#পর্ব_৪৬
রক্তমাংসে গড়া নবীন কিশোর যৌবনের যার পদার্পণ,
উদাসী ষোড়শ শতকের বৈধব্য সমাজে যেন কালপেঁচার আত্তীকরণ। বুকে চন্দনের গন্ধ আর ষোড়শীর ভেজা চুলে পুরো শহর ঘুরে অনেক পার্বতী পাওয়া যাবে। কিন্তু পাওয়া যাবেনা তার মতো করে হেমবতী ষোড়শী,যার কাছে রয়েছে নীললোহিত অপরাজিতার মোহনীয়তা আর মৃগ কস্তূরীর মুগ্ধতার গন্ধ ছোঁয়া।
নিরন্তর স্বপ্ন আর গন্তব্যহীন পথিক হয়ে গন্তব্যপথে পৌঁছানো দুরূহ। সকলকিছু উপেক্ষা করে যেতে হবে তার কাছে একদন্ড ভালোবাসা পাওয়ার আশায়।
বেনামি আর বিদ্রোহের লকারে বন্ধি হলেও বয়স প্রায় একবিংশ সেখানে কেটে যাবে। খুঁজতে হবে আমায় কিছু নিরবতা আর একাকীত্বে নিজেকে টিকিয়ে রাখার রসদ। জীবন যুদ্ধে স্বপ্নকে বিসর্জন দিতে গিয়ে হাতের বারুদটাও নিজের দিকে এসে পড়ে। হিমালয় বেয়ে গন্ধক নামলেও যে তার অস্তিত্ব আঁকড়ে ধরা যাবেনা স্বপ্নটা পথে নিমিষ হয়ে গেলেও যে তার চলার গতিপথ থমকে যায়না। সে কথা অনুসরণ না করে অনুকরণ করতে লাগলাম। গন্ধক হিমালয় কেনা যাবে কিন্তু তার অস্তিত্বকে ধরে রাখার সক্ষমতা আমার নেই। স্কাইলাইটের ভেতর উত্তপ্ত লাভার ভয়াবহ স্রোত এই স্রোতকে উপলব্ধি করতে হলে তার বাহিরের উত্তপ্তা সংবরণ করতে হবে।
মাটির গায়ে সন্ন্যাসী বসন স্তব্ধবাকের মৌনমুখর পাহাড়িয়া সুবর্ণের রৌদ্রের আমেজতায় একদিন পেয়েছিল সে কাঞ্চনজঙ্গা পাদদেশের রূপ।
যেখানে আজও লুকিয়ে আছে বাঙালির অজস্র মহাকাব্য আর শ্রুতি নাট্য। কালের অবদ্ধি থেকে বঙ্গীয় সাহিত্য সমাজের লেখকগণ এই পাদদেশের কাছে ঋণি। মহাশূন্য জুড়ে মহাশূন্যচারীরা কতবার চাঁদকে ছোঁয়েছে আজও অব্ধি কাঞ্চনজঙ্গা পাদদেশের লুকিয়ে থাকা মহাকাব্য অক্ষিপটে অগোচরে লুকিয়ে আছে।
অভিমানে ঘেরা আর নক্ষত্ররাজীর ছায়াতে যার মোহনীয়তা অমরত্ব লাভ করেছি।
রাতের আকাশের গায়ে যে বাঁকা চাঁদ সে চাঁদ পূর্ণিমা রাত্রিতে ছিলো ষোড়শী। আর পুলকিত নয়নে স্বপ্নাবেশে আমি যাকে দেখেছিলাম সে অষ্টাদশী পার্বতী।
উত্তপ্ত মধ্যদুপুর কৃষ্ণনগর থেকে বেরিয়ে পড়লাম।
হাঁটতে হবে প্রচুর কোথাও নির্দিষ্ট প্লাটফর্ম নেই।
বলা যেতে পারে দিকশূন্য যানবাহনহীন রাস্তা।
রাখালিয়া বাঁশিতে উদাসী কিশোর মগ্ন গানের কত রাগরাগিণী নিয়ে। বুকের মধ্য শিহরিত হচ্ছে উদাস ভাবের ভরদুপুরে উদাস সুর।
#পর্ব_৪৭
শহরের গায়ে তৃষিত অধিবাস ব্যাপিত হয় গুরুগম্ভীর নিরুত্তাপে। প্রেমিক যখন মহাজন হয় কত কলি যে খরতাপে পুড়ে মরে। অন্ধ প্রেমিক জানেনা এই খরতাপের উষ্ণতা। গঙ্গার অববাহিকায় সরস্বতীর শ্বেত রূপে কত অর্গলিত স্বপ্ন বয়ে চলে,আজও গঙ্গা জানেনা তাহা।
আমি বারবার তাহার ললাটে টিপ আর ঠুটের কাজল কালো নয়নের মায়ায় পড়েছি। এসব জেনে সে আমায় রাখে কত অজস্র অভিমানের কালোছায়ায়। অনুসরণ,অনুকরণে নয় সুপ্তিকালীন স্তব্ধতা আঁকে রোজ আমার বুকে। শরতের শেষে কাশফুল ঝরে পড়লেও তার মুকুলাবদ্ধে মোহনীয়তার আভাস বয়ে।
আত্নবিলাসে রোজ আমি বোহেমিয়ান হই যখন সে আমার থেকে অনেকদূর চলে যায়। আমার কবিতারা বনলতা আর জীবনানন্দকে তরুলতার প্রাচীর বেয়ে গিয়ে ছুঁতে পারেনা।
যেমন করে অশোক গাছের পাতা ঝরে পড়লে পঁচে যায়,নিচের জলাধারে শেওলারা সেথায় আগন্তুক নয় তাই পাতার প্রশংসা করে না। না আমি তার কাছে রোজকার দিনের মত প্রশংসিত হতে চাই না। একটু ভালোবাসার খানিক ছোঁয়া পেতে চাই। সে আমার হৃদপিন্ডের শতভাগ জায়গা দখল করুক তার প্রতি থাকবেনা কোন কারফিউ। নির্ঘুম আর ছায়াপথের অক্ষিপটে ঝরে পড়া শিউলি শিহরিত হউক ভোরের প্রকাশিত উদ্ভাসে।
যেমন করে রোজ অভিসারে বারান্দায় দাঁড়িয়ে দুজন কথা বলতাম,ফুল,প্রকৃতি আর আকাশের শেষ তারা গুলো কে অনুভব করতাম। কত দুঃখকষ্টের ভাগিদার হতাম একে অপরের।
অপার মোহনীয়তা আর স্নিগ্ধতার সুবর্ণ আলোতে আমাদের নদী যেমন করে রোজ বিমোহিত হত তেমনি করে তোমার ভ্রুযুগলে আমি রোজ রোজকার বিমোহিত ও আপ্লুত হতাম। অতন্দ্র প্রহরী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম তোমার বেবাক শহরের একপাশে। একদন্ড ভালোবাসা আর তোমার মিষ্টি হাসির কল্পিতা অনুক্ষণে রোজ আমি মোহিত হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম।
.
ক্রমশ…
১৭টি মন্তব্য
মোহাম্মদ দিদার
বেশ ভালোলাগলো।
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রাপ্তি দাদা।
শুভকামনা অহর্নিশ।
আরজু মুক্তা
আ হা! পার্বতী, পর্বতকন্যার দারুণ রূপে মোহিত হলাম।
শুভকামনা
প্রদীপ চক্রবর্তী
মুগ্ধতা একরাশ।
শুভকামনা অহর্নিশ দিদি।
মনির হোসেন মমি
প্রিয় তার প্রিয়তমার ভালবাসা পেতে কাছে থাকতে কত না আকুলতা। বেশ সুন্দর করে শব্দ আর বাক্যের কৌশলে ফুটিয়ে তুলেছেন। চমৎকার এমন লেখায় ধন্যবাদ জানাই।চলুক গল্প।
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রাপ্তি দাদা।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো দাদা।
মোঃ মজিবর রহমান
আপনার শব্দ ব্বুনন কৌশল্গত অনেক ভা ল প্রদীপ দা। বাক্যশৌলী দারুন শুভভালবাসা রইল।
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রাপ্তি দাদা।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো।
ভালো থাকুন সবসময়।
মোঃ মজিবর রহমান
শুভেচ্ছা রইল
বন্যা লিপি
পড়তে পড়তে তো ভুলেই গেলাম….. এ কার লেখা?? চমৎকার!!! যদিও বড় লেখা পড়া হয়না আমার। শব্দের কারিগরি টেনে নিয়ে গেলো বহুদুর। দারুন লিখছো দাদা ভাই! শুভ কামনা অহর্নিশ। 💕💕
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রাপ্তি দিদি।
উপন্যাস আজ ছোট আকারে পোস্ট করেছি ২য় পর্ব করে।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।
নিতাই বাবু
আপনার সুলেখিত লেখনীয় পড়তে পড়তে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম নিজের অজান্তেই। পড়া শেষে আবার ফিরে এলাম সোনেলার বুকে আপনার লেখায়। বেশ চমৎকার লিখেছেন। ধন্যবাদের সাথে শুভেচ্ছাও জানবেন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছি।
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রাপ্তি দাদা।
শুভকামনা অহর্নিশ ❤️♥️
সাবিনা ইয়াসমিন
” তার কাছে রোজকার দিনের মত প্রশংসিত হতে চাই না। একটু ভালোবাসার খানিক ছোঁয়া পেতে চাই। সে আমার হৃদপিন্ডের শতভাগ জায়গা দখল করুক তার প্রতি থাকবেনা কোন কারফিউ।”
এভাবেই ভালোবাসতে হয়, ভালোবাসার প্রত্যাশা গুলো এমনই হয়। যে সত্যিকারের ভালোবাসে তার মাঝে কোনো কার্পণ্য থাকেনা। সে কখনো বলতে পারেনা, * যা ছিলো সবই দিয়েছি। আর দিতে পারবো না।
শহর-বন্দরে চাইলেই ঝাঁকে ঝাঁকে পার্বতী পাওয়া যায় হয়তো, কিন্তু নিজের মনে গড়ে উঠা হৈমন্তীনি পার্বতীর দেখা মিলবেনা।
সুন্দর হচ্ছে প্রদীপ, শুভ কামনা 🌹🌹
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রাপ্তি,
শুভকামনা অহর্নিশ দিদি ❤️♥️
তৌহিদ
অনেক সুন্দর লেখা প্রদীপ দা, শুরু থেকে শেষ এক নিমিষেই। বাহ! দারুণ দারুণ।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রাপ্তি দাদা।
শুভকামনা অহর্নিশ…
ভালো থাকুন সবসময়….