দিনেদিনে কতোটা বর্বর, অসভ্য আর অমানবিক জাতিতে পরিণত হচ্ছি আমরা!!!
★এক: ঢাকার কল্যাণপুরে পাইকপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মো. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ‘রমজানের পবিত্রতা রক্ষা কমিটি’র লোকজন দিনের বেলা খাবার দোকানপাট বন্ধ করে দিচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, তারা খাবার হোটেলগুলোতে ঢুকে খাবারের মধ্যে বালু মিশিয়ে দিচ্ছে।
ডিবিসি নিউজ খতিব হাবিবুর রহমানের কাছে এর ব্যাখ্যা দাবী করলে তিনি এর পক্ষে ইসলামী ফতোয়া থাকার দাবী করেন। পরে বাইতুল মোকাররমের ইমামকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি এই বিধান প্রয়োগ করতে পারে না। শর্ত সাপেক্ষে খাবার দোকান খোলা রাখা যাবে মুসাফির বা অসুস্থ লোকের জন্য।
বলি, এদেশটা কি শুধুই মুসলমানদের? অন্য ধর্মাবলম্বী লোকদেরও কি তারা খেতে দেবে না? জোরপূর্বক ধর্মাচরণ প্রকাশ করতে কতিপয় মুফতি যে ধর্মের নামে হিংসা ছড়িয়ে মানুষের বিরুদ্ধে মানুষকে প্রচণ্ডরকমভাবে আক্রমণাত্মক করে তুলছেন, এর ফলশ্রুতিতে এই মানুষগুলোই একদিন ধর্মের নামে মানুষকে কচুকাটা করবে। সেদিনটা বোধহয় খুব বেশি আর দূরে নেই। রাষ্ট্রীয় প্রশ্রয় এদেরকে আরো বেশি বেপরোয়া করে তুলছে।
এই হচ্ছে, ধর্মের নামে ধর্মান্ধতা!!!
পবিত্রতার নামে কল্যাণপুরে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে হোটেল, ডিবিসি নিউজ।
★দুই: রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, উত্তরাঞ্চলের আগুনে পোড়া রোগীদের এক মাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র হাসপাতালটির বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের ৮টি এসির সবগুলোই নষ্ট। এমনকি ওয়ার্ডের সিলিং ফ্যানগুলোও দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে।
পোড়া রোগীদের প্রধান চিকিৎসাই হচ্ছে ক্ষতস্থানে ঠাণ্ডা বাতাস দেওয়া। এদিকে এসি সিস্টেম হওয়াতে পুরো ওয়ার্ডে কোন জানালাও নেই। ফলে অতিরিক্ত গরমে রোগীদের ক্ষতস্থানে ইনফেকশন দেখা দিচ্ছে। ইনফেকশনের কারণে গত এক মাসে সাত রোগী মারাও গেছে।
দায়িত্বপ্রাপ্তরা অফিস, বাড়ি, গাড়িতে এসি ছাড়া এক মুহূর্তও পার করতে পারেন না! পোড়া রুগির জ্বালা তারা বুঝবেন কি করে!
খবরে প্রকাশ, বিভাগীয় প্রধান ডা. মারুফুল ইসলাম ও রেজিস্টার ডা. আজমল হোসেনের রুমের ফ্যান দুটি সচল আছে। কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সরা যেখানে বসেন সেখানকার স্ট্যান্ড ফ্যান আর সিলিং ফ্যানও ঠিক আছে। অথচ আগুনে পোড়া রুগির জ্বালা নিবারণে কোন সাপোর্ট নেই!
এই হচ্ছে, মানবকূলের মানবিকতা!!!
রমেকের বার্ন ইউনিটের এসিসহ সব ফ্যান নষ্ট: ইনফেকশনে ৭ রোগীর মৃত্যু।
মানুষের বোধ যখন হারিয়ে যায়, তখন সেখানে আর শান্তি, সৌন্দর্য বলে কিছুই থাকে না, অন্ধকার আর কালোতে সব ঢেকে যায়।
আমরা ক্রমেই নষ্ট জাতিতে পরিণত হতে যাচ্ছি।
৭টি মন্তব্য
নীহারিকা
অজ্ঞতা, স্বেচ্ছাচারিতা, অমানবিকতা যখন সীমা ছাড়িয়ে যায় তখন এমনই হয়। কুরআন-হাদিসের কোথায় এমন কিছু লেখা নেই যা উগ্রতাকে প্রশ্রয় দেয়। বরং সহনশীল আচরণের কথাই বলা হয়েছে। এবং জোর করে খাবারের দোকান বন্ধ করতে হবে যাতে অন্য ধর্মাবলম্বী বা অসুস্থ্য ব্যক্তি বা মুসাফিররা বিপদে পরে এমন কিছুও বলা নেই। কথা হচ্ছে এদের বাধা দেবার/শক্ত হাতে দমন করার কেউ নেই। আর হাসপাতালের কথা কি বলবো। ভাষাহীন।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
সত্যিই বড় লজ্জাকর আর অমানবিক -{@
সঞ্জয় কুমার
সামনের দিন গুলো কেমন হবে ? কোন অচেনা অন্ধকারের দিকে হাঁটছে দেশ ?
মোঃ মজিবর রহমান
এর কি করা যাবে আইন শৃঙ্খলা বাহীনি দেখেও দেখে না। আদরশ্র
https://youtu.be/u4-TdpTNmO4
জিসান শা ইকরাম
আমাদের দেশের কিছু হুজুর আছেন এরা সবকিছুতেই উগ্র। সংযমের ধারে কাছেও এরা নাই। সমস্ত দেশ ভরে আছে দুর্নীতিতে এরা তা থেকে সংযমী হতে বলবে না বোধগম্য কারনে। সব সংযম এদের খাবার দোকানের উপর। এদের কঠোর হাতে দমন না করলে ভবিষ্যতে দেশের কপালে দুঃখ আছে।
রমেকের বার্ন ইউনিটের কথা শুনে হতাশায় ডুবে গেলাম। জনগনের উপর ট্যাক্সের বোঝা আর সেই জনগন পাবে না সঠিক সেবা। রাষ্ট্রীয় ডাকাতি বলা যায় একে।
এমন লেখার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
নীলাঞ্জনা নীলা
আমাদের দেশটা এতো অচেনা লাগে কেন? মনে হয় যেনো এ দেশকে আমি চিনিনা। ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি, ওদিকে পোড়া মানুষের হাহাকার-চিৎকার। “মানুষেরই মাঝে স্বর্গ-নরক” কথাটাই এখন ভুল মনে হয়।
শুন্য শুন্যালয়
এদেশ আপাদমস্তক মুসলিম কান্ট্রি, এদেশে অন্য ধর্মের মানুষ থাকবে কেন? চলে যায়না কেন? এতোকিছু করছি তাড়াবার তবুও যায়না কেন?
আমাদের দেশের হাসপাতালের চাইতে বস্তির পরিবেশ ভালো। দূর্গন্ধে রুমাল চেপে বের হতে হয় ওখান থেকে। হাসপাতালে যারা যায় তারাতো মানুষ না আপু, তাদের জন্য প্রশাসকের কিছু করার কী দরকার!!