আমাদের সমাজে বর্তমানে কাজে পারদর্শী মানুষের সংখ্যা কম পাওয়া গেলেও সমালোচনায় পারদর্শী মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিছু কিছু মানুষের দিনের প্রধান কাজই হচ্ছে সমালোচনা করা। কিন্তু তাদের এই অযথা সমালোচনা মাঝে মাঝে অনেক রূঢ় হয় এবং তা অন্যের মনে খারাপ ভাবে দাগ কাটতে পারে এই চিন্তা কেউ মাথায় আনেন না।
সমালোচনা করার তালিকায় শুধুমাত্র সমাজের মানুষ নয়; মাঝে মাঝে পরিবারের লোকজন, বন্ধুবান্ধবকেও দেখা যায়। কাজকর্ম, আচার আচরন, চালচলন কোন কিছুই সমালোচনার হাত থেকে রেহাই পায় না। মাঝে মাঝে সমালোচনা আপনার ভালোর জন্যই করা হয়। আপনি সমালোচনায় নিজেকে শুধরে নিতে পারেন। কিন্তু ভিত্তিহীন সমালোচনা শুধু কষ্টই বাড়ায় না সাথে মনের ভেতরে হীনমন্যতার জন্ম দেয়। আসুন দেখে নিন তীব্র আর ভিত্তিহীন সমালোচনার ক্ষেত্রে আপনার করনীয় তিনটি কাজ।
=> ভিত্তিহীন সমালোচনায় কান দেবেন না: সমালোচনা উপেক্ষা করুন। ভিত্তিহীন সমালোচনা ও সমালোচককে এড়িয়ে চলুন। যে কথার কোন ভিত্তিই নেই সেই কথা নিয়ে কেন নিজেকে শুধু শুধু ছোট করবেন? কেন অযথাই লোকে কী ভাবল তা নিয়ে মাথা ঘামাবেন? আপনি যেমন আপনার নিজেকে জানেন ঠিক তেমনি আপনার বন্ধু বান্ধব এবং পরিবারও আপনাকে চেনেন।
আপনার বন্ধু বান্ধব ও পরিবার আপনাকে নিয়ে কি ভাবলেন তা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অন্য মানুষ কি ভিত্তিহীন কথা বলল তা আপনার কাছে গুরুত্ব না পাওয়াই মঙ্গল। অন্যদিকে আপনার বন্ধু বান্ধব ও পরিবার আপনাকে নিয়ে অযথা কোন সমালোচনায় জড়াবেন না। আর জড়ালেও সেটার পেছনের ঘটনার সত্যতা তাদের সামনে তুলে ধরুন।
মোটকথা আপনি কার সমালোচনায় কান দেবেন এবং কারটাতে কান দেবেন না পুরোপুরি আপনার ওপর নির্ভর করে। যাকে এবং যার কথা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়, তার কথায় কান দিন। তার সমালোচনার পেছনের কারন খুঁজে বের করুন অন্য কারো নয়।
=> অযথা প্রতিবাদ করে সমালোচনাকারীর মনোবাসনা পূর্ণ করবেন না: ভিত্তিহীন অযথা কথা শুনলে অনেকেরই তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদের ইচ্ছা জাগে। অনেকে জোর গলায় প্রতিবাদ করেও ফেলেন। কিন্তু এতে আপনার সমস্যার সমাধান না হয়ে বরঞ্চ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। মনে রাখবেন, যে মানুষটি আপনাকে নিয়ে সমালোচনা করছে সে জেনে বুঝেই আপনাকে নিচু করার জন্য, আপনাকে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করার জন্য কাজটা করছে।
এই সমালোচনার আসলে কোন ভিত্তি নেই। আপনি যখন প্রতিবাদ করতে যান তখন উল্টো সে আরও খুশী হয়, কারন সে বুঝতে পারে তার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। আপনি অযথাই প্রতিবাদ করে নিজে যে কষ্ট পেয়েছেন, সেটা প্রকাশ করে সমালোচনাকারীকে আত্মতৃপ্তি পাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন।
=> যখন দরকার তখন প্রতিবাদ করতে পিছপা হবেন না: কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি উপেক্ষা করে গেলে ক্ষতি বেশি হয়। আরও একটি বিষয় মাথায় রাখবেন, যদি সব সময় আপনি মাথা নিচু করে চুপ থাকেন তাহলে আপনাকে নিয়ে সমালোচনার মাত্রা বাড়বে বৈ কমবে না। যেসব ক্ষেত্রে আপনার মাথা তুলে দাঁড়ানোর কথা সেসব ক্ষেত্রে তীব্রভাবে প্রতিবাদ করুন। তবে আড়ালে আবডালে গসিপ করে নয়, বরং সরাসরি সমালোচনাকারীকে প্রশ্ন করুন।
আপনার বিরুদ্ধে অযথা সমালোচনার কারণ জানতে চান। সাহসিকতার সাথে এদের সমালোচনার মোকাবেলা করুন কেউ আপনার সাথে থাকুক বা না থাকুক। আপনি যদি প্রতিবাদ করতে না শেখেন তবে আপনারই ক্ষতি। যদি প্রতিবাদ করে নিজেকে এই ধরনের ভিত্তিহীন তীব্র সমালোচনার হাত থেকে রেহাই দিতে পারেন তবে আপনার নিজের প্রতি শ্রদ্ধা বাড়বে। আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
মনে রাখবেন যখনই কেউ আপনাকে নিয়ে ভিত্তিহীন সমালোচনায় যায়, এর অর্থ সে আপনার উন্নতি কিংবা আপনার অবস্থানকে হিংসা করে। তার সমালোচনার মূল কারন আপনাকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে ভালো অবস্থান থেকে আপনাকে সরিয়ে আনা। সুতরাং ভিত্তিহীন সমালোচনার প্রতিবাদ করে কারো মনোবাসনা পূর্ণ করবেন না।
তথ্যসূত্র: প্রিয় ডটকম।
লিংকঃ উদ্যোক্তার খোঁজে নিউজ
৩১টি মন্তব্য
দালান জাহান
বাহ্ সুন্দর একটি পোস্ট। অনেক উপকারে আসবে মনে করি।
তৌহিদ
হ্যা দাদা, পাঠক উপকৃত হবে বটে। ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
ইঞ্জা
এই পোস্টের সাথে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করছি।
তৌহিদ
ধন্যবাদ দাদা, ক’দিন থেকে মন মেজাজ ভালো নেই। তাই সামান্য জ্ঞান সঞ্চয়ের চেষ্টা করছি।
ইঞ্জা
ভাইয়ের মন মেজাজ ঠিক নেই আর আমিই জানিনা। 😲
তৌহিদ
ভাই আমি চাইনি কারও উপর ইফেক্ট পড়ুক। আপনারা আমাকে ভালোবাসেন। আমার মন খারাপে আপনারও মন ভালো থাকবেনা তা আমি জানি।
ভালোবাসা জানবেন দাদা।
মনির হোসেন মমি
জীবনে চলার পথে এ পোষ্টটি খুবই অর্থবহ।আসলে তাই অযথা তর্কে না জড়িানোই ভাল তবে যদি তর্কে বাধ্য হই তবে ছেড়ে না দেয়াই উচিত।ভাল লিখেছেন।
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।
জিসান শা ইকরাম
আমার মনের কথাগুলোই আপনার পোষ্টে এসেছে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
আমি লেখাটি পড়ে উপকৃত হলাম তাই পাঠকদের কথা চিন্তা করেই লেখাটি শেয়ার দিলাম ভাই।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানবেন ভাই।
জিসান শা ইকরাম
ভালো লেখা সবার সাথে সুত্র উল্লেখ করে শেয়ার দেয়া যায়।
শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
সঞ্জয় মালাকার
চমৎকার পোষ্ট, পথ চলতে উপকারে আসবে মনে করি। ভালো থাকবে ভাই।
তৌহিদ
কারও উপকারে আসলেই পোষ্টটি স্বার্থক সঞ্জয়। পড়েছেন জেনে ভালো লাগছে। ধন্যবাদ জানবেন।
সঞ্জয় মালাকার
ধন্যবাদ ভাইয়া।
বন্যা লিপি
অজস্র ধন্যবাদ আপনাকে ভাই, খুবই সময়োপযোগী পোস্ট। উপকারে লাগবে সবার। তবে কি জানের ভাই, নিতে নিতে এখন আর নেইইনা কোনোকিছু! অনেক হইছে আর কতো? প্রতিবাদও যেমন করি নিজের মতো, চুপও থাকি নিজের মতো। কত করবি কর।
তৌহিদ
কিছু সময় চুপ থাকাই জ্ঞানীর পরিচয় আপু। এটাই ভালো।
শবনম মোস্তারী
শিক্ষনীয় পোষ্ট। কিন্তু অনেক সময় চাইলেও এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যায়না।
তৌহিদ
প্রতিবাদ না করে চুপ থাকাটাও এক ধরনের প্রতিবাদ। এটাইবা ক’জন পারে।
ধন্যবাদ জানবেন।
শাহরিন
উপকারী পোস্ট। আমার মনে হয় সব কিছুর আগে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।
তৌহিদ
হ্যা, মাথা ঠান্ডা রাখাটা অনেক জরুরী। সময়ে সময়ে মাথাটাই গরম হয়ে যায় যে!
রাফি আরাফাত
অনেক সময় অনেক কারনে প্রতিবাদ করার কোন উপায় থাকে না। তবে আপনার কথার লজিক আছে। শিখার আছে, বুঝার আছে। ধন্যবাদ ভাই
তৌহিদ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ রাফি। আপনিও কিন্তু অনেক সুন্দর লিখছেন।
রাফি আরাফাত
ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
সমালোচনা যে বা যারা করে, তারা তাদের নিজস্ব ধ্যান-ধারনা থেকেই করে। সমালোচিত ব্যক্তির উচিৎ সমালোচনা কারী কে উপেক্ষা না করে তার সাথে সরাসরি কথা বলা। আমি এই নীতিতে বিশ্বাসী। আর আমি ব্যক্তিগত জীবনে এই নীতি পালন করি। 😊😊
ভালো পোস্ট দিয়েছেন। শুভ কামনা 🌹🌹
তৌহিদ
আপনার সাথে আমিও সহমত পোষণ করছি আপু। তবে মাঝেমধ্যে মেজাজ বিগড়ে গেলে উল্টাপাল্টা হয়ে যায় সব।
শামীম চৌধুরী
তৌহিদের সাথে সহমত পোষন করলাম।
তৌহিদ
ধন্যবাদ জানবেন ভাই।
ছাইরাছ হেলাল
কোন কোন ক্ষেত্রে সমালোচকরাই হতে পারে প্রকৃত বন্ধু।
কোন কোন ক্ষেত্রে জীবন ত্যানা ত্যানা হয়ে যেতে পারে,
তাই কুল এবং কুল। এবং ‘উপেক্ষা’ এর সঠিক জবাব।
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই, মনে রাখবো আপনার কথা।
আরজু মুক্তা
সমালোচকদের কাছ থেকে কিছু শিখার আছে।।ঠাণ্ডা মাথায় তাদেরকে ম্যানেজ করে দূরে সরে যেতে হবে।।
তৌহিদ
জ্বী আপু, ধন্যবাদ জানবেন। উপদেশ মনে থাকবে।