” আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী,
আমি কি ভুলিতে পারি… “
আসলেই এই দিনটি ভুলবার নয়, এই পৃথিবীতে বাঙালি জাতির অস্তিত্ব যতদিন টিকে থাকবে, ঠিক ততদিনই আমরা মনে রাখবো এই দিনটিকে…যদিও ৫২’র অনেক আগে থেকেই বাঙালির মনের ভেতর ভাষা আন্দোলনের একটা ঝড় বইতে শুরু করেছিল কিন্তু সেই ঝড় প্রকৃতপক্ষে আঘাত হানে ৫২’র ২১ শে ফেব্রুয়ারীতে। ১৯৪৭-১৯৫২ সাল পর্যন্ত ” আমাদের রাষ্ট্রভাষা কি হবে বাংলা না উর্দু ” এই বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলতে থাকে। এই সময়ের মাঝে পাকি শাসকরা বেশ কয়েকবার উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দিলেও বাঙালিরা কিছুতেই তা মেনে নেয় না, বরং এই ইস্যুটি নিয়ে তাঁদের ভেতর আন্দোলনের এক সুপ্ত আগ্নেয়গিরি জন্ম নিতে থাকে। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারী ঢাকা সফররত পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্ণর জেনারেল খাজা নাজিমুদ্দিন পল্টন ময়দানের সমাবেশে ঘোষণা সাথে সাথে সমাবেশস্থলে তীব্র প্রতিক্রিয়াকরেন কেবল মাত্র “উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা” । দেখা দেয়। শ্লোগান ওঠে “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” ।
এই বক্তব্য সমগ্র পূর্ব – পাকিস্তানে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ২৮ জানুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে । এই সমাবেশ থেকে নাজিমুদ্দিনের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা ছাড়াও পূর্ব-পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীপরিষদকে পশ্চিম পাকস্তানের হাতের পুতুল হিসাবে অভিহিত করা হয় । খাজা নাজিমুদ্দিনের বক্তব্য ভাষা আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দান করে ।৩০ জানুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের ডাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এইদিন সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হয় । একই দিন মাওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে আওয়ামী মুসলিম লীগের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় । সভায় ভাসানীর নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনে ছাত্রদের পাশাপাশি আওয়ামী মুসলিম লীগের সরাসরি এবং সক্রিয় অংশগ্রহণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ।৩১ শে জানুয়ারী ভাসানীর সভপতিত্বে পূর্ব-পাকিস্তানের সকল রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবিদের একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । এই সম্মেলন থেকে কাজী গোলাম মাহবুবকে আহবায়ক করে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় । সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ২১ ফেব্রুয়ারী সমগ্র পূর্ব-পাকিস্তানে সাধারণ ধর্মঘট আহবান করে । ১৮ ই ফেব্রুয়ারী পাকিস্তান সরকার ২১ ফেব্রুয়ারী ডাকা সাধারণ ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে এবং সকল সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে । ২০ ফেব্রুয়ারী পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ১৪৪ ধারা জারির পরিপ্রেক্ষিতে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ এর উদ্যোগে আবুল হাশিম এর সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় । সভায় উপস্থিত সদস্যগণ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার ব্যাপারে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সভার একটি বড় অংশ ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ব্যাপারে মত দিলেও অনেকেই এতে সহিংসতার আশঙ্কায় বিপক্ষে মত দেন ।
পরদিন সকাল অর্থাৎ ২১ শে ফেব্রুয়ারী সকাল ৯ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জিমনেশিয়াম মাঠের পাশে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত) গেটের পাশে ছাত্র-ছাত্রীদের জমায়েত শুরু হতে থাকে। সকাল ১১ টায় কাজী গোলাম মাহবুব, অলি আহাদ, আব্দুল মতিন, গাজীউল হক প্রমুখের উপস্থিতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ শুরু । সমাবেশে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ব্যাপারে ছাত্র নেতৃবৃন্দ এবং উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয় । আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক সভায় উপস্থিত হয়ে ছাত্রদের ১৪৪ ধারা না ভাঙ্গার ব্যাপারে যুক্তি প্রদর্শন করেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম হোসেইন এর নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষক সমাবেশ স্থলে যান এবং ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার জন্য ছাত্রদের অনুরোধ করেন । বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে উপস্থিত ছাত্রনেতাদের মধ্যে আব্দুল মতিন এবং গাজীউল হক ১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষে মত দিলেও সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ এ ব্যাপারে কোন সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হন । এ অবস্থায় উপস্থিত সাধারণ ছাত্ররা স্বত:স্ফূর্তভাবে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং মিছিল নিয়ে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের অন্তর্গত) দিকে যাবার উদ্যোগ নেয় ।
ঠিক তার পরমুহুর্তটাতেই শুরু হয়ে যায় ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণিত ঘটনা। পাকি জারজদের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশ সেই মিছিলে লাঠিচার্জ এবং গুলি বর্ষণ শুরু করে । গুলিতে ঘটনাস্থলেই আবুল বরকত, রফিক উদ্দীন, এবং আব্দুল জব্বার নামের তিন তরুণ মৃত্যু বরণ করেন । পরে হাসপাতালে আব্দুস সালাম নামের একজন যিনি সচিবালয়ে কর্মরত ছিলেন তিনি মৃত্যুবরণ করেন । লাঠিচার্জ এবং গুলি বর্ষণ শুরু করে । গুলিতে ঘটনাস্থলেই আবুল বরকত (ঢাবি এর রাষ্ট্রবিজ্ঞান এর মাষ্টার্সের ছাত্র), রফিক উদ্দীন, এবং আব্দুল জব্বার নামের তিন তরুণ মৃত্যু বরণ করেন । পরে হাসপাতালে আব্দুস সালাম যিনি সচিবালয়ে কর্মরত ছিলেন মৃত্যু বরণ করেন । অহিউল্লাহ নামে ৯ বছরের একটি শিশুও পুলিশের গুলিতে মারা যায় । পুলিশের সাথে ছাত্রদের ৩ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলতে থাকে কিন্তু পুলিশ গুলিবর্ষণ করেও ছাত্রদের স্থানচ্যূত করতে ব্যর্থ হয়লাঠিচার্জ এবং গুলি বর্ষণ শুরু করে । গুলিতে ঘটনাস্থলেই আবুল বরকত (ঢাবি এর রাষ্ট্রবিজ্ঞান এর মাষ্টার্সের ছাত্র), রফিক উদ্দীন, এবং আব্দুল জব্বার নামের তিন তরুণ মৃত্যু বরণ করেন । পরে হাসপাতালে আব্দুস সালাম যিনি সচিবালয়ে কর্মরত ছিলেন মৃত্যু বরণ করেন । অহিউল্লাহ নামে ৯ বছরের একটি শিশুও পুলিশের গুলিতে মারা যায় । পুলিশের সাথে ছাত্রদের ৩ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলতে থাকে কিন্তু পুলিশ গুলিবর্ষণ করেও ছাত্রদের স্থানচ্যূত করতে ব্যর্থ হয় ।
বালকের গায়ের সাদা শার্ট আর পিচঢালার রাস্তা হয়ে যায় লাল রক্তে রঞ্জিত। ইতিহাসের পাতায় সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার আর ছোট্ট শিশু অহিউল্লাহের রক্তে লেখা হয়ে গেলো বাঙালির অন্যতম গৌরবের একটি দিন ” ২১ শে ফেব্রুয়ারী “। যেই দিনটি না এলে হয়তো আমরা আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলাকে হারিয়ে ফেলতাম চিরতরে। যেই দিনটি না এলে হয়তো পৃথিবী বাসী জানতো না যে মায়ের মুখের ভাষার জন্য বাঙালি নিজের প্রাণের মায়াও ত্যাগ করতে পারে ; জানতে পারতো না যে
” একেকটি বাংলা অক্ষর একেকজন বাঙালির জীবন ” ।
একুশ শুধুমাত্র দুটি সংখ্যার সমন্বয় নয়, একুশ আমাদের জীবন, আমাদের অহংকার। একুশের ইতিহাস, একুশের মহত্ত্ব, একুশের মর্ম এই ক্ষুদ্র পোস্ট দিয়ে কোনোভাবেই শেষ করা যাবে না… তারপরও কিছুটা লেখার চেষ্টা করেছি। শেষ করছি কবি মাহবুবুল আলম চৌধুরী রচিত একুশের প্রথম কবিতা দিয়ে…
‘আজ আমি এখানে কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি…’
ওরা চল্লিশজন কিংবা আরো বেশি
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে—রমনার রৌদ্রদগ্ধ কৃষ্ণচূড়ার গাছের তলায়
ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য—বাংলার জন্য।
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে
একটি দেশের মহান সংস্কৃতির মর্যাদার জন্য
আলাওলের ঐতিহ্য
কায়কোবাদ, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের
সাহিত্য ও কবিতার জন্য
যারা প্রাণ দিয়েছে ওখানে
পলাশপুরের মকবুল আহমদের
পুঁথির জন্য
রমেশ শীলের গাথার জন্য,
জসীমউদ্দীনের ‘সোজন বাদিয়ার ঘাটের’ জন্য।
যারা প্রাণ দিয়েছে
ভাটিয়ালি, বাউল, কীর্তন, গজল
নজরুলের “খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি
আমার দেশের মাটি।”
এ দুটি লাইনের জন্য
দেশের মাটির জন্য,
রমনার মাঠের সেই মাটিতে
কৃষ্ণচূড়ার অসংখ্য ঝরা পাপড়ির মতো
চল্লিশটি তাজা প্রাণ আর
অঙ্কুরিত বীজের খোসার মধ্যে
আমি দেখতে পাচ্ছি তাদের অসংখ্য বুকের রক্ত।
রামেশ্বর, আবদুস সালামের কচি বুকের রক্ত
বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে সেরা কোনো ছেলের বুকের রক্ত।
আমি দেখতে পাচ্ছি তাদের প্রতিটি রক্তকণা
রমনার সবুজ ঘাসের উপর
আগুনের মতো জ্বলছে, জ্বলছে আর জ্বলছে।
এক একটি হীরের টুকরোর মতো
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ছেলে চল্লিশটি রত্ন
বেঁচে থাকলে যারা হতো
পাকিস্তানের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ
যাদের মধ্যে লিংকন, রকফেলার,
আরাগঁ, আইনস্টাইন আশ্রয় পেয়েছিল
যাদের মধ্যে আশ্রয় পেয়েছিল
শতাব্দীর সভ্যতার
সবচেয়ে প্রগতিশীল কয়েকটি মতবাদ,
সেই চল্লিশটি রত্ন যেখানে প্রাণ দিয়েছে
আমরা সেখানে কাঁদতে আসিনি।
যারা গুলি ভরতি রাইফেল নিয়ে এসেছিল ওখানে
যারা এসেছিল নির্দয়ভাবে হত্যা করার আদেশ নিয়ে
আমরা তাদের কাছে
ভাষার জন্য আবেদন জানাতেও আসিনি আজ।
আমরা এসেছি খুনি জালিমের ফাঁসির দাবি নিয়ে।
আমরা জানি ওদের হত্যা করা হয়েছে
নির্দয়ভাবে ওদের গুলি করা হয়েছে
ওদের কারো নাম তোমারই মতো ওসমান
কারো বাবা তোমারই বাবার মতো
হয়তো কেরানি, কিংবা পূর্ব বাংলার
নিভৃত কোনো গাঁয়ে কারো বাবা
মাটির বুক থেকে সোনা ফলায়
হয়তো কারো বাবা কোনো
সরকারি চাকুরে।
তোমারই আমারই মতো
যারা হয়তো আজকেও বেঁচে থাকতে
পারতো,
আমারই মতো তাদের কোনো একজনের
হয়তো বিয়ের দিনটি পর্যন্ত ধার্য হয়ে গিয়েছিল,
তোমারই মতো তাদের কোনো একজন হয়তো
মায়ের সদ্যপ্রাপ্ত চিঠিখানা এসে পড়বার আশায়
টেবিলে রেখে মিছিলে যোগ দিতে গিয়েছিল।
এমন এক একটি মূর্তিমান স্বপ্নকে বুকে চেপে
জালিমের গুলিতে যারা প্রাণ দিল
সেই সব মৃতদের নামে
আমি ফাঁসি দাবি করছি।
যারা আমার মাতৃভাষাকে নির্বাসন দিতে চেয়েছে তাদের জন্যে
আমি ফাঁসি দাবি করছি
যাদের আদেশে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তাদের জন্যে
ফাঁসি দাবি করছি
যারা এই মৃতদেহের উপর দিয়ে
ক্ষমতার আসনে আরোহণ করেছে
সেই বিশ্বাসঘাতকদের জন্যে।
আমি তাদের বিচার দেখতে চাই।
খোলা ময়দানে সেই নির্দিষ্ট জায়গাতে
শাস্তিপ্রাপ্তদের গুলিবিদ্ধ অবস্থায়
আমার দেশের মানুষ দেখতে চায়।
পাকিস্তানের প্রথম শহীদ
এই চল্লিশটি রত্ন,
দেশের চল্লিশ জন সেরা ছেলে
মা, বাবা, নতুন বৌ, আর ছেলে মেয়ে নিয়ে
এই পৃথিবীর কোলে এক একটি
সংসার গড়ে তোলা যাদের
স্বপ্ন ছিল
যাদের স্বপ্ন ছিল আইনস্টাইনের বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকে
আরো গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার,
যাদের স্বপ্ন ছিল আণবিক শক্তিকে
কী ভাবে মানুষের কাজে লাগানো যায়
তার সাধনা করার,
যাদের স্বপ্ন ছিল রবীন্দ্রনাথের
‘বাঁশিওয়ালার’ চেয়েও সুন্দর
একটি কবিতা রচনা করার,
সেই সব শহীদ ভাইয়েরা আমার
যেখানে তোমরা প্রাণ দিয়েছ
সেখানে হাজার বছর পরেও
সেই মাটি থেকে তোমাদের রক্তাক্ত চিহ্ন
মুছে দিতে পারবে না সভ্যতার কোনো পদক্ষেপ।
যদিও অগণন অস্পষ্ট স্বর নিস্তব্ধতাকে ভঙ্গ করবে
তবুও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ঘণ্টা ধ্বনি
প্রতিদিন তোমাদের ঐতিহাসিক মৃত্যুক্ষণ
ঘোষণা করবে।
যদিও ঝঞ্ঝা-বৃষ্টিপাতে—বিশ্ববিদ্যালয়ের
ভিত্তি পর্যন্ত নাড়িয়ে দিতে পারে
তবু তোমাদের শহীদ নামের ঔজ্জ্বল্য
কিছুতেই মুছে যাবে না।
খুনি জালিমের নিপীড়নকারী কঠিন হাত
কোনো দিনও চেপে দিতে পারবে না
তোমাদের সেই লক্ষদিনের আশাকে,
যেদিন আমরা লড়াই করে জিতে নেব
ন্যায়-নীতির দিন
হে আমার মৃত ভাইরা,
সেই দিন নিস্তব্ধতার মধ্য থেকে
তোমাদের কণ্ঠস্বর
স্বাধীনতার বলিষ্ঠ চিৎকারে
ভেসে আসবে
সেই দিন আমার দেশের জনতা
খুনি জালিমকে ফাঁসির কাষ্ঠে
ঝুলাবেই ঝুলাবে
তোমাদের আশা অগ্নিশিখার মতো জ্বলবে
প্রতিশোধ এবং বিজয়ের আনন্দে…
১৭টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
আমার সবচেয়ে বড় গর্ব আমি বাঙ্গালী,বাংলা আমার মুখের ভাষা।খুব ভালো লিখেছেন।
ফাতেমা জোহরা
হ্যাঁ সেটাই, আমি গর্বিত আমি ধন্য একজন বাঙালি হিসেবে জন্ম নিয়ে…
ধন্যবাদ আপু -{@
ছাইরাছ হেলাল
দীর্ঘ কবিতাটি পড়ার সময় মোটেই দীর্ঘ মনে হয়নি।
আমরা গর্বিত,আমার মা এ ভাষাতেই কথা বলেন
ফাতেমা জোহরা
গর্বিত হবো না-ই বা কেন! আমরাই একমাত্র জাতি যারা মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়েছি,রক্ত দিয়েছি…
ব্লগার সজীব
তথ্য বহুল পোষ্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।পোষ্টের শেষে কবিতা সংযুক্ত করে পোষ্টের গুরুত্বকে আরো বৃদ্ধি করেছেন।
কিছুটা খারাপ লাগে এবং হতাশ হই,ভাষার জন্য যে জাতি জীবন দেয়,সে জাতির প্রায় অর্ধেক মানুষ এই চেতনার বিরুদ্ধাচরণ করে বর্তমানে।পাকি জারজের অভাব নেই এখন দেশে।
ফাতেমা জোহরা
//কিছুটা খারাপ লাগে এবং হতাশ হই,ভাষার জন্য যে জাতি জীবন দেয়,সে জাতির প্রায় অর্ধেক মানুষ এই চেতনার বিরুদ্ধাচরণ করে বর্তমানে।পাকি জারজের অভাব নেই এখন দেশে।//
—পুরোপুরি একমত আপনার সাথে। আসলেই খুব,খুবই আক্ষেপ লাগে এসব দেখলে,লজ্জা হয়,ঘৃনা হয় আবার করুণাও হয় ওদের প্রতি এই ভেবে যে নিজেরাই কিভাবে নিজেদের “জারজ” প্রমাণ করছে!
প্রহেলিকা
এমন তথ্যমূলক পোষ্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। খুব সুন্দর করে তুলে এনেছেন ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস। আমরা সহ আগামী প্রজন্ম এমন ইতিহাসমূলক পোষ্টের মাধ্যমে অনেক উপকৃত হবে। ধন্যবাদ আবারো আপনাকে।
মহান একুশে ফেব্রুয়ারিতে বীর ভাষা শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
ফাতেমা জোহরা
কৃতজ্ঞতা রইলো। -{@
শুন্য শুন্যালয়
এতো সুন্দর গুছিয়ে লেখা, কিছুক্ষনের জন্য অই সময়টাতে চলে গিয়েছিলাম। কতো অহংকার আর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আমাদের, কিন্তু ধরে রাখতে পারছি কই?
আপনার ভক্ত হয়ে গেছি আমি, এমন চমৎকার করে আমাদের ইতিহাসগুলো তুলে আনছেন, ধন্যবাদ দেয়াটা সামান্য হয়ে যাবে। সকল ভাষা শহীদদের প্রতি রইলো স্যালুট।
ফাতেমা জোহরা
ধন্যবাদ আপু… -{@
আসলেই বড় অভাগা জাতি আমরা!! সেইসাথে অকৃজ্ঞও বটে। এতো গৌরবের ইতিহাসকে জেনে-না জেনে কতো ভাবেই না অপমান করছি,বিকৃত করি 🙁
জিসান শা ইকরাম
চমৎকার লিখেছেন।
অথচ আমাদের দেশের কিছু কুলঙ্গগার এখনো শহীদ মিনার ভেঙ্গে ফেলে
শহীদ মিনারে ফুল দেয়াকে পূজা বলে।
আমাদের শান্তি এই যে, পাকিস্থানেও ২১ ফেব্রুয়ারী এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয় 🙂
এমন লেখার জন্য ধন্যবাদ।
ফাতেমা জোহরা
//আমাদের শান্তি এই যে, পাকিস্থানেও ২১ ফেব্রুয়ারী এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয় //
এই কথাটা দারুণ ছিল 😀 লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ -{@
খেয়ালী মেয়ে
রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী,অথচো সেই রক্তের কথা আমরা ভুলে গিয়ে, বাঙালী হয়ে আমরা নিজেরাই দিন দিন বিকৃত করে যাচ্ছি রক্তের বিনিময়ে পাওয়া আমাদের এই বাংলা ভাষাকে…
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ, সেই সাথে সকল ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাই…
ফাতেমা জোহরা
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু -{@
লীলাবতী
আমরা এমন এক গর্বিত ইতিহাসের ঐতিহ্য ধারন করে আছি।খুবই ভালো লিখেছেন আপু।কবিতাটি এই প্রথম পড়লাম,অসাধারন।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
খুব সুন্দর ভাবে বর্ননা করলেন ভাষায় আত্ত্বত্যাগে মহা মানবদের সংগ্রামের ইতিহাস।সত্যিই আমি গর্বিত আমি বাঙ্গালী -{@
ফাতেমা জোহরা
ধন্যবাদ মনির ভাই 🙂 এমন মায়ের সন্তানেরা তো গর্বিত হবেই…