
অচিনপুর, শান্ত নিরিবিলি গ্রাম। একদিন ভোরবেলা কেঁপে উঠলো। কার যেনো নিথর দেহ পরে আছে অচিন গাছের নিচে।
রাজনৈতিক নেতা খোকন। প্রতাপে গ্রাম কাঁপে। ছাগল গরু পোষে। এক টাকাও খরচ করেনা। সারাদিন ওদের ছেড়ে দিয়ে রাখে। এর ওর ক্ষেত খায়। মানুষজন রাগে গজগজ করলেও। মুখে বলতে পারেনা। কখন কী করে বসে! কার জীবন অর্ধেকেই পরিসমাপ্তি হয়।
কে জানি তোমার ছাগলেরে বাঁধি রাখছে? এই খবর শুনে সোবহানরে বেধরক পিটন দেয়, খোকন। সবাই চেয়ে দেখে। হাত নিশপিশ করে। সাহস হেরে যায় সবার, বাঁচার আকুতির কাছে।
সোবহানের বৌ আর এক ডিগ্রী উপরে। তারে গরম পানির সেঁক দেয় আর বলে, তুমি না ব্যাটাছোল। ছাগলওয়ালার সাথে পারলা না।
গায়ের রক্ত টগবগ করে। হাজার হোক বৌ একটা কথা বলছে। মুখে কিছু না বললেও রাত ভোরে দা নিয়ে ছোটে। অচিনপুর কেঁপে ওঠে। ” দাঁড়া খোকন! “শব্দটি মুখে উচ্চারিত না হলেও; প্রতিধ্বনি হয় গ্রামের আনাচেকানাচে। আজ আর কেউ পাথরের মতো দাঁড়িয়ে থাকে না। থু থু ছিটিয়ে চলে যায়। থুথুর মাঝেই পাওয়ার। অনেক ঘৃণা।
যে অচিনগাছের নীচে মানুষ পূজা দিতো। মানুষ মানত করতো। সত্যের যুগ ছিলো। আজ শান বাঁধানো গাছে পাখিও মনের সুখে গান গায়না। বোবা পাখিদের নিঃশব্দ আর্তনাদে ছোট ছোট বুকগুলো কাঁপে। এই সব অসুস্থ মানসিকতার লোকের জন্য পশু পাখিও অনেকদূরে আশ্রয় খোঁজে।
খোকনরা সবখানে। এক খোকন মরে। আর পাঁচ খোকন জন্ম নেয়। আর মাস্কের আড়ালে সব চাপা পরে। কয়েকদিনের মধ্যেই আর এক খোকনকে অচিন গাছের নীচে আবার ছাগল পুষতে দেখা যায়।
৩৪টি মন্তব্য
বন্যা লিপি
ভিলেজ পলিটিক্সের এক জ্বালজ্বল্য চিত্রাঙ্কন! ছোট ছোট মহীরুহ যখন শাখা প্রশাখা বিস্তার করে, অবধারিত ভাবে তার ছায়া নগ্নই থাকে। তারপর অভিশাপ কুড়ায় বটবৃক্ষের। কেননা, যে বটবৃক্ষ ছায়া দিয়ে স্বস্তি দেয়! সে দোষীও হয় একই দোষে। আমি ভার নিলে যে অভিশাপটাই দেইনা কেন, তার ফলও আমাকেই ভোগ করতে হয়।
আরজু মুক্তা
একজনের পাপে সবাই পাপী। বিবেক নেই মরে গেছে। কে কতো উপরে উঠবে, এটাই ভাবে।
শুভকামনা জানবেন
বোরহানুল ইসলাম লিটন
সব জায়গায় আজ খোকনদের আস্তানা।
অসুস্থ মানষিকতার কারণে মানুষ অসহায় হয়ে
অকাতরে টেনে চলেছে নির্যাতনের ঘানি।
নির্মম বাস্তবতার নিপুন চিত্রণে মুগ্ধতা রেখে গেলাম পাতায়।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন নিরন্তর।
আরজু মুক্তা
আজকের সমাজ। আর আমরা মুখ বুজে থাকি।
শুভকামনা ভাই
মোঃ মজিবর রহমান
এটাইভকি ধরার নিয়ম।
আরজু মুক্তা
ঠিক বলছেন।
শুভকামনা
জিসান শা ইকরাম
রাজনৈতিপৃষ্ঠপোষকতা থাকায় খোকনদের জন্ম হয়,
এদের নির্মুলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার,
যা দেশের চলমান বাস্তবতায় তা সম্ভব না।
এদের প্রতিরোধে জনতা জাগলে নির্মুল হতে পারে এরা, কিন্তু জনতা জাগবে না।
গল্প ভালো হয়েছে।
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
জি, মাথা ঠিক না থাকলে, গোড়ায় পানি ঢেলে লাভ নেই। জনতার ভয় মাথা কাটা।
ভালো থাকবেন সবসময়
জাহাঙ্গীর আলম অপূর্ব
ভালো লেখা।
লেখাটিতে অনেক শিক্ষার কথা লিখেছেন।
শুভকামনা রইল
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ ভাই।
ছাইরাছ হেলাল
বেশ বেশ, কত সহজে সুন্দর করে বলা।
খোকনরা এখানে চিরস্থায়ী।
আরজু মুক্তা
ক্রেডিট গোজ টু ইউ।
আপনি উৎসাহ না দিলে এতটুকু পারতামনা।
শুভকামনা সবসময়
শামীনুল হক হীরা
দারুণ।।। দারুণ।। শুভকামনা রইল সম্মানিত।
আরজু মুক্তা
আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সবসময়
আলমগীর সরকার লিটন
খুব সুন্দর অনুভূতির এক গল্প পড়া মুক্তা আপু
আরজু মুক্তা
আপনাকে ধন্যবাদ অশেষ
রোকসানা খন্দকার রুকু
অচিনগাছ, খোকন আর ছাগল কোনদিন শেষ হবে না।
শুভ কামনা রইলো।🥰🥰🥰
আরজু মুক্তা
এরা সবখানে জট পাকাতে ব্যস্ত। পরিবেশ নষ্টকারী।
শুভকামনা
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় খোকনদের অপতৎপরতা ঠেকানো দায় — খোকনরা সবখানে। এক খোকন মরে। আর পাঁচ খোকন জন্ম নেয়। আর মাস্কের আড়ালে সব চাপা পরে। কয়েকদিনের মধ্যেই আর এক খোকনকে অচিন গাছের নীচে আবার ছাগল পুষতে দেখা যায়।
আরজু মুক্তা
এরা রাজনৈতিক মারপ্যাঁচে দারুণভাবে সফল হয়ে হাসিমুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
শুভকামনা সবসময়
তৌহিদ
আপনজনদের কিছু উস্কানিতে মানুষ অযাচিত এমন সব ঘটনা ঘটায় যা কাম্য নয়। মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা চরিত্রগুলো আড়ালেই থেকে যায়।
ভালো থাকুন আপু। আপনার লেখা গল্প পড়া মানেই অনবদ্য অনুভূতি।
আরজু মুক্তা
দারুণ কমেন্টে অনুপ্রাণিত। মুখোশ খসে পরুক।
শুভকামনা সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ইদানিং খোকনদের মতো মুখোশধারীরা গজিয়ে গেছে আগাছার মতো। এদের নির্মুল করা খুব কঠিন। অচিন গাছ এভাবেই কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয় যুগ যুগান্তর ধরে। চমৎকার অনুগল্প আপু। একরাশ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো। শুভ রাত্রি
আরজু মুক্তা
এরা নির্মুল হয় না।
শুভকামনা দিদি
পপি তালুকদার
সমাজ থেকে এদের নির্মূল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে! যুগ যুগ ধরে এভাবে খোকনরা আমাদের শোষণ করে যাচ্ছে।একজনের কাছে যেন পুরো সমাজ বন্দী হয়ে গেছে।চমৎকার লিখেছেন আপু।শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।
আরজু মুক্তা
বন্দি সমাজে বোবা পাখি।
শুভকামনা। ভালো থাকবেন সবসময়
রেজওয়ানা কবির
এইসব খোকনরা বার বার জন্মগ্রহণ করে আর এভাবেই সমাজের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়। অনুগল্পের মাঝে দারুনভাবে ভিলেজ পলিটিক্সের কথা তুলে ধরেছেন আপু। শুভকামনা।
আরজু মুক্তা
এই খোকনরা মরে না। এমনি আমাদের সমাজ
রায়হান সিদ্দীক
বর্তমানে আমরা সবাই একেকটা বোবা পাখি।
আরজু মুক্তা
একদম। বোবা কানা সব
নবকুমার দাস
“খোকনরা সবখানে। এক খোকন মরে। আর পাঁচ খোকন জন্ম নেয়। আর মাস্কের আড়ালে সব চাপা পরে।”
সত্যিই তাই । অমোঘ সত্য । মুখ আর মুখোশ একাকার হয়ে যায় । বোধহয় সারা পৃথিবীতেই এই সত্যি ।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ ভাই পড়ার জন্য। ভালো থাকবেন সবসময়
আশরাফুল হক মহিন
খুব সুন্দর একটা গল্প
শুভকামনা প্রিয় কবি।
আরজু মুক্তা
ভালো থাকবেন সবসময়