ক: বলে কী যে করি, সহ্য হয়না স্বরবর্ণের বাড়াবাড়ি,
আমি থাকি শ্রীকৃষ্ণের বাড়ি, মা কালীরও সাধন করি।
খ: বলে খ্যান্ত কর তোর জারিজুরি, প্রশংসার ফুলঝুরি,
আমি থাকি খোদার বাড়ি, আমার সাথে এতো বাহাদুরি?
গ: বলে শোন-রে গাধা, গাড়ি ছাড়া তোদের গন্তব্যে বাধা,
আমি থাকি গাড়িতে সদা, সেই গাড়িতে চড়ে কৃষ্ণের রাধা।
ঘ: বলে গ তুই বড় গাধা, গাড়িতে দেখিস না ঘোড়া বাঁধা,
আমার ঘোড়ার রং সাদা, সেই গাড়িতেই রাধা চলে সদা।
ঙ: বলে কই যাই আমি, বলে দাও আমার অন্তরজামি,
কৃষকের লাঙলে আমি, সেই লাঙল টেনে মরিও আমি।
চ: বলে চেয়ে চেয়ে দেখি আমি, সবুজের এই লীলাভূমি,
ফসল ভরা যতো জমি, চাষাবাদে হয় জানি আমি তুমি।
ছ: বলে আর রক্ষা নাই, দেশ ছেড়ে কোন দেশে যাই,
ঘরবাড়ি পুড়েও হয় ছাঁই, এই কথা কি কারো মনে নাই?
জ: –এর আর কথা নাই, জীবনটা যেন হলো ছাঁই,
জান ছাড়া যে কারোর রক্ষা নাই, সেই কথা স্মরণ নাই!
ঝা: বলে আমি হলাম ঝড়তুফান, প্রলয় করি এই জাহান,
ঝাড়ুর বাড়ি দিব রে শয়তান, আমার ভয়ে কাঁপে দালান।
ঞ: বলে শুনেছ ঝ’র বয়ান! ঝ নাকি বড় ক্ষমতাবান?
মিঞা ভুইঞা যতো পালোয়ান, সবার উপরে স্রষ্টা মহান!
ট: বলে শুনছো টেংরা, ওঁরা ঝ ঞ কেমন করছে জেরা,
আমি ট কি বাস্তহারা, এই বটবৃক্ষ নামটি দিয়েছে কারা?
ঠ: বলে পরলে ঠেলা বাড়ি ছাড়া, হবি তোরা দিশেহারা,
আমাকে ঠকায় যাঁরা, ঠকতে ঠকতেই হবে জীবন সারা!
ড: বলে ডাকপিয়ন দিয়েছে ডাক, দিওনা আর হাঁকডাক,
তোরাও পারলে ডাকতে থাক, অহংকার নিপাত যাক!
ণ: বলে গণতন্ত্রের হাঁকডাক, যখন নেতারা দেয় রে ডাক,
ঠাণ্ডা কাশি গোল্লায় যাক, সবাই বলে গনতন্ত্র মুক্তি পাক।
ত: বলে দেখা যাবে সবশেষে, তালগাছে উঠবে শেষে,
যতই তালিবালি করুক না সে, ততই ফাঁসবে অবশেষে।
থ: বলে নেতারা থাকে আশেপাশে, যখন নির্বাচন আসে,
থেকে থেকে মুচকি হাসে, নির্বাচন শেষে থাকেনা পাশে।
দ: বলে দাঁতের বিষে যাচ্ছি মারা, কী করি বল তোরা,
দাঁতের মর্ম বুঝে কারা? দাঁত নাই যাঁদের বুঝে তাঁরা!
ধ: বলে চলে না ধন ছাড়া, পেটের ক্ষুধায় দিশেহারা,
ধন দৌলত চায় না কারা? এর শোকেই কেউ যায় মারা!
ন: বলে বর্ষাকালে নাইওর আসে, নতুন জামাই শুধু হাসে,
শালা শালিরা পাশে বসে, সময় কাটায় তাঁরা রঙরসে।
প: বলে পাখিরা সব উড়ে এসে, গান গায় ডালে বসে,
বাবুই পাখি দেখে হাসে, ভিজে কাতর হয় আষাঢ় মাসে।
ফ: বলে ফালাফালি যতই করিস, স্রষ্টাকে স্মরণে রাখিস,
ফান্দে পড়ে কেন কাঁদিস, সময় থাকতে একবার ভাবিস।
ব: বলে ভাই বন্ধু ভেবে দেখিস, বন্ধুর কথা মনে রাখিস,
বন্ধুর রীতি ঠিক রাখিস, বন্ধুর দিকে সজাগ দৃষ্টি থাকিস।
ভ: বলে বন্ধুরা কোথায় গেলি, সবাই মিলে হাসি খেলি,
ভালোবাসার কথা বলি, বুক মিলিয়ে করি কোলাকুলি।
ম: বলে খুলে বল খোলাখুলি, মনের কথা খুলে বলি,
মায়ের মুখে শুনেছি বুলি, অসৎ পথে যেন না চলি।
য: বলে আমার জীবন যায়, আমাকে দিয়ে ফলা বানায়,
ফলার খোঁচা কে না খায়, আমার কেন বদনাম গায়?
র: বলে বাঁচাও আমায়, আমাকে যে রাক্ষসে দৌড়ায়,
আমি আছি রাক্ষসের জ্বালায়, কে করবে রক্ষা আমায়?
ল: বলে নে বাবা ঠেলা সামলা, এ দেখি বড় ঝামেলা,
লাঠিসোঁটা নিয়ে করো হামলা, নাহয় করো মামলা।
শ: বলে শালা শালি দৌড়ে পালা, এখানে বড় ঝামেলা,
পুলিশ আসলে বাড়বে জ্বালা, শুরু করবে ছলাকলা।
ষ: বলে তেল আছে কাছে, সরিষার তেলে ঝাঁঝ আছে,
প্রিয় তেল রাধুনির কাছে, সর্ষে ইলিশও মজা আছে।
স: বলে যা আছে আমার আছে, আর নাই কারো কাছে,
সাজ আছে সাজাও আছে, তোদের কাছে কী আছে?
হ: হেসে বলে বড় মজা, আমি হলাম হাসির রাজা,
হা হা হা কি মজা কি মজা, তোরা সবাই পাবি সাজা।
ক্ষ: বলে বিচার করে মহারাজা, সাক্ষী ছাড়া হয়না সাজা,
সৎপথে থাকে সবাই তাজা, সৎ উপার্জনে খুবই মজা।
ড়: বলে লড়াই লড়াই লড়াই চাই, এভাবেই বাঁচতে চাই,
লড়াই ছাড়া উপায় নাই, লড়াই করেই জিততে চাই।
ঢ়: বলে যেই আষাঢ়ে বৃষ্টি নাই, সেই বছরে শান্তি নাই,
কৃষকের জমিতে ফসল নাই, গরিবের ঘরে ভাত নাই।
য়: বলে কই গেলি রে ৎ ভাই, এই আলামত দেখি নাই,
আয় নাই তো ব্যয় নাই, শান্তি অশান্তি তো বুঝি নাই।
ৎ: বলে খণ্ড খণ্ড আমি ভাই, হঠাৎ দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই,
আবার যদি খণ্ড হয়ে যাই, সেই চিন্তায় আমার ঘুম নাই।
ং: বলে আমি রংয়ের রাজা, কে দিবে আমায় সাজা,
রঙ্গরসে জীবন তাজা, ঢং কুয়ারায় পায় যে সাজা।
ঃ: বলে দুঃখের মাঝেও সাজা, সুখের মাঝেও সাজা,
কে দিচ্ছে যে এই সাজা, কোন দেশের কোন রাজা।
ঁ: বলে পড়েছি ফাঁদে, এবার আমি চলে যাবো চাঁদে,
তোরাও পড়বি ফাঁদে, চন্দ্রবিন্দুর কথায় সকলে কাঁদে।
২৬টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আমাদের ছেড়ে চাঁদে গেলে, সত্যিই পড়বো ফাঁদে। দাদা অসাধারণ হয়েছে। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য ও অসংখ্য ধন্যবাদ।
নিতাই বাবু
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদজানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় কবি দিদি।
সুপায়ন বড়ুয়া
স্বরবর্ণ শেষে বাঞ্জন বর্ণ
অনেক কথা হয়
দাদার কলম উঠল জেগে
কাব্য লেখা হয়।
শুভ কামনা !
নিতাই বাবু
আমি খুবই ব্যস্ত মানুষ দাদা। জেগে থেকেও জেগে উঠতে পারি না, সময়ের কারণে। মন্তব্যের জন্য আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ।
ইসিয়াক
এক কথায় অসাধারণ।
ভালো লাগলো দাদা ।
শুভকামনা।
নিতাই বাবু
আপনার জন্যও অনেক অনেক শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় কবি দাদা।
ত্রিস্তান
এমনো কাব্য লেখা যায় !!! কত গভীর চিন্তা থেকে এমন ধারাবাহিক ছন্দে কাব্য লেখা সম্ভব তা আমার বোধগম্য নয়। দারুণ লাগলো দাদাভাই 😍
নিতাই বাবু
এমনি করেই একটু আঁকিয়ে বাঁকিয়ে লিখে ফেললাম দাদা। মন্তব্যের জন্য শুভকামনা সারাক্ষণ।
ছাইরাছ হেলাল
আমার মাথা আউলা হয়ে যায়!
কেমনে লেখেন! এমন দুরূহ বিষয়!
নিতাই বাবু
আমার একজন শ্রদ্ধেয় কবির তো মাথা ঘুরাঘুরি করার কথাই নয়! কবির কথায় আমি ভাবতে বসেছি!
সুরাইয়া পারভীন
স্বর্ণের পরে যে ব্যঞ্জন বর্ণ নিয়েও কিছু একটা হবে আশঙ্কা করেছিলাম। কেমনে সম্ভব দাদা?
দুর্দান্ত উপস্থাপন 👏👏👏
নিতাই বাবু
এখন হয়তো আশঙ্কা মুক্ত হয়েছে বলে মনে হয়! আশা করি ভালো থাকবেন নিশ্চয়!
কামাল উদ্দিন
খুবই পরিশ্রমী পোষ্ট দাদা, এতোটা মাথা কিভাবে খাটালেন সত্যিই তা ভাবতে অবাক লাগে……..শুভ কামনা সব সময়।
নিতাই বাবু
লেখালেখি করতে গেলে একটু আধটু তো পরিশ্রম করতেই হবে, দাদা। পড়েছেন জেনে ধন্য হলাম। শুভকামনা থাকলো।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, ভালো থাকুন সব সময়।
আরজু মুক্তা
গভীর চিন্তাবোধ। দাদার কাব্যিক রসে আমি মুগ্ধ।
নিতাই বাবু
শুনে আনন্দিত হলাম, দিদি। শুভকামনা থাকলো।
ফয়জুল মহী
দারুণ ছন্দ বর্ণ । অনন্য লিখনী । শুভেচ্ছা সতত ।
নিতাই বাবু
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় দাদা।
মনির হোসেন মমি
অনুরোধ রাখার জন্য স্বরবর্ণের স্বর দিয়ে একদিন ম এর মিষ্টি খাওয়াব। দারুন দারুন দারুন।
নিতাই বাবু
ত বলে তাই। হ বলে হবে। এ বলে এক। দ বলে দিন। তা হবে দেখা হলে।
মনির হোসেন মমি
বানান বিষয়ে কিছু সিরিজ লেখা চাই।
নিতাই বাবু
আমি নিজেই তো ভুল বানানের ওস্তাদ। অনেক সময় নিজের আন-খেয়ালের কারণে কত ভুল হয়ে যায়, তা কী করে বোঝাব দাদা।
জিসান শা ইকরাম
দাদা, পোষ্ট পড়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম,
আপনি আসলেই একজন জিনিয়াস, সোনেলার সম্পদ।
অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য দাদা।
নিতাই বাবু
সুন্দর মূল্যবান মন্তব্যে ধন্য হলাম শ্রদ্ধেয় দাদা। কিন্তু আমিতো ব্লগে ঠিকমতো সময়ই দিতে পারছি না। তবুও সবসময় চেষ্টা করি। এরপর যা পারি কিছু লিখি।
আশা করি ভালো থাকবেন সবসময়।
সঞ্জয় মালাকার
দাদা এমনো কাব্য লেখা যায় !!! কত গভীর চিন্তা থেকে এমন ধারাবাহিক ছন্দে কাব্য লেখা সম্ভব তা আমার বোধগম্য নয়।
অসাধারণ লেখা দাদা পড়ে ভালো লাগলো খুব।