রাজশাহীতে কলেজে পড়ার সময় আমার সুদর্শন বন্ধু জনি এবং সুন্দরী বান্ধবী জেনি কে নিয়ে ঘটনাটির সূত্রপাত । একদিন জনি এসে বলল -আগামীকাল জেনির জন্মদিন কিছু টাকা ধার দিতে পারবি , একটা গিফট কিনব।বললাম আমার কাছে টাকা নেই তবে তুই চিন্তা করিসনা আগামীকাল দুপুরের মধ্যে কিছু একটা ব্যাবস্থা করব।আমার কাছে একটি ছোট কষ্টি পাথরের প্রতিমা ছিল । বরেন্দ্র যাদুঘরের মূর্তি গুলোর চেয়ে সৌন্দর্যের দিক থেকে কোন অংশে কম ছিলনা ছোট প্রতিমাটি।এটা দিনাজপুরের বর্ডার এলাকার এক আত্মীয় আমাকে দিয়েছিলেন। উনাদের এলাকায় পুকুর খননের সময় এটা পেয়েছিলেন। আমার ঘরে সবসময় এটিকে খুব যত্ন করে রেখে দিতাম ।
পরেরদিন দুপুরে জনিকে প্রতিমাটি দিয়ে বললাম তুই জেনিকে এটা গিফট করতে পারিস।বন্ধু আমার খুব খুশি হয়ে গেল। কয়েকদিন পর জনি,জেনি ও আমি সোনাদিঘীর মোড়ে British council য়ের পাশের কফিশপে কফি খেলাম এবং অনেক মজা করলাম।
25 বছর পর Facebook য়ের কল্যানে জেনিকে খুঁজে পেয়ে জানতে চাইলাম প্রতিমাটি কি করেছ। জেনি যেন আকাশ থেকে পড়ল,বলল কিসের প্রতিমা!
সবকিছু জানারপর বলল-জনি ওটা আমাকে দেয়নি এবং এটা নিয়ে কোন কথাও বলেনি।
জনির সাথে কথা বলে জানতে চাইলাম কেন তুই জেনিকে প্রতিমাটি দিসনি। বন্ধু কোন সদ্দুত্তর না দিয়ে জানালো প্রতিমাটি কে সে খুব যত্ন করে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিল।
জেনির মনের ভেতর থেকে সন্দেহ কাটেনা ,সে ভাবলো এটা কোন বানানো ঘটনা।জেনি তার সন্দেহ দূর করার জন্য জনিকে কল দিয়ে জানতে চাইলো ঘটনাটি আসলে কত টুকু সত্য।
জনি জানালো ঘটনাটা সত্য ।আরও জানালো-প্রতিমা ঘরে থাকায় প্রতি রাতে ভয়ে চিৎকার দিয়ে তার ঘুম ভেংগে যেত। জনির বাবা ব্যাপারটি জানার পর হুজুর ডেকে আনলেন দোয়া কালাম করার জন্য।হুজুর জনির কাছে জানতে চাইলো ঘরে সে কিছু লুকিয়ে রেখেছে কিনা।প্রতিমার কথা হুজুরকে বলতেই হুজুর নির্দেশ দিলেন এটা বাড়ী থেকে বিদায় করতে হবে।জনির বাবা পরেরদিন উনার অফিসের পিয়ন সদ্যবিবাহিত রতন পালকে প্রতিমাটি দিয়ে বললেন-এটা তোর বিয়ের গিফট দিলাম -অরিজিনাল কষ্টি পাথরের প্রতিমা।প্রতিমাটি নেবার ৪ দিন পর রতন এবং ৭ দিন পর রতনের বৌ মারা যায়।এরপর আর প্রতিমাটির কোন খোঁজ পাওয়া যায়না।
জেনি ফোনে যখন এসব কথা আমাকে বলছিল তখন আমার খুব মন খারাপ হয়ে গেল । জেনি আরও বলল ঘটনাটি শুনে সেই রাতে তাঁরও ভয়ে ঘুম ভেংগে গিয়েছে,মনে হয়েছে কেউ যেন তাকে follow করছে।
কোথায় যেন পড়েছিলাম—-
“The biggest suspense of life is that…You don’t know who is praying for you and who is playing with you”
১০টি মন্তব্য
কামাল উদ্দিন
বলেন কি! বাস্তবে তো এমন কিছু হতে পারে না! আর যদি হতোই তাহলে আপনার ঘরে যখন এটা সংরক্ষিত ছিল ওখন সমস্যা হলো না ক্যান?
আরজু মুক্তা
এই রকম একটা গল্প বাস্তব জীবনের সঙ্গে মিলে যায়।
ভালো লাগলো।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ কাল্পনিক ভাল লাগল
অনেক শুভ কামনা রইল————-
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সুন্দর লিখেছেন। গল্পটি ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা রইলো
হালিম নজরুল
“The biggest suspense of life is that…You don’t know who is praying for you and who is playing with you”
———এক্সিলেন্ট কোটেশন
মহানন্দ
গল্পটাতে জনির স্টেটমেন্ট গুলো ১০০% সত্য কিনা সেটা যাচাই করার সুযোগ ছিলনা ,ওর কথা আমরা বিশ্বাস করেছি। তবে বাস্তব জীবনে আমরা তিন জনই কঠিন কিছু সমস্যার মোকাবেলা করেছি এবং করছি যেটা হবার কথা ছিলনা। হয়তো প্রতিমাটির সাথে এগুলোর কোন সম্পর্ক নেই তবে এটা ঠিক আমরা সবসময় অজুহাত খুঁজতে পছন্দ করি। সবাইকে ধন্যবাদ ।
রেহানা বীথি
জনি যে মূর্তিটা জেনিকে দেয়নি, কেন দেয়নি, এ প্রশ্নের তো কোনও সদুত্তর পাওয়া গেল না। যাইহোক, ভালো লাগলো আপনার রহস্যময় লেখাটি।
সুপায়ন বড়ুয়া
ভুতের গল্প হলে কথাই নাই।
কিন্তু প্রতিমা বলে কথা।
কেউ মনে আঘাত না পেলে ভাল।
কবির জন্য শুভ কামনা।
ফয়জুল মহী
সুপাঠ্য,সুশোভন ও শ্রুতিমধুর লেখা।
ইসিয়াক
চমৎকার লেখনী ।
শুভকামনা্