“ঝাঁকে ঝাঁকে শকুন নেমে এসেছে। তীক্ষ্ণ ঠোঁট দিয়ে ছিড়ে খুড়ে খাচ্ছে মরা মানুষের দেহ। তাদের চোখ চক চক করছে। কিন্তু মৃত মানুষের সংখ্যা এত বেশী যে শকুনের খেয়ে শেষ করতে পারছে না। শকুনদেরও খাওয়ায় অরুচি এসে গেছে। মরা মানুষের গা থেকে ছিঁড়ে খুঁড়ে ফেলেছে জামা কাপড়। তাদের অনেকের তখনো গা গরম। সবেমাত্র মরেছে। পথে ঘাটে নালা নর্দমায়—সর্বত্রই কলেরায় মরা মানুষ পড়ে আছে। জন সার দেখতে পেয়েছেন একটি শিশুর মৃতদেহ। শিশুটির গায়ে একটি শাড়ির অংশ পেঁচানো। তাঁর হতভাগী মা পেঁচিয়ে পুটুলি বানিয়েছে। ট্রাকের চলার সময় অসুস্থ শিশুটি মারা গেছে। চলন্ত ট্রাক থামেনি। মৃত ছেলের জন্য ট্রাক থামানো কোনো মানেই হয় না। আরও অনেক মৃতপ্রায় মানুষ এই ট্রাকেই ধুঁকছে। আগে পৌঁছাতে পারলে হয়তো কোনো হাসপাতাল পাওয়া যেতে পারে। তাদের সুযোগ মিলতে পারে চিকিৎসার। বেঁচেও যেতে পারে। এই আশায় সময় নষ্ট করতে কেউ চায় না। শিশুটির পুটুলী করা মৃতদেহটিকে ট্রাক থেকে রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতে ছুড়ে ফেলা দেওয়া হয়েছে”
…ঘটনাটি একাত্তরেরই। সেসময়ে পাকি হায়নাদের নির্মমতা,নিকৃষ্টতার কথা তো সবারই জানা।বিশ্বের অন্যতম ৫ টি গণহত্যার মধ্যে একাত্তরের গণহত্যা অন্যতম।উপরে যে ঘটনাটি দিলাম সেটা খুবই সামান্য একটি ঘটনা।কিন্তু আসলেই কি সামান্য? একটু ভাবুন আপনার বর্তমান পরিস্থিতির সাথে মিলিয়ে…
রোগ,শোক,জরা,ব্যাধি সবকিছুই যেনে একেবারে জেঁকে ধরেছিল! একদিকে কলেরার মহামারি অন্যদিকে হায়নার থাবা সেইসাথে বেঁচে থাকার নিরন্তন লড়াই।কি দুর্বিসহ অবস্থা তাই না? কোলের সন্তান কোলেই মারা যাচ্ছে তাঁকে আবার মা নিজ হাতেই পুটুলীতে করে ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছে! বুঝতে পারছেন কি সেই মায়ের মানসিক অবস্থা? না বুঝলে বোঝার চেষ্টা করুন,ভাবুন…
মূল প্রসঙ্গে আসি এবার। একাত্তরে জীবন রক্ষার তাগিদে দেশ ছেড়ে শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রায় এককোটি মানুষ। আচ্ছা, যারা নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে, দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পারি জমিয়েছিলেন তাঁদের সাথে মৃত মানুষের পার্থক্য কি ছিল জনেন কি? তাঁরা কি খুব ভালো ছিলেন নিজের দেশ ছেড়ে ? কি মনেহয়? কিছুই যদি মনে না হয়, তবে জহির রায়হানের Stop Genocide থেকে টুকে দেয়া নিচে লেখাটুকু পড়ুন তবেই বুঝবেন। তার আগে বলে নিই, লেখাটার শুরুটা কিন্তু অন্য দেশে পাড়ি জমানো সেই অভাগা শরনার্থীদের জীবন পথে ছুটে চলার করুণ বাস্তবতা দিয়েই”
“দেখলাম দিগন্ত বিস্তৃত আধমরা মানুষের চলমান মিছিল। দেহশক্তি নিঃশেষ তবুও ওদের চলতে হয়। মাথায় বয়ে নিয়ে চলছে ওদের শেষ পার্থিব সম্বল। অধিকাংশেরই দৃষ্টি উদভ্রান্ত। নৃশংস গণহত্যার ভীতি ছড়িয়ে আছে ওদের চোখে মুখে সারা দেহে। আবার কারো কারো মুখ পাথরের স্তূপের মত স্থবির, ভাবলেশ হীন; যেন এই নিরন্তন পথ চলার শেষে বেঁচে থাকা আর মরে যাবার মাঝে কোন পার্থক্য নেই। দিনের পর দিন শরনার্থীর মিছিল এগিয়ে চলে। আহার নেই,ঘুম নেই, দুঃসহ ক্লান্তি। তবুও যেন বিশ্রাম নেবার উপায় নেই। শেষ পর্যন্ত সত্যি বিশ্রামের সুযোগ আসে; কেউ বিশ্রাম নেয় গাছতলায়, কেউ গুদামঘরে।ভারতে এ ধরনের বহু শরনার্থী শিবির খোলা হয়েছে কিন্তু প্রতি ঘণ্টায় যখন হাজার হাজার লোক আসতে থাকে তখন এতগুলো শিবিরেও স্থান সংকুলান হয় না।
অন্য একটি শিবিরে একজন কিশোরীকে দেখলাম। বয়স বড়জোর ১৬। ওর বাবা ছিলেন খুলনার এক ব্যবসায়ী। হানাদার সৈন্যরা ওদের ঘরে প্রবেশ করে মেঝেতে ফেলে ছয়-ছয় জন মিলে পালা করে ধর্ষণ করে ওকে। চলে যাবার সময় ওর বাবা, ২ ভাই আর চাচাকে গুলি করে হত্যা করে। ইয়াহিয়া খান বাংলাদেশে যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তা নাদির শাহ’র নৃশংসতাকেও হার মানিয়েছে। বাংলাদেশে লুটপাট, বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করা পোড়ামাটি নীতিতে ইয়াহিয়া খান দিল্লীর সুলতান মাহমুদকেও হার মানিয়েছে। বাংলাদেশ নিধনে ইয়াহিয়া মুসলিনীকেও হার মানিয়েছে। ইয়াহিয়া খান হার মানিয়েছে হিটলারকেও”।
বিজয়ের আগ পর্যন্ত শরনার্থীর সংখ্যাটা ছিলো এক কোটির মতো। এদের অনেকেরই আর ফেরা হয়নি।কি অসহনীয় কষ্টে সেই মানুষগুলো দিনাতিপাত করেছে, তা পরবর্তীকালে তাঁদের নিয়ে নির্মিত প্রতিটি প্রতিবেদনেই ফুটে উঠেছে।
১৯৭১ সালে জুন মাসে লাইফ ম্যাগাজিনের সাংবাদিক জন সার কলকাতায় এসেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন ফটোগ্রাফার মার্ক গডফেরি। তারা দুজনে একটি গাড়িতে করে ঘুরে ঘুরে দেখেছেন শরণার্থীদের চিত্র। কখনো তারা গিয়েছেন সীমান্ত এলাকায়। কখনো কলকাতায়। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায়। লাইফ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত জন সারের সেই প্রতিবেদন ফুটে উঠে একটি হাসপাতালের চিত্র-
“কৃষ্ণনগর হাসপাতালে তিল ধারণের জায়গা নেই। যারা হাসপাতালের মধ্যে এসে পড়েছেÑ তখনও বেঁচে আছে, তাদের রাখা হয়েছে বাইরে খোলা মাঠে। যাদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে তাদের রাখা হয়েছে অস্থায়ী ছাউনিতে। বাঁশের কাঠামোতে কাপড় বসিয়ে ছোট ছোট শিবির করে ছাউনি তৈরি হয়েছে। সেখানে কিছু কিছু মানুষ বেঁচে থাকার জন্য মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তাঁদের চোখ গর্তের মধ্যে ঢুকে গেছে। অর্ধচেতন বা অচেতন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পড়ে আছে। তাদের মুখে মাছি পড়ছে। মশা ঘুরছে। অনন্তবিদারী দুর্গন্ধ। স্বজনদের কেউ কেউ হাত দিয়ে, তাল পাখা দিয়ে বা কাপড়ের আঁচল দিয়ে মাছি তাড়ানোর চেষ্টা করছে। সাদা এপ্রোন পরা নার্সরা তাদের শিরায় ঢোকানোর চেষ্টা করছে স্যালাইন। তাদের চেষ্টার কমতি নেই। কিন্তু নার্সের বা ডাক্তারের সংখ্যা হাতে গোণা। অপ্রতুল।
এই হতভাগ্যদের অর্ধেকই শিশু। সাংবাদিক জন সার একটি সাত বছরের ফুটফুটে মেয়েশিশুকে তুলে এনেছে রাস্তা থেকে। তার চোখ বড় করে খোলা। তার হাত ঝুলে পড়েছে। নার্স এক পলক দেখেই বলছে, সব শেষ। কিছু করার নেই। মেয়েটি মরে গেছে। একজন ক্লান্ত ডাক্তার বলছেন, এর চেয়ে কুকুর-বেড়ালেরাও ভালো করে মরে। কিছুটা হলেও তারা চেষ্টা তদ্বির পায়। আর এই শরণার্থী মানুষের কলে পড়া ইঁদুরের মতো মরা ছাড়া কপালে আর কিছু লেখা নেই”
দেশে থেকে যারা দেশের জন্য আত্মত্যাগ করছেন, তাঁদের চেয়ে শরনার্থী শিবিরের মানুষগুলো কোনভাবেই কম আত্মত্যাগ করেন নি। এদের কারোর আত্মত্যাগেরই কোন তুলনা হয় না। আপনারা যদি শাহরিয়ার কবিরের লেখা একাত্তরের যীশু (উপন্যাস) অবলম্বনে নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর পরিচালনায় “একাত্তরের যীশু” ছবিটি দেখে থাকেন, তাহলে দেখবেন মৃত শিশুকে পাশে রেখে না খেতে পেয়ে শক্তিহীন মায়ের আর্তনাদ। দেখবেন প্রিয় মানুষটির লাশ চোখের সামনে পচতে দেখার দৃশ্য।লাশে একমুঠো মাটি না দিতে পারার অসহ্য যন্ত্রণা !
কতশত দুধের বাচ্চার কপালে জুটে নি মায়ের বুকের একফোঁটা দুধ। এ দৃশ্য কি চোখে দেখার ! তবুও দেখতে হয়েছিলো একটাসময়ে, আমার লিখতে হচ্ছে এ সময়ে। সেরকমই একটা ঘটনার খানিকটা তুলে দিচ্ছি-
“এতো বেশি সংখ্যায় হাড্ডিসার শীর্ণশিশু মায়ের স্তন চুষছে এবং তাঁদের লোমচর্ম বৃদ্ধের মতো দেখাচ্ছে। এ ধরনের জিরজিরে শিশু কোলে নিয়ে স্তন্যপানের ব্যাপারটায় মায়েরা অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে- এ দৃশ্যটায় তাঁরা অকারণে আঁতকেও উঠছে না। অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে যদি শিশুটি না খেতে চায়, যে কোনো তরল প্রত্যাখান করে, তাহলে তাঁকে আর তোষামোদ না করেই ফেলে রাখা হচ্ছে।”
…. শরনার্থী শিবিরের এই ঘটনাটি বিবৃত করেছেন ডা. মেয়ার কারিতাস। (বাংলাদেশের গণহত্যা ১৯৭১- পৃষ্ঠা ১৯২)
এবার একটা অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করি। আচ্ছা, একটা মাঝারি সাইজের রুমে কজন শুতে পারবেন?আমি তো বেশ বড় একটা ঘরে একাই থাকি। এমনকি কারো সাথে আমার রুম শেয়ার করতেও ঘোর আপত্তি। কিন্তু আজকে আমাদের এই অফুরন্ত আরাম আয়েশি জীবন যাপনের সুযোগ করে দেয়া মানুষগুলোর কথাটা ভেবেছেন একবার? একটা অন্ধকার, স্যাঁতস্যাঁতে, ঘরে গাদাগাদি করে শুয়ে আছে ৫০০০ মানুষ। উফ ! দুঃসহ… ! কিন্তু এটাই বাস্তবতা ছিল একাত্তরের শরনার্থী শিবিরগুলোতে। এ প্রসংগে শিডনি শনবার্গ এর ডেটলাইন বাংলাদেশ-নাইন্টিন সেভেন্টিন ওয়ান এর পৃষ্ঠা- ৫৭ তে রয়েছে-
“টিমটিমে বাতির আলোয় রেলস্টেশনের শান বাঁধানো স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে গাদাগাদি করে শুয়ে থাকা ৫০০০ শরণার্থীকে মনে হচ্ছে যেন মৃত্যুর চাদরে আবৃত নিথর সত্তা। এক সময় সেই জড়পিণ্ড যেন সামান্য নড়েচড়ে ওঠে। কেউ হয়তো একটি হাত অথবা পা নাড়ালো, কেউ বমি করে উঠলো, কারো গোঙানির শব্দ, একটি বাচ্চা তারস্বরে কাঁদছে। মেঝেতে হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে এক বৃদ্ধ, ঘোর-লাগা দৃষ্টি, মৃত্য পথযাত্রী। হাড় জিরজিরে মাছি তাড়িত শিশু হামাগুড়ি দিতে গিয়ে একটু সরে গিয়েছে পরিবারের কাছ থেকে। বাবা-মা’র অনুপস্থিতি টের পেয়ে হঠাৎ জাগা কান্নার সাথে দমকে উঠতে থাকে কাশি। সচকিত হয়ে জেগে উঠলেও বাবা মা এতোই ক্ষীণশক্তি ও ঘোরাছন্ন যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারছে না। পূর্ব পাকিস্তানের বাড়িঘর ছেড়ে এই দীর্ঘ পদযাত্রার শরণার্থীরা একেবারেই শক্তিহীন”…
এই ঘটনাগুলো পড়ে মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে হয় যে, সেই হাড় জিরজিরে শিশুটি কি এখনো বেঁচে আছে? ঐটুকু বয়সে নিজের অজান্তেই একটা মানচিত্র জন্ম দেবার সংগ্রামে তাঁর অংশীদারিত্ব নিয়ে কি সে এখন গর্ব করে ? হয়তো করে না, হয়তো তাঁর সেই অংশীদারিত্বই তাঁর জীবনটাকে এতোটাই এলোমেলো করে দিয়েছে যেটা গুছিয়ে নিতে এখনো নিত্য তাকে হিমশিম খেতে হয়। হবেই তো ! স্বাধীনতার পরে আমরা কতোটুকু ভেবেছি তাঁদের কথা? যারা এ দেশে ছিল তাঁদেরকেই আমরা প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে পারি নি, সেখানে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া উদ্বাস্তু মানুষগুলো তো বহু দূরের কথা। সেদিনের সেই ছোট্ট শিশুটি হয়তো আজ পঞ্চাশ কোঠায় পা দিয়েছে। তাঁর জিরজিরে হাড়গুলো এখনো ঢাকা পড়েনি চামড়ার আবরণে। সে হয়তো মনে মনে ভাবে “শুনেছিলাম বাংলাদেশ নামের দেশটার স্বাধীনতার জন্য আমাদের ঘর বাড়ি ছেড়ে আসতে হয়েছিলো। আহা ! আমার কপালটা বুঝি সেদিন থেকেই পুড়েছে…”
[চলবে…]
বি.দ্রঃ
০১. প্রতিটি উক্তির তথ্যসূত্র উক্তির সাথেই দেয়া।
০২. ছবি সৌজন্যে- জন্মযুদ্ধ ৭১। কিন্তু বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পের এই ছবিগুলো তুলেছেন মেরিলিন সিলভারস্টোন, রেমন্দ দিপার্দোনে, পেনি টুইড এবং আরো অনেকে যাঁদের নাম পরবর্তীতে জানা যায় নি।
৩৪টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
সারাটি শরীর শিরশিরিয়ে উঠলো।
“একাত্তরের যিশু” ছবিটি দেখেছিলাম সেই অনার্স জীবনে, তারপর কতোদিন যে ঘুমোতে পারিনি।
তবে যে বিষয়টিকে ধারাবাহিক হিসেবে লেখা শুরু করেছেন, তার জন্যে অনেক ধন্যবাদ এবং অবশ্যই কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
অনেক না-জানা জানতে পারবো বলে।
সেই শিশু বেঁচে আছে কিনা, জানিনা। তবে সে যদি জানতো তার কথা লিখছেন আপনি, নিশ্চয়ই তার ভালো লাগতো। -{@
ফাতেমা জোহরা
প্রধমেই লেখাটা পড়ার জন্য অসংখ্য কৃতজ্ঞতা রইলো -{@
হ্যাঁ, লেখাটা ধারাবাহিক, তবে প্রতিটা পর্ব একই বিষয়ে না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসটা খুবই ব্যাপক। কখনো একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে লিখে শেষ করা যায় না। এক লেখাটার মূল কথা “একটি মানচিত্রের জন্য একাত্তরে আমাদের দেশের মানুষ কিভাবে, কতো কষ্ট করেছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেই বিসয়গুলোকে তুলে ধরা”। অর্থাৎ, এখানে শরনার্থী শিবির, গনহত্যা, বধ্যভূমি, বীরাঙ্গনা মায়েদের ঘটনাগুলোও লেখা হবে।
আবারো ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা আপু (3
নীলাঞ্জনা নীলা
অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বের জন্যে আপু। -{@
জিসান শা ইকরাম
আপনি সব সময় মুক্তিযুদ্ধের কথা লেখেন
মুক্তিযুদ্ধ,স্বাধীনতা এসব আপনার চিন্তা চেতনায় প্রতিফলিত হয়
আমরা যারা ৭১ দেখেছি, বিভিন্ন ঘটনায় আমরা দেশের জন্য তেমন কিছু করে যেতে পারিনি
আপনি এবং আপনার মত কিছু তরুন/যুবার ভাবনা দেখে আশায় বুক বাঁধি আমরা………
দেশটিকে গড়ুন আপনারা…… ৭১ এর ভাবনাকে ধারন করে।
শুভ কামনা, জয় বাংলা।
ফাতেমা জোহরা
কতোটুকু করতে পারবো জানি না, তবে চেষ্টা করে যাবো আজীবন।
অসংখ্য ধন্যবাদ। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা, জয় বাংলা 🙂
নূরু
আপনাকে ধন্যবাদ চমৎকার তথ্য সমৃদ্ধ
সুন্দর লেখনীর জন্য,
বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানবেন।
ফাতেমা জোহরা
আপনাকেও অশেষ ধন্যবাদ। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা 🙂
ভোরের শিশির
আপনার এই ধারাবাহিক এগিয়ে চলুক।
বিজয়ের শুভেচ্ছা রইলো।
ছবিগুলো দেখতে দেখতে একটি প্রশ্ন এলো মনে- কিছু ছবিতে ‘জন্মযুদ্ধ৭১’ সিল দেওয়া, ঐ ছবিগুলো কি ‘জন্মযুদ্ধ৭১’ এর তোলা নাকি একমাত্র সোর্স এই ‘জন্মযুদ্ধ৭১’? আর কিছু ছবিতে কিছুই নেই, তো তবে ছবিগুলোতে কেন সঠিক Rights দেওয়া হয়নি?
কৌতুহলী মনের প্রশ্ন।
ফাতেমা জোহরা
ধন্যবাদ ! খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার মনে করিয়ে দেবার জন্য। লিখবার সময় ভেবেছিলাম বিষয়টা দিবো কিন্তু পরে ব্যাপারটা একেবারেই ভুলে গিয়েছিলাম।
ছবিগুলো জন্মযুদ্ধ’৭১ সাইট থেকে নেয়া। কিন্তু বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পের এই ছবিগুলো তুলেছেন মেরিলিন সিলভারস্টোন, রেমন্দ দিপার্দোনে, পেনি টুইড এবং আরো অনেকে যাদের নাম পরবর্তীতে জানা যায়নি।
ভোরের শিশির
ধন্যবাদ। ব্যক্তিগত অভিমতে আশা করছি ছবিতে জন্মযুদ্ধ৭১ না থেকে প্রকৃত চিত্রগ্রাহকের নাম দেওয়া থাকবে যদি কোন নাম ছবিতে সীল করে দেওয়া উচিত বলে মনে হয় তবে। কারণ ছবিগুলো জন্মযুদ্ধ৭১এর নিজস্ব কিছু নয়।
এইসব ছবিগুলো সহ পুরো পোস্টটিতে আমাদের মুক্তির পক্ষে কাজ করা ব্যক্তিদের পরিচয়টাও কিছুটা সামনে এনেছেন বলে ধন্যবাদ। -{@
ফাতেমা জোহরা
একাত্তরে ছবিগুলো কারা তুলেছিল, তা সম্পর্কে খানিকটা জানা গেলেও, মূলত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নির্দিষ্টভাবে ফটোগ্রাফারের নাম জানাটা দুরূহ! তাই এসব ছবিতে সম্মিলিতভাবেই তাঁদের নামের ব্যাপারে বলা হয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফটোগ্রাফারের নাম সুনির্দিষ্টভাবে পাওয়া গিয়েছে। আর জন্মযুদ্ধের লোগো একারণেই দেয়া যে, জন্মযুদ্ধের মাধ্যমে অনলাইনে ছবিগুলো প্রথম প্রকাশিত হয়। এছাড়া আর যে কারণেই ছবিগুলোতে জন্মযুদ্ধের লোগো থাকুক না ক্যানো, আমি তাতে কোন সমস্যা দেখি না। ছবি গুলো যে সহজেই পাচ্ছি এটাই মুখ্য বলে আমি মনেকরি।
ধন্যবাদ।
ভোরের শিশির
লোগো থাকুক বা না থাকুক তাতে আমার সমস্যা নেই কিন্তু যে’সব ছবির প্রকৃত চিত্রগ্রাহকের নাম জানা আছে সেইসব ছবির চিত্রগ্রাহকের নাম ছবির সাথে দেওয়া উচিত আমার মতে।
যাই হোক, শুভেচ্ছা। -{@
ফাতেমা জোহরা
হ্যাঁ তা তো অবশ্যই দেয়া উচিৎ এবং আমার জানামতে সেটা দেয়াও হয়। 🙂
অপার্থিব
ভাল লাগলো লেখাটি। পরের পর্বের অপেক্ষায়…
ফাতেমা জোহরা
অসংখ্য ধন্যবাদ 🙂
দীপংকর চন্দ
হৃদয়স্পর্শী আয়োজন!
অনিঃশেষ শুভকামনা থাকছে।
সুন্দর পরিবেশনার একটি ছোট অংশের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। //আপনারা যদি শাহারিয়ার কবিরের “একাত্তরের যীশু” ছবিটি দেখে থাকেন, তাহলে দেখবেন মৃত শিশুকে পাশে রেখে না খেতে পেয়ে শক্তিহীন মায়ের আর্তনাদ।//
লেখক শাহরিয়ার কবির-এর লেখা একাত্তরের যীশু (উপন্যাস) অবলম্বনে ছবিটি পরিচালনা করেছেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ। উল্রেখ্য অংশটিতে নাসির উদ্দিন ইউসুফ-এর নাম সংযুক্তি সম্ভবত আরও প্রাঞ্জল করতো পঠনকে।
শুভকামনা পুনরায়।
ভালো থাকবেন। অনেক।
বিজয়ের শুভেচ্ছা।
ফাতেমা জোহরা
ইস! ঠিকই ধরেছেন ব্যাপারটা! আমি এখুনি সংযুক্ত করে দিচ্ছি।
লেখাটা পড়বার জন্য এবং খানিকটা সংশোধনের কথাটা বলার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা রইলো।
বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
ছাইরাছ হেলাল
এখানে এ বিষয়ে এমন লেখা আপনাকেই মানায়,
পরের পর্বগুলোর জন্য অপেক্ষা করবো।
খুব ই সময়োচিত।
ফাতেমা জোহরা
সবাইকেই মানায় ভাইয়া। হয়তো সবার বর্ণনাভঙ্গি এক হয় না, এটাই পার্থক্য।
ধন্যবাদ এবং বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা 🙂
তানজির খান
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা পড়লে আবেগ জাপটে ধরে। খুব ইনফরমেটিভ লেখাটি। আপনার মাধ্যমে পিয়াল ভাইকে ধন্যবাদ জানাই। জন্মযুদ্ধ নিয়ে উনি অনেক সংগ্রাম করেছেন। শেষ পর্যন্ত আমাদের জন্য এমন একটি তথ্যকোষ তৈরী করেছেন যার খুব প্রয়োজন ছিল।এই মানুষটা খুব সাহসী, কিছুই কেয়ার করেনা।জন্মযুদ্ধের জন্যেই তাকে অনায়াসে মনে রাখা যায় সারা জীবন।
আপনাকে বিজয়ের শুভেচ্ছা রইল, আগামী লেখার অপেক্ষায় থাকলাম
ফাতেমা জোহরা
ঠিক বলেছেন। পিয়াল ভাইয়ের জন্মযুদ্ধ আর সাব্বির ভাইয়ের মুক্তিযুদ্ধ ই আর্কাইভ যে, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তথ্যগুলোকে কতোটা সহজপ্রাপ্য করে দিয়েছে, তা একটা ব্লগপোস্ট লিখবার সময় টের পাওয়া যায়। এই কাজগুলোর জন্য মানুষগুলোর কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।
বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা এবং অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
শুন্য শুন্যালয়
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এমন লেখা পড়লে মনটা থমকে দাঁড়ায়। বেগম মুস্তারি শফীর “স্বাধীনতা আমার রক্ত ঝরা দিন” বইটিতে প্রথম এই শরনার্থীদের নেয়া লেখা পড়েছিলাম। এক টুকরো সাবানের জন্য দুটো বাচ্চা যুদ্ধ করছে, এ আমি আজো ভুলতে পারিনা।
ফাতেমা সাধুবাদ আপনাকে সবসময় এমন লেখা পড়ার সুযোগ দেবার জন্য।
ফাতেমা জোহরা
এরকম অসংখ্য ঘটানা আছে আপু, যেগুলো পড়লে মাথার ভেতরটা উলোট পালট লাগে।
বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা রইলো -{@
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আপনার লেখা মানেই দেশপ্রেেম -{@এত নিষ্ঠুরতাা হয়েছিল যে তা কেবল লেখা পড়ে মর্ম বুঝা দায়।এখনো সময় আছে পাকিদের সব দিক দিয়ে বয়কট করতে হবে নতুুবা নতুন নতুন রাজাাকারের জন্ম হবে -{@
ফাতেমা জোহরা
সম্পূর্ণ একমত। পাকিদের সাথে কোনপ্রকার সম্পর্ক রাখার কারণই আমি দেখি না!
জিসান শা ইকরাম
পর্ব – ২ এর জন্য অপেক্ষা করছি
দ্রুত দিন।
ফাতেমা জোহরা
দিবো, শীঘ্রই দিবো। সামান্য কিছু ইনফরমেশন কালেক্ট করতে বাকি।
অনিকেত নন্দিনী
তথ্যবহুল লেখা। প্রচুর ঘাঁটাঘাঁটি করতে হয়ে বোঝাই যায়।
৭১ এর নৃশংসতা মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। অত্যাচার আর অত্যাচারিতের বিবরণ পড়লেই কেমন গা গুলিয়ে উঠে, অস্থির লাগে আর যারা এই ভয়াবহতার ভেতর দিয়ে গেছে তাদের না জানি কেমন লেগেছে! তাদের সবার জন্য বিনম্র শ্রদ্ধা।
এই লেখাগুলোকে সামনে নিয়ে এসে আমাদের জানার সুযোগ করে দেয়ার জন্য শুভেচ্ছা আর শুবকামনা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ফাতেমা জোহরা
অসংখ্য ধন্যবাদ রইলো। চেষ্টা করবো দ্রুতই পরের পর্বটি দেবার জন্যে।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
জোহরা, আমার সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলো, তোমার মাঝে আমি আগামীর উজ্জ্বল বাংলাদেশকে দেখতে পাই।
এ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসাবে তুমি যতোখানি করছো, আমরা এর সিকিভাগও কিছু করতে পারিনি।
অনেক না জানা ঘটনা আমি তোমা থেকে জেনেছি। কলমযোদ্ধারাই এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বাংলা মায়ের।
দীর্ঘায়ু হও বাংলা মায়ের জন্য। শুভকামনা রইলো।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
(3 (3 (3 (3 (3 -{@ -{@ -{@
ফাতেমা জোহরা
আমি যা করেছি তা খুবই সামান্য আপু। আসলে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে লিখবার জন্য এই একটা জীবন বড্ড কম সময়।
ভালোবাসা রইলো আপু… -{@ (3
মৌনতা রিতু
সত্যি গা শির শির করে উঠলো,গলা ভিতর ব্যাথাও অনুভব করছি।কান্না উঠে আসতে চাচ্ছে।
আসলেও আমরা যারা মাক্তিযুদ্ধ দেখিনি,এই লেখাগুলো পোড়লে কতো অজানা জানতে পারি।
ধন্যবাদ।
ফাতেমা জোহরা
লিখতে সময়ে, পড়তে সময়ে ঠিক এই একই অনুভূতি হয় আমার। একটানা লিখতে পারিনা। ধীরে, সুস্থে, সয়ে-রয়ে লিখতে হয়…
প্রচন্ড কষ্ট কয় তখন 🙁