মাছ বাজার-কাঁচা বাজার আর ক্রোকারিজ এর দোকান ঘুরাঘুরি আমার ছোটখাটো নেশা। কারওয়ান বাজার রেলক্রসিং এর পাশে ইলিশের বাজার। অনেক অনেক দোকান। মানুষ বড় বড় ব্যাগ ভরে ইলিশ কিনে নিয়ে যায়। কেউ ১০ কেজি, কেউ বিশ কেজি। সেই বাজারের সামনে দিয়ে যাবার সময় মাছ দেখতে দেখতে যাই। গতদিন গেলাম ইলিশ মাছ কিনতে। ঘুরে ঘুরে দেখছি আর দাম জানছি। দাম শুনে ভয় জাগে।
সবাই যখন ১০/১৫/২০ কেজি করে ইলিশ নিচ্ছে কোন দরদাম ছাড়া, সেখানে হঠাৎ দেখি এক ভদ্রলোক স্ত্রী সহ একটা মাছ পলিথিনে নিয়ে মাছের ডালার দিকে তাকিয়ে আছে। স্ত্রী দোকানীকে বললো: এই মাছটা বদলে ঐ মাছটা (চোখের আন্দাজে সামান্য বড়) দেন। দোকানদার পলিথিনটা নিয়ে মাছ বের করে ডালায় ফেলে দিয়ে উচ্চস্বরে বলে: আপনের কাছে মাছ বিক্রি করুম না। আপনে যান। দুজনই লজ্জায় কুঁকড়ে গেল। মহিলা কোনমতে বললো: তাহলে টাকাটা ফেরত দেন। আরেক দোকানী হাতের সেই মাছের দাম মাছের উপর ছুড়ে দিল। তারা টাকা নিয়ে হাটা ধরছে, আমি ডাক দিলাম। দোকানদারের সামনে দাঁড়িয়ে এবার আমি চিৎকার করে কথা শুরু করলাম।
-উনাদের সাথে এভাবে কথা বলার কারণ কি!
– একটা মাছ নিবো তাও এত বাছাবাছি ক্যান! ঝামেলা করে!
– তাতে সমস্যা কি! মাগনা নিতাছে?
– মানুষ এত এত মাছ নিতাছে, কোন ঝামেলা তো হইতাছে না!
– উনারা তো দু-নম্বরী টাকায় মাছ কিনতাছে না, যে টাকার কথা ভাববে না।
– এত কথা বাড়াইয়েন না তো!
– কেন বাড়াবো না! মাছ যেটা চেয়েছে সেটা ওজন করে দাম যা হয়, তা নিয়ে মাছ ব্যাগে ভরে দেন।
ভদ্রলোক আর মহিলা ‘থাক ঝগড়ার দরকার নাই। আমরা অন্য দোকান থেকে নেবো।’ বলে চলে যান। দোকানী আমার দিকে তাকিয়ে। আমি বললাম: দেখেন উনার হয়ত একটা মাছ কেনার সামর্থ্য আছে। হয়ত ছেলে-মেয়েরা খেতে চেয়েছে। উনি কম মাছ কিনছে বলে এভাবে অসম্মান করাটা অনেক বড় বেয়াদবী। এসব করবেন না। না হয় আপনার ২০ টাকা লস যেতো একটা মাছে। তাতে আপনার কিছুই আটকে থাকতো না। এসব বলার পর আমি ওজন করা ইলিশ রেখে চলে আসলাম। ইলিশের দিকে তাকিয়ে কেমন যেন ঘৃণা জন্মালো।
এবার কিছু কথা:
ইলিশ মাছ হচ্ছে এক প্রকার মাগনা মাছ। প্রাকৃতিকভাবে জন্ম এবং বেড়ে ওঠে। এর পেছনে পুকুর, খাবার, চাষাবাদ, শ্রমিক ইত্যাদি কোন খরচই নেই। যেটুকু খরচ সেটা সব সময়ের স্বাভাবিক খরচ। সেই মাছের এত দাম হবে কেন! ইলিশ মাছের দাম সরকারী ভাবে নির্ধারণ করা জরুরী। এখন আর নির্দিষ্ট সিজন নেই ইলিশ মাছের জন্য। সারা বছর বাজারে ইলিশ পাওয়া যায়। সেই মাছ সাধারণ মানুষের পাতে জায়গা নিতে এরকম অনেক অসম্মানজনক ঘটনা হয়ত ঘটছে। সেটা বাজারে কিংবা বাসাতে। ইলিশের দাম নির্ধারণের ব্যপারে জোর পদক্ষেপ সময়ের দাবী।
খুব ভালো বলেছেন। যার পিছনে কোনো শ্রম নেই, খরচ নেই তাকে কেন এতো দাম দিয়ে কিনতে হবে? শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল কবে জানি সেটাও সোনার হরিণ বানিয়ে দেয় যেভাবে ডোবা- নালা , নদী ভরাট হচ্ছে তাতে করে শাপলাও হাতের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। আমাদের ব্যবসায়ীদের কোনো ভরসা নেই। ইলিশ এখন রাজকীয় মাছ হয়ে গেছে শুধু মাত্র যাদের দুনম্বরী টাকা আছে তারাই এভাবে দামাদামি না করে ব্যাগ ভরে কিনতে পারে। শুভ কামনা রইলো
সুন্দর প্রস্তাব — ইলিশ মাছের দাম সরকারী ভাবে নির্ধারণ করা জরুরী। এখন আর নির্দিষ্ট সিজন নেই ইলিশ মাছের জন্য। সারা বছর বাজারে ইলিশ পাওয়া যায়। সেই মাছ সাধারণ মানুষের পাতে জায়গা নিতে এরকম অনেক অসম্মানজনক ঘটনা হয়ত ঘটছে। সেটা বাজারে কিংবা বাসাতে। ইলিশের দাম নির্ধারণের ব্যপারে জোর পদক্ষেপ সময়ের দাবী।
সুন্দর বলেছেন তো। ইলিশ উৎপাদনে কোনো খরচ নেই। অথচ এ মাছ দুর্মূল্য। সরকারি ভাবে এ মাছের দাম নির্ধারণ করা হলে, সাধারণ মানুষের পাতে ইলিশ মাছ উঠতো।
শুভ কামনা রইলো।
কঠিন সিন্ডিকেট রয়েছে এর পেছনে। অবশ্যই খতিয়ে দেখে এর ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
এক কেজি ইলিশ ১২০০/১৪০০টাকা। এটা সত্যি অবাক লাগে। আপনার এ কথাটা ভালো লাগলো- ইলিশ মাগনা মাছ, তবুও আমরা খেতে পারি না।
শুভ কামনা।
হাহাহা…. মাগনা শব্দটাই স্টাবলিশ করতে হবে। এটা সাইকোলজিক্যাল প্রেশার ফেলবে। আমার আইনজীবী অসুস্থ থাকায় একটু পিছিয়ে আছি। উনি সুস্থ হলেই এ ব্যপারে আদালতে রিট করার ব্যপারে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
১৫টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
খুব ভালো বলেছেন। যার পিছনে কোনো শ্রম নেই, খরচ নেই তাকে কেন এতো দাম দিয়ে কিনতে হবে? শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল কবে জানি সেটাও সোনার হরিণ বানিয়ে দেয় যেভাবে ডোবা- নালা , নদী ভরাট হচ্ছে তাতে করে শাপলাও হাতের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। আমাদের ব্যবসায়ীদের কোনো ভরসা নেই। ইলিশ এখন রাজকীয় মাছ হয়ে গেছে শুধু মাত্র যাদের দুনম্বরী টাকা আছে তারাই এভাবে দামাদামি না করে ব্যাগ ভরে কিনতে পারে। শুভ কামনা রইলো
তির্থক আহসান রুবেল
ধন্যবাদ
ত্রিস্তান
অনেক সুন্দর উপস্থাপনা। এভাবেই হোক প্রতিবাদ। পরামর্শটাও দারুন দিয়েছেন। কোন প্রতিষ্ঠিত পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে লিংকটা শেয়ার করতে পারলে ভালো হতো।
তির্থক আহসান রুবেল
ধন্যবাদ
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
সুন্দর প্রস্তাব — ইলিশ মাছের দাম সরকারী ভাবে নির্ধারণ করা জরুরী। এখন আর নির্দিষ্ট সিজন নেই ইলিশ মাছের জন্য। সারা বছর বাজারে ইলিশ পাওয়া যায়। সেই মাছ সাধারণ মানুষের পাতে জায়গা নিতে এরকম অনেক অসম্মানজনক ঘটনা হয়ত ঘটছে। সেটা বাজারে কিংবা বাসাতে। ইলিশের দাম নির্ধারণের ব্যপারে জোর পদক্ষেপ সময়ের দাবী।
তির্থক আহসান রুবেল
ধন্যবাদ
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই।
হালিমা আক্তার
সুন্দর বলেছেন তো। ইলিশ উৎপাদনে কোনো খরচ নেই। অথচ এ মাছ দুর্মূল্য। সরকারি ভাবে এ মাছের দাম নির্ধারণ করা হলে, সাধারণ মানুষের পাতে ইলিশ মাছ উঠতো।
শুভ কামনা রইলো।
তির্থক আহসান রুবেল
ধন্যবাদ
রোকসানা খন্দকার রুকু
কঠিন সিন্ডিকেট রয়েছে এর পেছনে। অবশ্যই খতিয়ে দেখে এর ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
এক কেজি ইলিশ ১২০০/১৪০০টাকা। এটা সত্যি অবাক লাগে। আপনার এ কথাটা ভালো লাগলো- ইলিশ মাগনা মাছ, তবুও আমরা খেতে পারি না।
শুভ কামনা।
তির্থক আহসান রুবেল
ধন্যবাদ
সাবিনা ইয়াসমিন
এভাবে মাগনা মাছ সম্বোধন দিয়ে তুচ্ছ বানিয়ে দিলেন! ইলিশ মাছ আমাদের জাতীয় মাছ!
প্রস্তাব টা ভালো। আমাদের বলতে হবে, হয়তো এভাবেই কতৃপক্ষের নজরে আসবে।
শুভ কামনা 🌹🌹
তির্থক আহসান রুবেল
হাহাহা…. মাগনা শব্দটাই স্টাবলিশ করতে হবে। এটা সাইকোলজিক্যাল প্রেশার ফেলবে। আমার আইনজীবী অসুস্থ থাকায় একটু পিছিয়ে আছি। উনি সুস্থ হলেই এ ব্যপারে আদালতে রিট করার ব্যপারে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আরজু মুক্তা
পরামর্শ টা ভালো লাগলো। মাগনায় উৎপাদন আর দাম সাধারণ মানুষের বাহিরে।
প্রতিবাদ চলুক।
তির্থক আহসান রুবেল
ধন্যবাদ