউকে শিবির ত্যাগ করানো গিয়েছে।
আপু আমি কিন্তু খুবই ভালো ছেলে।আপনাকে আজই নক করবো’ মা মনি এড করো আমাকে’ :p প্রথম নক করে হার্ট দেয়া কি ঠিক হবে? 🙂
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হাহাহা….পাগল ছেলে বলে কি?
লীলাবতী
আপু সজীবকে এড করবেন না।সে ইমো ভুল করে,টাইপ করতে ভুল করে,সব মেয়েরা ওকে ব্লক করে।সজীব নিজে স্বীকার করে পোষ্ট দিয়েছে।এড করেছেন কি পস্তাবেন 🙂
*এটুকু শুধু আপনি পড়বেন,সজীব যেন না পড়ে :p সজীব মেসেজ দিলেই ওর আইডি টা ইনবক্সে দিবেন আপু প্লিজ। দুষ্টটাকে এত খুঁজি ফেইসবুকে,পাইনা 🙁
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হাহাহা, তাই নাকি? ও কিছুনা, ঠিক হয়ে যাবে।
সজীব, শুনছেন! লীলাবতী আপনাকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন, সাড়া দিন তাঁকে।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
হুম বাস্তবতা এখানেই।চোরে শুনে না ধর্মের কাহিনী -{@
মারজানা ফেরদৌস রুবা
কঠিন বাস্তব।
দুঃখ হয়, দেশটাকে ওরা পঙ্গু বানিয়েই ছাড়লো বোধ হয়।
মেহেরী তাজ
আমার তো মনে হয় না ভুল করেছেন! ডাবল ফেস মানুষের সাথে পাছে না থাকাই ভালো। তার চেয়ে বরং খারাপ কোন মানুষ ও অনেক নিরাপদ। অন্তত জানা থাকে এই মানুষ টা সুযোগ পেলেই আমার ক্ষতি করবে। তাই আমরা সাবধান থাকতে পারি। কিন্তু দুমুখো মানুষের থেকে কি ভাবে……….
ঠিক করেছেন…..
মারজানা ফেরদৌস রুবা
হ্যাঁ, ডাবলফেস মানুষরা মোনাফেক সমতুল্য। বন্ধুরুপি শত্রু।
ধন্যবাদ।
লীলাবতী
আপনার সিদ্ধান্ত সঠিক আপু।দু-মুখো শাপ এরা।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আমার মনে হয় এসব মেধাবী তরুনদের ব্রেইন ওয়াস করে এদেরকে ব্যবহার করেই সার্চিং এর কাজ করা হয় যা ওরা নিজেও টের পায়না।
খেয়ালী মেয়ে
একেবারে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন–
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আমিও তাই মনে করি।
শুন্য শুন্যালয়
অনলাইনে এসব দ্বিমতের মানুষগুলো কতো ভয়ংকর হয়ে যেতে পারে তা দেখেছি, দেখছি। ফ্রেন্ডকে হাইড করে স্ট্যাটাস দিয়ে গালিগালাজ করে ইনবক্সে আই মিস ইউ বলা মানুষ এখন অনেক। মেয়েদের সমস্যা এটা। তারা সফট। আপনি ঠিক কাজ করেছেন আপু।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
আপনি যে সাইডটি নিয়ে ভাবছেন, সেটা হয়; আমিও জানি। মেয়েরা সফট, তাঁদের এই কোমলতা ঈশ্বরপ্রদত্ত কিন্তু কিছুকিছু বিষয়ে মেয়েদের হার্ড থাকা উচিত যেনো সুযোগ সন্ধানীরা তাঁর কোমলতার সুযোগ নিতে না পারে। সে মেয়েগুলোই বেশি প্রতারিত হয়, যাদের আবেগের কাছে নৈতিক মূল্যবোধ হার মানে।
আবার এই লেখায় যে ছেলেটির কথা বলা আছে, আমার ধারনা সে মৌলবাদী চক্রের দ্বারা ব্যবহারিত হচ্ছে। আদারওয়াইজ, ছেলেটির মেধা ও বেপরোয়া টাইপ দেখে মৌলবাদী চক্র তাকে তাদের ফাঁদে ফেলে ব্রেইন ওয়াসের কাজটি শুরু করে দিয়েছে, যার দরুন ছেলেটির শেষদিকের আচার-আচরণে অনেকটাই অসংলগ্নতা প্রকাশ পেয়েছে। যার মধ্যে এতো মান্যতা, এতো সমীহভাব দেখেছিলাম সে কেমন হঠাৎ করেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলো।
ধর্মান্ধতা মানুষের মাঝে মারাত্মক উগ্রতার জন্ম দেয়।